[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

রবিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১২

অ-নামিকা

 

অ-নামিকা

তোমারে বন্দনা করি
স্বপ্ন-সহচরী
লো আমার অনাগত প্রিয়া,
আমার পাওয়ার বুকে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া!
তোমারে বন্দনা করি….
হে আমার মানস-রঙ্গিণী,
অনন্ত-যৌবনা বালা, চিরন্তন বাসনা-সঙ্গিনী!
তোমারে বন্দনা করি….
নাম-নাহি-জানা ওগো আজো-নাহি-আসা!
আমার বন্দনা লহ, লহ ভালবাসা….
গোপণ-চারিণী মোর, লো চির-প্রেয়সী!
সৃষ্টি-দিন হ’তে কাঁদ’ বাসনার অন্তরালে বসি’-
ধরা নাহি দিলে দেহে।
তোমার কল্যাণ-দীপ জ্বলিলে না
দীপ-নেভা বেড়া-দেওয়া গেহে।
অসীমা! এলে না তুমি সীমারেখা-পারে!
স্বপনে পাইয়া তোমা’ স্বপনে হারাই বারে বারে
অরুপা লো! রহি হ’য়ে এলে মনে,
সতী হ’য়ে এলে না ক’ ঘরে।
প্রিয় হ’য়ে এলে প্রেমে,
বধূ হয়ে এলে না অধরে!
দ্রাক্ষা-বুকে রহিলে গোপনে তুমি শিরীন্‌ শরাব,
পেয়ালায় নাহি এলে!-
‘উতারো নেকার’-
হাঁকে মোর দুরন্ত কামনা!
সুদুরিকা! দূরে থাক’-ভালোবাসা-নিকটে এসো না।

তুমি নহ নিভে যাওয়া আলো, নহ শিখা।
তুমি মরীচিকা,
তুমি জ্যোতি।-
জন্ম-জন্মান্তর ধরি’ লোকে-লোকান্তরে তোমা’ করেছি আরতি,
বারে বারে একই জন্মে শতবার করি!
যেখানে দেখেছি রূপ,-করেছি বন্দনা প্রিয়া তোমারেই স্মরি’।
রূপে রূপে, অপরূপা, খুঁজেছি তোমায়,
পবনের যবনিকা যত তুলি তত বেড়ে যায়!
বিরহের কান্না-ধোওয়া তৃপ্ত হিয়া ভরি’
বারে বারে উদিয়াছ ইন্দ্রধনুসমা,
হাওয়া-পরী
প্রিয় মনোরমা!
ধরিতে গিয়োছি-তুমি মিলায়েছ দূর দিগ্বলয়ে
ব্যথা-দেওয়া রাণী মোর, এলে না ক’ কথা কওয়া হ’য়ে।

চির-দূরে থাকা ওগো চির-নাহি-আসা!
তোমারে দেহের তীরে পাবার দুরাশা
গ্রহ হ’তে গ্রহান্তরে ল’য়ে যায় মোরে!
বাসনার বিপুল আগ্রহে-
জন্ম লভি লোকে-লোকান্তরে!
উদ্বেলিত বুকে মোর অতৃপ্ত যৌবন-ক্ষুধা
উদগ্র কামনা,
জন্ম তাই লভি বারে বারে,
না-পাওয়ার করি আরাধনা!….
যা-কিছু সুন্দর হেরি’ ক’রেছি চুম্বন,
যা-কিছু চুম্বন দিয়া ক’রেছি সুন্দর-
সে-সবার মাঝে যেন তব হরষণ
অনুভব করিয়াছি!-ছুঁয়েছি অধর
তিলোত্তমা, তিলে তিলে!
তোমারে যে করেছি চুম্বন
প্রতি তরুণীর ঠোঁটে
প্রকাশ গোপন।

যে কেহ প্রিয়ারে তার চুম্বিয়াছে ঘুম-ভাঙা রাতে,
রাত্রি-জাগা তন্দ্রা-লাগা ঘুম-পাওয়া প্রাতে,
সকলের সাথে আমি চুমিয়াছি তোমা’
সকলের ঠোঁটে যেন, হে নিখিল-প্রিয়া প্রিয়তমা!
তরু, লতা, পশু, পাখী, সকলের কামনার সাথে
আমার কামনা জাগে,-আমি রমি বিশ্ব-কামনাতে!
বঞ্চিত যাহারা প্রেমে, ভুঞ্জে যারা রতি-
সকলের মাঝে আমি-সকলের প্রেমে মোর গতি!
যে-দিন স্রষ্টার বুকে জেগেছিল আদি সৃষ্টি-কাম,
সেই দিন স্রষ্টা সাথে তুমি এলে, আমি আসিলাম।
আমি কাম, তুমি হ’লে রতি,
তরুণ-তরুণী বুকে নিত্য তাই আমাদের অপরূপ গতি!
কী যে তুমি, কী যে নহ, কত ভাবি-কত দিকে চাই!
নামে নামে, অ-নামিকা, তোমারে কি খুঁজিনু বৃথাই?
বৃথাই বাসিনু ভালো? বৃথা সবে ভালোবাসে মোরে?
তুমি ভেবে যারে বুকে চেপে ধরি সে-ই যায় স’রে।
কেন হেন হয়, হায়, কেন লয় মনে-
যারে ভালো বাসিলাম, তারো চেয়ে ভালো কেহ
বাসিছে গোপনে।

সে বুঝি সুন্দরতর-আরো আরো মধু!
আমারি বধূর বুকে হাসো তুমি হ’য়ে নববধূ।
বুকে যারে পাই, হায়,
তারি বুকে তাহারি শয্যায়
নাহি-পাওয়া হ’য়ে তুমি কাঁদ একাকিনী,
ওগো মোর প্রিয়ার সতিনী।….
বারে বারে পাইলাম-বারে বারে মন যেন কহে-
নহে, এ সে নহে!
কুহেলিকা! কোথা তুমি? দেখা পাব কবে?
জন্মেছিলে জন্মিয়াছ কিম্বা জন্ম লবে?
কথা কও, কও কথা প্রিয়া,
হে আমার যুগে-যুগে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া!

কহিবে না কথা তুমি! আজ মনে হয়,
প্রেম সত্য চিরন্তন, প্রেমের পাত্র সে বুঝি চিরন্তন নয়।
জন্ম যার কামনার বীজে
কামনারই মাঝে সে যে বেড়ে যায় কল্পতরু নিজে।
দিকে দিকে শাখা তার করে অভিযান,
ও যেন শুষিয়া নেবে আকাশের যত বায়ু প্রাণ।
আকাশ ঢেকেছে তার পাখা
কামনার সবুজ বলাকা!

প্রেম সত্য, প্রেম-পাত্র বহু-আগণন,
তাই-চাই, বুকে পাই, তবু কেন কেঁদে ওঠে মন।
মদ সত্য, পাত্র সত্য নয়!
যে-পাত্রে ঢালিয়া খাও সেই নেশা হয়!
চির-সহচরী!
এতদিনে পরিচয় পেনু, মরি মরি!
আমারি প্রেমের মাঝে রয়েছ গোপন,
বৃথা আমি খুঁজে মরি’ জন্মে জন্মে করিনু রোদন।
প্রতি রূপে, অপরূপা, ডাক তুমি,
চিনেছি তোমায়,
যাহারে বাসিব ভালো-সে-ই তুমি,
ধরা দেবে তায়!
প্রেম এক, প্রেমিকা সে বহু,
বহু পাত্রে ঢেলে পি’ব সেই প্রেম-
সে শরাব লোহু।
তোমারে করিব পান, অ-নামিকা, শত কামনায়,
ভৃঙ্গারে, গোলাসে কভু, কভু পেয়ালায়!
 

হৃদয়ে প্রেমের দিন

 

হৃদয়ে প্রেমের দিন


 

হৃদয়ে প্রেমের দিন কখন যে শেষ হয় — চিতা শুধু পড়ে থাকে তার,
আমরা জানি না তাহা; — মনে হয় জীবনে যা আছে আজো তাই শালিধান
রূপশালি ধান তাহা… রূপ, প্রেম… এই ভাবি… খোসার মতন নষ্ট ম্লান
একদিন তাহাদের অসারতা ধরা পড়ে, — যখন সবুজ অন্ধকার,
নরম রাত্রির দেশ নদীর জলের গন্ধ কোন এক নবীনাগতার
মুখখানা নিয়ে আসে — মনে হয় কোনোদিন পৃথিবীতে প্রেমের আহ্বান
এমন গভীর করে পেয়েছি কি? প্রেম যে নক্ষত্র আর নক্ষত্রের গান,
প্রাণ যে ব্যাকুল রাত্রি প্রান্তরের গাঢ় নীল অমাবস্যায় –

চলে যায় আকাশের সেই দূর নক্ষত্রের লাল নীল শিখার সন্ধানে,
প্রাণ যে আঁধার রাত্রি আমার এ, — আর তুমি স্বাতীর মতন
রূপের বিচিত্র বাতি নিয়ে এলে, — তাই প্রেম ধুলায় কাঁটায় যেইখানে
মৃত হয়ে পড়ে ছিল পৃথিবীর শূণ্য পথে সে গভীর শিহরণ,
তুমি সখী, ডুবে যাবে মুহূর্তেই রোমহর্ষে — অনিবার অরুণের ম্লানে
জানি আমি; প্রেম যে তবুও প্রেম; স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে রবে, বাঁচিতে সে জানে।

শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১২

কে তুমি বিনোদিনী


কে তুমি বিনোদিনী



কে তুমি বিনোদিনী
আজিম হোসেন আকাশ
কাব্যগ্রন্থ-তুমিহীনা সারাবেলা
কে তুমি বিনোদিনী
এত রূপ শোভায়,
আমারই মন মোহিনী।
কাছে এসো ধরা দাও
বিনোদিত মনে,
আমি এক বিন্দু ভালবাসা
দেব তোমার প্রানে।
বিপন্ন হৃদয়ে আর কত রাত
একা একা জেগে থাকা,
তুমি আসনি বলে আজো
মম হৃদয় পুরোটাই ফাঁকা।
বিবর্ণ মন দিতে পারে যতটা
আমি দেব তোমায় ততটা সুখ,
তমসার নিগূঢ় রজনীতে শতবার
ভেসে উঠে তোমারই চাঁদ মুখ।

ফেরার জন্য আমি আসিনি ..


ফেরার জন্য আমি আসিনি


চন্দ্রের চিবুক বেয়ে নামছিলো শব্দের ধারা
ঘুমন্ত বৃক্ষের বুক ঘেঁষে জেগে আছে নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাস
পৃথিবীর শরীরে আজ বড্ড অসুখ, জরা
কবিতার বিদীর্ণ খাতা বুকে চেপে স্বপ্নরা খুঁজে নেয় আপন নিবাস।
শব্দরা খানিক ক্ষুব্ধ বিক্ষুব্ধ
বৃক্ষের স্পন্দনে ফিরে আসে দূরে সরে যাওয়া নিগূঢ় কষ্ট
চন্দ্রহারে স্পষ্ট হয়ে উঠে বিলুপ্ত কাব্যের এক একটি ছন্দ
আমি হাত বাড়িয়ে আগলে নিতে যাই দু’হাতের করতলে
সুখ নয়
আনন্দ নয়; দু হাত পূর্ণ হয়ে যায় শীতল অশ্রু জলে-
ফেরার জন্য আমি আসিনি
ফিরিয়েই তবে ফিরবো যা কিছু আজ হারিয়েছি
এতদিনের পূজার আসর
সাজিয়ে যাবো আগামীদিনের পবিত্র বাসর
স্বপ্নের অধিকারেই সাজাবো স্বপ্নিল পৃথিবী
শব্দের অধিকারেই আমি হয়ে যাবো কালজয়ী কবি।
2upssh2

যদি কেউ



যদি কেউ
 

তোমাকে ছেড়ে যেতে চায়...
 তবে তাকে যেতে দাও......!!
 তোমার নিয়তি কখনোই তার
 সাথে বাঁধা নয়...
 যে তোমাকে ছেড়ে চলে যায়....!!
 কারো চলে যাওয়ার অর্থ
 এই নয় যে.........
 তোমার জীবনের এখানেই সমাপ্তি...
 তোমার গল্পে তার অংশের
 সমাপ্তি ঘটেছে মাত্র...
 আর কারো জন্য
 তোমার গল্পটা কখনোই
 থেমে থাকবে না..........!!!♥

শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১২

আমি সেই সমাজ থেকে বলছি





আমি সেই সমাজ থেকে বলছি



আমি সেই সমাজ থেকে বলছি
যেথায় আধুনিকতার খোলসে উলঙ্গ বেহায়াপনা
ধর্মনিরপেক্ষতার আদলে ধর্মহীনতা
প্রত্যহ স্বাগত জানাবে তোমায়।


আমি সেই সমাজের কথা বলছি
যেথা নোংরা সংস্কৃতির অবাধ অবগাহন
জীবন সত্ত্বাকে পরিণত করে
বিসর্জিত বিদ্রোহী সত্ত্বায়।


আমি সেই সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরছি
যেথা অভিজাত মাতালের অট্টহাসি
আর বিকৃত লালসার স্ফূর্তির আড়ালে
বিলীন হয়ে যায় শোষিতের আহাজারি।


আমি সেই সমাজের বার্তা ঘোষণা করছি
যেথায় আত্ন-স্বাধীনতার মিথ্যে শ্লোগানে
পরাধীণতার অদৃশ্য শেকলে
শৃঙ্খলিত করা হবে তোমায়।