[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১২

আমাকে আমি



কেউ কারো স্থান থেকে নেমে এসে
আমাকে সান্ত্বনা বা অনুরাগ জানাবে তা চাচ্ছি না,
যে আমাকে ভেঙেছে, যে আমাকে গড়তে চায়
একমাত্র সে-ই জানবে আমার কোথায়
কখন কীভাবে কষ্ট হয়,
এই যে তুমি অথবা তুমি জাতীয় কেউ
আমাকে জেনেছো, ভাবছো আমি এমন তেমন;
এসবই অযথা এবং তুচ্ছ বিবেচিত হবে
কারণ, আমি নিজেই এখন পর্যন্ত আমাকে
আমার কিছুকে বুঝতে পারি নি।

তোমার মুখ..


তোমার মুখ



আমার হাতের ওপর তোমার মুখটি
তুলে ধরলাম-
দেখলাম, আবেগে বোজা তোমার চোখ।
দেখা হ'লো না।

কতবার বললাম তোমার কানে,
কানে কানে ;-
দেখলাম, রক্তলাজে ফিরিয়ে নেওয়া তোমার চোখ!
দেখা হ'লো না।

তোমার খোঁপা দিলাম খুলে,
জড়িয়ে নিলাম আমার মুখে, চোখে, বুকে-
দেখলাম, পরসুখে দু-হাতে ঢাকা তোমার চোখ!
দেখা হ'লো না।

যাবার সময়-
পার হয়ে যাচ্ছিলাম
একটি দুটি ক'রে সব-কটি সিঁড়ি!
হঠাৎ ফিরে তাকালাম...
দেখলাম, চোখের জলে ভেজা তোমার চোখ!
দেখা হ'লো না।

উড়ন্ত রুমালের নন্দনতত্ত্ব...

 

উড়ন্ত রুমালের নন্দনতত্ত্ব


মেয়েটি একবার শুধু
আমার হাতের তালুতে ঢেলেছিলো
প্রকৃতি ও প্রেমের সরল শব্দকোষ।


সেই থেকে নির্বোধ আঙ্গুলের ভাঁজে ভাঁজে
মানবিক পৃথিবীর যাবতীয় হরিৎ প্রান্তর।


বিন্যস্ত বনের শাখায় প্রবল বর্ষণের পরে
ঝকমকে পত্রালির মিছিলে আমি
হয়ে গেছি ছায়াডোবা চনমনে রোদ।


উড়ন্ত রুমালের নন্দনতত্ত্ব জানে কি মেয়েটি?
জানে কি সফেদ চাদরের ময়দানে
শিল্পনিরপেক্ষ যুদ্ধে হেরে যাবার অভিনয় করে
কী ভীষণ রকম জিতে গেছি আমি!
মেয়েটি একবার শুধু চোখে ঢেলেছিলো আলো।

তারপর থেকে বর্ণান্ধ চোখেরা আমার
খেলাচ্ছলেই সরিয়ে দিয়েছে
পৃথিবীর তাবৎ অন্ধকার।

রাঙ্গা বউ রঙ্গিলা...

 

রাঙ্গা বউ রঙ্গিলা

 
রাঙ্গা বউ রঙ্গিলা
কি জাদু দিলা
‘এই মোর’ ভালবাসা সব নিলে
হেরিনু আমি তব পুষ্প দিলে।


মন বঁধুয়ারে!
যেইদিন তুমি এসেছ ওগো জীবনে আমার!
সেইদিন থেকে জেনেছে এই মন ‘তুমি যে আমার’!


রাঙ্গা বউ রঙ্গিলা
কি জাদু দিলা
ঘুচে গেল মোর সব আঁধার
পরোয়া করিনা কোন বাধার!

মন বঁধুয়ারে!
যেইদিন তুমি লিখিয়েছ নাম আমার জীবন খাতায়
সেইদিন থেকে বসে গেছ তুমি আমার হৃদয় পাতায়!


রাঙ্গা বউ রঙ্গিলা
কি জাদু দিলা
আমি ফিরে ফিরে আসি শুধু তোমারি কাছে
পরোয়া করিনা কোনও-কে কি বলিল পাছে!
মন বঁধুয়ারে!
ওগো প্রিয়া! প্রিয়দর্শিনী! যেইদিন থেকে এসেছ তুমি জীবনে মোর
‘এই মোর’ মন বলে, সেইদিন থেকে মধুময় হল আমার প্রতিটি ভোর!

তিন তিতলী....


তিন তিতলী....

“মেঘ বলেছে যাবো যাবো” বইটি দ্বিতীয় বারের মত শেষ করেছি। সময়টা ২০০৭ সাল। আমি তখন নবম শ্রেনীতে। টার্ম এন্ড পরীক্ষা শেষ। ভ্যাকেশন আর চার পাঁচ দিন পর। এই সময়টা সবাই গল্পের বই পড়ে কাটায়। স্যার রাও কিছু বলেনা। হাতে কোন বই না থাকায় তৌফিকের কাছ থেকে নিয়ে এই বইটিই আবার পড়লাম। প্রথম পড়েছিলাম সপ্তম শ্রেনীতে। দ্বিতীয় বার পড়তে গিয়ে অজানা অনুভূতি টের পেলাম। তিতলী নামের মেয়েটির প্রেমে পড়লাম। এবং তা ভয়াবহ ভাবে। মাথার ভেতর তখন তিতলী তিতলী। বাস্তব জীবনে তিতলীকে খুঁজতে লাগলাম। খুঁজে পেলাম ২০০৯ সালে। ফেসবুক নামের ভার্চুয়াল জগতে। তিনজন তিতলীকে পেয়েছিলাম। একজন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের,একজন ফেনী গার্লস ক্যাডেটের এবং একজন ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেটের। তিন তিতলীর সাথেই আমার বিচ্ছিন্ন কিছু স্মৃতি আছে। এরমধ্যে প্রথম দুই তিতলী আমার ক্লাসমেট। সবেমাত্র ফেসবুকে একাউন্ট খুলেছি। সারাক্ষন অনলাইনে থাকি। রংপুরের তিতলীর সাথে আমার টুকটাক কথা হয়। আমি তাকে তেতুল নামে ডাকি। মোটামুটি মধুর সময়। একটা সময় ছুটি শেষ হয়। আমাকে ফিরে যেতে হয় ক্যাডেট কলেজে। তিতলী নামের ভূত তখনো মাথায়। ক্যাডেট কলেজে বসে লিখে ফেলি তিতলী নিয়ে চার লাইনের একটি কবিতা,

“তেতুল বনে উঠেছে জোছনা আবার নতুন করে
সেই জোছনা বিলিয়ে দিলাম তিতলী তোমার তরে
জোছনা হয়ে জড়াবো তিতলী তোমার এলো চুলে
জোছনা ভরা এই লগনে খোপা রেখো খুলে. . . .”


কবিতাটি তিতলীকে দিতে পারিনি। ছুটি শেষে বাসায় ফিরে দেখি তিতলী আমার ফ্রেন্ড লিস্টে নাই। থাকার কথাও না। দীর্ঘ তিন মাসের অনুপুস্থিতি একটা মানুষকে ভোলানোর জন্য অনেক। তাও যদি মানুষটা ভার্চুয়াল জগতের হয়। তিতলীরা কারো জন্যে অপেক্ষা করতে পারেনা। এক মুহূর্তের পাশে না থাকলে এরা অন্য কাউকে বেছে নেয়। অনেক কাল তিতলীর কোন খোঁজ নেই। হয়তো ভালোই আছে।

পরের দুই তিতলী সম্পর্কে অনেক কিছুই বলতে আমি অপারগ। সামাজিক এবং পারিপার্শ্বিক কিছু কারনে। ফেনীর তিতলী ছিল আমার ভালো বন্ধু। অন্য দুই তিতলীর সাথে ফেসবুকে পরিচয় হলেও এই তিতলীর সাথে পরিচয় মুঠোফোনে। ক্যাডেট হবার সুবাধে ভালো সম্পর্ক। মেয়েটিও ভালো। গান জানে। হুমায়ূন আহমেদ এর অন্ধ ভক্ত। অল্প দিনেই সম্পর্ক বেশ ভালো হয়ে যায়। তুই তোকারী সম্পর্ক। সুন্দর সময়। কোন এক ছুটি শেষে এসে দেখি সে আমার মুঠোফোন আর ধরেনা। এক দিন,দুই দিন,তিন দিন. . .একটা পর্যায়ে বুঝতে পারলাম সে আমার সাথে কথা বলতে চায়না। কাউকে জোড় করে কিছুই আমি করাইনা। আমিও ফোন দেইনা। একসময় ফেসবুকে তাকে পেয়ে যাই হুট করেই। আমার মুঠোফোন নম্বর নেয়। আবার কথা হয়। পেছনের অতীত ভুলে যাই। আবার বন্ধুত্ব। ইচ্ছে ছিল তিতলী নামের কোন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব হলে তাকে মেঘ বলেছে যাবো যাবো বইটি উপহার দেব। তিতলীকে মনের কথা জানাই। সে ইচ্ছে পূরনের সুযোগ দেয়। তবে মেঘ বলেছে যাবো যাবো বইটি তার কাছে থাকায় সে অন্য বই দাবী করে। আমি তার জন্যে ‘তেতুল বনে জোছনা’ বইটি কিনি। বইয়ের মলাটে লিখে দেই সেই কবিতাটি,
তেতুল বনে উঠেছে জোছনা আবার নতুন করে. . . .

কবিতাটি তিতলী নিশ্চই পড়েছিল। কোন এক অজ্ঞাত কারনে তিতলী আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। কবিতা পড়ে তিতলীর অনুভূতি জানা আর হয়ে ওঠেনি। অনেক কাল পরে তিতলীর সাথে আমার হঠাত্‍ দেখা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে। প্রথম এবং শেষ দেখা। ঘটনার আকস্মিকতায় দুজনেই অবাক হই। অনেক কথার ভীড়ে হারিয়ে যায় আসল কথাটি। কবিতার কথা আর জিজ্ঞেস করা হয়না। একসময় হুট করেই তিতলীর কাছ থেকে বিদায় নেই। ফিরে আসার সময় হঠাত্‍ মনে হয়,তিতলীর মুঠোফোন নম্বরটা চাই. . . . . .

অনেক কিছু ভেবে আর চাওয়া হয়ে ওঠেনা। কিছু ইচ্ছে অপূর্ন রেখে দিতে হয়। আবারো হয়তো আমাদের দেখা হবে,চলমান বাস্তবতায়,ঢাকা শহরের ব্যস্ত কোন রাস্তায়. . . .

তৃতীয় এবং সর্বশেষ তিতলী ছিল আমার চেয়ে বয়সে একবছরের বড়। নায়িকা টাইপ চেহারা। চোখে মুখে twilight এর বেলা বেলা একটা ভাব। খুব সাধারন ভাবে দেখেই বোঝা যায় এই মেয়ে ভীষন অহংকারী হবে। যার কাছে ছেলেরা কাগজের নৌকার মত। একটি গেলে খুব সহজেই আর একটি চলে আসবে। এক প্রকার ভয়ে ভয়েই তাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাই। একসেপ্ট ও করে। পরে জানতে পারি সে সে বাংলাদেশের মেয়েদের সবচেয়ে নিয়মতান্ত্রিক এবং আক্ষরিক অর্থে সেরা কলেজের অধিনায়ক। বিশাল ব্যপার। পার্ট থাকা স্বাভাবিক। আমি কবি মানুষ। ফেসবুকে তখন ছ্যাঁকা খাওয়া স্ট্যাটাস দেয়ার কারনে বন্ধু এবং পরিচিত মহলে প্রচুর টীজ খাই। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তার সাথে কথা বলার দুঃসাহস করি। টুকটাক কথা হয়। হায়,হ্যালো পর্যায়ের। আমার চ্যাটের রিপ্লাই দেয় এটাই আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়।মেয়েটাকে যতটা অহংকারী ভেবেছিলাম ততটা না। কিছুটা শান্ত শিষ্ট কিছুটা চঞ্চল মেয়ে। ততদিনে আগের দুই তিতলী কারো সাথে আমার যোগাযোগ নেই। নতুন এক তিতলী,নতুন এক অনুভূতি। হঠাত্‍ করে মনে হয় এই সেই তিতলী যার প্রতিচ্ছায়া আমি মেঘ বলেছে যাবো যাবো বইতে পাই। এই প্রথম মনে হয় গল্পের কোন চরিত্রকে আমি বাস্তবে দেখছি। হুমায়ূন আহমেদ এই মেয়েকে দেখলেও হয়তো তাই বলতো। তিতলী আমার বড় হওয়ার সুবাধে আপু ডাকতে হয়। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমরা একটা নির্দিষ্ট কম্যুনিটির অর্ন্তভূক্ত হওয়ায় সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্ক মেইনটেইন করতে হয়। তিতলী আপুর সাথে সম্পর্ক ভালোই হয়। মানুষকে কাছে টানার এক দারুন ক্ষমতা তার আছে। আর হয়তোবা এজন্যেই কলেজ জীবনে সে কলেজ অধিনায়ক হবার মত সম্মান টা পেয়েছে। তিতলী আপুর সাথে যত সহজে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে তত সহজেই তা ভেঙে যায়। প্রথম প্রথম তাঁর ওয়ালে কবিতা পোষ্ট করতাম। যেখানে তুমুল কমেন্টস এ আমরা মেতে উঠতাম। এরপর কোন এক ছুটিতে এসে দেখি তিনি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে নেই। কারন কিছুটা অজ্ঞাত কিছুটা অনুমেয়।

অনুমেয় কারন গুলোকে কল্পনা স্তরেই রেখে দিয়েছি। আমি আর এর কারন ঘাঁটাতে যাইনি। কিছু রহস্য অমীমাংসিত থেকে যাওয়াটাই ভালো। এর অনেক কাল পরে একটি অনুষ্ঠানে তিতলী আপুর সাথে আমার দেখা হয়। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসে মাঝামাঝি বাকরুদ্ধ এই আমাকে অবাক করে দিয়ে তিতলী আপু কৌতুহলের সুরেই জিজ্ঞেস করে, ক্যামন আছো কবি? আমাকে চিনতে পেরেছো?
তিতলীদের চিনতে অসুবিধা হয়না। হুমায়ূন আহমেদ তৈরি তিতলী উপন্যাসের কালি আর পাতাকে ছাড়িয়ে জীবন্ত হয়ে আছে এই বাংলার আকাশে বাতাসে। প্রতি পূর্নিমায় তিতলীরা জোছনা বিলাস করে। পাশে থাকে নতুন কেউ। আর তিতলী প্রেমী কবিরা লিখে যায় আপন মনে,

তেতুল বনে উঠবে জোছনা আবার নতুন করে
সেই জোছনা বিলিয়ে দেব তিতলী তোমার তরে
জোছনা হয়ে জড়াবো তিতলী তোমার এলো চুলে
ছোছনা ভরা এই লগনে খোঁপা রেখো খুলে. . . . .


অস্বচ্ছ জোছনার আবছায়া মায়াবী আলোয় তিতলীরা খোপা খুলে রাখে কিনা,মাঝেমাঝে জানতে ইচ্ছে. . . . .
(উদাসী কবি)

নিষিক্ত প্রভাতে..

 

নিষিক্ত প্রভাতে



আমাকে নতুন কিছু খুঁজে বের করতে হবে! এমন কিছু, যেটা একদম নতুন। মাঝে মাঝেই ভোর বেলা ঘুম ভেঙ্গে যায়, বুকটা ব্যথা করে ওঠে আর আশেপাশের সব অচেনা মনে হয়। বারান্দা দিয়ে হলুদ রোদ অল্প তাপে গায়ে এসে লাগে, আমি মশারীর ভেতর বসে অনেকটা সময় পার করে দেই। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে। ভাবতে থাকি, আমাকে কি যেন খুঁজে বের করতে হবে! নতুন কিছু! অতীত ঘেঁটে কিছু একটা মেলানর চেষ্টা করি। কিন্তু সেটা যে কি...

একসময় খুব ক্যারাম খেলতাম আর প্রচ্ছন্ন গর্বে চেয়ে দেখতাম আশে পাশের কোন বন্ধুই ক্যারাম খেলায় পারছে না আমার সাথে। এমন কি বড়রাও। আর ছোট কাকু যে কিনা বরিক পাউডার দিয়ে সরল রেখা টেনে আমাকে প্রথম খেলা শিখিয়েছিল, সেই ছোট কাকুও আমার কাছে বারে বারেই হেরে যাচ্ছে দেখে আমি যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর অভাবে মুখ গোমড়া করে রাখতাম সারা-বেলা। তখন ২ টাকা করে, রাস্তার ওপাড়ের ক্লাবে ক্যারাম খেলা হতো। ক্লাস এইট আসলে নিয়মিত ক্লাবে যাওয়ার জন্য তেমন ভালো সময় না। আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটিয়া “রবিন”রা এলো। চশমা পড়া ছেলেটা যে এক সপ্তাহের মাঝে বোর্ড আর তাল গাছ মিলিয়ে মোট নয়বার আমাকে হারিয়ে দেবে তা বুঝি নি। তাও আবার ৩বার নীলে হেরেছিলাম। আমার স্মৃতি শক্তি খুবই দুর্বল, মুখস্থ করতে পারতাম না বলে ইসলাম শিক্ষা আর সমাজে বরাবরই কম নম্বর পেতাম, কিন্তু ভোরের হালকা তাপে হতবাক আমি দেখতে থাকি, রবিনের স্মৃতিটা বেশ অমলিন হয়ে আছে। এই এতো দিন পরেও...

এক দুপুরে আম্মু কেঁদে কেঁদে বলেছিল, “খোকন, রবিন আর নেই, এই মাত্র খবর এলো মারা গিয়েছে!” কি আশ্চর্য রবিন সাত দিন ধরে হসপিটালে ছিল, আম্মু-আব্বু দু দিন পর পর ওকে দেখতে গেলেও আমি একবারও দেখতে যাইনি। হাতের ভেতর লাল রঙের গুটিটা ধরে বসে থাকতাম বিকেল পর্যন্ত “এবার রবিন এলে ওকে আমি এমনিতেই রেডটা দিয়ে দেব আর রেড কভারও দিতে হবে না” রবিন আর আসে নি কোন দিন! সব মনে পড়ে যায়...

এরপর আমি আর কোন দিন ক্যারাম বোর্ড খেলেছি বলে মনে পড়ে না। সূর্যের আলো গায়ে এসে পড়তে থাকে আমিও বসেই থাকি। মাথার উপরে ফ্যানটা শোঁ শোঁ করে ঘুরে চলছে। হঠাৎ তরস্বিনীকে মনে পড়ে যায় নাকি অন্য সব চিন্তারাই অযাচিত ভাবে তরস্বিনীর ভাবনা থেকে আমাকে খানিক ফিরিয়ে রাখে, আমি এবার তা মেলানর চেষ্টা করতে থাকি। এই তো সামনে তরস্বিনীর বিয়ে! কিন্তু এটা অতোটা ইম্পরট্যান্ট না! গুরুত্ববহ হচ্ছে, আমাকে অবশ্যই নতুন কিছু একটা খুঁজে বের করতে হবে! নতুন কিছু একটা! কিন্তু সেটা যে কি...
কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে থাকে...


অনেক সবুজের প্রান্তে তুমি থাকো একাকী
আমি ধূসর ধূসর হয়ে জেগে থাকি,
অনেক মানুষের ভিড়েও তুমি থাকো একাকী
আমি অনেক আশা নিয়ে বসে থাকি।


(শিরোনামহীন)