[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১২

স্বপ্ন র্শবরী

স্বপ্ন র্শবরী


 কাল রাতে ঘুমো-ঘোরে এল এক প্রণয়পাত্র
 দু’টি প্রাণের ভালবাসায় কেটে গেল রাত্র
 অমাবস্যার রাতে যেন উঠেছিল পূর্নিমার চাঁদ
 উল্লোসিত প্রাণের স্পন্দনে নিঝুম প্রকৃতি করেছিল নিনাদ ।


ভাষা ছিল না দু’টি মুখে, তবু যেন কত কথার কাব্যমালা
 হৃদয়ে হৃদয়ে হলো কত কথা, চোখে রেখে চোখ
 কামনার তটিনীতে তরী হয়ে ভাসছিল চোখের তারা
 উষ্ঞ-বাহুবন্ধনে জড়িয়ে অধরপল্লবে দোল দিল অপার্থিব সুখ ।


প্রণয়ানুরাগে হারিয়ে গেল দু’টি হৃদয় স্বপ্নের ভূবনে
 র্স্বগ যেন নেমে এল ধরায়, হারিয়ে গেলাম নন্দনকাননে
 হৃদয়ে প্রেমের পূরবী, ভালবাসার উপহারে মেঘ-কালো কবরী
 খলনায়কের বেশে উঠল ভোরের রবি, দূর করে দিল স্বপ্ন-শবর্রী ।

রক্ত চোষার জ্বালা

রক্ত চোষার জ্বালা

 পতঙ্গ তুই ছোটই বটে
 ফুলন হল বিশাল
 কামান গোলা নাইবা দাগাই
 তবেই ধরি মশাল।।

ভেজাল ছিল মশাল আমার
 মরলি নাতো তুই
 সারাদিন তাই কাজের শেষে
 একটু এবার শুই।।


 চাইলাম বেশ শোবার আগে
 ঘুমের অনুমতি
 এবার তবে ছেড়েই দে
 কিই বা হবে ক্ষতি।।


হুল বসালি শেষেই তবে
 আমার লোমশ পায়ে
 রোগের বাস হলই এবার
 আমার রক্ত গায়ে।।


 লাভ কি হলো করেই এমন
 ডেঙ্গু দিলি আমায়
 চুষেই নিলি রক্ত যখন
 লেগেই আমার জামায়।।


এর পরে তাই ম্যালেরিয়ার
 জন্য অপেক্ষায়
 একটু যা এখন তবে
 দিচ্ছি, গুড বায়।।

শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১২

নিঃশব্দের স্মৃতি

নিঃশব্দের স্মৃতি


 হাঁটছো তুমি, লোকের চাহুনি
 বাদ পড়েনি আমার নয়ন
 দীর্ঘ কেশে বেশ সেজেছে
 পাশের নরে দিলেম চয়ন।

বেশ সেজেছে রৌদ্র বটে
 ছুটোছুটি যেন বাড়ছে শেষে
 ঘাম বেড়েছে তোমার ঘ্রাণে
 নীল পদ্ম বুকে ক্ষানিক বসে।

এমন তবে, তোমার বলার হীরক
 বকুল ধরেছে, হয়েছে বেশ সাজুনি,
 বেশ দিলেম এমনই কিছু অংশ
 এখনও স্মৃতি, রয়েছে আমার গাঁথুনি।

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১২

নির্বাক যন্ত্রণা

নির্বাক যন্ত্রণা

“বাদাম দেইখা চাইয়া থাকি ই ই ই ই
আমার নি কেউ আসে রে ……..”
সূর্য্য ঢলে পড়েছে পশ্চিম দিগন্তে। কমলা রঙের তির্যক রোদ এসে পড়ছে শিবলীর মুখে। বেড়াবিহীন বারান্দায় বসে কাঠ চেঁচে পুতুল বানাতে বানাতে বারী সিদ্দিকীর “আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানি রে” গানটা গাইছিলো শিবলী। “বাদাম দেইখা চাইয়া থাকি ই ই ই ,আমার নি কেউ আসে রে ……..” কানে যেতেই তিন বছরের অপ্সরী দৌড়ে এলো,
: মামা ! এই নাও দুই টাকা।
ততক্ষণে শিবলীর চোখ মুখ গোল। অবাক হয়ে সে জিজ্ঞাসা করলো,
: টাকা দিয়ে আমি কি করবো!
: বাদাম কিনে খাবে।
: কেন?
: তুমি অন্যের বাদাম দেখে চেয়ে থাকো, এটা ভালো কাজ নয় মামা। লোকে খারাপ বলবে।
এইবার ব্যাপারটা পরিস্কার হয় শিবলীর কাছে। সে আনমনে যে গান গাইতেছিলো, ছোট্ট অপ্সরী সেই শুনেই ধরে নিয়েছে ওর মামা বাদম খাবার জন্য বাদাম দেখে চেয়ে থাকে। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে শিবলীর হাসিতে ফেটে পরাটাই স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু সে হাসলো না। অপ্সরীকে বুকের মধ্যে টেনে নিলো। অপ্সরীর মাথার তালুটা ঠেকে আছে শিবলীর থুঁতনিতে। ওর নরম রেশমের মতো চুলের ভেতর চুমু খেলো শিবলী।
: আচ্ছা মা, এই দুই টাকা তুমি কোথায় পেলে?
: মনে নেই তোমার, কাল বিকেলে আমায় দিয়েছিলে!…. মামা, এই পুতুলটা কার জন্য বানাচ্ছো?
: তাতো জানি না! হতে পারে আমার মায়ের জন্য।
: তোমার মা কই থাকে?
: আমার বুকের মধ্যে থাকে।
: ও ও ও ও
দুজনেই একটু চুপ করে থাকার পর অপ্সরী বলে,
: মামা, আমাকেও একটা পুতুল বানিয়ে দেবে?
: দেবো মা।
আবারও চুপ হয়ে যায় অপ্সরী। মেয়েটার এই এক বৈশিষ্ট্য— একটু কথা বলেই বড় মানুষদের মতো গম্ভীর হয়ে থাকবে কিছুক্ষণ।
: মামা, তোমার মা কে ?
: তুমি ই আমার মা।
: তাই ! তাহলে আমার মা কে? মাকে দেখি না কেন? সে কোথায় থাকে ?
অপ্সরীর মায়াভরা চোখ দু’টোতে একরাশ জিজ্ঞাসা। ওর এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হবার জন্য প্রস্তুত ছিলো না শিবলী। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না, তাই আনমনে বলতে থাকে সে……
: দেখো তো, মা ! প্রায় রাতেই তো তুমি তোমার মাকে দেখো। তোমার মা ঐ আকাশে থাকে। তুমি রাতে যে তারা দেখো না—তাদের মধ্যে যে তারাটা সবচেয়ে বড় আর বেশি ঝিলমিল করে, সে হচ্ছে তোমার মা।
: মা আমার কাছে থাকে না কেন মামা ? আমার যে মার কাছে থাকতে খুব ইচ্ছে করে…
এরপর আর কথা সরে না শিবলীর মুখে । বাকরহিত-র মতো বসে থাকে শিবলী। আর তার স্মৃতিপটে ভেসে উঠতে থাকে অনেক ছবি…অনেক কিছু।
খুব পুতুলের শখ ছিলো শিউলীর। প্রতি বছর বৈশাখী মেলায় আর কিছু না হোক একটা পুতুল সে কিনতোই কিনতো। আর সারা বছরে কতবার যে আবদার করেছে “দাদাভাই, একটা পুতুল বানিয়ে দাও না ! তোমার বানানো পুতুল সবচাইতে সুন্দর হয়।”
শিউলীর শখ আর আবদার পূরণ করতে গিয়েই পুতুল বানাবার কৌশলটা রপ্ত হয়ে গেছে শিবলীর। এখন সে আর কারো আবদারের অপেক্ষায় থাকে না, ইচ্ছে হলেই পুতুল বানায়। বাতাসে শুকনো পাতার মর্মরে যেন সে শুনতে পায় শিউলীর কন্ঠস্বর। বাগানে একটা অচেনা পাখি হঠাৎ ডেকে ওঠে, শিবলীর মনে হয় শিউলী যেন পাখি হয়ে তাকে বলছে, “দাদাভাই! একটা পুতুল বানিয়ে দাও না”। চৈতালি সাঁঝে মাঠ থেকে যখন ভেসে আসে রাখালিয়া বাঁশির সুর, শিবলীর মনে হতে থাকে, শিউলী না জানি কতো আবদার করে যাচ্ছে তার কানে। তাই এখন সে যখন-তখনই পুতুল বানায়, তার বড় আদরের বোনটাকে মনে করে সে কাঠের বুক খুদে বের করে আনে নানা রকম অভিব্যক্তি ভরা পুতুল-মুখ।
অপ্সরীর জন্মের সময় শিউলী ছেড়ে গেছে প্রিয় দাদাভাই শিবলীকে। অপ্সরীর বাবা শিউলীকে ছেড়ে গেছে তারও ছ’মাস আগে। বুঝি অপ্সরীকে পৃথিবীতে পৌঁছে দেবার জন্যই শিউলীর এ ছয়টা মাস এখানে থাকা। স্বামীঅন্তপ্রাণ ছিলো সে, আর অপ্সরীর বাবাও শিউলীকে প্রাণের চাইতে বেশি ভালোবাসতো। সেই ভালোবাসা থেকে শিউলী তাই নিজেকে বেশি দিন দূরে রাখতে পারেনি।
“অপ্সরী” নামটা শিবলীর রাখা। বোনের মৃত্যুর পর আর বিয়ে থা-র কথা মাথায়ই আনেনি শিবলী, অপ্সরীকে বুকে নিয়েই কাটিয়ে দিচ্ছে দিন। অপ্সরীটা দেখতে হয়েছে ঠিক ওর মায়ের মতো…গোলগাল মুখ আর বড় বড় দুইটা চোখ কিন্তু নাকটা বোঁচা। তাই ওকে দেখতে পুতুল পুতুল লাগে। মা পুতুল ভালোবাসতো বলেই পৃতিবীতে একটা পুতুল রেখে গেছে হয় তো। অপ্সরী স্বভাবটাও পেয়েছে মায়ের। বোধ খুব তীক্ষ্ণ ওর, এতটুকুন মেয়ে ! যে কথাটা ওর বুঝবার কথা নয়, তাও সে বুঝে যায় কিভাবে যেন! আর পুতুল বলতেই পাগল। ঘরে কয়েক কুড়ি পুতুল রয়েছে তার, নিজের আর মায়েরগুলো এখন তার সম্পদ। তারপরও আজ বললো, “মামা, আমাকেও একটা পুতুল বানিয়ে দেবে?” এ তার কোনো দিন শেষ না হওয়া আবদার, যেন মায়ের শখের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়ে সে এসেছে পৃথিবীতে; আর এসে সে হয়ে গেছে মামার পৃথিবী।
অনেক কথা, অনেক স্মৃতি ঘুরপাক খাচ্ছে শিবলীর মনে, খুব ওলট-পালট চলছে মনের ভেতর। জল গড়াচ্ছে চোখে। আজ আর পুতুল বানাবার ইচ্ছে নেই শিবলীর। অপ্সরীও যেন বুঝতে পারছে তার মনের অবস্থা। চুপচাপ বসে আছে মামার বুকের সাথে লেগে। সূর্য্যটা ডুবে গেছে আধা, এরই মধ্যে উঠানের কোণের ডালিম গাছের ওদিকে কোথাও বসে ডাকতে শুরু করেছে কয়েকটা ঝিঁঝি পোকা। শিবলীর প্রাণের ভেতর হু হু করে ওঠে একটা ব্যথা। অপ্সরীকে আরও শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে যেন সেই ব্যথাটা চাপা দিতে চাচ্ছে সে।


৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ইং।
[নামকরণঃ মিঃ দক্ষিণ কোরিয়া]

আকাশ নীলের চিঠি ....!!!

আকাশ নীলের চিঠি
.
null
নীল আকাশে মেঘে মেঘে
হিমু আমায় চিঠি লেখে।
বৃষ্টি হবার পরে চিঠি
পাই না খুঁজে ফের,
না পাই, তাতে কী এসে যায়!
যেইটুকু পাই, ঢের।

হিমু আমার বুকের মাঝে
চাঁদটি হয়ে জেগে আছে।
যদিও চাঁদের জোসনাকে পাই –
যায় না ধরে দেখা,
তেমনি আমায় দেয় যে ফাঁকি
হিমুর চিঠির লেখা।

কারও যদি ইচ্ছে থাকে
হাজার লাখো কাজের ফাঁকে
ছোট্ট হলেও একটা চিঠি
যায় না বুঝি লেখা ?
আকাশ-নীলে চেয়ে কি মোর
মিছেই স্বপন দেখা ?


*******************
৪অক্টোবর, ২০০১ ইং

বুধবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১২

আমি যে ভুলে যাওয়ার মতো কেউ নই মিথিলা ..

আমি যে ভুলে যাওয়ার মতো কেউ নই মিথিলা



আমায় মনে পরবে তোমার মিথিলা
আমি যে ভুলে যাওয়ার মতো কেউ নই তোমার জীবনে
আমার ভালবাসার কোন ক্ষয় নেই , শেষ নেই
আমৃত্যু তোমার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হবে আমার নিঘাত প্রেমের দংশনে
চোখের কোন থেকে কাজল গড়িয়ে পরবে নোনা জলের ঢলে মনেরই অজান্তে
আমায় তোমার মনে পরবে , যে ভাবে হারানো অতিত মনে পরে
যে ভাবে মনে পরে জীবনের লেন দেন , পাওয়া না পাওয়া
সীমাহীন চাওয়ার তীব্র বাসনা ...
আমি যে ভুলে যাওয়ার মত কেউ নই তোমার জীবনে ।
আমার ভালবাসা স্বার্থ পরের মত ছিনিয়ে নিবে তোমার সুখের নিদ্রা
তোমাকে অস্থির করে তুলবে রাতের পর রাত
বিছানায় এপাশ ওপাশ করে তুমি শুধু আমায় খুঁজবে
না পাওয়ার যন্ত্রণায় বালিশের বুকে মুখ গুঁজবে তুমি,
দু চোখ থেকে নিরবে ঝরাবে অবিরাম বৃষ্টি ধারা
আমি যে ভুলার মত কেউ নই তোমার জীবনে
জীবনের চলার পথে বল সব কিছু কি ভুলে যাওয়া যায় ?
যখন আমি থাকবনা তোমারি পাশে তখন
কে রাঙাবে তোমার প্রথম সকাল ভোরের স্নান করা রবি কিরণ হয়ে ?
তাজা ফুল তুলে এনে কে ছড়িয়ে দিবে তোমার শিথানে
ভালবেসে কে ভাঙাবে তোমার অলস ঘুম বুকে জড়িয়ে ?
মেঘ কাল চুলে কে বুলাবে হাত সিঁথির পথ ধরে এত আদরে ?
ভেঙ্গে যাবে বুক জানি অজানা সংশয়ে ,মনের গভীরে শুরু হবে জলোচ্ছ্বাস
ভেঙ্গে যাবে চোখের বাঁধ , শুধু শুনবেনা সেদিন কেউ আর হৃদয় ভাঙ্গার আওয়াজ ,
আমি যে ভুলে যাওয়ার মত কেউ নই তোমার জীবনে
আমায় মনে পরবে তোমার জীবনের প্রতিটি বাঁকে ।
অলস দুপুরে কি বল মন বসে প্রেমের কোন গল্পের বই এ
অথবা হৃদয় ভাঙার কোন বিরহী গানের স্বরলিপি তে ?
হারানোর বেদনা তোমাকে তখন কুরে কুরে খাবে
তোমার অনুভুতি গুলো যে আমার জীবনের সাথে গুল্মের মত জরিয়ে আছে
অরণ্য ভালবাসার প্রয়োজন তোমাকে নিঃশেষ করে দিবে
তোমাকে কাঁদাবে মিথিলা , ভীষণ কাঁদাবে আমার নিঘাত ভালবাসা
যে ভাবে আমার দু চোখ তুমি ভাসিয়ে ছিলে অঝোর শ্রাবণে ,
আমি যে ভুলে যাওয়ার মত কেউ নই মিথিলা তোমার জীবনে
আমৃত্যু আমার ভালবাসা তোমাকে কাঁদাবে ।
শেষ বিকেলের গোধূলি এর আবীর রঙ এর মত
তোমার হৃদয় থেকে ঝরে যাবে রক্ত শ্রাবণ
তোমার মনে পরবে তখন কে ছিল তোমার এতটা আপন
কে পেত যন্ত্রণা ফুল তুলতে যেয়ে কাঁটার আঘাতে তুমি ব্যথা পেলে ,
কে সাজাত তোমার নির্জন সন্ধ্যা জোনাকির আলোতে
কে তোমার অধরে ভালবাসা একে দিত আপন অধরের পরষে ,
কে দোলা জাগাত তোমার হৃদয়ের গহীন অরণ্যে এত ভালবেসে
পূর্ণিমা রাতের রুপালি জ্যোৎস্না ভেজা ক্ষণে একদিন
কে ছিল তোমার পাশে ভালবেসে হাত দুটি জড়িয়ে ?
আমার ভালবাসা তোমাকে জীবনের প্রতিটি ক্ষণে কাঁদাবে
যতটা আঘাতে আমার দু চোখ থেকে ঝরে যায় মিথিলা বৃষ্টি নিরবে ।