ব্রিকফিল্ড ঘিরে রেখেছে উত্তর আধুনিক এই শহর। চারদিকে তাপ দিচ্ছে দুষিত করছে ,ধুলা কিম্বা ময়লায়।
সব কিছু যেন অন্ধকারে গুমট হয়ে আসছে। বাতাসে বৈরি পরিবেশ- কুয়াশায় লাবণ্যতা হারাচ্ছে বিস্তৃত সব অপরূপ প্রকৃতি- যেন ধেয়ে আসছে কোনো এক ভয়াবহতা যেখানে শিকার হবে তাবৎ শক্তিমান যত রুপসী শহর, গ্রাম-অথবা সৌন্দর্য মণ্ডিত দেশ।
আমাদের শরীরে বইছে অনাদিকালের সব নোংরা অসভ্যতা আমরা নীরবে জ্বলে যাই পুরে যাই – তার সাথে হত্যা করি আমাদের যত প্রদত্ত জ্ঞান- ৩০।১২।২০১১ইং/রাত্রি:১০:১৫মি:
অনেক দিন ধরে আমি ব্লগে আসি না। আবার আসলেও আমি অফলাইনে থেকে কিছু লিখা পড়ি।আসব আসব করে আর আসা হয়ে উঠেনা।অবশেষে এসেই পরলাম……..
” একটু কাঁদব বলে “
অনেকদিন কান্নার স্বাদ পাইনি দু-ফোঁটা অশ্রু নিয়ে বসে ছিলাম একটু কাঁদব বলে।
ভেবেছিলাম তুমি আসবে;আর তুমি এলেই তোমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদব।
কেন কাঁদতাম জানি না,হয়ত তোমাকে ছাড়া এতগুলো দিন আর রাত আমি কি করে পার
করেছি! তা ভেবেই কান্না পেত। নয়ত তোমাকে কাছে পাবার আনন্দেই কাঁদতাম।
কিন্তু তুমিতো এলেই না; কি করে কাঁদব আমি?
তোমার আসা আর কোন দিনই হবেনা সেটা জানি,কিন্তু কান্না পায়না কেন বলতো? হাসতেও তো পারিনা এখন।
তোমার না আসা কি আমায় কষ্ট দেয়নি? নাকি আর একটু বেশী কষ্ট পেলে কাঁদতাম আমি? মানুষ কতটুকু কষ্ট পেলে কাঁদে সেটা যদি জানা যেত; তবে আমি ঠিক ততটুকু কষ্টই পেতাম।
কারন আমিতো একটু কাঁদতেই চেয়েছিলাম; নাকি আমার ভেতরটা নীরবে কাঁদে! আমি টের পাইনা,শুধু বাহির নিয়েই পরে থাকি আমি।
তবু কথা থাকে বলেছেন একজন। সন্ধ্যের পরেও কথা থাকে; রক্ষিতার মত সঙ্গোপনে রাতের নির্জন কথা দুপুরের শেষ মৃত্যুর পরেও থেকে যায় অপরাহ্নের সংলাপ।
কোন এক গোপন ঈঙ্গিতে চারটি চোখের রঙ বদলে- যাওয়ার মত আবেশে স্পন্দিত, বৃষ্টির পরেও মেঘ-মেঘ আকাশে ভাসে শুভ্র কথার কাফন।
আমি ঘুমহীন চেয়ে চেয়ে দেখি দু’চোখের দরিদ্র পারদ ঝরে ঝরে পড়ে শতাব্দীর নোংরা কোলে। কথা বলি না, কেননা কথা না- বলার করেছি সংরক্ত পণ একান্তে, নিঃশব্দে, জানে না ঘনিষ্ঠতমা।
ঘোর তমসার নীল জলশয্যাতে তখন অনন্ত বীটোফেনের সিম্ফনি অবাক তৃষ্ণার্ত রঙের ধরায় অবিরল বয়ে গেলে তুমি এসে কেন ডাকো হে নারী, হে কবিতার প্রসূতি, হে বিষণ্ণ প্রকৃতি !!!
আমি-ই আমার কবিতা কবিতার ভিতরই আমার অস্থিত্ব এই অস্থিত্বের ভিতরই এঁকে যাই, আমার খন্ড খন্ড কথামালার ছন্দপল্লবে ভোরের শিশিরের মতো ঝকঝকে বিন্দুকণা শিশিরের অবগাহনে যখন ফুলের স্নানের উৎফুল্লতা এথানেই আমাকে নিয়ে বিচার করি আমি আমার কবিতা আর কোন সংশয় নেই।
যদি কিছু না লিখি কিছুই লেখা হবে না। যদি কাজ না করি ফল কিছুই পাব না। যদি ভুল না করি কিছুই শিখব না । যদি না শিখি কিছুই জানব না । যদি না জানি যদি নিজেকেও জানব না। যদি নিজেকে না জানি স্রষ্টাকেও জানব না।
চিত্তের গভীরে যে বাসা বাধে আপন ভূমিকায়, সে যে কারো অজানার নয়। ভুবন বিলাসী যত বিনোদন আছে ছুয়ে যায় শুধু ছুয়ে যায়, কখনো যে হারাবার নয়।
প্রেমের অমর সুধা করেছে যে পান এই জগৎ সংসারে, তার ভীরে নগন্য একজন আপন নগরে তা ফুলে ফেপে ফুটাইয়াছে প্রাণ যেথা কোনো ব্যবধান নয়।
দীপের আড়ালে জমা পড়ে যেই অন্ধকার যার তরে গেথে থাকে চাপা নীরবতা যখনি নিভিবে দীপ সমীক্ষার ও প্রহর অন্তরালে কিছু যেন লুটাইবার রয়।
সকল জয়ের স্বাদ ভূলোকের সমারোহে প্রেম মিত্রে কি যে দারুন অমরতা পায় মন্থর গতিতে তাও মুছিবার শ্রয় কখনো যা ভুলিবার নয়।
কালো রাত্রির আঁধারে যারা রক্তাক্ত হয়েছে তাদের রক্তে আঁকা হয়েছে আমাদের এই বিজয় । আমাদের এই মানচিত্রটা- আমাদের স্মৃতিস্তম্ভগুলো পৃথিবীর ইতিহাসে নিদারুণ স্বাক্ষী হয়ে আছে আমাদের বধ্যভূমিগুলো হয়ে আছে সেই ইতিহাসের জ্বলন্ত দলিল।
তোমরা যে বল, বিজয়, বিজয়, মহান বিজয়। মুক্তির বিজয়, স্বাধীনতার বিজয়,মানুষের বিজয়। বিজয়ের মাস এলে, শ্লোগানে শ্লোগানে মুখুর করো রাজপথ, সেমিনারে, বক্তৃতায় মঞ্চ রাখো গরম। বলতে পার কি? বিজয় কোথায় ? কিসের বিজয়, কাদের বিজয়? আমি কোন বিজয় দেখি না, বিজয় দেখি না। কোথাও পাই না তাহাকে। এ বিজয় কেবল তাদের, কেবল তাদেরই জন্য, যারা রাজনীতিবিদ দানবের মত। যারা স্বার্থপর মানুষের মত। যারা স্বাধীনতা বিরোধি শক্তির মত। যারা রাজাকার । এবং কতিপয় মুক্তিযোদ্ধাদের। যারা নিহত হলে,মূত্যু হলে, হয়ে যান শহীদ। কবর হয়ে উঠে আত্ত্বতুষ্টির বেদী। এ বিজয় কেবল তাদেরই জন্য, কেবল তাহাদেরই জন্য। আর যারা মাটিতে পিঠ রেখে, জারুলের উজ্জ্বল বেগুনি ফুল মঞ্জুরিত শাখার দিকে তাকিয়ে, মৃর্ত্তিকায় বিনা বেদনায় বিছায়েছে অমূল্য প্রাণ, যেখানে বিরাঙ্গনা এখনো কেবলই বিরাঙ্গনা,
সমাজ তাকে করে রাখে এক ঘরে, জোটে না কাফন,জোটে নামাজ দাফন। দু বেলা দু মুঠো খাবারে জন্য হয়ে যান পতিতা। তাকে আমি বিজয় বলি না, কখনো বলবো না। কেমন করে বলি, সাভারের ঐ স্মৃতির মিনার দেখে, সংবাদ পত্রের ছাপানো কালো কালির অক্ষরে, টিভি’র পর্দার আলোচনার তুমুল ঝড়ে, জাতীয় সংসদের গোল টেবিল বৈঠকে, মাঠে ময়দানে পাড়ার মোড়ে উঠতি নেতাদের গলাবাজিতে। নীতি বর্জিত নেতাদের বুলসিট বক্তৃতায়। তোমর বিজয় উত্তসব দেখছ, আরোও দেখবে আগামীর পথে। বিজয় মাঠের প্রস্তুতি পর্বের দিনগুলি দেখন
হৃদয়ের জানাল খুলে বসে আছি তোমার প্রতীক্ষায় কবে তুমি আসবে আবার, এ মন তোমায় ফিরে পেতে চায় তুমি ছাড়া নীথর এ জীবনের চাকা আর চলে না স্মৃতির জানালায় দাঁড়িয়ে কেন, ধরা দাও না?
র্নিঘুম রাতে তোমাকে খুব বেশী মনে পড়ে আহত পাখির মত উড়ে পড়ি বেদনার বালুচরে তুমি ছাড়া এ ভূবন আমার ধূ ধূ মরুভূমি তোমার স্মৃতি বারে বারে হৃদয় আমার যায় চুমি ।
কত বসন্ত আসে যায় তুমি ফিরে এলে না মনের মাঝে যে দ্বীপ জ্বেলেছিলে, সে তো আর জ্বলে না কত কথার মালা শুকিয়ে গেছে তোমায় পরানো গেল না বেদনার বালুচরে বসে একা, এ জীবনে বুঝি তোমায় পাওয়া হলো না ।
হে গোলাপ-প্রেমী, গোলাপের সৌন্দর্য্যে বিমুহিত হয়ে ভাবছ কী বসে একা? তোমার রঙ্গিন চশমা পরা চোখে শত স্বপ্নের মেঘ পাল তুলে বেড়াচ্ছে ।তুমি নেই তোমাতে । কিন্তু জান কী- গোলাপের সৌন্দর্য্য আর সুবাস যতটা মধুর কাটার আঘাত ততটাই বেদনাবিধুর ।নয়নভরে সৌন্দর্য্য পান কর, তবে ছিঁড়তে যেওনা তাকে । কাটার আঘাত সইতে পারবে না তুমি । এ বড়ই র্নিমম!
কাটার আঘাত না সহে কে গোলাপের সৌন্দর্য্য করেছে উপভোগ? কষ্ট না সহে সুখ পেয়েছে কে কবে? প্রদীপের আলোর নীচে আঁধার থাকে বলে কী প্রদীপ কেউ জ্বালবে না? ভালবাসার পশ্চাতে বিরহ মুচকী হাসে, তাই বলে কী হৃদয় ভালবাসবে না? মেঘের আড়ালে চাঁদ হাসে, শীতের পর বসন্ত আসে কাটার আঘাত সইলেই তবে গোলাপ তোলা যায় বেদনার নীলকন্ঠ পিয়েই ভালবাসার স্বাদ নেওয়া হয় ।
ধরো হাত, চলো গড়ি ভালবাসার নীড় হৃদয়ের মধ্যখানে যে নিঝুম গহীন অরণ্য কোন নারী আজও নূপুর পায়ে সেখানে আসেনি, ফেলেনি কোন পদ-চিহ্ন সেখানে ছোট্ট কুটিরে বাঁধব সুখের বাসা আলো-বাতাস যেমন জীবনের প্রধান সহায়ক তোমার-আমার প্রেম আর ভালবাসা তেমনি যোগাবে দু’টি প্রাণের খোরাক ।”
প্রেম কেীতূহলী প্রেমিকা চিঠি পড়ে বসন্তের মাতাল সমীরণে উড়িয়ে দেয় তা’ হৃদয় তার নেচে উঠে, বলে কথা- “হাতে রেখে হাত চরণ ফেলব তোমার হৃদয়ারণ্যে প্রেমের উষ্ণ-আলোয়ানে জড়িয়ে নিও আমাকে তোমার ভালবাসার ঘরে লাল শাড়ী পরে যাব আলতা রাঙা পায়ে নূপুর নিক্কণ করে ।
তাজমহলে ঘুমিয়ে আছে মমতাজ প্রাণহীন দেহে আমরা গড়ব মহাবিশ্ময়, এক মহার্নিদশণ । দু’টি প্রাণের ভালবাসায় আমাদের ছোট নীড় হবে বিশ্বের সপ্তার্চাাসযের এক নম্বর আর্শ্চায। যৌবনের ঊষা লগ্নে তুমি দেখালে আমায় রোদেলা এক দিনের স্বপ্ন ।দু’টি দেহে একটি প্রাণ-রবি উঠেছে যেমন পূবাকাশে দিনের শেষে পশ্চিমাকাশে অস্ত যায় যেন এক সাথে ।” এই ভাবে কত স্বপ্নের বীজ বুনতে থাকে প্রেয়সী তার হৃদয়-কাননে, কত রঙিন ফুলে ফুলে সাজায় অবুঝ মন্তর কত স্বপ্ন দোলায় দোলে সবুজ বনানী কত স্বপ্নের রোদ উঠে হৃদয়াকাশে, কত রঙের পাল তুলে মেঘ ভেসে বেড়ায়, কখনও প্রেমিকের প্রতীক্ষায় দু’চোখ হতে বৃষ্টি ঝরে পড়ে । এক একটি চিঠি কত শত প্রেমের মালিকায় গাঁথামালা, কত স্বপ্ন আর প্রতিশ্রুতির সাক্ষর হয়ে করে হৃদয়ের লেন-দেন । কবে ফাগুন আসবে, সাজবে ধরা নতুন সাজে মেহেদী রাঙা হাতে বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে আলতা-চরণ ফেলবে ভালবাসা ঘেরা বাসর ঘরে ।
ফাগুন আসে, বনে বনে বসন্তের সাজে বৃক্ষরাজি; কিন্তু তার প্রিয়ের দেখা নাই, প্রাণ আনচান করে প্রতীক্ষার র্দীঘপথ হামাগড়ি দিয়ে পাড়ি দেয় এক একটি দিন ।
ফাগুনের কোন এক দুপুরে রানার আসে শত কথার ঝুলি কাঁধে নিয়ে । নীল খাম ছিঁড়ে বের করে নীল চিঠি আনন্দে নেচে উঠে সাথী, বুকে চেপে ধরে আর সবুজের দেওয়া প্রথম চিঠির কথা মনে করে হারিয়ে যায় কল্পলোকে । সম্বিত ফিরে তাকায় চিঠির দিকে । না, এতো চিঠি নয়! একটা র্কাড! বিয়ের নিম্নত্রণ-পত্র! চোখ বেয়ে অশ্রু নামে, গড়ে নদী বুকে উত্তাল ঢেউ । ঘৃণা আর কষ্টে উচ্চারিত হয় একটা শব্দ-‘বিশ্বাসঘাতক!’
অমাবস্যার রাতে চাঁদকে
খোঁজা বোকামী ছাড়া কিছু নয়
যে কষ্ট দিয়ে চলে যায়
তাকে মনে রাখার মতোই।
স্বপ্ন হারিয়ে যায়,
তবু আমরা বুনি নতুন স্বপ্নের বীজ
সেই স্বপ্ন হয়ত একদিন ভেঙ্গে যাবে
আর আমরা নির্বোধেরা
আবার স্বপ্নের বীজ বপন করি
স্বপ্নের মাঝে বাঁচতে চাই বলে।
মরণ তো জীবনে একবারই হয়
বিশ্বাসঘাতকতার আঘাতে বার বার
আমরা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করি,
তার পরেও আমরা বেঁচে থাকি
নতুন বিশ্বাসের ভরসায়,
নতুন জনমের আশায়।
একটা হৃদয়কে কতোবার আর খন্ডিত করা যায়
যতোবারই খন্ডিত হোক না কেন
এই হৃদয় একটাই থাকে,
ভালবাসা হয়ত বহুবার সেই হৃদয়ে কড়া নাড়ে
শুধু সময়ের কাছে হেরে যায় ভালবাসার সত্যিকার অর্থ।
হিমহিম শীতের সকালে তোমায় খুজি একটু উষ্ণতা পাওয়ার জন্যে, তুমি চাদর হয়ে জড়িয়ে রবে আমার অঙ্গ জুড়ে।
খালি পায়ে শিশির ছুঁয়ে তোমায় খুজি, শিহরন বয়ে যায় আমার স্বত্তায়, শিশিরের বিন্দু কণায় তোমাকে দেখতে চাই ঠান্ডা একটু পরশ যদি তুমি দিয়ে যাও আমায়।
ঝরে পড়া শিউলি ফুলের মাঝে তোমায় খুজি গেথে মালা পথ চেয়ে রই, তুমি আসবে কাছে পড়বে মালা কাছে টেনে নিবে আমায়।
যতোই তুষার ঝরে পড়ুক ঢেকে যাক সব কিছু শুভ্রতায়, শিউলি শুকিয়ে পড়ে থাক ধূলিতে, শিশির বিন্দুগুলো গলে মিশে যাক মাটিতে, তবু, তোমাকে আমি খুজি ফিরি তাদের মাঝে শুধু পেতে স্বগীর্য় ভালোবাসা তোমার কাছে জানিনা, সেই তুমি আজ হারালে কোথায়।
প্রতিটি ভোরের আলোর সাথে, আঁধার মনের লড়াই বাধে। প্রতিটি সাঝের আঁধার ঘিরে, আশাবাদী মন সাধনা সাধে।
প্রতিটি শিশির ফোটার সাথে, পাপী মনের পাপ ক্ষুয়ে যায়।
প্রতিটি ফুলের কলির সাথে, ভ্রমর মনের প্রেম ছুয়ে যায়।
প্রতিটি মেঘের দলের সাথে, উদাসী এ মন যায় উড়ে যায়। প্রতিটি স্রোতের তালে তালে, উতলা এ মন যায় ভেসে যায়।
প্রতিটি জলের কণার সাথে, বিরহী মনের দুঃখ ঝরে। প্রতিটি পাথর নুড়ির সাথে, শোকাহত মন সখ্য গড়ে। প্রতিটি দিনের সাথে সাথে, নতুন কিছু স্বপ্ন জাগে। প্রতিটি রাতের সাথে সাথে, স্বপ্নগুলো অচিন লাগে। তবুও প্রতিটি প্রহর জুড়ে, বিচিত্র এ মন স্বপ্ন দেখে। মনের এহেন চিত্র নিয়ে, ভাবুক এ মন পদ্য লেখে।
মাধবী লতার এখন ব্যস্ত সময়, সস্তা মেকাপ আর আটোঁ পোশাকে রুপান্তরের পালা। সন্ধ্যাক্ষনটা যে কেনো এতো ছোট হয়… ঈশ্বরের প্রতি মাধবীর বিড়বিড়ে অসন্তোষ। সূর্যাস্ত মুহুর্তের আজান বা উলুঁ ধ্বনি, কোনোটাই তার মাঝে আবেদন আনতে পারেনা। একটু পরই পথে নামবে মাধবী লতা। আরো অনেকেই নামবে,নামে বা বেনামে। আপাত ভদ্র নগরীর একটি অভিজাত কোন, তখন থেকে সারারাত তার আভিজাত্য হারাতে থাকবে। ঈশ্বর সৃষ্ট আদিম জৈব তাড়না, তাঁরই বিরুদ্ধ পাপের ভাগাড় পূর্ণ করবে। মাধবী লতারা শুধূ পাথেয় হবে তাতে। প্রশাসক,প্রকাশক আর প্রশিক্ষক থেকে শুরু করে, ছাত্র হুজুর বা নেহায়েত দিন মজুর, কেউ বাদ যাবেনা এই রিপু নাস্তি যাত্রা হতে। পাপের অভিযাত্রায় ধর্ম-বর্ণের অভূত সাম্য, আগামীর মহাত্মাদের পাপী হতে উৎসাহ জোগাবে। মাধবী লতার অকাল পতিত যৌবন কিংবা, সস্তা সাজে সিনড্রেলা হবার ব্যর্থ প্রয়াস, কোনোটাই লোলুপ দৃষ্টিগুলোকে কাছে টানার যোগ্য নয়। তবু তারা আসে,তাদের আসতেই হয়। ঘরে সুন্দরী বউ রেখে, মাধবী লতার বয়সী কন্যা বোন বা, কেউ কেউ নাতনীর সাথে দু’দন্ড কথা বলে আসে। শুরু হয় দর কষাকষি। মাছ বাজারের মতই ভীড় জমতে শুরু করে। শুধূ থাকে না হল্লা আর মাছির ভন ভন। অঙ্গ সৌষ্ঠব,কন্ঠের তারল্য ও- দালালের ধূর্ততা আর অপ্রাসঙ্গিক তাড়ায়, অপাত্রে উত্তাপ দমনে পাগল হয়ে উঠে পঙ্গপালের দল। মাধবী লতারা যেনো এক একটি অগ্নি গোলক। নির্বিকার চিত্তে মোহিত কীট গুলোকে পুড়িয়ে মারে। নৃত্য ক্লান্ত নর্তকের অবসাদ শুরু হবার আগেই, নর্তকী তার প্রসাদ আদায় করে নেয়। খুলে ফেলা মুখোশটা ঠিক ঠাক করে নিয়ে, ঠিকানা মুখী হয় বানচোঁত বীর্যহারার দল। মাধবী লতারা শুধূ দু’ দন্ড জিরিয়ে নেয়। এক খন্ড নেকড়া আর দু’ মিনিট সময়, সদ্য সিক্ত স্মৃতি মুছে ফেলতে তার এই যথেষ্ট। কারন,তাকে আরো খদ্দের ধরতে হবে। রাত পোহাবার আগেই আগামীকালের স্বপ্ন বাচাঁতে হবে। রুটি রুজি আর মাথা গোজার ঠাঁইয়ের জন্য, আরো বেশ ক’বার পতিত হবে তার দেহের ভারটুকু। বহুগামীদের গমনে গমনে ক্রমে, আগামীকাল নিশ্চিত হবে মাধবী লতার।
প্রয়োজন্ -৩ ডিসেম্বর ০১, ২০১১ সময় থমকে গেছে,কিংবা যাচ্ছে বা যাবে। আমরাও ইতিমধ্যে নিজেদের বিকলাঙ্গ ভাবতে শুরু করেছি, অথবা অচিরেই ভাবতে পছন্দ করব। আমাদের বৃদ্ধরা আটকে গেছে, নিদারুন হতাশার নীল জালে। বৃদ্ধারা অতীত রোমন্থন আর অন্ধ আনুগত্যে। পুরুষেরা বন্দি হয়ে আছে, লোভ্,লিপ্সা,রিপু,আর তাড়নার নোংরা খাঁচায়্। নারীরা শয্যাদান্,গৃহ সজ্জা আর কুৎসায়্। যুবকেরা বিদ্যা,প্রেম্,নেশা আর উত্তর আধুনিকতার বেড়াজালে। যুবতীরা ভ্রমর বিলাস আর মুঠোফোন বৃত্তে। কিশোরেরা গাছাড়া মিথ্যে অহমিকায়্ ডুবে। কিশোরীরা ছান্দসিক নিতম্ব আর উন্নত বক্ষ ভাবনায়্। বালকেরা কল্পনার স্পাইডার ম্যান বন্দনায়্। বালিকারা বিদেশী সুর আর নৃত্য ধারায়্। শিশুরা পড়ে আছে অবাক বিড়ম্বনায়্।
শুধু বেঁচে ও জেগে আছে, কবি নামীয় কিছু অশুদ্ধ প্রাণ্। যারা কিনা বিকলাঙ্গ সত্বাটাকে, খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ত্যাক্ত করে। অযথাই জাগিয়ে তোলার ব্যার্থ চেষ্টা করে। কাগজ্,কলম আর বেকার সময় ক্ষেপনের সমন্বয়ে, নিজেদের অশুদ্ধ সত্বাটা তুলে ধরে।
তাই বলি সময় থমকে গেছে এখন এখানে। যেমন থমকে আছে নষ্ট ঘড়ির কাটা। তারো আগে থমকে গেছি আমি-আমরা বা তুমি-তোমরা। অথবা থমকে গেছে ষোলো কোটি বিবেক্। একাত্তর থেকে এগারো,চল্লিশ বছরে, বেড়েছে কেবল আমাদের হাত্,পা বয়স আর প্রজনন ক্ষমতা। বাদ বাকী থমকে আছে আত্বা বা বিবেক্।
অশুদ্ধজন কবিদের মতে তাই, আরো একটি যুদ্ধ বা সংগ্রাম প্রয়োজন্। প্রয়োজন আরো একটি সাতচল্লিশ্,বায়ান্ন বা একাত্তর্। প্রয়োজন একটি একুশ্,ছাব্বিশ বা ষোলো।
সেই সাথে প্রয়োজন আরো একটি বিপ্লব বা জাগরন্। কিংবা সহজ ভাষায় একটি বিস্ফোরন।
থমকে থাকা সময় বা বিকলাঙ্গ সত্বা। বাধার দ্বি-মুখী বিন্ধ্যাচল ভাঙতে, আরো কিছু বাধ ভাঙা কবিতার প্রয়োজন্।
একটি রক্তজবা হাতে নিয়ে মা বললেন, আজ বৃষ্টি হবে। ভিজে যাবে সবটুকু সবুজ জমিন। ঘেরুয়া নদীর জল থেকে রক্তবাষ্প উড়ে দেবে জানান, এই মাটিতে আততায়ী রাত নেমেছিল। হায়েনা পিশাচদের উল্লাস কাঁপিয়েছিল এই আকাশ। সূর্যের পরিণত ঘর। মানুষের বিত্ত বিবর। আর লুকিয়ে থাকার সাঁকো খুঁজে শরণার্থী তরুণ-তরুণী গিয়েছিল উত্তরের বাঁকে। অগ্রজ পূর্বসূরীর হাতের লাঠি গর্জে উঠেছিল ‘থামো ঝড়, থামো বজ্র’ এমন আওয়াজে।
সেই প্রভাতে আমি ছিলাম মায়ের বাম হাত ধরা অবুঝ বালক। বালিকা বোনটি কেঁদেছিল,’বাবা ,বাবা ‘-বলে।
বাবা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। একটি গ্রেনেড চার্জ করতে গিয়ে উড়ে গিয়েছিল তার ডান হাত। তাই নিজ ডানহাতটিকে ভয়ে লুকিয়ে রাখতেন আমার মা। আর বলতেন, দেখিস- আমার হাতটা যেন কেউ না দেখে।
তার ভয় ছিল খুব। বাবার হারানো ডানহাতটিকে তিনি মনে করতেন নিজের হাত। বাবার চোখগুলোকে মনে করতেন নিজের চোখ।
সেই প্রভাতে আমার মায়ের নিজস্ব কোনো দৃষ্টি ছিল না। বৃষ্টি আসবে বলে সকল মুক্তিযোদ্ধার দৃষ্টি দিয়ে তিনি তাকিয়েছিলেন আকাশের দিকে।
আর বলেছিলেন, বৃষ্টি আসুক। তবু মুছে যাবে না এই বাংলা থেকে থোকা থোকা রক্তগোলাপের দাগ।