বহু দূরের অসীম আকাশ আজ বনরাজিনীলা পৃথিবীর শিয়রের কাছে নত হয়ে পড়ল। কানে কানে বললে, “আমি তোমারই।”
পৃথিবী বললে, “সে কেমন করে হবে। তুমি যে অসীম, আমি যে ছোট।”
আকাশ বললে, “আমি তো চার দিকে আমার মেঘের সীমা টেনে দিয়েছি।”
পৃথিবী বললে, “তোমার যে কত জোতিষ্কের সম্পদ, আমার তো আলোর সম্পদ নেই।”
আকাশ বললে, “আজ আমি আমার চন্দ্র সূর্য তারা সব হারিয়ে ফেলে এসেছি, আজ আমার একমাত্র তুমি আছ।”
পৃথিবী বললে, আমার অশ্রুও আজ চঞ্চল হয়েছে, দেখতে কি পাও নি। আমার বক্ষ আজ শ্যামল হল তোমার ঐ শ্যামল হৃদয়টির মতো।”
সে এই বলে আকাশ-পৃথিবীর মাঝখানকার চিরবিরহটাকে চোখের জলের গান দিয়ে ভরিয়ে দিলে। কবিগুরু এভাবে বর্ষাকে দেখেছেন। আর এখন আমার দেখা–
পৃথিবী বললে, “আকাশ তোমার আলোর ঐশ্বর্য্যে আমার চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। তোমার সূর্যের আলোয় ঝলসে যাচ্ছি আমি। তোমার কি আমার ওপর একটুও করুনা হয় না।”
আকাশ বললে, “তোমার কষ্ট কেন, আমিও কি কম কষ্ট পাচ্ছি। তোমার সংগে মিলনের আঙ্খাকায় এই ঋতুর প্রতিক্ষায় আমিও বসে বসে দিন গুনি, বুঝতে কি পার না?”
পৃথিবী বললে, “আষাঢ় – শ্রাবণ গেল প্রতিক্ষায়, আমাদের মিলন বুঝি আর হলো না। আর সেই আক্রোশে আমাকে পুড়িয়ে মারার ছল করেছ বুঝি।”
আকাশ বললে, “একথা বলে আমাকে কষ্ট দাও কেন? তোমার দুঃখে আমিও নিদ্রাহীন। একটু ধৈয্য ধর প্রিয়া, মিলন আমাদের হবেই।”
পৃথিবী বললে, “তোমার আলোর উত্তাপে আমার কন্ঠ শুষ্ক, বুক শুকিয়ে ফেঁটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে, তবু তুমি নিশ্চেষ্ট বসে মিলনের আশ্বাস দিচ্ছ। তোমরা এরকমই নিষ্ঠুর, আমার সন্তানেরা তৃষ্ণায় হাহাকার করছে। আমি কি করে স্থির থাকি। তোমাদেরতো আর সন্তান লালন করতে হয় না।
আকাশ বললে, “আমি আজ যে অনাবৃত হয়ে গেছি। মেঘের ঢাকনা আর নেই, দেখছ না। মেঘ কে পাঠিয়েছিলাম আষাঢ়ের প্রথম দিবসে পত্র দিয়ে তোমার কাছে। কিন্তু সে তো আর ফিরে এলো না। সেই পাহাড়ের চুড়ায় বসে বৃষ্টি ঢেলে চলেছে। এই শুকনো ভাদ্রে এসো আমরা মিলনের বদলে বিরহের গান গাই। সেই গানের সুরের ধারায় যদি বরষার ধারা নামে।”
ছেলে আমার মস্ত মানুষ,মস্ত অফিসার মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার। নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি। ছেলের আমার আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।।
আমার ব্যবহারের সেই আলমারি আর আয়না ওসব নাকি বেশ পুরনো,ফ্ল্যাটে রাখা যায় না। ওর বাবার ছবি,ঘড়ি-ছড়ি,বিদেয় হলো তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিলো, কাকে খেলো, পোষা বুড়ো ময়না। স্বামী-স্ত্রী আর আ্যালসেশিয়ান-জায়গা বড়ই কম আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।।
নিজের হাতে ভাত খেতে পারতো নাকো খোকা বলতাম আমি না থাকলে কি করবি রে বোকা? ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদতো খোকা আমার কথা শুনে- খোকা বোধ হয় আর কাঁদে না,নেই বুঝি আর মনে। ছোট্টবেলায় স্বপ্ন দেখে উঠতো খোকা কেঁদে দু’হাত দিয়ে বুকের কাছে রেখে দিতাম বেঁধে দু’হাত আজো খোঁজে,ভুলে যায় যে একদম- আমার ঠিকানা এখন বৃদ্ধাশ্রম।।
খোকারও হয়েছে ছেলে,দু’বছর হলো তার তো মাত্র বয়স পঁচিশ,ঠাকুর মুখ তোলো। একশো বছর বাঁচতে চাই এখন আমার সাধ পঁচিশ বছর পরে খোকার হবে ঊনষাট। আশ্রমের এই ঘরটা ছোট,জায়গা অনেক বেশি- খোকা-আমি,দু’জনেতে থাকবো পাশাপাশি। সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি ভীষণ রকম মুখোমুখি আমি,খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম! মুখোমুখি আমি,খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম! মুখোমুখি আমি,খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম।।
পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব বলেছে পাড়ার দাদারা অন্য পাড়া দিয়ে যাচ্ছি তাই । রঞ্জনা, আমি আর আসবো না।
ধর্ম আমার, আমি নিজে বেছে নিই নি, পদবীতে ছিলনা যে হাত। মসজিদে যেতে হয়, তাই যাই জোর করে যাই বছরে দু এক বার। বাংলায় সত্তর পাই আমি এক্সামে, ভালো লাগে খেতে ভাত মাছ গাঁজা সিগারেট আমি কোনটাই ছুঁই না, পারি না চড়তে কোন গাছ। চশমাটা খসে গেলে মুশকিলে পড়ি, দাদা আমি এখনো যে ইশকুলে পড়ি। কবজির জোরে আমি পারবো না। পারবো না হতে আমি রোমিও, তাই দুপুর বেলাতে ঘুমিও। আসতে হবে না আর বারান্দায়। রঞ্জনা, আমি আর আসবো না।
বুঝবো কি করে আমি তোমার ঐ মেজ দাদা, শুধু যে তোমার দাদা নয়। আরো কত দাদাগিরি, কবজির কারিগরি, করে তার দিন কেটে যায়। তাও যদি বলতাম হিন্দুর ছেলে আমি, নীলু বিলু কিম্বা নিতাই, মিথ্যে কথা আমি বলতে যে পারি না, ভ্যাবা ভ্যাবা ভ্যাবাচ্যাকা খাই। চশমাটা খসে গেলে মুশকিলে পড়ি, দাদা আমি এখনো যে ইশকুলে পড়ি। কবজির জোরে আমি পারবো না। পারবো না হতে রোমিও, তাই দুপুর বেলাতে ঘুমিও। আসতে হবে না আর বারান্দায়। রঞ্জনা, আমি আর আসবো না।
সত্যিকারের প্রেম জানিনা তো কি সে, তা যাচ্ছে জমে হোম টাস্ক, লাগছে না ভাল আর মেট্রো চ্যানেল টা, কান্না পাচ্ছে সারা রাত। হিন্দু কি জাপানী, জানি না তো তুমি কি, জানে ঐ দাদাদের গ্যাং, সাইকেলটা আমি ছেড়ে দিতে রাজি আছি, পারবো না ছাড়তে এ ঠ্যাং। চশমাটা খসে গেলে মুশকিলে পড়ি, দাদা আমি এখনো যে ইশকুলে পড়ি। কবজির জোরে আমি পারবো না। পারবো না হতে আমি রোমিও, তাই দুপুর বেলাতে ঘুমিও। আসতে হবে না আর বারান্দায়। রঞ্জনা, আমি আর আসবো না। পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব বলেছে পাড়ার দাদারা অন্য পাড়া দিয়ে যাচ্ছি তাই । রঞ্জনা, আমি আর আসবো না।
জড়ো হচ্ছে ঝড় কোথাও আকাশে ছুটছে সবাই আমার আশেপাশে জানি দাঁড়াবেনা তুমি আর তোমার বারান্দায় রঞ্জনা আমি আর আসবো না তোমার পাড়ায়
তুমি জানাবে তোমার মত, দেখাবে না মুখ শুধু মন্তব্যে ভরে যাবে অর্কূট শুধু কম্পিউটার আছে, নেই অবসর সময় তাই রঞ্জনা আমি আর আসবো না তোমার পাড়ায়
হাতে লেখা চিঠি তুমি লেখো নাতো আর সময় নেই রাস্তায় হেঁটে বেড়াবার শুধু মুখোমুখি বসে থাকা ব্যস্ত পারিস্তায় রঞ্জনা আমি আর আসবো না তোমার পাড়ায়
কালো হয়ে যাচ্ছে আকাশের কোণ ভেসে যাবে আমার শহর এখন হাঁটু জলে ফিরে যাবো অক্কুর দত্ত লেন তুমি আর যাই হও-তুমি নও, বনলতা সেন তাই মনটা খারাপ, হচ্ছে না আর প্রেমে আমি ঠিক পড়বোই আবার লোডশেডিংয়ে বসে লিখে যাবো ঠিক কবিতা তবু কিছুতেই আমি আর আসবোনা তোমার পাড়া
আমি চেয়েছি দিতে- গোটা জগৎ আমার তুমি চেয়ে বসলে শুধু- হ্যারি পটার হয়না কিছুতেই যেটা হবার নয় রঞ্জনা আমি আর আসবো না তোমার পাড়ায়
নেমে গেছে বৃষ্টি অনেকক্ষণ ভাসছে আমার কলকাতা এখন আমি একা-একা ময়দানে ভিজবো অনেকক্ষণ রঞ্জনা আমি আর ধরবো না তোমার ফোন আমি একা-একা ঘুরে যাবো ভিক্টরিয়া একা-একা ফুচকা, একা লেবুচা তুমি একা-একা ঘরে বসে করে যাও- তোমার চ্যাট সামনে আমার তেপান...তরের মাঠ