তুই কি হবি আমার বালিকাবধূ?
১, আমি ভালোবাসা নামের শব্দটা পাল্টে দিতে চাই
আমি ভালোবাসা নামের শব্দটা পাল্টে দিতে চাই
আবেগ নামক শব্দটা ডাস্টবিনের ময়লার স্তপে দেখতে চাই
রাজপথের ড্রেন লাইনের পাশ দিয়ে প্রেমিকার রক্তস্রোত
রাস্তার নেড়ি কুকুরের মুখে প্রেমিকের আহত হৃদয়।
আমি স্বপ্ন নামের আপেক্ষিক শব্দটা খুন করতে চাই
খুটির ট্রান্সমিটারের উপরের পাখির বাসায় আগুন দেখতে চাই
অপেক্ষা নামক শব্দটা আর অপেক্ষায় রাখতে চাইনা
ক্লান্ত পথিকের ঝুলিতে করে অতীতের নির্বাসন।
আমি প্রেমের দৃষ্টিভরা চোখ উপড়ে ফেলতে চাই
ঘরের সিলিংয়ের পাখায় উড়না ঝুলানো দেখতে চাই
শিরা কাটা হাতে নীল সব সরল রেখা পাশাপাশি
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট যাত্রীর মত গাদাগাদির শঙ্খনীড়।
আমি আমার গল্প থেকে তোমার নাম মুছে দিতে চাই
টুকরো টুকরো কাগজে তোমার কান্নার রোল দেখতে চাই
ফুটপাথে শুয়ে ঘচঘচ জুতোর শব্দ শুনে প্রেম পালিয়ে যায়
এক পা খুড়িয়ে চলা কবুতর দুর্গম ঝঞ্জা পাড়ি দিতে চায়।
২, তুই কি হবি আমার বালিকাবধূ?
তুই কি হবি আমার বালিকাবধূ?
গোধূলির আভায় নীড়ে ফিরবো আমি
ঝিঁঝিঁ ডাকা সন্ধ্যায়
একরাশ এলোমেলো ভাবনা
আপন করে নিবি তুই
তোর নগ্ন হাতের কাঁকন গুনে
হারিয়ে যাব ধোঁয়াটে কুয়াশার দেশে।
তুই কি হবি আমার বিজন বনের চারুলতা?
অবুঝ আমি দিশাহারা হবো তোর পত্রপল্লবে
জোনাক জ্বলা রাত্তিরে
গোমরা মুখের মেঘের গর্জনে
জরিয়ে নিবি তুই
তোর শেকড় মাঝে সপে দিয়ে আমাতে
অস্তিত্ব মিশিয়ে হুতুম পেঁচার গান।
তুই কি হবি ঘোরের চাদরের স্বপ্নকিশোরী?
নুপুরের ধ্বনি নাচিবে শিরায় উপশিরায়
আধো পূর্ণিমার আলোয়
মাদুর বিছিয়ে সন্তপর্ণে দুজনে
চাঁদ নামাবো তারাময় ভরা আকাশ হতে
নিঝুম আলোছায়া আর শিতল পাটির ঘ্রান।
তুই কি হবি আমার হৃদয় কোনের গৃহরানী?
সকালের মায়ারোদ মাখিব চোখেমুখে
উষ্ণতা চুমিবে পদ দুজনার
পর্দাটানা বালিশ চাদরের ঘর
আঙ্গুলে জড়িয়ে আঙ্গুলের খাঁজ
নয়ন যুগলে ভালোবাসাদের অভিযোগ।
৩, স্ট্রে ফুল সিগারেট ফিল্টার
স্তব্ধ নির্ঘুম রাত
আধপোড়া জ্বলন্ত সিগারেট
এলোমেলো পুস্তকের ভিড়ে
কিছুটা সৃতি, কিছুটা তুমি
গহীন থেকে আর্তনাদ
না পাওয়ার হাহাকার।
নেশায় বুদ মস্তিস্ক
ঝিম ধরে ঘুরছে সব
স্ট্রে ফুল সিগারেট ফিল্টার
কারো স্পর্শ, কারো ঘ্রান
ম্লান যন্ত্রনার আরেকটি রাত
ফোঁটায় ফোঁটায় লবনাক্ত জল।
টিক টিক টিক ঘড়ি
সিলিংয়ে অপলক তাকিয়ে থাকা
বুক চেপে চিৎকার
কখনো অরন্য, কখনো মেঘ
চেপে ধরে দৈবস্বত্বা
মৃত্যুর খুব কাছাকাছি
নিউরন সেল কেঁপে উঠছে
জানালায় মৃদু বাতাস
আরেকটি অধ্যায়ের অবসান
তাহার প্রেম, তাহার ভালবাসা
ধারালো কিছু একটা
মেঝেতে রক্তস্রোত।
৪, আমার নিকষ অন্ধকারের রাত ঘুমের আদরে ঘুমায় না
তুমি বলেছিলে
একটি সুন্দর সকাল দেবে?
তুমি হয়ত কখনো জানতেই না,
আমার প্রতিটি সকাল তোমার জন্য করুন আর্তনাদ করে;
সাদা গাঙ্গচিলের দল তোমার জন্য
তোমায় দেখাবো বলে বন্দী করে রেখেছিলাম স্নিগ্ধ সকালগুলো।
তুমি বলেছিলে
আমায় ছুটে যাওয়া তারা দেখাবে?
রাতআকাশে শশীর মায়া দেখনি,
আমার নিকষ অন্ধকারের রাত ঘুমের আদরে ঘুমায় না;
ঝিরি বাতাসে জোছনাযাপন তোমার জন্য
তুমি নেই বলে রাখা হয়না হারিয়ে যাওয়া তারার খবর।
তুমি বলেছিলে
বর্ষার জল ছুঁইছুঁই পথে হাটবে?
বর্ষার জলকনা হয়ত তোমার পা স্পর্শ করেনা,
আমি প্রতিটি বর্ষায় অজান্তেই সেই পথে হেটে গেছি নিভৃতে;
শাপলা আর কচুরির ফুল তোমার জন্য
প্রতিটি বর্ষার বিকেল ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকা পদধ্বনি শোনতে।
তুমি বলেছিলে
তুমি কি আমার হবে ?
বিষাদের তিক্ততায় কেটেছে অনেক সময়,
অহর্নিশি আমি বাঁচতে চাই তোমার দেয়া মুহূর্ত আঁকড়ে;
আমি এবং আমার সব তোমার জন্য
আমি আজো তোমারি আছি, তুমিই হারিয়ে গেলে......।
৫, কবিতার শেষ চরন
কবিতার শুরুটা আমিই করেছিলাম
জ্যোৎস্না মাখা রাতে শীতের চাদর জড়িয়ে
একের পরে এক শব্দ সাজিয়ে
তবুও কেন যেন অসম্পূর্ণ......
ফ্লোরে ছরিয়ে থাকা প্যাডের কাগজ
অলস ঘুমিয়ে পরা কলম
ভাবিনি আবার জেগে উঠবে
আবার দাগ কাটবে সাদা কাগজের বুকে।
হ্যাঁ, আমার অসম্পূর্ণ কবিতার মাঝে তোমার আগমন
বৈশাখী ঝড়ের গতিতে শব্দের সমাহার
আমার পা বেঁয়ে সবুজ তরু বেঁয়ে উঠতে শুরু করে
আমি ফিরে পাই আরেকটি বসন্ত।
এরপর আবার সেই অলস কলমের ঘুম
কবিতার শব্দেরা ঝরে পরতে শুরু করে
কিন্তু আজো রয়ে গেছে তোমার আবেশ
কবিতার শেষ চরনে............
## নয় বছর বসয়ে প্রথম ছন্দ মিলিয়ে দাগ টানা অংক খাতায় কিছু একটা লিখে ফেলেছিলাম। আমার ছোট জীবনের প্রথম ক্ষুদ্র সাহিত্য। একটা ষোল লাইনের কবিতা। নিতান্ত ছেলেমানুষি একটা কবিতা আমার ছোট্ট ভাইটাকে নিয়ে। কবিতাটার প্রথম আট লাইন মনে আছে। পড়ে কেউ হাসবেন না,
" রাতুল রাতুল করে সবাই
রাতুল এখন কই?
রাতুল এখন পড়ার ঘরে
পড়ছে এখন বই
বইয়ে ছিল বাঘের গল্প
শুনে দিলো লাফ
সেই লাফে গিয়ে পড়লো
মাটির উপরে ধাপ।"
সেই থেকে শুরু। কবিতা, রূপকথা, ভ্রমনগল্প, ছোট গল্প থেকে শুরু করে প্রেমপত্রও লিখেছি ডায়রী ভরে। কি আজব এক নেশা ! ##
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন