[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১১

মেঘের পালকি
ঋণী তুমি
ড্রিম বয় আমি
শাড়ী পড়ার বয়সে
অপূর্ণ ইচ্ছা তোমার
পূর্ণ করেছি আমি।

কৃষ্ণকলি-
আবার তোমায় বলি
চির নতুন
কিন্তু-
অপূর্ণাঙ্গ জীবন তোমার।

দোষী আমি-
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের সাথে।

তারপরও-
অনিচ্ছুক আমি
আজো তোমায় খুঁজি।
যোগ বিয়োগের ঈদ
মেয়েটি তখনো কেনেনি ঈদের শাড়ী
বাবা বলেছিলো ফিরবে যখন বাড়ি
আনবে সাথে লাল ফিতা লাল চুড়ি
যাবার বেলায় কপালেতে চুমু মেখে
বলেছিলো সে তুই যে আমার জান
মেয়ে বলেছিলো বাবা
তোমার জন্য সদা কাদে মোর প্রান।
বাবা ভাবে
শহরেতে গিয়ে ঈদ তিন দিন রিক্সা চালাবে মেলা
এ সময়ে সব শহরে বাবুদের থাকে বেশ দিল খোলা।
সাথে নিয়ে কিছু চিড়া আর মুড়ি বাবা যায় শহরে,
মেয়ে বসে ভাবে এবারের ঈদ কাটবেই খুশিতে।
দুই দিন যায় তিন দিন যায় বাবাতো আসে না বাড়ি
মেয়ে বসে ভাবে এইবারে ঠিক বাবার সাথে করে দেবে খুব আড়ি।
চার দিন যায় পাচ দিন যায় বাবার খবর নাই
আড়ি ভুলে মেয়ে চিন্তায় পরে কি করি কোথায় যাই।
ছয় দিন পরে খুব সকালে কাঁধে বয়ে এক লাশ
ধীর পায়ে হেটে পুলিশ দারায় তাদের বাড়ির পাশ।
গলা করে ক্ষীন পুলিশ শুধায় এটা কাহার বাড়ি
চঞ্চল চোখে মেয়ে তাকায় আলুথালু তার শাড়ী।
দুই দিন আগে মহা সড়কে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট
এই বডি ছাড়া শাড়ি,চুড়ি ফিতা রয়ে গেছে অবশিষ্ট।
রাখুন এই সব আপনার কাছে শেষ উপার্যনের কেনা
দানবের ঘায়ে মুখমন্ডল তার যায় না মোটেই চেনা।
হাতে নিয়ে চুড়ি শাড়ী নিশ্চুপ মেয়েটি আকাশ পানে চায়
চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরে মৃত বাবার গায়।
*সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাই।

মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১১

তোমার অপেক্ষায়...

অন্যরকম
ভালবাসা প্রিয়র তরে যখন সৎ হয়, হৃদয়ের আরতি যখন সহজ, নিঃষ্পাপ হয়
মিলন হতে তখন প্রিয়র দরবারে যেতে হয় না, তখন ঈশ্বর পর্যন্ত হেটে
বান্দার ঘরে চলে আসেন।
ভালবাসা জানতে হয়,ডাকের ভেতর মিষ্টতা থাকতে হয়
অনেক শব্দই ছাপা হয়, সব কবিতা হয়ে ওঠে না, নারীর রুপে যে পেরেছে অক্ষর
সাজাতে সে-ই কবি, সেই অক্ষরই তখন ধারাপাত ছেড়ে মহাকাব্যর সারি দখল করে।
গতানুগতিক
ঝির ঝির বর্ষণে,ডুকরে গুমরে আর্তনাদি গর্জনে
হৃদয়ের কোনে কোনে কিসের যেন শূন্যতা
মহাকালের দৈন্যতা, বানের জলে ভেসেও পিপার্সাত অপূর্ণতা
কিসের যেন অপূর্ণতা……..
জলে জলে জলাশয়, জলের ভেতর আশ্রয় হৃদয়ের ব্যাথার
রিমঝিম, ঝিরঝির বিলাপি গাঁথার, দিনভর সারারাত
কেন যেন লেখা বাড়ে কারাবালার পাতার, হৃদয়ের ব্যাথার ।
ব্যাথা (দ্বৈত অর্থ)
ছিলে না তুমি অথচ ছিলাম আমি
বোঝ কতটা সহ্য করেছি যাতনা,বোঝ কতটা অপেক্ষায় প্রহর কেটেছে অস্থির
কতটা ক্ষন কেটেছে রক্তাক্ত, কন্টকময়, অনলসম যেভাবে লাভার উপরিভাগ
আমি চেয়েছিলাম, ঘুমে নির্ঘুমে, হৃদয়ের গোপনে কেঁদে কেঁদে লিখেছি কান্না
পথের উপর রেখে পথের আশা, বেসেছি আশা, এই বুঝি তুমি এলে….
একটু কি বলে যেতে পারতে না….?

নীলার ভালবাসা

নীলা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে রুদ্রের জন্য। রুদ্রের ফোন বন্ধ আসছে।
নীলা রুদ্রকে প্রচন্ড ভালবাসে। এত পরিমাণে ভালবাসে যে, সবার সামনে চিৎকার করে বলতে দ্বিধা বোধ করে না, “রুদ্রকে আমি অনেক ভালবাসি।” নীলা অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী। রুদ্র তার সহপাঠী। নীলা জানে না যে, সে রুদ্রকে পাবে কি পাবে না। তবে তার বিশ্বাস সে যেভাবেই হোক রুদ্রকে পেয়েই থাকবে।
২ ঘন্টা পার হয়ে গিয়েছে। নীলার চিন্তা বেড়েই চলেছে। কারণ ২ ঘন্টা আগেও রুদ্র তাকে বলেছে, “আমি আসছি, তুমি একটু অপেক্ষা কর।” নীলার খুব দুঃশ্চিন্তা হচ্ছে।
নীলা(মনে মনে): আমার রুদ্রের কিছু হল না তো। রুদ্র, তুমি একটু তোমার রাগকে সামাল দিতে পারো না।
রুদ্রের রাগের কারণে নীলার দুঃশ্চিন্তা বেশী ছিল। নীলার ফোনের রিং বেজে উঠল। নীলা না দেখেয় ফোন তুলে বলল,
নীলাঃ রুদ্র, তুমি ঠিক আছ তো?
রুদ্রঃ আমি ঠিক আছি। তুমি চিন্তা কর না। তুমি এখন কোথায়?
নীলাঃ যেখানে থাকার কথা।
রুদ্রঃ তুমি থাক। আমি আধা ঘন্টার মধ্যে আসছি।
নীলাঃ তুমি কোথায়?
এটা বলার আগেই রুদ্র ফোন কেটে দিল। সমস্যা ভেবে নীলা আবার ফোন দিল না।
আধা ঘন্টা পার হয়ে গিয়েছে। অস্থির নীলা বার বার ফোন দেখছে, আর তখনই তার ফোন বেজে উঠল।
রুদ্রঃ আমি চলে এসেছি।
নীলা এটা শুনেই ফোন হাতেই রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসল। দ্রুত পদে রুদ্রের আসার পথে এগিয়ে চলছে। রুদ্রকে দেখা মাত্র রাস্তাতেই এমনভাবে তাকে জড়িয়ে ধরল যেন, নীলা তার জীবন ফিরে পেয়েছে। রুদ্র হতভম্ব হয়ে গেছে। নীলা বিড় বিড় করে বলতে লাগল, “তোমার কিছু হয়নি তো। তুমি জানো, আমি কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।” বলে কাঁদতে লাগল।
রুদ্রঃ এই আমার পাগলি, আমার কিছু হয়নি তো। এই দেখো তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন ছাড়ো,
সবাই দেখছে তো। সবাই কি বলবে বল তো?
নীলাঃ যা ইচ্ছে বলুক, তাতে আমার কি? আমি আমার রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে আছি।
রুদ্রঃ ঠিক আছে, আমার পাখিটা। এখন চল কোথাও বসি। পুরো কাহিনী শুনবে না? চেহারা ঠিক কর।
এত কাদেঁ কেউ। আমার পাগলটা।
নীলাঃ ফোন বন্ধ ছিল কেন?
রুদ্রঃ ব্যাটারী শেষের দিকে ছিল, তাই। এত ভয় পাও কেন? আমাকে মেরে ফেলা পরিকল্পনা করছ বুঝি
(ঠাট্টা করতে করতে)।
নীলাঃ আমি কি তা বলছি নাকি। শুধু ইয়ার্কি, ফাজলামি ছাড়া কিছু বুঝে না (মুখের কোণে সামান্য হাসি।)
রুদ্রঃ যাক,এতক্ষণে আমার নীলার মুখে হাসি ফুটেছে। এই হাসিটাই তো আমি দেখতে চাচ্ছিলাম।
এভাবে রুদ্র নীলা মন ভাল করার চেষ্টা করতে থাকল। তাদের মাঝে এমন খুনসুটি লেগেই থাকে। এভাবেই তাদের ভালবাসা এগিয়ে যাচ্ছিল। তাদের ভালবাসা দেখে আশেপাশের মানুষের হিংসা হত।
এক বছর পর
নীলা আর হাসে না। চিৎকার করে কাউকে বলেও না, “আমি তোমাকে ভালবাসি।” সে এখন কাউকে ভালবাসতে পারে না।

আমি বেশ ভলো আছি

আমি বেশ ভালো আছি
নেই আমার সৌন্দর্য্য
নেই কোন ঐশ্বর্য্য
নেই দামী পোশাক
নেই বাড়ি-গাড়ি;
কিছুই নেই আমার
যা দেখেছি তাহার।
সন্তুষ্ট আমি তাতেই,
যা আছে আমার।
তাই আমি বেশ ভালো আছি।

আমি বেশ ভালো আছি
সে আমায় দিয়েছে গাল
জীবন নিয়ে খেলেছে চাল
মেরেছে কত পিঠে
মেরেছে যে শত ঠোটে
দিয়েছে কত যাতনা
যদিও আমার প্রাপ্য ছিল না!
তবুও ক্ষমা করেছি তারে
ভুলে গেছি আজ সে সব।
তাই আমি বেশ ভালো আছি।

আমি বেশ ভালো আছি
সদা রোধ করি আমার ক্রোধ
জাগেনা মনে অহং বোধ
সদা সত্য বলি আমি
সৎ পথে চলি সদা;
সদা সজাগ আমার চেতনা
দূরে ঠেলে দেই অযাচিত ভাবনা
সদা সুস্থ রাখি এ দেহ
প্রফুল্ল রাখি মন।
তাই আমি বেশ ভালো আছি।

আমি বেশ ভালো আছি
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ভেদে
মানুষের দুঃখে কাদে এ হৃদয়
অসহায়ের প্রতি সদা সদয়;
যথাসাধ্য করি মানুষের সেবা
তাই আমি বেশ ভালো আছি।

পুষ্পহীন বসন্ত

আমি বদ্ধ ঘরের কোনে
আপন মনে
বুনে চলি স্বপ্নের জাল
এরই মাঝে বাতাস
বয়ে আনে সুভাস
বয়ে আনে সুমধুর সুর।
আমি ভাবি বসে
উড়ে চলি আকাশে
তবে কি ফুল ফুটেছে আজ!
এসেছে কি ঋতু রাজ?
ফুটেছে ফুল, মোর কাননে!

আমি প্রফুল্ল বদনে
দ্বারখানি পেরিয়ে
ছুটে চলি উঠনে;
বুঝিবা আজ সেথা
বসেছে অলির মেলা
মুখরিত, বিহঙ্গ কুজনে!

হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায়
এ স্বপ্নের জাল ছিড়ে যায়
কেঁদে উঠে মন বিস্বাদে
ছেয়ে যায় নীলিমায়;
আজও ফুল ফোটেনি
এ মুরু বালুকা বেলায়!

আমি ছল ছল চোখে
চেয়ে দেখি দূর পানে
পাপড়ি মেলে, হেসে-খেলে
ফুটেছে ফুল দলে দলে
ফুটেছে ফুল আজ
অন্যের কাননে!
সুমধুর সুর সেথা
কোকিলের কুহুতানে।

আমি আশায় বুক বেধে
ফিরি ঘরের কোনে
আবারও বুনে চলি
মোর স্বপ্নের জাল।
আসবে আবারও ফাগুন
ফুটবে ফুল নিশ্চয়ই হেথায়
শুনবে তোমরা ভ্রমরের গুঞ্জন
মুখরিত হবে এ কানন।

…………………………………
১লা ফাল্গুন, ১৪১৭