[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

নন্দিতা, এই লেখা তোমার জন্য...

নন্দিতা, এই লেখা তোমার জন্য...
নন্দিতার সাথে আমার পরিচয়টা হয়েছিলো খুব সাধারণভাবে। আমি ঢাকা থেকে বাসে করে সিরাজগঞ্জে আসছিলাম, আমার পাশের সিটটাতেই বসেছিলো নন্দিতা। বয়স আঠারো-উনিশের মতো হবে (মেয়েদের বয়স বলার ক্ষেত্রে বেশীরভাগ সময়ই আমার ধারণা ভুল হয়ে থাকে), একটু লম্বাই হবে, ধরুন পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি, দেখতে শিল্পা শেঠীর মতো-হ্যাঁ, ঠিক এই নামটাই আমার মনে হলো। বাস ছাড়ার পাঁচ মিনিট আগে সে বাসে উঠলো, বিদায় দিতে সাথে এসেছিলো গুরুগম্ভীর স্বভাবের একজন বয়স্ক ব্যক্তি, কথা শুনে মনে হলো মামা সম্পর্কীয়।
দূরপাল্লার যাত্রাগুলোতে বাসে পাশের সিটে কোনো সুন্দরী থাকলে সময়টা খুব খারাপ কাটে না, কথা বলা হোক বা না হোক, আড়চোখে তাকাতে তাকাতে আর মেয়েটিকে নিয়ে নানা চিন্তা করতে করতে কখন যেনো গন্তব্যস্থল এসে যায়। সেবার অবশ্য এরকম কিছু হয়নি, হয়নি নন্দিতার জন্য। বাস ছেড়েছে দশ মিনিটও হয়নি, নন্দিতা আমার দিকে ফিরে সুন্দর একটি হাসি দিয়ে রিনরিনে কন্ঠে বলল, ‘আমি নন্দিতা, থাকি সুনামগঞ্জে, এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকাতে মামার কাছে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আপনি?’ আমি নন্দিতার সাবলীল কথা বলার দক্ষতায় প্রচন্ড বিমোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমি ডাক্তার, এটা শোনার পর বাচ্চা মানুষের মতো বায়না ধরলো বিভিন্ন অপারেশনের গল্প শুনবে। কথায় কথায় এক সময় জানিয়ে দিলো ছোটবেলায় তার খুব ডাক্তার হবার ইচ্ছে ছিলো, বন্ধুরা যখন ডাক্তার-রোগী খেলতো, সবসময় সে ডাক্তারই হতো। কমার্সের ছাত্রী হওয়াতে সেই স্বপ্নটা একটা বড় ধাক্কা খেলো। কোথা থেকে যে সময় পেরিয়ে গেলো, আমরা বুঝতেই পারলাম না। যমুনা সেতু পার হয়ে বাস সয়দাবাদে আসলে আমি নেমে গেলাম। নন্দিতা জানালার পাশে বসে হাত নাড়িয়ে হাসিমুখে বিদায় নিলো। আর আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আমার হাসপাতালের দিকে রওয়ানা দিলাম।
সেই ঘটনার প্রায় চার মাস পর। বিভিন্ন রকম ব্যস্ততায় নন্দিতাকে প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। একদিন হঠাৎ করে লাল সালোয়ার কামিজ পরে মোহনীয় রুপে হাসপাতালে এসে আমার সামনে হাজির। প্রথমে চিনতেই পারি নি, ‘আমি নন্দিতা’ বলার পর একটু লজ্জাই পেলাম। মিষ্টি হেসে আমার হাতে একটি কার্ড ধরিয়ে দিয়ে বললো, ‘ভাইয়া, অবশ্যই আসবেন কিন্তু।’ কার্ডটা খুলে দেখি নন্দিতার বিয়ের কার্ড, ওর দিকে তাকাতেই দেখি লজ্জায় ওর ফর্সা গালটা রক্তিম হয়ে উঠেছে। জানালো বিয়ের পর ঢাকাতেই থাকবে, ওর স্বামী ঢাকাতে একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে ভালো বেতনের চাকরি করে। এই অল্প বয়সে ওকে বিয়ে দেবার রহস্যটা এবার বুঝতে পারলাম।
বিয়েতে আমি যেতে পারি নি, ঐ সময়ে ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য ঢাকাতে থাকায়। এরপর অনেকদিন আর দেখা হলো না নন্দিতার সাথে, অবশ্য দেখা হবার কথাও না।
প্রায় এক বছর পর। একদিন ছুটিতে ঢাকায় গেলে আমার এক বন্ধু বিকেল বেলায় আমাকে নিয়ে তার এক বন্ধুর বাসায় এলো একটি জরূরী কাজের কথা বলে, আমাকে অনেকটা জোর করেই নিয়ে আসলো। নন্দিতা! এবার আর চিনতে কষ্ট হয় নি। বুঝতে পারলাম আমাকে ষড়যন্ত্র করেই আনা হয়েছে চমকে দেবার জন্য, আমিও চমকিত হলাম। আমার বন্ধুবরের বন্ধুর স্ত্রী নন্দিতা। কোনো একদিন কথা প্রসঙ্গে আমার বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পেরেছে আমার কথা, অতএব আমাকে না জানতে দিয়ে আমাকে এখানে নিয়ে আসা। নন্দিতার স্বামী ভদ্রলোকটিকে আমার ভালোই লাগলো। চমৎকার করে কথা বলেন, প্রাণখোলা ধরনের। হাসি, ঠাট্টায়, গল্পে রাতের খাবারের সময় হলে নন্দিতা না খাইয়ে ছাড়তে চাইলো না। আমার বন্ধুর আবার ভোজন রসিক হিসেবে খুব নাম ডাক, তাই অনুরোধটা এড়ানো গেলো না।
নন্দিতা যখন খাবারের ব্যবস্থা করতে গেলো, তখন ওর স্বামী বললো নন্দিতার ব্রেইন টিউমার হয়েছে, আগামী সপ্তাহে ঢাকার একটা বড় হাসপাতালে অপারেশন হবে। আমি চমকে গেলাম। কিছুক্ষন কোনো কথাই বলতে পারলাম না। রাতে খাবারের টেবিলে নন্দিতা অনেক মজার মজার কথা বললো, খাবারটাও দারুন হলো। কিন্তু কোনো কথাই আমি আর মনোযোগ দিয়ে শুনতে পারলাম না, খাবারটাও গলা দিয়ে ঢুকতে পারলো না। বাকীটা সময় ফ্যাল ফ্যাল করেই তাকিয়ে রইলাম।
দুই সপ্তাহ আগে নন্দিতার অপারেশন হলো, আমি গত সপ্তাহে ঢাকায় গেলে ওকে দেখতে হাসপাতালে গেলাম। ওকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছে। সেই আগের মতোই চঞ্চল, ছটফটেই আছে। আমি যাবার পর বলল, ‘ভাইয়া, আমার হিস্টোপ্যাথলজি রিপোর্টে জিবিএম, গ্রেড-ফোর এসেছে। আমার স্বামী আমাকে জানতেই দেই নি। আমি নিজে ফাইলে রিপোর্ট দেখলাম। এরপর মোবাইলে ইন্টারনেটে দেখলাম খুব বেশী হলে দেড়-থেকে দুই বছর বাঁচবো। দেখুন তো ভাইয়া, রাব্বি (নন্দিতার স্বামী) সারাক্ষন মনমরা হয়ে থাকে। আমি ওকে বললাম, এই দুইটা বছর আনন্দে বেড়াই, আর ও বলছে কি রেডিও না কেমোর জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাবে। আমার চিন্তায় সারাক্ষন অস্থির হয়ে থাকে। আপনি একটু ওকে বোঝান তো।’ আমি আবারও ফ্যাল ফ্যাল হয়ে তাকিয়ে রইলাম। এক সময় নন্দিতা বললো, ‘ভাইয়া, বিয়ে করেছেন পাঁচ বছর হলো, এখনো কোনো বাবু নেন নাই! তাড়াতাড়ি নিয়ে নেন, আমি দেখে যাই। আর মেয়ে হলে নাম রাখবেন নন্দিতা, কি রাজী আছেন তো?’ ওর পাশে বেশীক্ষন থাকাটা খুব কষ্টকর হয়ে উঠলো। আমি ব্যস্ততার কথা বলে চলে আসলাম। কেবিনের দরজায় এসে পিছনে তাকিয়ে দেখি, রাব্বি গভীর মমতায় নন্দিতার বিছানার পাশে বসে ওর হাত ধরে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসলাম। এমন সময় মুষলধারে বৃষ্টি নামলো। আমি আশে পাশে কোথাও ঠাঁই খুঁজলাম না। বৃষ্টিতে ভিজে হাঁটতে থাকলাম। এক সময় লক্ষ্য করলাম বৃষ্টির পানির সাথে আমার চোখের পানিও মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে।

অন্ধকার পথ, পিছনে বন্ধ দরজা

অন্ধকার পথ, পিছনে বন্ধ দরজা

রাত দুইটা বাজে। বারান্দাতে অস্থিরভাবে পায়চারি করছে দিব্য। দিব্য, দেশের একজন প্রথম সারির প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক। অগুনতি ভক্ত তার, বেশীর ভাগই অবশ্য উঠতি বয়সের যুবক-যুবতীরা। দিব্যের লেখায় এদেরকে নিয়ে অনেক কথা থাকে, এদের মনের কথা স্থান পায়, এদের চাহিদা, দুঃখ, কষ্ট, হাসি, আনন্দ-বেদনা সব চলে আসে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, এই বয়সের পাঠকেরা যা পড়তে চায়, দিব্য সেটাই লিখতে পারছে। এটা অনেকেই পারে না, পারে না তাদের হৃৎস্পন্দন বুঝতে। দিব্য বুঝতে পারে, এটা ওর খুব বড় একটা গুণ। তাই দিব্য এত জনপ্রিয়।
আর কিছুদিন পরেই একুশের বইমেলা। দিব্যকে কমপক্ষে তিনটা উপন্যাস লিখতে হবে, প্রকাশকরা প্রায় প্রতিদিনই তাড়া দিচ্ছে। কিন্তু দিব্য কিছুই লিখতে পারছে না। কাগজ, কলম নিয়ে টেবিলে বসছে, বসেই থাকছে, সাদা কাগজগুলো কালো আঁকিবুকিতে আর ভরে উঠছে না। একবার ওর মনে হলো রাইটার্স ব্লক হয়েছে, কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো সে কবিতা লিখতে পারছে, তাও খুব সুন্দর প্রেমের কবিতা। অথচ দিব্য কবিতা আগে কখনো লেখেনি বা লিখতেও জানত না। একবার ভাবে এবার কবিতার বই লিখবে, পরক্ষনেই মনে হয় পাঠকরা ওর উপন্যাসই পড়তে চায়। মনটাকে সুস্থির করতে বারান্দাতে পায়চারি করতে গিয়ে আরো অস্থির হয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীর অভিজাত এলাকার এপার্টমেন্টের ছয় তলার ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে নিচে তাকিয়ে দিব্যের অস্থিরতা আরো বেড়ে যায়। এই নিশুতিরাত ওকে যেনো কি মনে করিয়ে দিচ্ছে। মধ্যবয়স্ক দিব্যের মনে পড়ে যাচ্ছে মেহেরের সাথে সেই উচ্ছ্বল দিনগুলোর কথা।
ভার্সিটির সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে ছিলো মেহের। শুধু সুন্দরী নয়, চৌকসও বটে। পড়াশোনা, খেলাধুলা, বিতর্ক সবকিছুতেই ছিলো মেহেরের পদচারণা। সে তুলনায় মফস্বল থেকে আসা দিব্যই ছিলো কিছুটা ম্রিয়মান। কিন্তু লিটল ম্যাগাজিনগুলোতে প্রকাশিত ওর ছোট গল্পগুলো পড়ে মেহেরের কাছে সেই দিব্যই হয়ে উঠলো স্বপ্নের রাজকুমার। তারপর মেঘনার জল অনেক দূর গড়িয়ে গেলো। তিন বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর বিয়ে করে থিতু হতে না হতেই ফুটফুটে অপর্ণার বাবা হয়ে গেলো দিব্য, ততদিনে অবশ্য লেখক হিসেবেও যথেষ্ট নাম যশ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। হিমেল হাওয়ার ঝাপটায় দিব্যের ভাবনায় ছেদ পরলো। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রুমে ঢুকে বিছানার দিকে তাকাতেই কেমন যেনো কুঁচকে গেলো দিব্য।
বিছানাতে কেঁচোর মতো জট পাকিয়ে মেয়েটা শুয়ে আছে। দীঘল কালো চুলগুলো এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে চারপাশে, কিছু চুল দিয়ে ঢেকে আছে একপাশের গালের কিছু অংশ। গভীর ঘুমে মগ্ন সে। শরীরে একটি সুতাও না থাকাতে প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে বুকের ছন্দময় উঠানামাটা দিব্যের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। পাশের বেডসাইট টেবিলের উপর রাখা ল্যাম্পের আলোয় কেমন যেনো অপার্থিব লাগছে। কী যেনো নাম মেয়েটার, দিব্য মনে করতে পারছে না। হঠাৎ ওর মনে হলো মেয়েটার নামই জিজ্ঞেস করা হয় নি, সন্ধ্যা থেকে একসাথে আছে অথচ মেয়েটার নামই জানা হয়নি ওর! অদ্ভুত দৃষ্টিতে মেয়েটার মায়াময় মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার বারান্দাতে চলে আসলো দিব্য।
আকাশে মেঘের গুরু ডাক। হয়তো বৃষ্টি নামবে, নতুবা নয়। একটা সিগারেট ধরালো দিব্য, বেনসন এন্ড হেজেস ব্রান্ডের। সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে আনমনে হাসলো সে। মেহেরের দিব্যকে পছন্দ করার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা ছিলো সে অধূমপায়ী। কিন্তু বিয়ের পর রাত জেগে জেগে উপন্যাস লিখতে লিখতে, প্লট চিন্তা করতে করতে কখন যে হাতে সিগারেট উঠে এলো সেটা ও বুঝতেই পারেনি। এরপর আরো কত কি- হাতে চলে আসলো বোতলও। জনপ্রিয়তার সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে দিব্যের রুচিবোধও অনেক উপরে উঠে এলো! প্রথম দিকে মেহের মনক্ষু্ন্ন হলেও কিছু বলতো না। কিন্তু যখন মধ্যরাতে সাহিত্যিক বন্ধুদের সাথে আড্ডা শেষ করে অর্ধ মাতাল হয়ে বাসায় ফিরতো, মেহের উত্তপ্ত হয়ে উঠতো। সেই উত্তাপে ছোট্ট অপর্ণা ঘুম থেকে জেগে উঠে অবাক বিস্ময়ে বাবা-মায়ের দিকে তাকাতো, কাঁদতেও যেনো ভুলে যেতো। অপর্ণার যখন আলাদা রুম হলো, তখন আর ঘুম থেকে উঠতো না, কারণ সে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলো। শুধু ভাবতো, বাবা খুব জনপ্রিয় না হলেই মনে হয় ভালো হতো। সময় যেনো কীভাবে গড়িয়ে যায়। অপর্ণা যখন ভার্সিটিতে যাওয়া শুরু করলো, বন্ধু-বান্ধবীদের মধ্যে ওর বাবার অসম্ভব জনপ্রিয়তা দেখে ওর মায়ের অসহায় মুখটাই চোখের সামনে ভেসে উঠতো।
মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে। সেই বৃষ্টির কিয়দংশ ছিটে ফোঁটা দিব্যের গায়েও লাগছে। বিছানাতে শুয়ে থাকা মেয়েটার কথা আবার মনে পড়লো। এতক্ষন খেয়াল করেনি, এখন মনে হচ্ছে মেয়েটা বোধহয় অপর্ণার সমবয়সী। গত সন্ধ্যায় যখন ক্লাবে মেয়েটাকে দেখে, ওর কেমন যেনো নেশার মতো লেগেছিলো। মেয়েটিকে দেখে কোনো বড়লোকের বখে যাওয়া মেয়ে মনে হয়নি তখন। দিব্যের সাথে যখন দিব্যের উপন্যাসগুলো নিয়ে গল্প করছিলো, দিব্য মন্ত্রমুগ্ধের মতো মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ছিলো। রাতে যখন দ্বিধান্বিত কন্ঠে বাসায় আসার আমন্ত্রন জানালো, কী সহজেই না রাজী হয়ে গেলো! হেসে উঠলো দিব্য, অনেকদিন পর বিছানাতে এত তৃপ্তি পেলো সে, মেহেরের কাছ হতে যা প্রায়শই পেতো না। এই যুগের মেয়েরা বোধহয় এরকমই। দিব্যের মতো একজন মধ্যবয়স্ককেও, যার মাথার চুলে কিছুটা পাকও ধরেছে, মুহূর্তের মধ্যে উন্মাতাল করে ফেলতে পারে।
এই ব্যাপারটা যেদিন থেকে সে বুঝতে পেরেছিলো, সেদিন থেকেই তার শুরু হয়েছিলো মেহেরের সাথে লুকোচুরি খেলা। কোনো কোনো রাত বাসায় আসতো না, আসলেও ভোর রাতের দিকে এসে চুপিসারে শুয়ে পড়তো। মেহেরের ততদিনে অনেক কিছুই গা সওয়া হয়ে গিয়েছিলো, কিন্তু যেদিন দিব্যের মোবাইলে দিপ্তী নামের এক মেয়ের কামোদ্দীপক মেসেজ পড়লো, সেদিন নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলো না। না, সে দিব্যের সাথে কিছুই করে নি, কারণ এই পুরুষ শাসিত সমাজে সে প্রতিবাদ করে কিছুই করতে পারবে না, বরঞ্চ নির্যাতিত হয়ে খবরের কাগজের শিরোনাম হবে। তাই সে তার স্বপ্নের রাজকুমারের ঘর ছেড়ে এসে, বুক ভাঙ্গা কষ্ট নিয়ে নিজের জীবনকে আপন গতিতে চলতে দিলো। তার মেয়েটা হয়েছে তার ন্যাওটা, তাই অপর্ণাও চলে আসলো তার সাথে। সেই থেকে দিব্য একা।
হঠাৎ মৃদু শব্দে পিছনে ফিরে দেখলো দরজার পর্দা ধরে মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে। ঘুম জড়ানো মায়াবী কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো, ‘ঘুমাবে না?’ মেয়েটিকে চমকে দিয়ে দিব্য ওর নাম জানতে চাইলো। কিছুটা অদ্ভুত কন্ঠে মেয়েটা বললো, ‘মেহের’! দিব্য তাকিয়ে থাকলো মেয়েটির দিকে, তারপর বললো, ‘আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। সকাল হলে আর বৃষ্টি থেমে গেলে তুমি চলে যেয়ো’।
রাত চারটার ঢাকা শহরে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালিয়ে এক বাসার সামনে এসে থামলো দিব্য। তিনবার কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুলে দাঁড়ালো মেহের।
- কেমন আছো মেহের? কেমন আছে অপর্ণা?
- এত রাতে তুমি?
- বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবে, না ভিতরে বসতে বলবে?

মেহের হেসে ফেললো। হাসলে মেহেরকে খুবই সুন্দর লাগে এই মধ্যবয়সেও। সে হেসেই বললো, ‘তোমাকে ভিতরে আসতে বলার সাধ্য আমার নেই। মেয়ে বড় হয়েছে, আমি তোমাকে ভিতরে আসতে বললে আমি ওর কাছে খুব ছোট হয়ে যাবো। আর সবচেয়ে বড়ো কথা তোমাকে ভিতরে বসতে বলার ইচ্ছেও আমার নেই, সে তুমি যাই মনে করো। ভোর প্রায় হয়ে এলো, অপর্ণা এখনই ঘুম থেকে উঠবে, আমি চাই না, সে তোমাকে দেখুক’।
মেহেরের দিকে কিছুক্ষন স্থির তাকিয়ে থেকে মাথা নিচু করে দিব্য বের হয়ে আসলো। গাড়ির দিকে না এগিয়ে এই মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেই ভোরের আলোতে সামনের দিকে হাঁটতে থাকলো, কিন্তু দিব্যের মনে হলো সে অন্ধকার পথে হাঁটছে। একবার পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো, দরজাটা বন্ধ হয়ে গেছে।

ভোর রাতের স্বপ্ন ভেসে আসে

ভোর রাতের স্বপ্ন ভেসে আসে


ভোর রাতের স্বপ্ন ভেসে আসে
‍নিত্য আমার পথে
আমারই ঘুরপাক খাওয়া,
উন্মত্ত সভ্যতার রমরমায় প্রতিনিয়ত
ক্ষুধার্ত হই;
ক্রমশ অস্থির,দুর্বল হয়ে পরছি!
ভয় পাচ্ছি কেন? শরীরে “ঘা”,
উচাটন মন;
ভাবনার দো’টানায় বিভক্ত হচ্ছি কেন?
বিবেক আমার মুক্তি চায়
চারপাশে বিপন্ন বিদ্রোহ,
তাকে ঢেকে রাখে নগ্ন মেয়ে মানুষের শরীর
ভণ্ডামির বর্ণচোরা আদর্শে ডুবছে সমাজ।

তবু, একই পথে ঘুরপাক খাওয়া
পারছিনা এগুতে,সমুখে সীমাহীন দিগন্ত
চর চর করে বাড়ছে বয়স,
ক্রমশ বাড়ছে মৃত্যু ভয়,দুর্বল করছে শরীরের ব্যাধি
শরীরের ভিতরে যত গোলমাল।

মৃত শরীরটাকে বয়ে নিয়ে যায়
যেখানে সব আঁধার প্রান্তর!
নিদ্রাহীন চোখে,
ভোর রাতের স্বপ্ন ভেসে আসে;
তেপান্তরের মাঠে শিশুরা লাল বল নিয়ে করছে খেলা,
তাদের সেই উচ্ছ্বল তায়
বাঁচবার ক্ষীণ আশা জাগে;

ঘুম ভেঙ্গেছে তখনও হাসছি
সকাল হয়েছে তখনও হাসছি
ঠোঁট চেপে তখনও হাসছি।

চাঁদ

চাঁদ

Add caption
একটা কিছু দেখি আমি
একটা কিছু দেখি
সন্ধ্যা যখন ঘোমটা দিয়ে আসে
রঙ তুলিতে রাঙিয়ে আকাশ
মিষ্টি করে হাসে
নীল পাখিরা গানের সুরে সুরে
ডিগবাজী খায়
হাওয়ায় উড়ে উড়ে।

ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আমি যখন দেখি
একটা কিছু দেখি
আমার সাথে পাড়ার ছেলে-মেয়ে
চোখ মেলে চায় দূরে
বিশাল আকাশ ফুরে
বহুদিনের স্বপ্নগুলো উড়ে
নীল আকাশটা রাঙিয়ে দিলো
রঙে
বাহারী এক ঢঙে
ঢঙের মাঝে
রঙের মাঝে একটা কিছু আঁকা
হ্যাঁ হ্যাঁ একটুখানি বাঁকা
চাঁদ উঠেছে পিপুল গাছের নাকে
রূপার আলো ছড়িয়ে পাতার ফাঁকে।

বন্ধু তোমার বিষন্নতার আঙ্গিনায় আমি হবো খুশির ঘাসফুল

বন্ধু তোমার বিষন্নতার আঙ্গিনায় আমি হবো খুশির ঘাসফুল


Add caption
প্রেম সে,তো চাইলেই পারি; আছে প্রকৃতির ভূবনে;
আছে চারপাশে হাওয়ার মতো; আছে উত্তাল তরঙ্গ হয়ে।
আমি নিরাশার ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে বসে আছি নিরবে;
আমি নিঃশব্দে আঁকি নিজের জমে থাকা কথা।

আমি বন্ধু হতে চেয়েছি
আমি প্রেমী হতে চাইনি; আমি প্রেম চাইনি; তোর সঙ্গ চেয়েছি।
প্রেম তুলিনি শূন্য মনের ঝুড়িতে;
আমি ভাসতাম না এইভাবে শূন্যের তেপান্তরে।
যখন তোর মনটা থাকতো বিষন্নতার আঙ্গিনা; আমি হতাম তখন খুশির ঘাসফুল;
আমি দেয়াল হতাম নোনা জলের; তোর কষ্ট সেথায় কাটতো সাতার।
প্রেম আসতো পরির মতো,কখনও বা ভোরের আকাশের তারা;
সূর্য উঠলেই যার সারা।

আমি বন্ধু হতে চেয়েছি পেয়েছি তোর প্রেম;
আমি তো প্রেম চাইনি; চাইনি হতে আবেগের রঙ্গিন ফুল।
হেরেছি আমি জীবন খেলায় একটু একটু করে;
হয়ে আছি ভাস্কর্য।

পারিনি অনেক কিছুই, হয়তো পারতামও না, আমার আকুলতা ছিলো সামান্যতায়;
কারো বন্ধু হবো; সকাল আর সন্ধ্যের দুরত্বে নয় পুরো সময় আমার থাকবে তাকে ঘিরে।
কিন্তু হায় আমি নিরালায়; আমি দু’হাত তুলে ডাকি তোকে
বন্ধুত্বের যোগ-বিয়োগের খাতা খুলে তুই প্রেমের অংক কষতে চাস আমার গায়।
তুই বন্ধুর পথে প্রেম নিয়ে আছিস বসে; আমি তাই থমকে যাই
খুজে ফিরি সেই মানুষকে আমি হাতরাই সেই সুর আমার আকুলতা বলে,
দাড়াও পথিক তোমার আঁচলে একটু বন্ধুত্ব হবে কি ?
নাহ ;প্রেম চাইনা।
প্রেমের নীড়ে ডাকে তাদের দু’হাত পাশ কাটে যখন এক পক্ষকাল।
আবার ফিরে এসে দাঁড়াই সেই পথের ধারে;
যে পথে তোর স্পর্শ আছে;

তোর সামনে দাড়াবো হাতে রাখবো হাত।
তোর চোখ চাইনা;
আমি চলবো এক পথে তোর সাথে;
যে পথে থাকবে না বিরহ; থাকবে শুধু তোর আর তোর কথা
প্রেম নেবোনা বন্ধু তোর আকুলতা হোক সন্ধ্যে রাতের অনুভূতি;
থাকবো আমি তাতেই মিশে।

সময় করে কখনোবা মন খারাপ হলে পড়ে নিস রেখে দেয়া সেই চিঠিটা;
আমি প্রেমপত্র লিখতে পারিনি; হয়তো জানিনা ;
তাই সরল করে লেখা বন্ধুত্বের নদীতে ভাসা এক তরীর গল্প।
আমি আবেগের নদীতে সাম্পান ভাসিয়েছি, তবে সে আবেগ হার মানেনি ভালোবাসার স্রোতে।
আমি প্রেমের সাগরে বন্ধুত্বের জাহাজে তোকে নিয়ে ভাসবো।
আমি প্রেম চাইনা; তাই ডাকিস আমায় যখন নোনা জলের ভূবন থাকবে তোর চারপাশে
যখন বিরহী হতে চায় তোর মন বিষন্নতার নীল নদীতে।
না পারার দলে গিয়েছি ভীড়ে তাই থাকবো না তোকে ভূলে;
তুই তো গিয়েছিস প্রেমের সাগরে চলে।

আমি তবুও বসে আছি নিয়ে অনুভূতির তিক্ত আকাশ,
হয়তো আসবি ফিরে যখন থাকবেনা তোর আবেগের কোন টান।
রাত নামবে সন্ধের আঙ্গিনায়,ব্যাস্ততার শেষ হবে সেই রাতের গায়
যে রাতে আমার অনুভূতি তোকে ভীষন করে ভাবাবে
খুজে ফিরে কাঁদবি; একটা শূণ্যতা তোকে আকুলতা জাগাবে

বন্ধু তোমার বিষন্নতার আঙ্গিনায় আমি হবো খুশির ঘাসফুল

বন্ধু তোমার বিষন্নতার আঙ্গিনায় আমি হবো খুশির ঘাসফুল


প্রেম সে,তো চাইলেই পারি; আছে প্রকৃতির ভূবনে;
আছে চারপাশে হাওয়ার মতো; আছে উত্তাল তরঙ্গ হয়ে।
আমি নিরাশার ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে বসে আছি নিরবে;
আমি নিঃশব্দে আঁকি নিজের জমে থাকা কথা।
আমি বন্ধু হতে চেয়েছি
আমি প্রেমী হতে চাইনি; আমি প্রেম চাইনি; তোর সঙ্গ চেয়েছি।
প্রেম তুলিনি শূন্য মনের ঝুড়িতে;
আমি ভাসতাম না এইভাবে শূন্যের তেপান্তরে।
যখন তোর মনটা থাকতো বিষন্নতার আঙ্গিনা; আমি হতাম তখন খুশির ঘাসফুল;
আমি দেয়াল হতাম নোনা জলের; তোর কষ্ট সেথায় কাটতো সাতার।
প্রেম আসতো পরির মতো,কখনও বা ভোরের আকাশের তারা;
সূর্য উঠলেই যার সারা।
আমি বন্ধু হতে চেয়েছি পেয়েছি তোর প্রেম;
আমি তো প্রেম চাইনি; চাইনি হতে আবেগের রঙ্গিন ফুল।
হেরেছি আমি জীবন খেলায় একটু একটু করে;
হয়ে আছি ভাস্কর্য।
পারিনি অনেক কিছুই, হয়তো পারতামও না, আমার আকুলতা ছিলো সামান্যতায়;
কারো বন্ধু হবো; সকাল আর সন্ধ্যের দুরত্বে নয় পুরো সময় আমার থাকবে তাকে ঘিরে।
কিন্তু হায় আমি নিরালায়; আমি দু’হাত তুলে ডাকি তোকে
বন্ধুত্বের যোগ-বিয়োগের খাতা খুলে তুই প্রেমের অংক কষতে চাস আমার গায়।
তুই বন্ধুর পথে প্রেম নিয়ে আছিস বসে; আমি তাই থমকে যাই
খুজে ফিরি সেই মানুষকে আমি হাতরাই সেই সুর আমার আকুলতা বলে,
দাড়াও পথিক তোমার আঁচলে একটু বন্ধুত্ব হবে কি ?
নাহ ;প্রেম চাইনা।
প্রেমের নীড়ে ডাকে তাদের দু’হাত পাশ কাটে যখন এক পক্ষকাল।
আবার ফিরে এসে দাঁড়াই সেই পথের ধারে;
যে পথে তোর স্পর্শ আছে;
তোর সামনে দাড়াবো হাতে রাখবো হাত।
তোর চোখ চাইনা;
আমি চলবো এক পথে তোর সাথে;
যে পথে থাকবে না বিরহ; থাকবে শুধু তোর আর তোর কথা
প্রেম নেবোনা বন্ধু তোর আকুলতা হোক সন্ধ্যে রাতের অনুভূতি;
থাকবো আমি তাতেই মিশে।
সময় করে কখনোবা মন খারাপ হলে পড়ে নিস রেখে দেয়া সেই চিঠিটা;
আমি প্রেমপত্র লিখতে পারিনি; হয়তো জানিনা ;
তাই সরল করে লেখা বন্ধুত্বের নদীতে ভাসা এক তরীর গল্প।
আমি আবেগের নদীতে সাম্পান ভাসিয়েছি, তবে সে আবেগ হার মানেনি ভালোবাসার স্রোতে।
আমি প্রেমের সাগরে বন্ধুত্বের জাহাজে তোকে নিয়ে ভাসবো।
আমি প্রেম চাইনা; তাই ডাকিস আমায় যখন নোনা জলের ভূবন থাকবে তোর চারপাশে
যখন বিরহী হতে চায় তোর মন বিষন্নতার নীল নদীতে।
না পারার দলে গিয়েছি ভীড়ে তাই থাকবো না তোকে ভূলে;
তুই তো গিয়েছিস প্রেমের সাগরে চলে।
আমি তবুও বসে আছি নিয়ে অনুভূতির তিক্ত আকাশ,
হয়তো আসবি ফিরে যখন থাকবেনা তোর আবেগের কোন টান।
রাত নামবে সন্ধের আঙ্গিনায়,ব্যাস্ততার শেষ হবে সেই রাতের গায়
যে রাতে আমার অনুভূতি তোকে ভীষন করে ভাবাবে
খুজে ফিরে কাঁদবি; একটা শূণ্যতা তোকে আকুলতা জাগাবে

মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

চাঁদের খুকী

চাঁদের খুকী [হিমুর জন্য]

-চাঁদের খুকী-
ওগো ফুলের মেয়ে !
ছোট্ট তোমার তনুখানি কি দিয়ে গো গড়া !
ভোরের নরম রৌদ্র দিয়ে ?
মেঘের ভেঁজা বাষ্প দিয়ে ?
কাঁশের পেলব পুষ্প দিয়ে ?
রামধনুকের বাহার দিয়ে ?
শরৎ-প্রাতের শিউলী দিয়ে ?
কার গুণে গো তুমি হলে এমন আদর-ভরা !

ওগো লক্ষ্মীসোনা !
মানিক-ঝরা এমন হাসি কোথায় পেলে তুমি !
পারিজাতের রূপ নিয়ে কি ?
ডালিম ফলের বীজ থেকে কি ?
রাতের বেলার ওই জোনাকী ?
ঝলকে ওঠা হিম কণা কি ?
অযুত তারার দীপ্তি নাকি ?
কিসে গড়া ওই হাসিটুক্ ভেবেই না পাই আমি !

ওগো ছোট্ট পরী !
কিসে এত স্নিগ্ধ হলো তোমার চোখের তারা !
স্বর্গ থেকে রশ্মি নিলো ?
শুভ্র চাঁদের জোসনা নিলো ?
পরীর দেশের স্বপ্ন নিলো ?
সোনা-বালির ঝিলিক নিলো ?
কোন জাদুকর মন্ত্র দিলো ?
কোথায় পেলে এমন মায়া ভেবেই হলাম সারা !

প্রজাপতি মেয়ে !
এমন কোমল ! কি আছে গো তোমার রেশম চুলে !
শ্বেত-কপোতীর পালক আছে ?
সাগর জলের শ্যাওলা আছে ?
শিশির ভেঁজা দুর্বা আছে ?
জারুল ফুলের কেশর আছে ?
শিমুল তুলোর সোহাগ আছে ?
কোন সে কারণ লুকিয়ে এই কোমলতার মূলে !

এতো কথার পরে ...
এতক্ষণে চাঁদের খুকী মুখটি তুলে বলে .....
মায়ের হাসি-মুখ দেখেছো ?
তার আঁচলে মুখ ঢেকেছো ?
মায়ের গায়ের ঘ্রাণ শুকেছো ?
মায়ের মুখের চুম খেয়েছো ?
মায়ের বুকে ঘুম গিয়েছো ?
তুমিও ঠিক এমনি হবে মায়ের আদর পেলে !!


[উৎসর্গঃ হিমু কে ]

তুহিন(সায়েমা আক্তার তুহিন) আপুর মেয়ে হিমু। ওকে স্বচক্ষে দেখি নি কোনদিন।
তবুও না দেখেই তো অনেক ভালোবেসে ফেলেছি! গতকাল এক নারীর কোলে
এক ছোট্ট শিশুকে দেখলাম ছবিতে। তাও সেই নারীর পিঠের দিক আর শিশু-র
শুধুই মুখটুকু। কি এক মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়ে গেছি, সেই কঁচি মুখের মায়া !

ছবিটা ছিলো আপু আর তার মেয়ে হিমুর।

হিমুর জন্য অনেক অনেক আদর, স্নেহ আর ভালোবাসা।

বৃষ্টি ভেঁজা দিনে

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ২:৪৯

Add caption

আজ বৃষ্টি ভেঁজা দিনে তার কথা মনে পড়ে
যার সাথে আর ভেঁজা হয় না
হবেনা হয়তো আর কোন দিন!

খুব বেশি কিছু না

বৃষ্টি হতেই তুমি চলে আসতে ঐ ছাঁদে
আর আমি এই ছাঁদে
মাঝ খানে হয়তো অবুঝ একটু হাসি
ঠিক হাসি নয় কি যেন
এত টুকুই
তবু কেন যেন মনে হত
আছি আমরা ঐক্যতানে
হাতে হাত রেখে তুমি আকন্ঠ ভিজছ বৃষ্টিতে
আর আমি তোমাতে।

বেশি দূর আর যাওয়া হল না আমাদের

তুমি ছিলে অন্নন্যা রায়
আর আমি রুদ্র হাসান
সংকীর্ণতার কাঁটা বিধল আমার পায়
আমি কিছুতেই আর এগুতে পারলাম না
তুমি বলতে চল পালাই
এই সমাজ সংসার ছেড়ে
দূরে কোথাও
যেখানে সাদা কাল আর নীল মেঘ
ভেসে চলে চুম্বনে
আমি বলতাম পাপ হবে

অচিরেই তোমার সিঁথিতে উঠল সিঁদুর

আর আমার পায়ের কাঁটাটা ফুটল এবার বুকে
বৃষ্টি হলেই তা টের পাই।

মেঘের ডাকে আজ বৃষ্টি কেঁদেছে

মেঘের ডাকে আজ বৃষ্টি কেঁদেছে

কাল রাত থেকে শুরু হওয়া
মেঘের কান্না, থামেনি আজও।
এই ক্ষণেও তা চলছে অবিরাম-
কখনও ঝড়ো,
আবার মৃদু কখনও।
বারান্দার কোণে বসা দাঁড়কাকটা
ভেঁজা শরীর ঝাপটা দিয়ে জানান দিচ্ছে
বর্ষার, বারবার।
মেঘের ডাকে আজ বৃষ্টি কেঁদেছে।
রাস্তার পাশে কাঁদা-জলে মাখামাখি
এক দঙ্গল বালক-
এলোমেলো পায়ে খেলছে ফুটবল,
দারুণ চিৎকারে তারাও জানান দেয়
অবিরাম বর্ষার।
কিংবা দূরের রাস্তার রিক্সাওয়ালা,
যখন অর্ধ-ভেঁজা তরুণীর সাথে করছে দরদাম
কাকরাইল থেকে পল্টন -
তাদের অবয়বেও বর্ষা পরিষ্কার।
মেঘের ডাকে আজ আবারও বৃষ্টি কেঁদেছে;
তাতে সব কিছু ভেঁজা,
ঈষৎ আর্দ্র সবার উপস্থিতি।
শুধু মনটা ভিঁজতে বাকি,
বর্ষা আসবে সেখানেও।
কেননা এমনি এক অফুরান বর্ষায়, তুমি
বন্ধু বলেছিলে আমায়!
এখনও কি বন্ধু ভাবো, যতটুকু
আমি তোমার হতে চাই।
মেঘের ডাকে আজ তাই আবারও বৃষ্টি কেঁদেছে।



শব্দের নিঃশ্বাসে রক্তের দাগ...........

শব্দের নিঃশ্বাসে রক্তের দাগ...........

১৩ ই জুন, ২০১০ রাত ৯:২২


হয়তো তুমি সুখে আছো
সুখী আলোর নিচে,
সুখের আকাশ পাইনি আজও
সে আশাও মিছে।

নতুন ভ্রমর হয়তো তোমায়
গান শুনিয়ে যায়,
ইচ্ছে আমার দূর নীলিমায়
পালাতে আজ চায়।

প্রেমের ফাগুন হয়তো তোমায়
তেমনি করে হাসায়,
নানা বর্ণের কান্নারও ঝড়
আমায় শুধু ভাসায়।

হয়তো তোমার বাগানে সেই
হাসনাহেনা ফোঁটে ?
এখনতো সেই ফুলের তোড়া
অন্য কারও জোটে।

তোমার মুখের হাসি হয়তো
এখনও তেমনি ঝরে,
হাসতে আমি ভুলে গেছি
নিজের ভেতরে মরে।

বুকটা আমার শুধু কাঁদে
কষ্ট ভেঁজা জলে,
দুঃখের সব সুখেরা এখন
কান্নায় টলমলে।

রাতের নিয়ন বাতিগুলো
তেমনি করে জ্বলে,
আঁধার শুধু আমায় খোঁজে
স্মৃতি ছায়ার তলে....

ভেঁজা চোখ।

Add caption
ভেঁজা চোখ।

মেঘের ডানায় ভেসে ভেসে
গিয়েছি অনেক দুর
সঙ্গে ছিলো সুখ-স্বপ্ন
আর
নতুন দিনের সুর।

মেয়ে তুমি হতে দিলেনা
আমার স্বপ্নের ভোর
মেঘের ডানা পাহাড়ে পড়ে
ভেঙে ভেঙে হলো চুড়।

মেয়ে তুমি ভেঙে দিলে
আমার মেঘের ডানা
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখা
সে..ও যে আমার মানা।

উড়তে পারিনা এখন আমি
যাচ্ছি জলে ভেসে
যদি পারো দেখে যে..ও
একবার কাছে এসে।

আমি আজ এক আকাশ জল চাই

আমি আজ এক আকাশ জল চাই
******* হাসনাত *******
আজ আমার কেন যেন
আকাশটাকে ছুঁতে ভীষন সাধ হয়।
মনে হয় যেন আকাশের নীল পর্দা
ছিঁড়েখুড়ে ছুটে যাই সকল
মাধ্যাকর্ষন শক্তিকে কাঁচকলা দেখিয়ে।
মিশে যাই মহাকাশে।

আজ কেন যেন খুব ইচ্ছে হচ্ছে
শত রবি হয়ে সব নদী সাগর মহাসাগরের জল
নিমেষে বাষ্প করে ফেলি।
সেই বাষ্প গিয়ে জমুক আকাশ কোনে
ঘন মেঘের রুপ নিয়ে।
সমস্ত পৃথিবীটাকে ছেয়ে ফেলুক
কালো মেঘের অন্ধকার পর্দায়।
হ্যাঁ, সমস্ত পৃথিবীটাকেই।

তারপর.....

হোক বর্ষন এক মহা বৃষ্টি।
আবার ভরে উঠুক দুনিয়ার সব
নদী নালা খাল বিল, সাগর মহাসাগর।
একসাথে, একবারে।
সমতা ফিরে আসুক সকল জলাধারের মাঝে।

ঘটুক চিরতরে এ ঘটনা বারংবার।
অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ুক দুনিয়ার
তামাম অসার পানি বন্টন চুক্তি।

বাতাসের মতোই জল হোক অবাধ, অবারিত।

আজ আমার কেন যেন
আকাশটাকে ছুঁতে ভীষন সাধ হয়।
মনে হয় যেন আকাশের নীল পর্দা
ছিঁড়েখুড়ে ছুটে যাই সকল
মাধ্যাকর্ষন শক্তিকে কাঁচকলা দেখিয়ে।
মিশে যাই মহাকাশে।

আজ কেন যেন খুব ইচ্ছে হচ্ছে
শত রবি হয়ে সব নদী সাগর মহাসাগরের জল
নিমেষে বাষ্প করে ফেলি।
সেই বাষ্প গিয়ে জমুক আকাশ কোনে
ঘন মেঘের রুপ নিয়ে।
সমস্ত পৃথিবীটাকে ছেয়ে ফেলুক
কালো মেঘের অন্ধকার পর্দায়।
হ্যাঁ, সমস্ত পৃথিবীটাকেই।

তারপর.....

হোক বর্ষন এক মহা বৃষ্টি।
আবার ভরে উঠুক দুনিয়ার সব
নদী নালা খাল বিল, সাগর মহাসাগর।
একসাথে, একবারে।
সমতা ফিরে আসুক সকল জলাধারের মাঝে।

ঘটুক চিরতরে এ ঘটনা বারংবার।
অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ুক দুনিয়ার
তামাম অসার পানি বন্টন চুক্তি।

বাতাসের মতোই জল হোক অবাধ, অবারিত।

জন্ম...

জন্ম...
-হাসনাত-
একাকী হাটতে কার ভাল লাগে?
বিশেষত এমন সোনালী বিকেলে, তাইতো...
দিগন্তের ঐ হিরন্ময় সুর্য আমার দিকে চেয়ে ভেংচি কাটে,
আর নীড়ে ফেরা পাখিরা সমোস্বরে বলে ওঠে,-কি গো?
তোমার প্রিয়তমা কই?
থমকে দাড়াই অলক্ষে আমি যে একা!
নাকি আমারও কেউ আছে?
ওগো ঘাস-ফুলেরা,
বলবে সে এখন কোথায় আছে?
এ পথ দিয়ে কভু সে গ্যাছে কি?
উত্তর না পেয়ে... আমি চুপটি মেরে রই।
একটা সময় আর হাটতে মন চায় না,
ভেঙ্গে পড়ি সবুজ গালিচায়, ভাবি......
কখনও প্রেমেতো পড়ি নি,
তাহলে কেন আজ এ দুঃখ বিলাস?
ভাবনাগুলো যেন কাঁশফুলের শুভ্রতায় হারায়,
তারপর হঠাৎ আমার সামনে হাজির হয় নাম না জানা রঙ,
অনুভবের অতীত গন্ধ,
নিভৃত বেদনার ছন্দ,
সুর্যের শেষ লালিমায় নেয়ে ওরা নাচতে থাকে,
ভ্রম লাগা চোখ ওদের মাঝেই আবিস্কার করে এক মানবীকে, তৃন-লতার মত সে আমার সামনে এগোয়, মুখোমুখী বসে, বলে,- কেন চোখে অভিমান? আমার নাম ভালবাসা, প্রেম! সে তো প্রকৃতিরই দান! আমি প্রথম দর্শনেই ভালবাসার প্রেমে পড়ে যাই!

রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১

কেন কিছু বলিনি সেদিন

কেন কিছু বলিনি সেদিন
যেতে যেতে থেমেছিলে একবার
বুঝেছিলাম সে তো সংকেত ছিল ফিরবার
কিছু কথা মনে ছিল বলতে গিয়েও
বলতে পারিনি
ক্ষতি হবে জানতাম এতটা ভাবিনি,
শূণ্য হব জানতাম—–এতটা ভাবিনি।
ভেবেছিলাম আমি ভালোবাসি তোমাকে
ভালোবাসা ছেড়ে দিলেই ভুলে যাব তোমাকে
এতটা কঠিন হবে ভুলে যাওয়া তোমাকে
বুঝতে পারিনি
অনুশোচনা হবে জানতাম এতটা ভাবিনি,
শূণ্য হব জানতাম—এতটা ভাবিনি।

সাদা শাড়িতে শরতের প্রিয়া

সাদা শাড়িতে শরতের প্রিয়াঅগাষ্ট ১৭, ২০১১এই শরতে পড়বে কি তুমি
আলপনা আঁকা পেড়ের সাদা শাড়ি?
তোমার আঁচল ভরে দোবো সাদা শেফালিতে।
আমি নিয়ে যাবো তোমায় ঐ বাকা নদীর ধারে
যেথায় সাদা সাদা কাশফুল ফোটে
নীল আকাশে ভেসে যায় সাদা মেঘ
সাদা বলাকারা থাকে এক পায়ে দাড়িয়ে।

এই শরতে পড়বে কি তুমি
আলপনা আঁকা পেড়ের সাদা শাড়ি?
স্নিগ্ধ আলোর জোসনা রাতে
আমি নিয়ে যবো তোমায় ঐ ভরা দিঘীর পাড়ে
সেখানে হিজল বনে জোনাকিরা জ্বলে
তোমার কোমল হাতে এ হাত রেখে
কইবো কথা সারারত্রি ধরে।

পড়বে কি তুমি
আলপনা আঁকা পেড়ের সাদা শাড়ি, এই শরতে ?

শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

কল্পনার তুমি

কল্পনার তুমি
তোমাকে নিয়ে আমি কবিতা লিখি
তোমাকে সাজাই কতো উপমাতে,
কখনো আকাশের নীল দিয়ে তোমাকে সাজাই
কখনো কৃষ্ণচূড়ার লালে রাঙাই তোমাকে
কখনো বৃষ্টির জলে তোমাকে ছুয়ে যাই
কখনো কামিনি ফুলের সুবাসে তোমাকে অনুভব করি।
তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি,
ভেসে যাই দূর হতে বহু দূরে
নিজেকে খুজে পাই তোমার মাঝে
বিলিন হই তোমাতে বার বার।
তুমি আমার কল্পনার এমন একজন
যাকে ভালবেসে পাড়ি দিতে পারি অজানা পথ
সাগর হতে মহাসাগরের ঢেউকে নির্ভয়ে কাটিয়ে
চলে যেতে পারি দেশ থেকে মহাদেশে।

তোমাকে নিয়ে আমি যা খুশি তাই করতে পারি
বাস্তবের তোমার নেই কোন অস্থিত্ব
তবু তোমাকে ভাবি, তোমার জন্য কাদিঁ
তোমার মাঝে খুজে ফিরি হাসি আর আনন্দ
কল্পনায় ভালবাসায় সিক্ত করি দুজন দুজনাকে।

কবি হতে পারিনি এখনো

কবি হতে পারিনি এখনো


আকাশ গলিয়ে সন্ধ্যা নামে
দিনের আলো মিলে যায়;পূর্ন উদ্দামে
কালো আধার ভুলিয়ে বালিয়ে
আমাকে বানিয়ে দেয় অন্য মানুষ
সন্ধ্যা নামার পর
আমিও নিজের ধান্ধায় হন্য হয়ে উঠি
রাতের অন্ধকার আধঁরে
হাতড়াতে থাকি এক টূকুন নিরবতা
রাস্তার ধারে,চৌরাস্তার মোড়ে
সেজে গুজে থাকা ভ্রাম্যমান পতিতা
সারা দিন সেও অপেক্ষা করে সন্ধ্যা নামার
মাঝে মধ্যে মুচকি হাসি আমিও-

পতিতা আর আমার মাঝে পরাক কই?
সন্ধ্যার পর খদ্দর খুজে সে- আর আমি কবিতা
দরদাম ঠিক হলে খুলে ফেলে জড়তা
আমিও যেমন-
পংক্তির খোজে আমিও ভুলে যাই সব
সন্ধ্যার বুকে ডূব দিয়ে উদ্দার করি কবিতা।

কবিতা ধরা দেয়- ফসকেও যায় কখনো
সারা জীবন এমনই লুকোচুরি করে গেলাম
কবি হতে পারিনি এখনো।

মন ভাল নেই

মন ভাল নেই

আজ আমি কি লিখবো;আজ আমার মন ভাল নেই
আজ আমি কি আঁকবো,আজ আকাশ বড্ড মেঘলা
আজ আর কি গাইবো আজ যে বাতাসে দাবানলের ঘেই
কাজ কর্ম সবি মাটি মনের সাথে হৃদয়ের আঁটি;
মর্ম কথা ক’বোনা আজ পেটে বড় ক্ষুধা,লাজ শরম
খেয়েছে মাথা;কবিতার পায়ে শৃকল বাধা বিষন্ন কলম।
আজ আর হবেনা লিখা একটাও কবিতা।
আজ বেশ ভ্যপ্সা লাগছে
পৃথিবীও আজ হাঁকছে নিজের সমস্ত ভাষা দিয়ে
মানুষের লিপ্সা মিটছেনা কেন?
ভালবাসার তরীতো ভেসে গেছে নোঙ্গর ছিড়ে - -

শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১১

আমার বাল্যকালের সখী ছিল-নিদিতা

নিদিতা- আমার বাল্যকালের সখী ছিল



নিদিতা-
আমার বাল্যকালের সখী ছিল
যার কাছে আমার পুরো
শরৎকাল দায়বদ্ধ।

শরতের শিউলী কুড়ানো
আর
নীল আকাশের নীচে
কাঁশফুলের সাথে সখ্যতা
আমাদের আবশ্যক ছিল তখন।

অপার বিস্ময়ে এই আমি
নিদিতাকে-
আবিষ্কার করতাম আনমনে
কখনও তার হাত ছুঁত
আমার কাঁধ
আবার
তার চুল উড়ে এসে
আমাকে আবেগে ভাসাত রোজ।

নিদিতা-জানো
আজ এই কালে এসে
তোমাকে আর শরতকে
ভিন্ন করতে পারিনা আমি।

একজন মায়াবতীর জন্য

একজন মায়াবতীর জন্য

মায়াবতী তোকে দিলাম শূন্যের নৈশব্দ
নির্ঘুম চাঁদ, চন্দ্রসভার মেঘ
তোর সাথে হোক বন্ধন
হিমালয়ের কান্না-পবিত্র জল ছড়িয়ে পড়ুক
তুই ভিজে যা- ভিজুক তোর মন

আজন্ম শোকগুলো ধুয়ে যাক- উড়ুক গাংচিলের ডানায়
ঠাণ্ডা বাতাস লাগুক তোর চোখে
তুই শূন্য হ। জন্মান্তরের পাপ ধুয়ে যাক তোর
আবার জন্ম নে তুই এই জীবনেই
লালসাগুলো ঝলসে উঠুক তোর
তোকে তোর মতোই দেখুক সবাই
তোর মতোই তুই বেঁচে থাক
প্রতিটা অনুভবে মিশে থাক তুই।
এ যে তোরই জীবন।
তুই সুখী হ।

************

tumar jonno

তোমার জন্য


তোমার জন্য-
একসময় অনেক রঙ্গীন ছিলাম
এই আমি
আবেগপ্রবণ হতাম খুব
বৃষ্টির ছোঁয়ায় শিহরীত হতাম
পাখির ডাকে হতাম বিমহিত।
তোমার জন্য-
কবি হলাম একদা
কলম আর মনের সাথে
ঠুকাঠুকি করে রক্ত ঝরালাম
আমার প্রিয় ডায়রীতে ।
তারপরও হয়নি বলা শেষ কথা
কখনো আবিষ্কার করেছি তোমায়
ক্লিওপেট্রো কখনো শকুন্তলা
আবার কখনো
জীবনানন্দের বনলতা সেন।
কত নামে পূজা করেছি তোমায়।
জানা হয়নি-
পৃথিবীর হাজারোও আশা মরে
মনেরও অজান্তে
তিল তিল করে গড়ে তুলা স্বপ্ন
ভেঙ্গে চুরমার হয় কারো অবহেলায়।
তারপরও জানা-
কেমন আছো তুমি ?

শিরোনামহীন কিছু একটা লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে...

শিরোনামহীন কিছু একটা লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে...

একই শহরে আমাদের নিত্যবসবাস
তোমার আমার মাঝে ফারাক শুধু
আলো আর অন্ধকার
মাঝখানে দাগটানা নিয়তি..
আমি, তুমি আর নিরন্তর যাপিত জীবন ।
বহন করি শতাব্দী প্রাচীন অভিশাপ
কোন এক যক্ষের মত..

ক্রমশ অনুভুতি গুলো আলগা হয়ে যায়
ঝাপসা হয়ে যাও তুমিও
হয়তোবা এটাও স্বাভাবিক স্বাভাবিকতা

বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১১

আমি বৃষ্টি হতে চেয়েছিলাম

আমি বৃষ্টি হতে চেয়েছিলাম

আমি বৃষ্টি হতে চেয়েছিলাম, চেয়েছিলাম শ্রাবণ ধারার মতো
চোখের কোনের নির্ঝর হতে,
নোনা শিহরনে তোমাকে জড়াতে
আমি সুখ হতে চেয়েছিলাম; চেয়েছিলাম কুঁড়ে ঘরের পাশে
নিঝুম কোন রাতে একাদশীর চাঁদ হয়ে ঝুলে থাকতে
আনন্দের শিহরণে তোমাকে ভাবাতে।
আমার স্বপ্ন ছিলোনা;
তুমি স্বপ্ন একেঁছিলে; তাই কষ্ট গুলোকে মুঠো ভর্তি করে
ছুড়ে ফেলেছিলাম তমিস্র নগরীতে , ওরা যেন ফিরে না আসে,
যেন আমাকে আর না কাদাঁয়
আমি বিশ্বাস করেছিলাম তোমাকে; তাই ভেসেছিলাম।
আমি তোমার হৃদয়ের ভালবাসা হতে চেয়েছিলাম, “চেয়েছিলাম চাররঙ্গা রঙ্গে রাঙ্গাতে”
অদ্ভুত ভালোলাগার নেশায় তোমায় বুদ করে রাখতে,
আবেগের বন্দরে তোমায় ভাসাতে।
আমি স্পর্শ চেয়েছিলাম; চেয়েছিলাম নিপুন ছোয়ায় বিস্মিত হতে কখোনো কখোনো !!
এই-চোখে ও-চোখের ভাষা পড়তে
তোমাতে আমাতে একাকার হতে।
আমার বিরহ ছিলোনা
তুমি দু-হাত ভরে দিয়েছিলে ভালবাসার অঞ্জলী!
আমি কুবের হতে চাইনি; আকাশ ছুতে চাইনি;
আমার দৈন্যতায় তোমাকে সাজাতে চেয়েছিলাম;তোমার সখ্যতা চেয়েছিলাম
তোমার উচ্ছলতায় আমার হৃদয়ের জট খুলেছিলো।
টুপটাপ বৃষ্টি কিংবা ঝড় তোলা সন্ধ্যাকে তুমি কাছে টেনেছিলে
আমাকে টানো নি !!
আমাকে আহবান করে,
অজানা কি এক অভিমানে;
হাতের মুঠোয় নিয়ে শেষে ছুড়ে ফেলে চলে গিয়েছিলে ?
তারপর আর ফিরে আসো নি।
তবুও আমি এখনো বৃষ্টি হতে চাই তোমার চোখে?
শ্রাবণ ধারার মতো।

অনামিকা....

আজও ভুলতে পারি নাই

যাহাকে ভালবাস তাহাকে নয়নের আঁড় করিও না
যদি প্রেম বন্ধন দৃঢ রাখিবে তবে সুতা ছোট করিও
বাঞ্ছিতকে চোখে চোখে রাখিও
অদর্শনে কত বিষময় ফল ফলে
যাহাকে বিদায় দেবার সময় কত কাদিয়াছ, মনে করিয়াছ বুঝি তাহাকে ছাড়া দিন কাটিবে না –কয় বছর পর তাহার সাথে যখন আবার দেখা তখন কেবল জিজ্ঞাসা করিয়াছ – ভাল আছ তো?
হয়ত সেই কথাও হয় নাই, কথাই হয় নাই- আন্তরিক বিচ্ছেদ ঘটিয়াছে একবার চোখের আড়াল হলেই যা ছিল তা আর হয় না
যা যায় তা আর আসে না
যা ভাঙ্গে তা আর গড়ে না
মুক্ত বেনীর পর যুক্ত বেনী কোথায় দেখিয়াছ ????
জীবন মানেই সুখের স্মৃতি বয়ে বেড়ানো—
বেঁচে থাকা মানেই দুঃখের সাথে অজান্তে সহবাস করা—
অবিমিশ্র সুখ মানুষের ভাগ্যে কখনোই আসে না—
সুখ বাঁচিয়ে রাখতে সবচেয়ে বেশী অস্বস্তি বোধ করে মানুষ—
যে কোন ছল ছুঁতোয় সে দুঃখকে দেকে আনে—
সুখের চেয়ে দুখের সাথে বাস করতে সে বেশী আরাম বোধ করে, কারন অতি সুখে হাহাকার থাকে না—
স ন্দেহ, জ্বালা অথবা নিজেকে বঞ্চিত ভাবার যন্ত্রনা থাকে না—
কোন এক মুহুর্ত বা কিছুদিনের বুকে খুশীর সূচীকর্ম সারাজীবন টাঙ্গিয়ে রাখার নাম জীবন, মানুষ তাতেই অভ্যস্ত।

যারা যুদ্ধ করে পাহাড় ডিঙ্গায় তারাই কি শুধু বীর?
যারা তিল তিল করে নিজেদের যৌবন, নিজেদের সর্ব সাধ আহলাদ, নিজেদের খাওয়ার সুখ, পরার সুখ, শরীরের সব সুখ কে নির্বিকার চিত্তে প্রতিদিন নিঃশব্দে গলা টিপে মারে নিজেদের জন্মদাতা বা দাত্রী, ভাই বোনদের কারনে তারা কি বীর নয়?

প্রতি মুহুর্তে নিজের সঙ্গে যুদ্ধে যে যোদ্ধা নিজেকে বারবার পরাজিত করে সে কি সত্যিকারের বীর নয়?

দৃষ্টিপাত

প্রেম প্রবঞ্চিতকে কী দেয়?

প্রেম আপন গভীরতায় নিজের মধ্যে একটি মোহাবেশ রচনা করে। সেই মোহের দ্বারা যাকে ভালোবাসি আমরা তাকে নিজের মনে মনে মনোমত গঠন করি। যে সৌন্দর্য তার নেই, সে সৌন্দর্য তাতে আরোপ করি। যে গুণ তার নেই, সে গুণ তার কল্পনা করি। সে তো বিধাতার সৃষ্ট কোনো ব্যক্তি নয়, সে আমাদের নিজ মানসোদ্ভূত এক নতুন সৃষ্টি। তাই কুরূপা নারীর জন্য রূপবান, বিত্তবান তরুণেরা যখন সর্বস্ব ত্যাগ করে, অপর লোকেরা অবাক হয়ে ভাবে, “কী আছে ঐ মেয়েতে, কী দেখে ভুললো?” যা আছে তা তো ঐ মেয়েতে নয়– যে ভুলেছে তার বিমুগ্ধ মনের সৃজনশীল কল্পনায়। আছে তার প্রণয়াঞ্জনলিপ্ত নয়নের দৃষ্টিতে। সে যে আপন মনের মাধুরী মিশায়ে তাহারে করেছে রচনা। জগতে মূর্খরাই তো জীবনকে করেছে বিচিত্র; সুখে দুখে অনন্ত মিশ্রিত। যুগে যুগে এই নির্বোধ হতভাগ্যের দল ভুল করেছে, ভালোবেসেছে, তারপর সারা জীবনভোর কেঁদেছে। হৃদয়নিংড়ানো অশ্রুধারায় সংসারকে করেছে রসঘন, পৃথিবীকে করেছে কমনীয়। এদের ভুল, ত্রুটি, বুদ্ধিহীনতা নিয়ে কবি রচনা করেছেন কাব্য, সাধক বেঁধেছেন গানচিত্র, ভাষ্কর পাষাণ-খণ্ডে উৎকীর্ণ করেছেন অপূর্ব সুষমা।
জগতে বুদ্ধিমানেরা করবে চাকরি, বিবাহ, ব্যাংকে জমাবে টাকা, স্যাকরার দোকানে গড়াবে গহনা; স্ত্রী, পুত্র, স্বামী, কন্যা নিয়ে নির্বিঘ্নে জীবন-যাপন করবে সচ্ছন্দ সচ্ছলতায়। তবু মেধাহীনের দল একথা কোনদিনই মানবে না যে, সংসারে যে বঞ্চনা করল, হৃদয় নিয়ে করল ব্যঙ্গ, দুধ বলে দিল পিটুলী– তারই হলো জিত, আর ঠকল সে, যে উপহাসের পরিবর্তে দিল প্রেম। অতি দুর্বল সান্ত্বনা। বুদ্ধি দিয়ে, রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে বলা সহজ–
জীবনের ধন কিছুই যাবে না ফেলা
ধূলায় তাদের যত হোক অবহেলা।

কিন্তু জীবন তো মানুষের সম্পর্ক বিবর্জিত একটা নিছক তর্ক মাত্র নয়। শুধু কথা গেঁথে গেঁথে ছন্দ রচনা করা যায়, জীবন ধারণ করা যায় না।যে নারী, প্রেম তার পক্ষে একটা সাধারণ ঘটনা মাত্র। আবিষ্কার নয়, যেমন পুরুষের কাছে। মেয়েরা স্বভাবত সাবধানী, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর বাঁধে। ছেলেরা স্বভাবতই বেপরোয়া, তাই প্রেমে পড়ে তারা ঘর ভাঙ্গে। প্রেম মেয়েদের কাছে একটা প্রয়োজন, সেটা আটপৌরে শাড়ির মতই নিতান্ত সাধারণ। তাতে না আছে উল্লাস, না আছে বিষ্ময়, না আছে উচ্ছ্বলতা। ছেলেদের পক্ষে প্রেম জীবনের দুর্লভ বিলাস, গরীবের ঘরে ঘরে বেনারসী শাড়ির মতো ঐশ্বর্যময়, যে পায় সে অনেক দাম দিয়েই পায়। তাই প্রেমে পড়ে একমাত্র পুরুষেরাই করতে পারে দুরূহ ত্যাগ এবং দুঃসাধ্যসাধন।জগতে যুগে যুগে কিং এডওয়ার্ডেরাই করেছে মিসেস সিম্পসনের জন্য রাজ্য বর্জন, প্রিন্সেস এলিজাবেথরা করেনি কোনো জন, স্মিথ বা ম্যাকেঞ্জির জন্য সামান্য ত্যাগ। বিবাহিতা নারীকে ভালোবেসে সর্বদেশে সর্বকালে আজীবন নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছে একাধিক পুরুষ; পরের স্বামীর প্রেমে পড়ে জীবনে কোনদিন কোনো নারী রয়নি চিরকুমারী।
এমন প্রেমিকের জন্য কোন দিন সন্ধ্যাবেলায় তার কুশল কামনা করে তুলসীমঞ্চে কেউ জ্বালাবে না দীপ, কোন নারী সীমন্তে ধরবে না তার কল্যাণ কামনায় সিদুরচিহ্ন, প্রবাসে অদর্শনবেদনায় কোন চিত্ত হবে না উদাস উতল। রোগশয্যায় ললাটে ঘটবে না কারও উদ্বেগকাতর হস্তের সুখস্পর্শ, কোনো কপোল থেকে গড়িয়ে পড়বে না নয়নের উদ্বেল অশ্রুবিন্দু। সংসার থেকে যেদিন হবে অপসৃত, কোন পীড়িত হৃদয়ে বাজবে না এতটুকু ব্যথা, কোনো মনে রইবে না ক্ষীণতম স্মৃতি।

প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কী? তাকে দেয় দাহ। যে আগুন আলো দেয়না অথচ দহন করে।

সেই দীপ্তিহীন অগ্নির নির্দয় দাহনে পলে পলে দগ্ধ হলেন বহু কাণ্ডজ্ঞানহীন হতভাগ্য পুরুষ।।

বৃষ্টি ঝড়ে বৃষ্টি পরে

বৃষ্টি ঝড়ে বৃষ্টি পরে
বৃষ্টি পরে বুকের কাছে
বৃষ্টি পরে স্মৃতির ঘরে
বৃষ্টি পরে কদম ফুলে
ছোট্টবেলার বৃষ্টি গুলো
কেমন করে যাই যে ভুলে।
বৃষ্টি পাড়ায় থাকতে বলে
মেঘ ঢেকে যায় তোমার চুলে
ঘন মেঘ নেই যে চোখে
তবু দিলে অশ্রু তুলে
কেমন করে যাই যে ভুলে।

এক দিন এক আষাঢ় মাসে
সাবাই যখন বৃষ্টি ধুয়ে শু্দ্ধ হলো
তোমায় তখন ভিজতে দেখি
খুব একাকী গভীর রাতে
কদম গুলো লুটায় পাশে
তখন তুমি একলা খাটে
নয়ন থেকে বৃষ্টি ঝড়ে
বুকের মাঝে।
বৃষ্টি পরে বৃষ্টি ঝড়ে
আমার ঘরে তোমার ঘরে
বৃষ্টি ঝড়ে বৃষ্টি পরে
এখন সকল বৃষ্টি গুলো
শীতল ভীষন, কাপন ধরায়;
ভীজতে গেলে জ্বর এসে যায়
জ্বরের ঘোরে বৃষ্টি দেখি
ছেলেবেলায়।
১১/০৭/২০১১

সুরঞ্জনার জন্য

সুরঞ্জনার জন্য
সুরঞ্জনা কোন সে সূতার টানে
বারে বারে আসো ফিরে
জীবনের ঐ খনে
কোন মোহ আজ তোমায় টানে
যায় কি তাকে কেনা
কেনার জন্য জীবনে আজ
বারুক কিছু দেনা
কোন কথাতে ভুলে থাকো
সময় কিংবা লাজ
সমীকরণ মেঘের মাঝেও
থাকে কিন্তু বাজ
উল্টো ধারার জীবন যখন
খুব জমে যায় মৌ
পুতুল খেলার পুতুল গুলো
হয়না কিন্তু বউ
ফিরে আসার পথটাতে আজ
শ্যাওলা যদি জমে
খুব উচাটন মন কি বলো
মিষ্টি কথায় দমে।

নগ্না পৌর্ণমাসী

নগ্না পৌর্ণমাসী 
জুলা ০৯, ২০১০ | ০৩:৪৯বিকাল
মেঠো পথে চলার কথা ভেবে
হাড্ডিসার মন গুন টেনে চলে
কর্দমাক্ত জীবনে
লোভের শ্বাপদ জীভ লকলক করে
কোন ঘাটে কোন তরী করে বসবাস!
তবুও লোহার বাসর ঘরে নাগ করে নীল দংশন
সাধের লক্ষ্মীনদরকে,
সব্বাই বেহুলা নয়, বনেদি দেয়ালে কেউ কেউ
খুঁজেফেরে ব্যাংকের ডিপোজিট।
আমিও কি ক্ষুধার আগুনে, অজানা অংশ পূরনে
পরকাল ভুলে ইহকালে মত্ত হয়ে
বাঁকে বাঁকে খুঁজি না জীবনের সাতকাহন!
সহসা জ্বালা করা চোখে
পর্যবসিত হতে হতে আজ
ধারানিবদ্ধ ধিঙ্গীপনার ধার্মিকচূড়ামনি।
বনের সাপে নয় মনের শাপের দংশনে
দুই ভাগ হতে হতে ভাবি ভালো ছিলো শ্মশান জীবন,
কেন এ সময়ের হাতে হাত রেখে নির্মল রোদে
জীবন ধুয়ে পক্ষ-বিপক্ষ লাক্ষরাজ
দুই মুখো সাপ হয়ে হাটা ।

তোমার অভিমান গুলো

তোমার অভিমান গুলো
তোমার অভিমান গুলো বড় বেশী ভালোলাগে।
মাঝে মাঝে তাকে গির্জার কোরাস ভেবে
ভুল মনযোগে কাটে সময়;
ঝরে যাওয়া ফুলের পাপড়ি ভেবে
সযতনে তুলে রাখি বইয়ের পাতার ভাজে।
কখনো বা নতুন টাকার মত
আমার ব্যাংকে জমা করে রাখি;
ভবিষ্যতে খরচ করবো ভেবে।
তোমার অভিমান গুলোকে তুমি
আমারই মত তুলে রেখো আমার জন্য,
শুধু মাঝে মধ্যে একটু ঝিলমিল রোদে
তাকে শুকাতে দিও আমাদের জন্য।
এখন আর এর বেশী প্রয়োজন নেই
এখন তুমি বড় বেশী আদ্র
এখন আমি ভিজতে চাই না তোমার অভিমানে
কারন আমি অনৈতিকতাকে বড় বেশী ভয় পাই
সীমা রেখার বাইরে যেতে পারিনা বলেই ।

আমাদের সব কিছু

আমাদের সব কিছু
আমাদের সব সম্ববনায় অসম্ভবের ভার
চেনা জানা সরল পথে জমে আছে ক্ষার।
আমাদের সব নগ্ন ছবি চার দেয়ালের কাছে
আটকে থাকে কাঠের ফ্রেমে যুক্তি বিহীন ছাঁচে।
আমাদের সব দুঃখ গুলো তাঁতীর তাতে বোনা
দিন রাত্রি ঘটাং ঘটাং শব্দ যাবে শোনা।
আমাদের সব ভাবনা গুলো আকাশ কুসুম ভয়ে
জ্বলে থাকে আকাশেতে দূরের তারা হয়ে।
আমাদের সব ভালোবাসা ব্যাংকে ডিপোজিট
কথার ফাঁকে আটকে থাকে শক্ত কোন গিট।
আমাদের সব সুখ গুলো আজ উড়াল পাখির ডানায়
ঘুরতে বের হয় আকাশ নীলে দূরের অজানায়।
আমাদের সব উচ্ছলতা তপ্ত বালুর বুকে
পায়না ভাষা নীরবতায় দু’জনারই মুখে।
আমাদের সব অবহেলা বারো বছর পরে
একই সাথে বসত করে তোমার আমার ঘরে।

জীবনে সফলতা লাভে দরকার

জীবনে সফলতা লাভে দরকার
জীবনে থাকলে প্রত্যয়
আসবে নিশ্চিত বিজয়।
আশ্রয় হোক না যেথায়
যদি পথেও পড়ে রয় ।
চলার পথে হবে লড়তে
চাইলে শিখতে হবে পড়তে।
স্বপ্ন হৃদয়ে যাই এগিয়ে
অন্তরে বাধা রবেনা জিয়ে।
থাকলে দক্ষতা মিলবে সফলতা
দরকার সততা দরকার নৈতিকতা।

shonno bhok

শূন্য বুক

(১)
(২)
মনে মনে মন কলায়
কত আদর দিয়েছি আমি
ভালবাসা মনে করে
খেয়েছিলে তুমি।
(৩)
খেয়ে খেয়ে তুমি
মুটি হয়েছ আজ
আমাকে বানিয়েছ
শুকনো তেতুলের ছাঁচ।
(৪)
ভালবাসা আজ
করে হা-হা-কার
শূন্য বুকে তাই
জপে নাম বিদাতার।