[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১১

দৃষ্টিপাত

প্রেম প্রবঞ্চিতকে কী দেয়?

প্রেম আপন গভীরতায় নিজের মধ্যে একটি মোহাবেশ রচনা করে। সেই মোহের দ্বারা যাকে ভালোবাসি আমরা তাকে নিজের মনে মনে মনোমত গঠন করি। যে সৌন্দর্য তার নেই, সে সৌন্দর্য তাতে আরোপ করি। যে গুণ তার নেই, সে গুণ তার কল্পনা করি। সে তো বিধাতার সৃষ্ট কোনো ব্যক্তি নয়, সে আমাদের নিজ মানসোদ্ভূত এক নতুন সৃষ্টি। তাই কুরূপা নারীর জন্য রূপবান, বিত্তবান তরুণেরা যখন সর্বস্ব ত্যাগ করে, অপর লোকেরা অবাক হয়ে ভাবে, “কী আছে ঐ মেয়েতে, কী দেখে ভুললো?” যা আছে তা তো ঐ মেয়েতে নয়– যে ভুলেছে তার বিমুগ্ধ মনের সৃজনশীল কল্পনায়। আছে তার প্রণয়াঞ্জনলিপ্ত নয়নের দৃষ্টিতে। সে যে আপন মনের মাধুরী মিশায়ে তাহারে করেছে রচনা। জগতে মূর্খরাই তো জীবনকে করেছে বিচিত্র; সুখে দুখে অনন্ত মিশ্রিত। যুগে যুগে এই নির্বোধ হতভাগ্যের দল ভুল করেছে, ভালোবেসেছে, তারপর সারা জীবনভোর কেঁদেছে। হৃদয়নিংড়ানো অশ্রুধারায় সংসারকে করেছে রসঘন, পৃথিবীকে করেছে কমনীয়। এদের ভুল, ত্রুটি, বুদ্ধিহীনতা নিয়ে কবি রচনা করেছেন কাব্য, সাধক বেঁধেছেন গানচিত্র, ভাষ্কর পাষাণ-খণ্ডে উৎকীর্ণ করেছেন অপূর্ব সুষমা।
জগতে বুদ্ধিমানেরা করবে চাকরি, বিবাহ, ব্যাংকে জমাবে টাকা, স্যাকরার দোকানে গড়াবে গহনা; স্ত্রী, পুত্র, স্বামী, কন্যা নিয়ে নির্বিঘ্নে জীবন-যাপন করবে সচ্ছন্দ সচ্ছলতায়। তবু মেধাহীনের দল একথা কোনদিনই মানবে না যে, সংসারে যে বঞ্চনা করল, হৃদয় নিয়ে করল ব্যঙ্গ, দুধ বলে দিল পিটুলী– তারই হলো জিত, আর ঠকল সে, যে উপহাসের পরিবর্তে দিল প্রেম। অতি দুর্বল সান্ত্বনা। বুদ্ধি দিয়ে, রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে বলা সহজ–
জীবনের ধন কিছুই যাবে না ফেলা
ধূলায় তাদের যত হোক অবহেলা।

কিন্তু জীবন তো মানুষের সম্পর্ক বিবর্জিত একটা নিছক তর্ক মাত্র নয়। শুধু কথা গেঁথে গেঁথে ছন্দ রচনা করা যায়, জীবন ধারণ করা যায় না।যে নারী, প্রেম তার পক্ষে একটা সাধারণ ঘটনা মাত্র। আবিষ্কার নয়, যেমন পুরুষের কাছে। মেয়েরা স্বভাবত সাবধানী, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর বাঁধে। ছেলেরা স্বভাবতই বেপরোয়া, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর ভাঙ্গে। প্রেম মেয়েদের কাছে একটা প্রয়োজন, সেটা আটপৌরে শাড়ির মতই নিতান্ত সাধারণ। তাতে না আছে উল্লাস, না আছে বিষ্ময়, না আছে উচ্ছ্বলতা। ছেলেদের পক্ষে প্রেম জীবনের দুর্লভ বিলাস, গরীবের ঘরে ঘরে বেনারসী শাড়ির মতো ঐশ্বর্যময়, যে পায় সে অনেক দাম দিয়েই পায়। তাই প্রেমে পড়ে একমাত্র পুরুষেরাই করতে পারে দুরূহ ত্যাগ এবং দুঃসাধ্যসাধন।জগতে যুগে যুগে কিং এডওয়ার্ডেরাই করেছে মিসেস সিম্পসনের জন্য রাজ্য বর্জন, প্রিন্সেস এলিজাবেথরা করেনি কোনো জন, স্মিথ বা ম্যাকেঞ্জির জন্য সামান্য ত্যাগ। বিবাহিতা নারীকে ভালোবেসে সর্বদেশে সর্বকালে আজীবন নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছে একাধিক পুরুষ; পরের স্বামীর প্রেমে পড়ে জীবনে কোনদিন কোনো নারী রয়নি চিরকুমারী।
এমন প্রেমিকের জন্য কোন দিন সন্ধ্যাবেলায় তার কুশল কামনা করে তুলসীমঞ্চে কেউ জ্বালাবে না দীপ, কোন নারী সীমন্তে ধরবে না তার কল্যাণ কামনায় সিদুরচিহ্ন, প্রবাসে অদর্শনবেদনায় কোন চিত্ত হবে না উদাস উতল। রোগশয্যায় ললাটে ঘটবে না কারও উদ্বেগকাতর হস্তের সুখস্পর্শ, কোনো কপোল থেকে গড়িয়ে পড়বে না নয়নের উদ্বেল অশ্রুবিন্দু। সংসার থেকে যেদিন হবে অপসৃত, কোন পীড়িত হৃদয়ে বাজবে না এতটুকু ব্যথা, কোনো মনে রইবে না ক্ষীণতম স্মৃতি।

প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয়না অথচ দহন করে।

সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন বহু কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য পুরুষ।।

বৃষ্টি ঝড়ে বৃষ্টি পরে

বৃষ্টি ঝড়ে বৃষ্টি পরে
বৃষ্টি পরে বুকের কাছে
বৃষ্টি পরে স্মৃতির ঘরে
বৃষ্টি পরে কদম ফুলে
ছোট্টবেলার বৃষ্টি গুলো
কেমন করে যাই যে ভুলে।
বৃষ্টি পাড়ায় থাকতে বলে
মেঘ ঢেকে যায় তোমার চুলে
ঘন মেঘ নেই যে চোখে
তবু দিলে অশ্রু তুলে
কেমন করে যাই যে ভুলে।

এক দিন এক আষাঢ় মাসে
সাবাই যখন বৃষ্টি ধুয়ে শু্দ্ধ হলো
তোমায় তখন ভিজতে দেখি
খুব একাকী গভীর রাতে
কদম গুলো লুটায় পাশে
তখন তুমি একলা খাটে
নয়ন থেকে বৃষ্টি ঝড়ে
বুকের মাঝে।
বৃষ্টি পরে বৃষ্টি ঝড়ে
আমার ঘরে তোমার ঘরে
বৃষ্টি ঝড়ে বৃষ্টি পরে
এখন সকল বৃষ্টি গুলো
শীতল ভীষন, কাপন ধরায়;
ভীজতে গেলে জ্বর এসে যায়
জ্বরের ঘোরে বৃষ্টি দেখি
ছেলেবেলায়।
১১/০৭/২০১১

সুরঞ্জনার জন্য

সুরঞ্জনার জন্য
সুরঞ্জনা কোন সে সূতার টানে
বারে বারে আসো ফিরে
জীবনের ঐ খনে
কোন মোহ আজ তোমায় টানে
যায় কি তাকে কেনা
কেনার জন্য জীবনে আজ
বারুক কিছু দেনা
কোন কথাতে ভুলে থাকো
সময় কিংবা লাজ
সমীকরণ মেঘের মাঝেও
থাকে কিন্তু বাজ
উল্টো ধারার জীবন যখন
খুব জমে যায় মৌ
পুতুল খেলার পুতুল গুলো
হয়না কিন্তু বউ
ফিরে আসার পথটাতে আজ
শ্যাওলা যদি জমে
খুব উচাটন মন কি বলো
মিষ্টি কথায় দমে।

নগ্না পৌর্ণমাসী

নগ্না পৌর্ণমাসী 
জুলা ০৯, ২০১০ | ০৩:৪৯বিকাল
মেঠো পথে চলার কথা ভেবে
হাড্ডিসার মন গুন টেনে চলে
কর্দমাক্ত জীবনে
লোভের শ্বাপদ জীভ লকলক করে
কোন ঘাটে কোন তরী করে বসবাস!
তবুও লোহার বাসর ঘরে নাগ করে নীল দংশন
সাধের লক্ষ্মীনদরকে,
সব্বাই বেহুলা নয়, বনেদি দেয়ালে কেউ কেউ
খুঁজেফেরে ব্যাংকের ডিপোজিট।
আমিও কি ক্ষুধার আগুনে, অজানা অংশ পূরনে
পরকাল ভুলে ইহকালে মত্ত হয়ে
বাঁকে বাঁকে খুঁজি না জীবনের সাতকাহন!
সহসা জ্বালা করা চোখে
পর্যবসিত হতে হতে আজ
ধারানিবদ্ধ ধিঙ্গীপনার ধার্মিকচূড়ামনি।
বনের সাপে নয় মনের শাপের দংশনে
দুই ভাগ হতে হতে ভাবি ভালো ছিলো শ্মশান জীবন,
কেন এ সময়ের হাতে হাত রেখে নির্মল রোদে
জীবন ধুয়ে পক্ষ-বিপক্ষ লাক্ষরাজ
দুই মুখো সাপ হয়ে হাটা ।

তোমার অভিমান গুলো

তোমার অভিমান গুলো
তোমার অভিমান গুলো বড় বেশী ভালোলাগে।
মাঝে মাঝে তাকে গির্জার কোরাস ভেবে
ভুল মনযোগে কাটে সময়;
ঝরে যাওয়া ফুলের পাপড়ি ভেবে
সযতনে তুলে রাখি বইয়ের পাতার ভাজে।
কখনো বা নতুন টাকার মত
আমার ব্যাংকে জমা করে রাখি;
ভবিষ্যতে খরচ করবো ভেবে।
তোমার অভিমান গুলোকে তুমি
আমারই মত তুলে রেখো আমার জন্য,
শুধু মাঝে মধ্যে একটু ঝিলমিল রোদে
তাকে শুকাতে দিও আমাদের জন্য।
এখন আর এর বেশী প্রয়োজন নেই
এখন তুমি বড় বেশী আদ্র
এখন আমি ভিজতে চাই না তোমার অভিমানে
কারন আমি অনৈতিকতাকে বড় বেশী ভয় পাই
সীমা রেখার বাইরে যেতে পারিনা বলেই ।

আমাদের সব কিছু

আমাদের সব কিছু
আমাদের সব সম্ববনায় অসম্ভবের ভার
চেনা জানা সরল পথে জমে আছে ক্ষার।
আমাদের সব নগ্ন ছবি চার দেয়ালের কাছে
আটকে থাকে কাঠের ফ্রেমে যুক্তি বিহীন ছাঁচে।
আমাদের সব দুঃখ গুলো তাঁতীর তাতে বোনা
দিন রাত্রি ঘটাং ঘটাং শব্দ যাবে শোনা।
আমাদের সব ভাবনা গুলো আকাশ কুসুম ভয়ে
জ্বলে থাকে আকাশেতে দূরের তারা হয়ে।
আমাদের সব ভালোবাসা ব্যাংকে ডিপোজিট
কথার ফাঁকে আটকে থাকে শক্ত কোন গিট।
আমাদের সব সুখ গুলো আজ উড়াল পাখির ডানায়
ঘুরতে বের হয় আকাশ নীলে দূরের অজানায়।
আমাদের সব উচ্ছলতা তপ্ত বালুর বুকে
পায়না ভাষা নীরবতায় দু’জনারই মুখে।
আমাদের সব অবহেলা বারো বছর পরে
একই সাথে বসত করে তোমার আমার ঘরে।