[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১২

বন্ধুত্ব


এপ্রিল ২৭, ২০১২

অনলাইনে বন্ধুত্ব— ব্যাপারটা একদম পছন্দ ছিলনা আমার। এক রাতে হঠাৎ করেই ছেলেটার সাথে অনেক কথা শেয়ার করে ফেললাম , কেন যেন মনে হছিল, সে আমার খুব ভাল বন্ধু হতে পারবে। আর হয়েছিলও তাই। প্রায় তিন ঘন্টা চ্যাট করার পর তাকে আমি লিখলাম , “can I call you TUMI?” আমাকে অবাক করে দিয়ে সে লিখল, “না,তুমি না ‘তুই’!” ব্যাস,সেই থেকে আমাদের বন্ধুত্বের শুরু।
আমি ব…ই পড়তে ভীষণ ভালোবাসি, পশ্চিম বাংলার লেখকদের লেখার সাথে যথেষ্ঠ পরিচয় থাকলেও, দেশীয় লেখকদের বই খুব কমই পড়া হয়েছিল আমার। কারণ, আশেপাশের দোকানগুলোতে পশ্চিম বঙ্গের ফটোকপি বইগুলো রাখা হয়, যা দামে সস্তা আর এগুলোর ক্রেতাও তাই বেশি। এই কথাগুলো বন্ধুকে জানাতেই সে ঢকার নীল ক্ষেত,আজিজ মার্কেট আর নিউ মার্কেট ঘুরে বেশ কিছু লিটল ম্যাগাজিন আর দেশীয় লেখকদের বই কিনে পাঠাল। অস্বীকার করবোনা, লিটল ম্যাগাজিনের সাথে সেটাই ছিল আমার প্রথম পরিচয়! আর তা সম্ভব হল আমার এই অনলাইন বন্ধুটির মাধ্যমেই।
বন্ধুটা অনেক স্বেচ্ছা সেবামূলক কর্মকান্ডে অংশ নিত দেখে অনেক ভাল লাগতো, ইচ্ছে করত, আমিও অংশ নিই। প্রতি মাসের পাঁচ তারিখে সে মনে করিয়ে দিত, ‘ আজ আমাদের বন্ধুত্বের ২ মাস, কিংবা ৪ মাস পূর্ণ হল!” অথচ আমার একদমই মনে থাকতনা কবে ৫ তারিখ আসে,আবার চলেও যায়। একদিন শুনতে পেলাম সে আর তার মামনি দেশের বাইরে চলে যাছে। প্রথমে কথাটা হেসেই উড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু একদিন সত্যিই বন্ধুটা ভিসা পেয়ে গেল। সেদিন কেন যেন আচমকা চোখ দিয়ে জল বের হয়ে এল! আর সেদিনই বুঝতে পারলাম আমি তাকে বন্ধুত্বের খুব গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসিয়ে ফেলেছি, যা আগে বুঝিনি!
আমাদের মাঝে ঝগড়া হত প্রচুর, একজন আর একজনকে সবসময় খোঁচা মেরে কথা বলতাম। ফেসবুকে কোন গ্রুপে কিংবা ব্লগারদের আড্ডায় আমাদের ঝগড়াটা ছিল সবার কাছে বেশ উপভোগ্য ব্যাপার, অনেকে আবার বিরক্তও হয়ে যেতেন। বন্ধু চিন্তায় ছিল, বিদেশে চলে গেলে তার সংগ্রহের গল্পের বইগুলোর কী হবে? যেহেতু আমি প্রচুর গল্পের বই পড়ি তাই সে আমাকে তার অর্ধেকেরও বেশি বই দিয়ে দেয়! কেউ কোন কিছু গিফট করলে ভদ্রতাবশত আমরাও তাকে কিছু উপহার দিতে চেষ্টা করি, কিন্তু বই আমি এত্ত ভালোবাসি আর ব্যাপারটা এতই অপ্রত্যাশিত ছিল আমার কাছে যে বন্ধুকে এর বদলে কী দেয়া যায় কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলামনা। বইগুলো আমার কাছে এত দামী যে এগুলোর বদলে সামান্য একবেলা ফাস্টফুড খাইয়ে কিংবা কোন শো পিস উপহার দিয়ে তাকে ছোট করতে মন চাইছিলনা।
জানতাম আর দেখা হবে না আমাদের, আর তাই এমন ভাব করতে লাগলাম আমি আর মামুন, যেন আমরা খুবই আনন্দিত, যেন কোন বন্ধু বিদেশে চলে যাওয়া খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা! এটা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করার কোন মানে থাকতে পারেনা! যদিও মন খুব খারাপ ছিল এবং তার দিকে চোখ তুলে তাকাতেও পারছিলাম্ না, কারণ তাকালেই হয়তো কেঁদে দিব একগাদা ভীড়ের মাঝেই! যাকে চলে যেতেই হবে তাকে আর শুধু শুধু কষ্ট দিয়ে কী লাভ?
একদিন বন্ধুটা চলেও গেল দেশের বাইরে, সেটা মার্চ মাসের কোন এক দিনে। জানতাম,ফেসবুকে ঠিকই যোগাযোগ থাকবে,শুধু অভ্যাসবশত যখন তখন তাকে খেজুড়ে আলাপ করার জন্য ফোন দিতে বলতে পারবোনা, তামিম পরপর দুটো ছক্কা মারলে সাথে সাথেই মেসেজ দিয়ে আমার আনন্দানুভূতিটা তাকে জানাতে পারবোনা। মার্চের ৫ তারিখ চলে এল, ফেসবুকের সামনে বসে ছিলাম, এই বুঝি বন্ধুটা বলবে, আজ আমাদের বন্ধুত্বের ‘এত’ মাস হল। কিন্তু না,কারো কোন সাড়াশব্দই পেলাম না। বিদেশে গিয়ে মাত্র ২ দিনেই ভুলে গেল সবকিছু? হতাশ হয়ে ঘুমিয়ে গেলাম, পরদিন সকালে উঠে ফেসবুক খুলতেই ইনবক্স এ দেখতে পেলাম বন্ধুর মেসেজ, “দোস্ত, আজ আমাদের বন্ধুত্বের সাত মাস পূর্ণ হল!” আরে! তাইতো! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমার বন্ধুটা আমেরিকায় যেয়ে আমার সময় থেকে এখন ১০ ঘন্টা পিছিয়ে আছে, আর তাই এই সামান্য দেরী হল মেসেজ পাঠাতে…। আর আমি কী ভাবছিলাম!!

বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১২

সে আমার বন্ধু ছিল



এপ্রিল২৬, ২০১২

মোবাইল ফোনটা বেজেই চলেছে তো বেজেই চলেছে। উফ! অসহ্য! আর কত জ্বালাবে আমাকে ওই ছেলেটা? সহ্যেরও তো একটা সীমা থাকে। বার বার লাইন কেটে দেয়ার পরও সমানে কল দিয়ে যাচ্ছে। এমন নাছোড়বান্দা জীবনে আর দ্বিতীয়টি দেখি নাই।
বাধ্য হয়ে অবশেষে ফোনটা রিসিভ করলাম। ‘হ্যালো’।ও প্রান্ত থেকে ভেসে এল জুয়েলের গলা, ‘হ্যালো শর্মি, আমার মনটা আজ ভাল নেই রে’। তোমার মন ভাল নাই তো আমার কি? যার তার মন ভাল করার চাকরি নিয়েছি নাকি আমি? আজব! কথাগুলো মনে মনে বললেও মুখ ফুটে ওকে বলতে পারলাম না। দাঁতে দাঁত চেপে বললাম, ‘আমি একটু ব্যস্ত আছি ভাইয়া’। ওপাশ থেকে জুয়েলের দী্র্ঘ নিঃশ্বাস পতনের শব্দ শুনলেও পাত্তা দিলাম না। সে বলল, ‘ তুই তো এখন সারাক্ষণই ব্যস্ত থাকিস। আচ্ছা ফ্রি হলে ফোন দিস তাহলে’।
ছেলের কথা শুনে বিরক্তি যেন চরমে উঠল। চেপে চেপে বললাম, ‘আমার ব্যালেন্স শেষ ভাইয়া’। কেটে দিলাম কলটা। আহ, শান্তি! যাক বাবা, অন্তত আধা বেলার জন্যে নিশ্চিন্ত থাকা যাবে এই আপদ থেকে। অবশ্য জুয়েল নামের এ আপদটাকে একসময় আমিই ডেকে এনেছিলাম আমার জীবনে!
কুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর থেকে প্রচন্ড ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম আমি। কারণ আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমি বুয়েটে পড়ব। এখানে নতুন কোন বন্ধু তো হয়ইনি উলটো স্কুল-কলেজের বন্ধুদের সাথেও এক এক করে দূরত্ব বাড়তে লাগল। আমার প্রেমিক ইমনকে নিয়েও সন্দেহ করা শুরু করলাম! নষ্ট হতে লাগল ওর সাথে আমার সম্পর্ক। গান পাগল আমি গান শোনা বন্ধ করলাম, পড়ার বই এর ফাঁকে ফাঁকে গল্পের বই পড়াও ছেড়ে দিলাম। একসময়কার মেধাবী স্টুডেন্ট আমি পড়াশোনাতেও লাড্ডু পেতে থাকলাম! আসক্তি জন্মাল মিগ৩৩ এর প্রতি। দিন নেই,রাত নেই সারাক্ষণ শুধু মোবাইল টেপাটেপি করতাম। ‘মিগ’ এর মত ভার্চুয়াল জীবন হয়ে গেল আমার কাছে বাস্তব! মিগ এর তথাকথিত বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারি,তাদের সুখে হাসি আর তাদের দুঃখে কেঁদে ফিরি! এতদিন জানতাম হতাশ মানুষ drug addicted হয়ে যায়। কিন্তু আমি দিন দিন পরিণত হতে লাগলাম mig addicted এ!!
এমনি এক মুহূর্তে জুয়েলের সাথে আমার মিগ এ পরিচয় হল। ওর কাছে খুলে বললাম আমার অতীতের উজ্জ্বল দিনগুলোর স্মৃতি, বর্তমানের অন্ধকারময় জীবনের কথা। সব শুনে জুয়েল আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এল। ওকে আমার ফোন নাম্বার দিলাম। এভাবে গড়ে উঠল আমাদের মাঝে বন্ধুত্ব। ‘তোর আসলে বন্ধুর চেয়ে একজন care taker এর দরকার বেশি,বুঝলি’? জুয়েলের কথা শুনে হাসলাম আমি। ‘তাহলে তুমি আমার care taker হয়ে যাও ভাইয়া’, বায়না ধরলাম ছোট বাচচাদের মত।জুয়েল আমার বন্ধু বা care taker হতে রাজী হল। সেই সাথে জানিয়ে দিল তার জীবনের কিছু সীমাবদ্ধতার কথা— পরবর্তী সপ্তাহ থেকে তার মেডিকেল কলেজে ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষা শুরু। তার একজন প্রেমিকা আছে, তাই আমাকে যে সে সবসময় সময় দিতে পারবে , এমন কোন প্রতিশ্রুতি সে দিতে পারছেনা। আমি সানন্দে রাজী হলাম তার শর্তগুলো শুনে। আসলে ঐ সময়টায় খুব ভাল একজন বন্ধু দরকার ছিল আমার, যে কিনা আমাকে প্রতিনিয়ত guide করে আমার বিশৃংখল জীবনটাতে শৃংখলা এনে দিতে পারবে।
‘ ভাইয়া আমি আমার ২ বছর আগের জীবনটা ফিরে পেতে চাই’,আমার এরকম কথা শুনে জুয়েল আমাকে আশ্বস্ত করল, ‘ইনশাল্লাহ ফিরে পাবি আপু। শুধু আমি যেভাবে বলব সেভাবে কাজ করে যা। দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে’। জুয়েল প্রথমেই আমার জন্য যা করল তা হল আমার জীবন থেকে ও মিগ৩৩ কে অনেক দূরে পাঠিয়ে দিল। বলল, ‘একা একা লাগলে আমাকে কল দিবি।কিন্তু মিগ এ ঢুকবিনা খবরদার’। সেদিনই মোবাইল থেকে মিগ ফোল্ডার মুছে দিলাম। সকাল নেই ,বিকেল নেই কলেজে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বলতে লাগলাম আমার নতুন বন্ধুকে। যে আমি আগে মাসে ৫০ টাকাও রিচার্জ করতাম কিনা সন্দেহ,সেই আমি এখন দিনে ৫০ টাকা শেষ করে ফেলি ভাইয়াকে ফোন করতে যেয়ে!
কিন্তু একদিন কল করার পর পরই জুয়েল ভাইয়া বলল, ‘ঐ পাগলী, ফোনটা রাখতো। রিয়া waiting এ আছে,এখন কল রিসিভ না করলে আমাকে আবার বকবে,’ ফোনটা কেটে দিতেই চোখ ভরে গেল জলে! আমার চেয়ে ঐ প্রেমিকা রিয়াই তাহলে তোমার কাছে অনেক বড় তাইনা? কেন জানি খুব হিংসা হচ্ছিল রিয়া নামের অচেনা মেয়েটিকে। এক বিকেলে জুয়েল বলল, ‘ শোন,এখন থেকে প্রতিদিন এক ঘন্টা করে তোর প্রিয় গানগুলো আবার আগের মত করে শুনবি,বুঝলি?’ ওর কথামত আমি আবারও গান পাগল হয়ে উঠলাম! একদিন ভোরবেলা কল দিয়ে বলল, ‘ কিরে,ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সকালটা মাটি করছিস কেন? নামাজ পড়ে পড়াশোনা করতে বস,যা’।সেই থেকে খুব ভোর থাকতেই ঘুম ভেঙ্গে যেত আমার! ‘ভাইয়া আমার না ভার্সিটিতে কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাই জান?’ কথাটা বলতেই জুয়েল বলে উঠল, ‘বন্ধু পাওয়ার জন্য আগে নিজেকে sacrifice করতে শেখা লাগে। দেখবি তখন তোর বন্ধুর অভাব হবে না’। ভাইয়ার কথা শুনে চলতেই ঠিকই কয়েকদিন পর আমার খুব ভাল একটা friend circle গড়ে উঠল!
একদিন সন্ধ্যেবেলায় জুয়েলকে কল দিচ্ছি কিন্তু ও বারবার লাইন কেটে দিতে লাগল। আধা ঘন্টা পর ফোন ধরতেই এক রাশ অভিমান ঝরে পড়ল আমার কন্ঠ বেয়ে, ‘কি ব্যাপার ফোন কেটে দিচ্ছো কেন?’ জুয়েল কৈফিয়ত দিল, ‘sorry আপু,রুমমেটের কাছ থেকে পড়া বুঝে নিচ্ছিলাম রে’। সে আমাকে কখনই বুঝতে দেয়নি যে সে কতটা টেনশন এ আছে তার পরীক্ষা নিয়ে। ওর পরীক্ষার পুরা ২ টা মাস সে আমার সাথে কথা বলেছে কোন বিরক্তি প্রকাশ করা ছাড়াই,আমাকে guide করেছে। ইমনের সাথে আমার দূরত্বের কথা শুনে ভাইয়া বলল, ‘ইমন তোর জন্য কি করেনি সেগুলো না ভেবে,কি করেছে সেগুলা আগে চিন্তা করে দ্যাখ’। বললাম, ‘ইমন তেমন কিছুই করেনি।তবে পরীক্ষার সময় ও নিজের পরা বাদ দিয়ে আমাকে পড়িয়ে পরীক্ষার হলে পাঠাতেই বেশি ব্যস্ত থাকত’। এভাবে ভেবে ভেবে অনেক কিছুই বের করলাম,যা ইমন আমাকে ভালবাসে বলেই করে। ধীরে ধীরে ইমনের উপর থেকে আমার করা অভিযোগগুলো কমতে লাগল। আমি যেন আবারও নতুন করে ইমনের প্রেমে পড়লাম!
ছোটবেলায় টুকটাক লেখালেখি করতাম। জুয়েলের উৎসাহে লেখালেখি আবারও শুরু করে দিলাম। পাঠাতে লাগলাম পত্র-পত্রিকাগুলোতে।আর কি আশ্চর্য সেগুলা এক এক করে ছাপাও হতে থাকল! আস্তে আস্তে মাস দুয়েক পর বুঝতে পারলাম আমি আমার হারানো জীবনটা ফিরে পেয়েছি।চারপাশে বন্ধুর সমারোহ, প্রেমিকের ভালবাসা,পড়াশোনায় ভাল ফলাফল,লেখালেখি,গান আর গল্পের বই নিয়ে সাজানো সেই হাসি-খুশি প্রাণ-চঞ্চল শর্মিকে নিজের মাঝে খুঁজে পাচ্ছি আমি!
বন্ধু, প্রেম আর পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় জুয়েলকে খুব একটা ফোন দেয়া হতনা। আগে যেখানে দিনে ৬-৭ বার ফোন দিতাম,এখন ওর সাথে আমার কথাই হয় ৫-৬ দিন পর পর! দিন দশেক আগে সে জানাল, রিয়ার সাথে ইদানিং নাকি ওর সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছেনা। ভাল না গেলে আমার কি করার আছে,আজব তো, আমাকে কেন ফোন করে এসব বলা হচ্ছে? খেয়ে দেয়ে আর কোন কাজ নাই নাকি ওর? গত সপ্তাহে জানাল,তার রেজাল্ট বেরিয়েছে এবং ১ টা বিষয়ে নাকি খারাপও করেছে, ২ মাস পর আবার সেই পরীক্ষাটা দিয়ে তবেই জুয়েল MBBS পাশ করতে পারবে। কিন্তু এসব কথা আমাকে বলে কি লাভ বুঝলাম না। আমি কি ওর হয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে আসব নাকি?সামনে আমারো পরীক্ষা, লেখালেখি নিয়েও ভীষণ ব্যস্ততা। এর মাঝে এই ছেলের যন্ত্রণা সহ্য করতে কষ্ট হচ্ছে আমার খুব। এখন আমার মনের কথা শোনার জন্য ইমন আছে,উৎসাহিত করার জন্য আছে প্রিয়াংকা,তুলি,মানস,রবি,তারিন এর মত বন্ধুরা। কোথাকার কোন এক জুয়েল,যাকে কোনদিন দেখিনি,যার সম্পর্কে কিছু জানিনা,তার জন্য ফালতু কাজে সময় নষ্ট করার মত সময় আমার হাতে নেই এখন!
আবারও মোবাইলটা বাজছে! নাহ।এবার দেখি সিম কার্ডটা বদল করতেই হবে। প্রচন্ড রাগে মোবাইল থেকে খুলে ফেললাম সিমটা। আঙ্গুলের সর্বশক্তি প্রয়োগে ভেঙ্গে ২ টুকরো করে ফেললাম জুয়েলের সাথে আমার সম্পর্ক,আমাদের ৩ মাসের বন্ধুত্ব!!

রবিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১২

পাঞ্জেরি

 

পাঞ্জেরি

 
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি? 
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে? 
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে? 
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে; 
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি। 

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি? 
দীঘল রাতের শ্রান্তসফর শেষে 
কোন দরিয়ার কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে? 
এ কী ঘন-সিয়া জিন্দেগানীর বা’ব 
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা’ব 
অস্ফুট হয়ে ক্রমে ডুবে যায় জীবনের জয়ভেরী। 
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে; 
সম্মুখে শুধু অসীম কুয়াশা হেরি। 

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি? 
বন্দরে বসে যাত্রীরা দিন গোনে, 
বুঝি মৌসুমী হাওয়ায় মোদের জাহাজের ধ্বনি শোনে,
বুঝি কুয়াশায়, জোছনা- মায়ায় জাহাজের পাল দেখে। 
আহা, পেরেশান মুসাফির দল।
দরিয়া কিনারে জাগে তক্দিরে 
নিরাশায় ছবি এঁকে!
পথহারা এই দরিয়া- সোঁতারা ঘুরে 
চলেছি কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে?
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে; 
একাকী রাতের গান জুলমাত হেরি! 

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
শুধু গাফলতে শুধু খেয়ালের ভুলে, 
দরিয়া- অথই ভ্রান্তি- নিয়াছি ভুলে, 
আমাদেরি ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি 
দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী। 
মোদের খেলায় ধুলায় লুটায়ে পড়ি। 
কেটেছে তাদের দুর্ভাগ্যের বিস্বাদ শর্বরী। 
সওদাগরের দল মাঝে মোরা ওঠায়েছি আহাজারি, 
ঘরে ঘরে ওঠে ক্রন্দনধ্বনি আওয়াজ শুনছি তারি। 
ওকি বাতাসের হাহাকার,- ও কি 
রোনাজারি ক্ষুধিতের! 
ও কি দরিয়ার গর্জন,- ও কি বেদনা মজলুমের! 
ও কি ধাতুর পাঁজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরী। 

পাঞ্জেরি! 
জাগো বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি, 
জাগো অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি! 
দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!!

অভিশাপ

 

অভিশাপ

 
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে,
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে -
          বুঝবে সেদিন বুঝবে!
     ছবি আমার বুকে বেঁধে
     পাগল হয়ে কেঁদে কেঁদে
     ফিরবে মরু কানন গিরি,
     সাগর আকাশ বাতাস চিরি'
          যেদিন আমায় খুঁজবে -
          বুঝবে সেদিন বুঝবে!

স্বপন ভেঙে নিশুত্ রাতে জাগবে হঠাৎ চমকে,
কাহার যেন চেনা-ছোওয়ায় উঠবে ও-বুক ছমকে, -
          জাগবে হঠাৎ চমকে!
     ভাববে বুঝি আমিই এসে
     ব'সনু বুকের কোলটি ঘেঁষে,
     ধরতে গিয়ে দেখবে যখন
     শূন্য শয্যা! মিথ্যা স্বপন!
          বেদনাতে চোখ বুজবে -
          বুঝবে সেদিন বুঝবে!

গাইতে ব'সে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না,
ব'লবে সবাই - "সেই যে পথিক, তার শেখানো গান না?"
          আসবে ভেঙে কান্না!
     প'ড়বে মনে আমার সোহাগ,
     কন্ঠে তোমার কাঁদবে বেহাগ!
     প'ড়বে মনে অনেক ফাঁকি
     অশ্রু-হারা কঠিন আঁখি
          ঘন ঘন মুছবে -
          বুঝবে সেদিন বুঝবে!

আবার যেদিন শিউলি ফুটে ভ'রবে তোমার অঙ্গন,
তুলতে সে-ফুল গাঁথতে মালা কাঁপবে তোমার কঙ্কণ -
          কাঁদবে কুটীর-অঙ্গন!
     শিউলি ঢাকা মোর সমাধি
     প'ড়বে মনে, উঠবে কাঁদি'!
     বুকের মালা ক'রবে জ্বালা
     চোখের জলে সেদিন বালা
          মুখের হাসি ঘুচবে -
          বুঝবে সেদিন বুঝবে!

অ-নামিকা

 

অ-নামিকা

তোমারে বন্দনা করি
স্বপ্ন-সহচরী
লো আমার অনাগত প্রিয়া,
আমার পাওয়ার বুকে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া!
তোমারে বন্দনা করি….
হে আমার মানস-রঙ্গিণী,
অনন্ত-যৌবনা বালা, চিরন্তন বাসনা-সঙ্গিনী!
তোমারে বন্দনা করি….
নাম-নাহি-জানা ওগো আজো-নাহি-আসা!
আমার বন্দনা লহ, লহ ভালবাসা….
গোপণ-চারিণী মোর, লো চির-প্রেয়সী!
সৃষ্টি-দিন হ’তে কাঁদ’ বাসনার অন্তরালে বসি’-
ধরা নাহি দিলে দেহে।
তোমার কল্যাণ-দীপ জ্বলিলে না
দীপ-নেভা বেড়া-দেওয়া গেহে।
অসীমা! এলে না তুমি সীমারেখা-পারে!
স্বপনে পাইয়া তোমা’ স্বপনে হারাই বারে বারে
অরুপা লো! রহি হ’য়ে এলে মনে,
সতী হ’য়ে এলে না ক’ ঘরে।
প্রিয় হ’য়ে এলে প্রেমে,
বধূ হয়ে এলে না অধরে!
দ্রাক্ষা-বুকে রহিলে গোপনে তুমি শিরীন্‌ শরাব,
পেয়ালায় নাহি এলে!-
‘উতারো নেকার’-
হাঁকে মোর দুরন্ত কামনা!
সুদুরিকা! দূরে থাক’-ভালোবাসা-নিকটে এসো না।

তুমি নহ নিভে যাওয়া আলো, নহ শিখা।
তুমি মরীচিকা,
তুমি জ্যোতি।-
জন্ম-জন্মান্তর ধরি’ লোকে-লোকান্তরে তোমা’ করেছি আরতি,
বারে বারে একই জন্মে শতবার করি!
যেখানে দেখেছি রূপ,-করেছি বন্দনা প্রিয়া তোমারেই স্মরি’।
রূপে রূপে, অপরূপা, খুঁজেছি তোমায়,
পবনের যবনিকা যত তুলি তত বেড়ে যায়!
বিরহের কান্না-ধোওয়া তৃপ্ত হিয়া ভরি’
বারে বারে উদিয়াছ ইন্দ্রধনুসমা,
হাওয়া-পরী
প্রিয় মনোরমা!
ধরিতে গিয়োছি-তুমি মিলায়েছ দূর দিগ্বলয়ে
ব্যথা-দেওয়া রাণী মোর, এলে না ক’ কথা কওয়া হ’য়ে।

চির-দূরে থাকা ওগো চির-নাহি-আসা!
তোমারে দেহের তীরে পাবার দুরাশা
গ্রহ হ’তে গ্রহান্তরে ল’য়ে যায় মোরে!
বাসনার বিপুল আগ্রহে-
জন্ম লভি লোকে-লোকান্তরে!
উদ্বেলিত বুকে মোর অতৃপ্ত যৌবন-ক্ষুধা
উদগ্র কামনা,
জন্ম তাই লভি বারে বারে,
না-পাওয়ার করি আরাধনা!….
যা-কিছু সুন্দর হেরি’ ক’রেছি চুম্বন,
যা-কিছু চুম্বন দিয়া ক’রেছি সুন্দর-
সে-সবার মাঝে যেন তব হরষণ
অনুভব করিয়াছি!-ছুঁয়েছি অধর
তিলোত্তমা, তিলে তিলে!
তোমারে যে করেছি চুম্বন
প্রতি তরুণীর ঠোঁটে
প্রকাশ গোপন।

যে কেহ প্রিয়ারে তার চুম্বিয়াছে ঘুম-ভাঙা রাতে,
রাত্রি-জাগা তন্দ্রা-লাগা ঘুম-পাওয়া প্রাতে,
সকলের সাথে আমি চুমিয়াছি তোমা’
সকলের ঠোঁটে যেন, হে নিখিল-প্রিয়া প্রিয়তমা!
তরু, লতা, পশু, পাখী, সকলের কামনার সাথে
আমার কামনা জাগে,-আমি রমি বিশ্ব-কামনাতে!
বঞ্চিত যাহারা প্রেমে, ভুঞ্জে যারা রতি-
সকলের মাঝে আমি-সকলের প্রেমে মোর গতি!
যে-দিন স্রষ্টার বুকে জেগেছিল আদি সৃষ্টি-কাম,
সেই দিন স্রষ্টা সাথে তুমি এলে, আমি আসিলাম।
আমি কাম, তুমি হ’লে রতি,
তরুণ-তরুণী বুকে নিত্য তাই আমাদের অপরূপ গতি!
কী যে তুমি, কী যে নহ, কত ভাবি-কত দিকে চাই!
নামে নামে, অ-নামিকা, তোমারে কি খুঁজিনু বৃথাই?
বৃথাই বাসিনু ভালো? বৃথা সবে ভালোবাসে মোরে?
তুমি ভেবে যারে বুকে চেপে ধরি সে-ই যায় স’রে।
কেন হেন হয়, হায়, কেন লয় মনে-
যারে ভালো বাসিলাম, তারো চেয়ে ভালো কেহ
বাসিছে গোপনে।

সে বুঝি সুন্দরতর-আরো আরো মধু!
আমারি বধূর বুকে হাসো তুমি হ’য়ে নববধূ।
বুকে যারে পাই, হায়,
তারি বুকে তাহারি শয্যায়
নাহি-পাওয়া হ’য়ে তুমি কাঁদ একাকিনী,
ওগো মোর প্রিয়ার সতিনী।….
বারে বারে পাইলাম-বারে বারে মন যেন কহে-
নহে, এ সে নহে!
কুহেলিকা! কোথা তুমি? দেখা পাব কবে?
জন্মেছিলে জন্মিয়াছ কিম্বা জন্ম লবে?
কথা কও, কও কথা প্রিয়া,
হে আমার যুগে-যুগে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া!

কহিবে না কথা তুমি! আজ মনে হয়,
প্রেম সত্য চিরন্তন, প্রেমের পাত্র সে বুঝি চিরন্তন নয়।
জন্ম যার কামনার বীজে
কামনারই মাঝে সে যে বেড়ে যায় কল্পতরু নিজে।
দিকে দিকে শাখা তার করে অভিযান,
ও যেন শুষিয়া নেবে আকাশের যত বায়ু প্রাণ।
আকাশ ঢেকেছে তার পাখা
কামনার সবুজ বলাকা!

প্রেম সত্য, প্রেম-পাত্র বহু-আগণন,
তাই-চাই, বুকে পাই, তবু কেন কেঁদে ওঠে মন।
মদ সত্য, পাত্র সত্য নয়!
যে-পাত্রে ঢালিয়া খাও সেই নেশা হয়!
চির-সহচরী!
এতদিনে পরিচয় পেনু, মরি মরি!
আমারি প্রেমের মাঝে রয়েছ গোপন,
বৃথা আমি খুঁজে মরি’ জন্মে জন্মে করিনু রোদন।
প্রতি রূপে, অপরূপা, ডাক তুমি,
চিনেছি তোমায়,
যাহারে বাসিব ভালো-সে-ই তুমি,
ধরা দেবে তায়!
প্রেম এক, প্রেমিকা সে বহু,
বহু পাত্রে ঢেলে পি’ব সেই প্রেম-
সে শরাব লোহু।
তোমারে করিব পান, অ-নামিকা, শত কামনায়,
ভৃঙ্গারে, গোলাসে কভু, কভু পেয়ালায়!
 

হৃদয়ে প্রেমের দিন

 

হৃদয়ে প্রেমের দিন


 

হৃদয়ে প্রেমের দিন কখন যে শেষ হয় — চিতা শুধু পড়ে থাকে তার,
আমরা জানি না তাহা; — মনে হয় জীবনে যা আছে আজো তাই শালিধান
রূপশালি ধান তাহা… রূপ, প্রেম… এই ভাবি… খোসার মতন নষ্ট ম্লান
একদিন তাহাদের অসারতা ধরা পড়ে, — যখন সবুজ অন্ধকার,
নরম রাত্রির দেশ নদীর জলের গন্ধ কোন এক নবীনাগতার
মুখখানা নিয়ে আসে — মনে হয় কোনোদিন পৃথিবীতে প্রেমের আহ্বান
এমন গভীর করে পেয়েছি কি? প্রেম যে নক্ষত্র আর নক্ষত্রের গান,
প্রাণ যে ব্যাকুল রাত্রি প্রান্তরের গাঢ় নীল অমাবস্যায় –

চলে যায় আকাশের সেই দূর নক্ষত্রের লাল নীল শিখার সন্ধানে,
প্রাণ যে আঁধার রাত্রি আমার এ, — আর তুমি স্বাতীর মতন
রূপের বিচিত্র বাতি নিয়ে এলে, — তাই প্রেম ধুলায় কাঁটায় যেইখানে
মৃত হয়ে পড়ে ছিল পৃথিবীর শূণ্য পথে সে গভীর শিহরণ,
তুমি সখী, ডুবে যাবে মুহূর্তেই রোমহর্ষে — অনিবার অরুণের ম্লানে
জানি আমি; প্রেম যে তবুও প্রেম; স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে রবে, বাঁচিতে সে জানে।

শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১২

কে তুমি বিনোদিনী


কে তুমি বিনোদিনী



কে তুমি বিনোদিনী
আজিম হোসেন আকাশ
কাব্যগ্রন্থ-তুমিহীনা সারাবেলা
কে তুমি বিনোদিনী
এত রূপ শোভায়,
আমারই মন মোহিনী।
কাছে এসো ধরা দাও
বিনোদিত মনে,
আমি এক বিন্দু ভালবাসা
দেব তোমার প্রানে।
বিপন্ন হৃদয়ে আর কত রাত
একা একা জেগে থাকা,
তুমি আসনি বলে আজো
মম হৃদয় পুরোটাই ফাঁকা।
বিবর্ণ মন দিতে পারে যতটা
আমি দেব তোমায় ততটা সুখ,
তমসার নিগূঢ় রজনীতে শতবার
ভেসে উঠে তোমারই চাঁদ মুখ।

ফেরার জন্য আমি আসিনি ..


ফেরার জন্য আমি আসিনি


চন্দ্রের চিবুক বেয়ে নামছিলো শব্দের ধারা
ঘুমন্ত বৃক্ষের বুক ঘেঁষে জেগে আছে নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাস
পৃথিবীর শরীরে আজ বড্ড অসুখ, জরা
কবিতার বিদীর্ণ খাতা বুকে চেপে স্বপ্নরা খুঁজে নেয় আপন নিবাস।
শব্দরা খানিক ক্ষুব্ধ বিক্ষুব্ধ
বৃক্ষের স্পন্দনে ফিরে আসে দূরে সরে যাওয়া নিগূঢ় কষ্ট
চন্দ্রহারে স্পষ্ট হয়ে উঠে বিলুপ্ত কাব্যের এক একটি ছন্দ
আমি হাত বাড়িয়ে আগলে নিতে যাই দু’হাতের করতলে
সুখ নয়
আনন্দ নয়; দু হাত পূর্ণ হয়ে যায় শীতল অশ্রু জলে-
ফেরার জন্য আমি আসিনি
ফিরিয়েই তবে ফিরবো যা কিছু আজ হারিয়েছি
এতদিনের পূজার আসর
সাজিয়ে যাবো আগামীদিনের পবিত্র বাসর
স্বপ্নের অধিকারেই সাজাবো স্বপ্নিল পৃথিবী
শব্দের অধিকারেই আমি হয়ে যাবো কালজয়ী কবি।
2upssh2

যদি কেউ



যদি কেউ
 

তোমাকে ছেড়ে যেতে চায়...
 তবে তাকে যেতে দাও......!!
 তোমার নিয়তি কখনোই তার
 সাথে বাঁধা নয়...
 যে তোমাকে ছেড়ে চলে যায়....!!
 কারো চলে যাওয়ার অর্থ
 এই নয় যে.........
 তোমার জীবনের এখানেই সমাপ্তি...
 তোমার গল্পে তার অংশের
 সমাপ্তি ঘটেছে মাত্র...
 আর কারো জন্য
 তোমার গল্পটা কখনোই
 থেমে থাকবে না..........!!!♥

শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১২

আমি সেই সমাজ থেকে বলছি





আমি সেই সমাজ থেকে বলছি



আমি সেই সমাজ থেকে বলছি
যেথায় আধুনিকতার খোলসে উলঙ্গ বেহায়াপনা
ধর্মনিরপেক্ষতার আদলে ধর্মহীনতা
প্রত্যহ স্বাগত জানাবে তোমায়।


আমি সেই সমাজের কথা বলছি
যেথা নোংরা সংস্কৃতির অবাধ অবগাহন
জীবন সত্ত্বাকে পরিণত করে
বিসর্জিত বিদ্রোহী সত্ত্বায়।


আমি সেই সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরছি
যেথা অভিজাত মাতালের অট্টহাসি
আর বিকৃত লালসার স্ফূর্তির আড়ালে
বিলীন হয়ে যায় শোষিতের আহাজারি।


আমি সেই সমাজের বার্তা ঘোষণা করছি
যেথায় আত্ন-স্বাধীনতার মিথ্যে শ্লোগানে
পরাধীণতার অদৃশ্য শেকলে
শৃঙ্খলিত করা হবে তোমায়।

যে ফুল ঝরে গেল অবেলায়....

=== যে ফুল ঝরে গেল অবেলায় ===
jhora jua fool

সা’দ বিন হাসান। কতইবা বয়স তার! ৭-৮ বছরের অর্ধফোটা গোলাপ। যে বয়সে তার হেসে-খেলে বেড়ানোর কথা, যে বয়সে আব্বু-আম্মু বলে দৌড়ে কোলে উঠার কথা, সে বয়সে সে শুনেছে মানুষের আর্তচিৎকার; মাথার উপর বোমারু বিমানের গর্জন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তটস্থ থাকতে হয় তাকে, এই বুঝি শকুনের দল এলো ওকে ছিনিয়ে নিতে। ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে পাহাড়ের পাদদেশে উদ্ধাস্তু বস্তিতে তার পৃথিবী সীমাব্দদ্ধ। রাতগুলো দুঃস্বপ্নের মত কেটে যায়। মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখে চিৎকার দেয় সা’দ, কিন্তু তার চিৎকারে কেউ এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে না- “খোকা, তোর কি হয়েছে?” সে সৌভাগ্য থেকেও সে বঞ্চিত। প্রায় বছরখানেক আগে বোমায় বিদ্ধস্থ হয় তাদের বাড়ি। পুরো পরিবার মারা যায় একসাথে; শুধু বেঁচে যায় সা’দ ও তার ছোট চাচা। সা’দের চাচা তাকে এই বস্তিতে রেখে চলে যায় জীবন বাজির খেলায়, যোগ দেয় মুজাহিদদের দলে। সেই থেকে এই বস্তিই তার পৃথিবী।
আজ সোমবার। সকাল থেকেই সা’দ পাহাড়ী পথের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ তার চাচা মনসুরের আসার কথা। প্রতিমাসে একবার মনসুর এসে তার প্রিয় ভাতিজাকে দেখে যায় এবং সেই সাথে তাকে নিয়ে পরিবারের সকলের কবর যেয়ারত করতে যায়; শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে।
সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে এল। মাথার উপর জ্বলন্ত সূর্যটা যেন আগুনের হল্কা ছড়াচ্ছে। একসময় দূর দিগন্তে ঝাপসা অবয়বে ভেসে উঠল মধ্যবয়সী একজন মানুষের চিত্র। লঘুপায়ে সে এগিয়ে এল সা’দের দিকে। ঘর্মক্লান্ত মুখে তার স্বর্গীয় আভা। সা’দ ”চাচাজান”-”চাচাজান” বলে ঝাপিয়ে পড়লো তার বুকে। পরম মমতায় অনাথ শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে ধরল মনসুর। দু’জনের চোখেই অশ্রুসজল দৃষ্টি, কত চেনা সে আঁখি…….. কত আপন….. ।
ঘন্টা দু’য়েক পরে চাচার হাত ধরে সা’দ তার বাবা-মায়ের কবর যেয়ারতের উদ্দেশ্যে রওনা হল। আস্তে আস্তে বিকেল হয়ে এল। একসময় তারা পৌঁছে গেল শহীদদের কবরের কাছে। চিরনিদ্রায় শায়িত বাবা-মায়ের কবরের কাছে দাড়িয়ে সা’দের চক্ষুদ্বয় লোনা জলে ভেসে যায়। দু’হাত তুলে মহান প্রভুর কাছে দীর্ঘসময় দোয়া করে ওরা।
পড়ন্ত বিকেলের সূর্যটা আকাশের শেষ প্রান্তে। ঠিক এইসময় বাতাসে ভেসে আসে বোমারু বিমানের গর্জন। কিছু বুঝে উঠার আগেই ওদের সামনে বিষ্ফোরিত হয় একটি বোমা। সা’দের মুখ থেকে ভেসে আসে একটি করুণ চিৎকার- “আল্লাহ….!!” তারপর সব শেষ। রক্তাস্নাত দেহ দুটি প্রচন্ড যন্ত্রনায় মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকে। গোধূলীর শেষ আলোটুকু ওদের মুখে এসে পড়ে। একসময় ডুবে যায় সূর্য; সেই সাথে ডুবে যায় ওদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন । অবেলায়-অযত্নে পাশাপাশি দু’টি প্রাণহীন দেহ পড়ে থাকে। ঝরে যায় একটি অর্ধফোটা গোলাপ…. । ইরাকের হাজারো ফুল এভাবেই প্রতিনিয়ত ঝরে যায়….. । কিন্তু এভাবে আর কতদিন….!!

আলপনা...





kobitarkhata1.wordpress.com

আলপনা


হৃদয়ের উঠানেতে কত ছবি আঁকা
সাত রঙে সাজানো আলপনার রেখা
ফেলে আসা দিনগুলো সময়ের ডাকে
পবনেতে হারিয়ে যায় দিগন্তের বাঁকে।


এলোমেলো ঢেউগুলো, ধানক্ষেতে খেলা
রঙিন ঘুড়ির সুতোয়, আকাশেতে ভেলা
বৃষ্টির ছন্দে ছন্দে, পিচ্ছিল খেলা
বিকেলের ম্লান আলোয়, শাপলার মেলা।


আযানের সুর-ধ্বনি, সাঁঝের বেলা
আঁধার নামবে এখন, ফিরবার পালা
পড়াঘরে হৈ চৈ, কুপির আলোয়
জ্যোৎস্না-রাত কাটে, স্বপ্নের ভেলায়

আলপনা আলপনা, জীবনের বাঁকে
ফিরো এসো বারবার, কল্পানার আঁকে।

রবিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১২

ময়ূরাক্ষীর মহানীলে আমি অপর্ণা


ময়ূরাক্ষীর মহানীলে আমি অপর্ণা

ভালবাসা হলো বিশ্বাস
কিছু অব্যক্ত কথা
কষ্ট আর অনুভূতির সমষ্টি
যা কিনা অপূর্ণতাকে বাড়িয়ে তোলে
আর বুকের মাঝে ভবিষ্যতের স্বপ্নকে
লালন করে বাঁচতে শেখায় |
সত্যিকারের ভালবাসা বলতে আমি তাই বুঝি
তোমার ও কি একই অনুভব ?
জানিও আমাকে |
অথচ দেখো , সময়ের নির্মম চাবুকে আজ
আমার বিলাসিতাও যেতে বসেছে
রঙিন পুতুল কিংবা একটা সস্তা খেলনাও এখন
আত্মজের হাতে তুলে দিতে পারিনা
নতুন মলাটের বইয়ের শোভা
চোখের তারা ঝিলিক দিলেও
পরমুহুর্তে তা বিলীন হয়ে যায়
শুধু গন্ধ শুঁকেই নামকাওয়াস্তে চলে আসি এই ভেবে
সামনের মাসে সংসার খরচ টা কোত্থেকে আসবে !
এখন তুমিই বলো আমি কি করে
তোমার-আমার চাওয়া পাওয়ার হিসাবের খাতা; কি করে খুলে বসি
ঝড়ের তাণ্ডবে আজ গৌণ হয়ে গেছে; আমার সুখ গুলি
ধুলো পরেছে সেখানে
ময়ূখের আকুলতায় বৃত্ত-বন্দী আমি
বের হয়ে আসতে চাই সেই বলয় থেকে প্রতিনিয়ত
ছুঁতে চাই তোমায় বারবার
কিন্তু স্পর্শে তুমি কোথায়?
তুমি রয়ে যাও অধরা-অস্পৃশ্য
অনেক ক্লান্তিতে তুমি কি আমার এক কাপ চা হবে ?
চুমুকে চুমুকে সতেজ করে দিও !
জানি ভাবনাতেই আমার সময় গড়াবে
আমার আকণ্ঠ তৃষ্ণা আমার’ই রয়ে যায় |
আমার মাঝে শুধু দুপুরের
ঘুঘু পাখিদের গান বাজে
যে দুপুরগুলোতে তুমি আমায় নিয়ে যেতে
এক আসমান থেকে আরেক আসমানে
সেই পল ছিলো ক্ষণিকের
তবুও এই আশা – নিরাশার ঘ্রাণে
মাঝে মাঝে শুনতে পাই
আমার শরীরের ভিতর তোমার রক্তের গুঞ্জরন |
আমি এই সব ভেবে ব্যথা পাই
তবুও আমার ভাবতে ভালো লাগে যে
আমার নীলাভ আকাশ জুড়ে শুধু তোমার’ই বসবাস
আমার বিছানায় তোমার নির্ভার দেহ , তোমার ঘুমন্ত মুখ
তোমার চোখের কোলে শুকিয়ে যাওয়া ঝরনার পদচিহ্ন ,
তোমার এলোমেলো চুল আর এক নিবির রমণীর আলিঙ্গন
তোমাকে আত্মার আত্মীয় ভাবি |
তাই তোমাকে আর আলাদা করে বলা হয়না ” ভালবাসি “
আমার মৌনতাকে নির্লিপ্ততা ভেবে কষ্ট পেও না
তোমার ব্যথিত দুই চোখে আমি দেখি
আমাকে না পাওয়ার জন্য তোমার কাতর কান্না
আর আমার থাকা না থাকার পার্থক্যে
ব্যবচ্ছেদ করতে না পারার প্রবল ঘোর |
তবুও তুমি বুঝে নিও
আমি আছি তোমার চোখের এক দিঘি জলে
হঠাৎ আনমনা হওয়া তোমার ভাবুক মনে
ময়ূরাক্ষীর মহানীলে কারাবন্দী আকুলতায়।

শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১২

কাঁচা আমের টক রসে রঙ্গিন করি মুখ


কাঁচা আমের টক রসে রঙ্গিন করি মুখ

Photobucket
চৈত্রের তাপাদাহে পুড়ছে চারিপাশ, লু হাওয়া বইছে সবখানে। সবুজ মাঠ এখন বিরান ভূমির মতো লাগছে, কোথাও একটুকু ছায়া নেই, নেই শীতল বাতাস, বটবৃক্ষের তলেও খুজেও পাওয়া যায় না সেই মিষ্টি পরশ বুলিয়ে যাওয়া বাতাস বা ছায়া। প্রকৃতি বড় বেহরম আচরন করছে সকল জীবের সাথে। স্কুল, কলেজ, অফিস সব জায়গায় লোড শেডিং নামক দানবের কাছে পরাজিত। এই আছে এই নেই। ঘন্টার পর ঘন্টা গরমে কাটাতে হচ্ছে মানুষকে। ত্রাহিদাহি অবস্থা প্রায় প্রতিটি প্রাণীর।
চৈত্রের এই মাসে একটু বৃষ্টির বড়ই প্রয়োজন এখন আর সাথে প্রয়োজন এমন কোন মুখরোচক খাদ্য যা মনকে প্রফুল্ল করে। চৈত্রের পরে আসবে বৈশাখ, ঝড় বাদলায় কেটে যাবে মুহুর্তগুলো। চলবে আম কুড়ানো পালা, বাড়ীতে বাড়ীতে কাচা আমের আচার আর মোরোব্বা বানানোর আয়োজন শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু এই চৈত্রেই যদি দেখা মেলে এমন খাবারের মন্দ হয় না কি বলেন আপনারা।
অফিসে যাওয়া আসার পথে কয়েকদিন ধরে দেখছি সবুজ সবুজ একটি ফল। দেখা মাত্র জ্বিভে জল চলে আসে। মনটা আনচান করে। কখন তাকে হাতে পাবো কখন তাকে মজা করে খাবো। আজ সকালটা প্রচন্ড রোদ যেমন উঠেছে তেমনি কাজের পাহাড় নিয়ে শুরু করেছি দিনটাকে। সকালে এই রোদে কাজের চাপে যখন জানটা যায় যায় অবস্থা রাস্তায় ভ্যান গাড়ীতে দেখলাম এক লোক লেবু আর কাচা আম নিয়ে বসে আছে। আর তর সইলো না। গাড়ী থামাতে বলে নিজেই গেলাম সেই মহা বিক্রেতার কাছে। লেবুর হালি কতো ভাই?? একদাম ৩০টাকা। রস হবে তো?? হইবো না মানে কাইট্টা লইয়া যাইবেন, রস না হইলে টাকা ফিরত। আর আমের কেজি কতো, একটু ভয়ে ভয়ে জানতে চাইলাম। পান খাওয়া দাত বার করে বলল মাত্র ১২০টাকা একদাম। একটু কমবে না ভাই। না আফা। এখন আম বহু দূর থাইক্কা আনতে হয়। কি আর করা। “ভোজন বিলাসী বাঙালী” এই সুনামতো আমাদের আছেই। ঠিক আছে এক পোয়া দেন। নিজে বেছে বেছে দিলাম উঠল ৫টা। তবে একপোয়ার বেশী হয় একটা কমাতে হবে, একপ্রকার জোর করে একটা আম বেশী নিলাম। গাড়ীতে বসেই শুরু হল কাচা আম খাওয়া। আহা কি যে সুখ বলে বুঝাতে পারব না। এই সুখ করে খাওয়া অনেক দিন পরে খাচ্চি।
Photobucket
একটা আম খেয়ে বাকী গুলো ড্রাইভারকে অফিসে গিয়ে মাখিয়ে দিতে বললাম। এখানে বলে রাখা ভাল আমাদের এই ড্রাইভার বেশ ভাল রান্না জানে। আমার কাছে সে ট্রেনিং নেয় রান্নার। আজ প্রায় তিন বছর সে আছে আমাদের সাথে। তাই সে জানে আমি কি রকম খাবার পছন্দ করি। কিভাবে আম মাখাতে হবে কারণ এই তিন বছর প্রতিবছরই তাকেই আম মাখাতে হয় আমার জন্য। শুধু আম ই নয় কিছু দিন পরে জাম উঠবে আর এই জাম খাওয়া চলবে প্রতিদিন। আর ড্রাইভার মাখিয়ে দিবে মজা করে। আপাতত লবন, চিনি আর কাচা মরিচ দিয়ে মাখানো হয়েছে পরে কাসুন্দি দিয়ে মাখিয়ে খাওয়া হবে যখন আম উঠবে ঠিক মতো বাজারে।
অফিসে ফিরে তাড়াতাড়ি নামাজ পড়ে আম মাখা খেতে বসে গেলাম। তখনই মনে হল আপনাদের একটু লোভ লাগাই। চট করে লিখে ফেললাম পোষ্টটা।
Photobucket
বাসায় গিয়ে বউ, বোন মা কে বলুন এই রকম আম মাখিয়ে দিতে আর মজা করে খান দেখুন রসনার পূর্ণ তৃপ্তি পাবেন হৃদয়ে। আর যারা নারী কূলের বাসিন্দা তারা নিজেরা কিনে নিয়ে মাখিয়ে খেতে পারেন। তবে এটা সত্যি এই গরমে যতো টক আর তিতা খাবেন গরম ততো কম লাগবে আর শরীর ভাল থাকবে।
আমি মজা করে খাই। আর আপনারা আপাতত জ্বিভে পানি আনুন আর পোষ্টটা পড়ুন তবে কেউ নজর দিবেন না দয়া করে। ।

চৈত্রের শেষ দুপুর এবং প্রথম প্রেমের চিঠি...


চৈত্রের শেষ দুপুর এবং প্রথম প্রেমের চিঠি...

ক. প্রথম প্রেমের চিঠি /যেদিন তোমার মায়ের হাতে পড়লো ধরা/ সেদিন থেকে তোমার উপর/ দৃষ্টি রাখা হলো কড়া/ বন্ধ হলো লেনদেন মেলামেশা…
খ. পহেলা বৈশাখ, হাওয়ায় উড়িয়ে রঙ্গীন ঘুড়ি/ বাসন্তী রঙা শাড়ি অবিনাশী শব্দ ভালবাসি/ কত কথায় তো ছিল বলার/ সময় হলো না কারো দু-দন্ড মুখোমুখি বসবার…
প্রিয় কন্ঠ শিল্পী নাফিস কামাল ভাইয়ের গাওয়া গান দুটোর মতো বাস্তবে ধরা দেয়নি। একটু ভীন্নতা ছিল। ছিল ভয়। ১৪০৮ বাং সনের চৈত্রের শেষ দিন। শেষ দুপুর। আকাশে সাদাকালো মেঘের আনাগোনা। ছুটছি দল বেঁধে। হাতে নিমন্ত্রণপত্র। উপলক্ষ ১৪০৯ কে বরণ করে নেওয়া। বরাবরের মতো বরেন্দ্র সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে আরো একটি বর্ষবরণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। কোন ক্লান্তি নেই। ছুটছি। কাকতালীয় ভাবে দেখা হয়ে গেল সেলিম ভাইয়ের সাথে। ব্যাগ থেকে চিঠি বের করেই বললেন, এই ঠিকানাটা খুঁজে পাচ্ছি না। তাচ্ছিল্য ভরে হাতে ধরা। চমকে উঠা। আমার বলেই রেখে দিলাম পকেটে। আবারো দল বেঁধে ছুটে চলা। ব্যস্ততার কারণে চিঠিটার কথা ভুলে বসেছিলাম। মাঝরাতে মনে পড়তেই খামবন্দি চিঠিটা মেলে ধরা। পড়া। নতুন এক স্বপ্নের পথচলার শুরু সেই থেকে। স্বপ্নীল শ্রাবন্তীর বিরতীহীন লেনদেন শুরু। থেমে থাকেনি। দূরত্ব বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ১৪০৮ এর চৈত্রের শেষ দিনে হাত স্পর্শ করা চিঠিটার মাধ্যমেই জন্ম এক নতুন অধ্যায়ের। আবারো আসছে আরো একটি চৈত্রের শেষ দিন, শেষ দুপুর। আরো আসবে, যাবে। বয়স বেড়ে যাবে। এমনি করে বার্ধক্য আমাদের জড়িয়ে ধরবে। আজো স্মৃতিতে জমে আছে সেই চৈত্রের দুপুরে হাতে আসা প্রেমের প্রথম চিঠি।
চৈত্রের শেষ দিনটাতে এখন আর শ্রাবন্তীর জন্য ছুট দেওয়া নয়, নিষ্পাপ দুটো অবয়ব হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাইতো ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে অস্থির হয়ে উঠা, হৃদয়ের ক্যানভাসে আঁকা খিলখিল বুড়ি আর লিল’পরী, কখন ফিরবো বাড়ী…
বিলাসীর চুখে জ্বল ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যকে জানাই বাংলা নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা।

তোমাকে মনে পরে যায়..


তোমাকে মনে পরে যায়

তোমাকে মনে পরে যায়
স্মৃতি গুলি ভাবায় নিরবে আমায়
সেই হারানো দিন গুলি আজ অদৃশ্য লাগে
যেন এমন অনেক কিছুই হয়নি আমার আগে,
মায়াবি রাত যায়নি যায়নি সোনালি দিন
তুমি কাছে থেকেও ছিলে না ছিলাম তুমি হীন
তোমাকে মনে পরে যায়
কষ্টের মাঝে আমি আজ বড় অসহায়
এপাশে কে যেন আমাকে আগলে রেখেছে
কোন এক অজানা শক্তি নিজের দিকে টানছে,
ভাঙ্গতে চাই চুরমার করতে চাই তবু পারিনা
যেন এই কষ্টই আমার আজ শেষ ঠিকানা।
তোমাকে মনে পরে যায়
বারে বারে চারিধারে খুঁজি যে তোমায়
খুজে খুজে ক্লান্ত হয়ে ফিরি নিজের ঘরে
তবুও তোমাকে পায়নি ব্যথা এ অন্তরে,
এদিক খুজে ঐদিক খুঁজি খুঁজি সারা দিক
জ্বালিয়ে রেখে খুঁজি মনের প্রদীপ।
তোমাকে মনে পরে যায়
রঙিন কোন এক গোধূলি বেলায়
নিশ্চুপে গোপনে শুধু তোমাকে মনে পরে
দূরে চলে গিয়ে কেন আমায় রেখেছ ধরে,
তোমার জন্য মেঘে ঢাকা এ হৃদয় আকাশ
অশ্রুসিক্ত চোখ মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস।

বসন্ত গেল মোর দ্বারে পা ফেলিয়া..


বসন্ত গেল মোর দ্বারে পা ফেলিয়া

বসন্ত নিয়ে এল কোন নতুন এক আহ্বান
নিয়ে এল নতুন উদ্দীপনা সতেজ করতে প্রাণ
চারিদিক সাজিয়েছে রঙিন সাজে
পলাশ শিমুল আর কৃষ্ণচুড়ার কারুকাজে
চেয়ে থেকেছি সদা দুটি চক্ষু মেলিয়া
বসন্ত গেল মোর দ্বারে পা ফেলিয়া।
পত্র পল্লবে ছেয়ে গেছে বৃক্ষরাজির দল
সবুজে সবুজে রঙ দেখি প্রকৃতিতে দীঘল
দূর হতে কানে আসে কোকিলের কুহুতান
যার সুরে মনে তৈরী হত এক অজানা টান
মন আনন্দে নেচে উঠত হেলিয়া দুলিয়া
বসন্ত গেল মোর দ্বারে পা ফেলিয়া।
বনের ধারে ফুলের এক অপূর্ব সমারোহ
যেন অপরূপ কোন রঙিন স্রোতের প্রবাহ
দখিনা বাতাস বহে চলে নিয়ে নতুন ছন্দ
সাথে দিয়ে যায় একরাশ ফুলের সুগন্ধ
নিশ্বাস নিয়েছি বারবার ছাড়িয়া ছাড়িয়া
বসন্ত গেল মোর দ্বারে পা ফেলিয়া।

বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১২

ei prem


jakhanay juo valo thako....................


shaa kano amay bujlo na ami take valobashi akono..


jodi ar ekto sumoy petem


ami ja ka tumar tumi ta janona....


tare bina......


Jekhanei_thako_shukhe.wmv shaj...kulaura





Ek Nazar na dekhile Bandhu




sukha thako





Jekhanei thako sukhe thako








rebaka song