[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

বুধবার, ১৩ জুন, ২০১২

মধ্য দুপুরে বৃষ্টি



মধ্য দুপুরে বৃষ্টি

মধ্য দুপুরে বৃষ্টি,
বুকফাটা খা খা রৌদ্রে, তৃঞ্চার খানিক বারি যেন।

ইট পাথরের, এই যে ভালোবাসার নগর মোদের,
যখন তাপের দহনে, পুড়ে পুড়ে আবেগ শূন্য নিঃস্ব একা,
সেই মুর্হূতেই ছিন্ন মেঘের অসম বৃষ্টি; নগর ইটের গা ধুয়ে জল পরে চুয়ে চুয়ে
গাছেরা বৃষ্টি পেয়ে ধূসর অঙ্গে সবুজাভ ফিরে পায়,
তালু শুকনো, কাকটার ঠোঁটের শ্রী ফিরে পায়, বৃষ্টির জলে ভিজেছে গলা।

কাঠ বিড়ালটা বকুল গাছ থেকে নামল নীচে, ডাবের ঠোলায় জমানো পানিতে
জিহ্বা ভিজায় এই জ্যৈষ্ঠে, মেঘ শূণ্য আকাশ উড়ে
নীলের বুকটা যেন ছাই রং এর ফেকাসে রং।
বৃষ্টি ঝরে মেঘ ফুরালে, আবার দহন পুড়ছে প্রিয় শহর,
কুঁকড়ে যাওয়া ফুলের দলের গা ধুয়ে বৃষ্টির জল শুকায়।

মধ্য দুপুরে বৃষ্টি,
প্রেমিক যুগল রোদে মাখা বৃষ্টির ডানায় ভিজেছে খানিক,
চড়ুই জুটি বৃষ্টির ফোটা গায়ে মাখে, ভিজতে ভিজতে উড়ে যায়;
বারান্দার কার্নিশে বসে।

১৪১৯@১৬ জ্যৈষ্ঠ,গ্রীষ্মকাল

জ্যৈষ্ঠের ভালবাসা



জ্যৈষ্ঠের ভালবাসা


জ্যৈষ্ঠ খরতাপে বের হওয়া মুস্কিল তবু
আজ আমাকে বেরুতে হবে, যেতে হবে
জিইসি কিংবা লালখান। দুচোখ যেদিকে
যায় সে দিকে নয়, যেতে হবে কেন্দ্রের
দিকে। বৃত্তের মত বিন্দুকে কেন্দ্র করে
ঘুরতে পারব না, পারব না তোমাকে
দূর থেকেই ভালবাসতে। ভালই যখন
বাসি তবে একটু খানি ছুঁয়ে দেখতে
অপরাধ কোথায়? আমার এ কথায়
কামনার দৃষ্টি খুঁজো না। কতখানি নিখাদ
ভালবাসা থাকলে, এমন বাসনা জন্মাতে পারে?


জানি তোমার শাড়ী খুব অপছন্দের, হয়তো
আজকে পরেছ আমাকে সন্তুষ্ট করার মনোবাসনায়,
কিন্তু যাকে ভালোবাসো তাকে সন্তুষ্ট করার
এতো অপচেষ্টা কেন? কখন যে সূর্যটা
অগ্নি আশীর্বাদ দিতে মাথার উপর চলে এলো
একটু টেরও পাই নি। জানি এমন কড়া
রোদে তোমার চোখের চেহারায় পরেছে বোমা।
অযত্নে, অবহেলায় শ্যাওলা ধরেছে তোমার
রূপের বাগানে। চির ধরেছে পলস্তারায়, কিন্তু
তুমি চলে যাও নি। থেকেছ প্রতীক্ষার প্রহর
গুনে। সূর্যের খরতাপকে সহ্য করে যখন
পোঁছালাম, দেখি অপেক্ষাতে কাল গোলাপ।

আমরা তোমার বুকে বাঁচবো, সুখ আর সাচ্ছন্দ্য পানে




আমরা তোমার বুকে বাঁচবো, সুখ আর সাচ্ছন্দ্য পানে

পৃথিবী তুমি নিরব কেন? আজ কিছু বল, তোমার বুকে তোমারই মানুষের সদ্য রক্তঝরে। ঘাস ফুল লতাপাতা, গাছ শুধু চেয়ে দেখবে? কণ্ঠ তুলে বলো কিছু। পৃথিবী তোমার মাটিতে বুনা বীজ, প্রাণ সারা জাগায় হেসে হেসে। লুটেরা ধর্ষকের লেহনে প্রাণ পালিয়ে বাঁচতে পারে না। ঝরা রক্ত চুষে নেয় তোমারই মাটি। অভিশাপ যত ঢেকে রাখে। কালে কালে আর কত ঢাকবে? তোমার বুকে পচন ধরবে জানি একদিন। সেদিন তুমিও বাঁচবে না। অভিমানে হারিয়ে যাবে।
সোঁদা মাটির গন্ধ, চুয়ে চুয়ে যাচ্ছে ক্ষয়ে। বিরান মরু অম্ল-মৃত্তিকায়। হাওয়া যাচ্ছে শুকে। পৃথিবীর গা চুয়ে পরছে নুন। যে গায়ে এক সময় নাভী কস্তুরীর গন্ধ বিলাতো। সে সুবাসে এখন মানুষের রক্তের চিটচিটে গন্ধ। খুঁড়ে খুঁড়ে বেড় করে বন্য শুয়ারের দল। হিংস্র দাঁতাল শুয়ার। কালের জিম্মায় বাঁচে রক্ত চুষে চুষে। আমরা মানুষ তোমার বুকে আজ বড় অসহায়
, আমাদের কলঙ্ক বাঁচাও। সম্ভ্রম আত্মহত্যায় বিবাগী। রক্ত আর রক্তপাত তোমার বুকজুড়ে। আলিঙ্গনে আব্রুহারা তোমার সবুজ বসন।
মৃত্তিকায়, তোমার বুকের পাঁজরের হার ঘেঁসে, বীজ পুঁতেছিনু নতুন চারার সুখ। সেই চারা থেঁতলে গেছে, ছোপ ছোপ তাজা রক্তের পদতলে কলঙ্ক লেপনে। পৃথিবী তুমি মুখ ফেরাও। অন্তত একটা নতুন সবুজ চারা জন্মাও। যে সবুজ বহমান আহ্লাদ, বাতাসে ছড়িয়ে দাও, উল্লাস আর সুখের বাণী। আমরা তোমার বুকে বাঁচবো, সুখ আর সাচ্ছন্দ্য পানে। আর চাই না, রক্তপাত, ধ্বংস আর বিনাশ।
1419@30 জ্যৈষ্ঠ,গ্রীষ্মকাল

সাম্প্রতিক


সাম্প্রতিক

কিছু শব্দের ব্যঞ্জনায় চোখ ফেরাতে পারি না,
কিছু পাওয়া আর না পাওয়ার হতাশাকে
রেখে দেই সব কষ্ট বুকের ভিতরে। বলতে
পারিনা জমানো সব দুঃখ মালা, পারি না
কেঁদে ভুলতে এসব কষ্টের ঘটনা। কিছু
মিথ্যে অভিমান আর বাকিটা ক্ষোভ নিয়ে
বসে থাকি ঘরের এক কোনে। এমন
জীবন কেন হয় মানবের? যেখানে অসহায়
সব কিছু অর্থের নিকটে, মানুষ বন্দী অর্থের
কাছে। পত্রিকা পড়ি না মনের ভুলে, যদিও
পড়ি তবে শুধু খেলা আর বিনোদনের পাতায়
চোখ রাখি সীমাবদ্ধ। কেন আমরা সাধারণ
জনগণ হয়ে গেছি কারো খেলার পুতুল?
রাস্তায় নামতে হয় বড় ভয়। জান না নিয়ে
ফিরতে পারার ভয়, ভয় হাইজ্যাক হবার,
ভয় সড়ক দুর্ঘটনার। এসবের নেই কোন
প্রতিকার। জীবন এখানে বড়ই অনিশ্চিত
আকাঙ্ক্ষাহীন জীবনের নগ্ন প্রতিচ্ছবি।


রাজনৈতিক নেতারা ব্যস্ত ক্ষমতার লোভে,
এই দৌড়ে এখন পাতি দলের নেতারাও
সরাসরি জড়িত। আল্টিমেটামের উপর
আল্টিমেটাম, জনগণের কথা কয় না কেউ।

শেয়ার বাজার আজ বড়ই দুষ্ট, কি করে
বিনিয়োগ করি বল। নৌ মন্ত্রী কেঁদে কয়
ড্রাইভার চিনবে গরু আর ছাগল, মানুষ
চিনার কি দরকার? ১৮ দলে আছে কে কে
কেউ কি বলতে পারবে, ১৪ দলের অবস্থা
আজ বড়ই শোচনীয়। সরকারের বিরুদ্ধে
বললে কথা এখন ফ্রি জেলখানা। ভুলেও
মানুষ করছে না এখন সরকারের সমালোচনা।

আগে হত শুধু খুন সাথে এখন নতুন আইটেম
গুম, আগে লাশ মিলত মর্গে কিংবা রাস্তায়।
এখন আর পাচ্ছে না কেউ লাশের খোঁজ।
সংবাদ পত্র আজ নাকি রাজনৈতিক দলের
মুখপাত্র,এমন জাতীর ভবিষ্যৎ কি তোমরাই
বল? আমি কবি অতি মূর্খ, তাই আছি নিশ্চুপ।

মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০১২

রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না



রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না

রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না

সারা দিনটা পুড়েছে দিন মুনির তাপদাহে। শরীরের রক্তমাংস,চর্বি,ফুসফুস,কিডনি,হৃদ্যন্ত্র,শব্দযন্ত্রসহ যাবতীয় সব কিছু পড়ে ছাই। শুধু হাড্ডি-মজ্জার কিছু অংশ পড়া দাগে এখনও টিকে আছে। বেলা শেষে ধুলায় অযত্নে। ভাবনার আঁকিবুকি খেড়োখাতায়, স্মৃতির স্তুপ যেন নিয়েছে আশ্রয়। সাঁঝে সপ্তা বর্ণা ধুপ শিখা জ্বলে, পুড়ে যাওয়া ছাইয়ে আঁধার ঢাকে। জোনাক বাতি রাতের বান্ধব। দূরে ডেকে উঠে ঐ, স্বপ্ন চেনা সুর। কাজল গাঁয়ে, বিরহী কুকুরের ডাক।

চেনা পথে দিগন্ত হাঁটে। গঞ্জের হাট দুপুর রাতে। এপথে ওপথে জোনাক পাহারায়, স্বপ্নেরা বাড়ি ফিরে।আইল পথে কৃষক জগলু, ঠান্ডা হাওয়া গায়ে মাখে। মাদার ফুলের লাল দল, রাতের ধুলায় গড়াগড়ি খায়। সবে জ্যৈষ্ঠের রাত। আঁধার কনকনে বানে ঘিরে ফেলে। জ্যোত্স্না সঁপিবে শরীর আর একটু পরে।

চেনা স্বপ্ন আজ ধর্ষিতা। লক্ষ নক্ষত্রের চোখ আঁধার ভূ-ভাগে। কাঞ্চনজঙ্ঘা আঁধার মগ্নতায়, ক্ষয়ে যাওয়া বিপন্ন সুখ মাগে। বাড়ন্ত রাতের গভীরতায় ডুবে ডুবে, ধীর লয়ে জ্যোত্স্না তার মুখ তুলে। আঁধার ঘোমটা সরে যায়। চাঁদের যৌবনে রাতের অভিসার। ঘুমের মায়া অন্তিম বিশ্বাস বিলায়, উন্মুখ স্বপ্ন আহ্লাদে। রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না।

1419@29 জ্যৈষ্ঠ,গ্রীষ্মকাল

সুপ্ত আক্ষেপ



সুপ্ত আক্ষেপ
গতকাল দক্ষিনের ঘরটি আবার
খুলে দিলাম, যে ঘরটিতে আগে
থাকতে তুমি।এখন থাকবে আমার
মেয়ে রিমলীর কুকুর। রিমলীর
আবদার ফেলি কি করে বল, শত
হলেও একমাত্র মেয়ে তার উপর
কুকুরটি জার্মান শেফার্ড, প্রভাতে
ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় হাটাহাটি
করা আমার অনেক পুরনো অভ্যাস-
তাতো তুমি ভালো করেই জানো।
হটাৎ তোমার রুমের দিকে চোখ
পরায় এগিয়ে দেখি তোমার কাঠের
পালঙ্কে ঘুমাচ্ছে রিমলীর কুকুরটি।
আসলেই জগতে কোন কিছু শুন্য
থাকে না, কখনো ভাবি নি তোমার
খাটে অন্য কেউ ঘুমাবে, এখন
দেখি অন্য কেউ নয় ঘুমাচ্ছে কুকুর।
অতঃপর সে দখল করে নিলো তোমার
খুব প্রিয় আরাম কেদারাটা।এভাবেই
একে একে সে নিয়ে নিলো তোমার
ভাত খাবার বাসন কোশন যা যা
নিত্য প্রয়োজনীয় আছে সব কিছু।
এসব দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই
মাত্র দু দিনেই তাকে সবাই এভাবে
আপন করে নিল, সে যেন এ
পরিবারের ই একজন গুরুত্বপুর্ন সদস্য
তোমার চেয়েও একটি কুকুরের সম্মান
এতো বেশি, সত্যি অবাক হই আমি।
বারবার একটি কথা তোমার বউ মাকে
জিজ্ঞাস করতে গিয়ে ফিরে আসি সামাজিক
অশান্তির কথা ভেবে কিংবা মেয়েকে
জিজ্ঞাস করি নি ওর মনে আঘাত
হবে বলে, কথাটি হলো তোমার জন্যে
কেন বৃদ্ধাশ্রম নামের অদ্ভুত আয়োজন।