[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১২

আমার ইচ্ছা করে . . . . .


একদিন ছুটি হবে অনেক দূরে যাবো
নীল আকাশে সবুজ ঘাসে খুশিতে হারাবো।।


যেখানে থাকবে না কোন বাধন
থাকবে না নিয়মের কোন শাসন।
পাখি হয়ে উড়বো ফুল হয়ে ফুটবো।
পাতায় পাতায় শিশির হয়ে হাসি ছাড়াবো।।


একদিন ছুটি হবে

অজানা পথে অচিন দেশে
ঝরনা ধারা হয়ে যাবো ভেসে, হো…. হো…


তারা হয়ে উঠবো মেঘ হয়ে ভাসবো।
লুকোচুরি খেলার ছলে লুকিয়ে রবো।।

বিয়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মাখামাখি'র আলাপন


বিয়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মাখামাখি'র আলাপন
রাত তখন তিনটা। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো। বিছানায় উঠে বসলাম। চোখ দিয়ে তখন কি যেন বের হচ্ছে বুঝতে পারছি না ঠিক... সম্ভবত পানি হবে... ইদানিং আবার চোখ কারণে অকারণেই কাঁদে... আমাকে বিনা প্রয়োজনে অশ্রুকণা উপহার দেয়। যাক সে কথা~ বাসায় দাদু অসুস্থ হওয়ায় আমি প্রথমে তাকে দেখতে গেলাম! বাড়ি সুদ্ধ আমরা মাত্র দুইটি প্রাণী থাকি। তাই একে অপরের ভালো মন্দ দেখা নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে কড়াকড়ি আরোপ আছে... না, দাদী ঠিক আছে... জ্বরটা কমেছে... রুমে এলাম বিছানায় গা দিতে মন চাইছে না; মনের বিরুদ্ধে কোন কিছু করাটা ঠিকও না। তাই চেয়ারে বসলাম। হাতের বা পাশে বই ভর্তি সেলফ! রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ রচনাবলী ২ হাতে নিলাম। উচ্চ স্বরে কবিতা আবৃত্তি করতে মন চাচ্ছিল। কিন্তু...পারছিলাম না... বাড়ির মালিক হয়তো বাড়ি ছাড়ার নোটিস দিবেন, এই ভয়টুকু ভিতরে আছে~ একটার পর একটা কবিতা দেখছি কিন্তু পড়তে মন চাচ্ছিল না; কেন জানি কবিতাগুলো মনে ধরছিল না। হঠাৎ “বিয়ে সংক্রান্ত কবিতা” শীর্ষক কবিতায় চোখ আটকে গেলো। জন্ম নিল আমারো বিয়ে করবার অনুভূতি... প্রস্তুতি স্বরূপ কবিতাটা পড়লাম। আপনারা হয়তো কবিতাটা আগে কখনো পড়েন নাই। কারণ এটা রুদ্রের একটা অপ্রকাশিত কবিতা। যা কেবল রচনাবলীতে পাওয়া সম্ভব... কবিতাটি নিচে-

বিয়ে সংক্রান্ত কবিতা

সেই জন্মের বহুদিন আগে,
সেই জন্মের এক একযুগ আগে
কবিতার সাথে বিয়ে হয়েছিলো বেদনার রাতে
তখন বুঝিনি, তখনো বুঝিনি।

যারা জানে আমি নারীতে নমিত
যারা বলে আমি নেশায় মগ্ন,
তারা জেনে যাক---
এরচে’ও এক সুগভীর নেশা আছে,
কবিতা আমার সেই নেশা, সেই নারী।

রক্তে মাংশে হয়েছিলো পরিনয়---
কবিতা আমার সারা জীবনের বউ
কবিতা আমার দিন রাত্রির সাথি,
কোন নারী দেবে আমাকে এমন সুখ?
০২.০২.৭৭ (সন্ধা) সিদ্ধেশ্বরী, ঢাকা
(রুদ্রের বানান অবলম্বনে)

পড়লাম! হুম পড়লাম! পড়ার পর কবিতা থেকে যে বিষয়টা, সে স্বাদটা উদ্ধারের চেষ্টা করলাম তা হলো কবি কি বলল আমি কি বুঝলাম। কবি বলল, সেই জন্মের বহুদিন আগে মানে গর্ভে... তাহলে গর্ভে কবির বিবাহ হয়েছে কবিতার সাথে! আর তাই দেহ নিয়ে জন্মের পর দেহের রক্তে কবিতার স্বচ্ছ প্রবাহ... কবির মুখটা সে সময় আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল। যদিও আমি জীবনে কবিকে দেখিনি; রুদ্রের ফটো দেখেছি... আর নিজের মনের মাঝে একটা ছবি তো কবেই এঁকেছি... দেখলাম রুদ্রের মুখ ও চোখে করুন বিষাদের ছাপ... সম্ভবত তসলিমা নাসরিনের সাথে কিছু একটা হয়েছে... আর যার ক্ষোভটা কবি কবিতায় প্রকাশ করেছেন এভাবে...

"যারা জানে আমি নারীতে নমিত
যারা বলে আমি নেশায় মগ্ন,
তারা জেনে যাক---
এরচে’ও এক সুগভীর নেশা আছে,
কবিতা আমার সেই নেশা, সেই নারী।"

তসলিমা নাসরিন এই কবিতা কখনো পড়েছেন কিনা জানি না। পড়লে শীতের রাতেও চোখ দিয়ে বৃষ্টি ঝরতো... আমার ভালো লাগার কবিকে বেচারী বুঝতে চেষ্টা করেন নাই, এখানেই আমার কষ্ট ও করুণা হয় তসলিমা নাসরিনের উপর। কবি কতটা নারী দ্বারা ক্ষত-বিক্ষত হলে, নারী দ্বারা বঞ্চনার শিকার হলে কবিতাকে নারীর উপরে স্থান দেয়? রুদ্রও হয়তো দিয়েছিলেন এমন কোন অবস্থায় পরে...
আমার বিয়েটা মূলত এখান থেকেই পাকা পোক্ত হয়। কবিতার থিম ঠিক করলাম,
প্রথমে আমি মাতৃগর্ভে বিবাহ করবো কবিতাকে.........
দ্বিতীয়ত আমি তার সাথে আলিঙ্গনে জড়াবো.........
তৃতীয়ত আমার সন্তান হবে কবিতা......
ঠিক যেভাবে চেয়েছিলাম লিখতে পারলাম না। দেখি শরীর কেন্দ্রিক অনুভূতি গুলো কাজ করছে। মাতৃ গর্ভের কথা লিখতে আমি কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে গেলাম। এখানেই কবিতা লেখা থামিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। পারলাম না। লিখতেই হলো... কবিতার শিল্পবোধটাকে তাই প্রথম লাইনের মধ্যেই টুটি চেপে মারলাম।

"মাতৃ গর্ভে থেকে অবশেষে
আজ বিয়ে করলাম কবিতাকে!"

আমি গোপন বিষয়টাকে পুরোপুরি উন্মুক্ত করলাম। ধীর পায়ে এগুতে লাগলাম। দেখলাম কবিতা আমার জৈবনিক ক্ষুধায় পরিণত হয়েছে~~ তাই লিখলাম,
"সতেজ যৌবনা কিশোরীর লোভে লাল লাজুক
নিজ হাতে বোনা স্বপ্নীল রুমাল "

এরপর বধূকে আলিঙ্গনে জড়াতেই হবে। বিয়ে করে বধূকে বাসর ঘরে রেখে আমি কেন রুদ্রের মত কবিতা লিখতে বসে যাবো? বা বাবাকে লিখতে বসে যাবো......
আব্বা, পথে কোন অসুবিধে হয়নি। নাসরিনকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গত পরশু ঢাকা ফিরেছি। আপনাদের মতামত এবং কোনরকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আমি বিয়ে কোরে বউ নিয়ে বাড়ি যাওয়াতে আপনারা কষ্ট পয়েছেন... এমন কিছু লিখতে বসলে আমার বধূ পালাবে তা আমি জানতাম। তাই নিজেকে সেদিকে আশ্রয় দিলাম না।

"দর্প চূর্ণ করে মনোহারী কবিতাকে জেগে জেগে
কয়েকবার আলিঙ্গন করা হলো...
কিশোরী এখনো নিচ ক্লাসে পড়ে
তাই বোঝে না স্বামীর শরীর,
মন ও মানসিকতা!
জুত দেয় না বিবাহ পরবর্তী সুখের সাম্পানে
আমি আর পারলাম না...
একে বারে সোজাসুজি কাগজের বস্তায়
কলম খুঁচিয়ে লাল-নীল-কালো
মিহি রঙ্গের চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দিলাম
নব বধূর শরীর ও সত্তা!"

সব হলো এবার আমার বিয়ে যেহেতু হয়েছে কবিতার সাথে সেহেতু বিবাহ পরবর্তী সন্তান যে আমার সন্তান হবে। আর আমার কাছে আমার সন্তান আমার কবিতা। তাই আমিই আমার কবিতার জন্ম দাতা রুপে কবিতায় আবির্ভূত হলাম...

"বিশেষ করে চিহ্নিত অঙ্গগুলো নতুন করে গজাল
আমি হয়ে উঠলাম স্বামী
আমি হয়ে উঠলাম সুপুরুষ
তার দৃষ্টিতে আমি কেবল কবি!
অতঃপর জন্ম হলো কবিতার পেটে
নতুন একটি কবিতা!"

সন্তান জন্ম দেবার পর বুঝি মনটা প্রফুল্ল হয়। অনেকটা চাঙ্গা হয়। আমার বেলায় এর কমতি ছিল না। জম্ম দিলাম একটি পূর্ণাঙ্গ কবিতা। আমিই জন্মদাতা... আমিই সুপুরুষ... আমি রুদ্রের কষ্টে চাপা পড়া আর তসলিমা নাসরিনের অবহেলার শিকার এক সাধারণ মানুষ... যে কিনা কান্নার ছলে হাসতে পারে... হাসার ছলে কাঁদতে পারে... নিজের বিয়েটাও কোন রকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া সম্পন্ন করতে পারে। আমি এমন একটা মানুষ যার বয়স ২১ না হতেই মনটাকে ১২১ করার ক্ষমতা রাখে... নিজের চুল গুলো গণনা করার ক্ষমতা আছে। আবার যার কাছে শিশু বন্ধুত্ব পায় আবার নারী দূর্ভোগের শিকার হয়।। সম্ভবত ছোট বেলা থেকে অপর লিঙ্গের প্রতি আমার এক রকম নেগেটিভ এলার্জি ছিল; আর তাই এখন নারী-তথা অপর লিঙ্গের কোন প্রাণীকে দেখলে নেগেটিভ এলার্জি ইউটার্ন নিয়ে পজেটিভ এলার্জিতে পরিণত হয়। আমি বেশ ভালো আছি কবিতাকে বিয়ে করে...

কৃষ্ণ মেয়ে


কৃষ্ণ মেয়ে

ধুপছায়া রাঙ্গা গোধূলি বেলায় কৃষ্ণ বরণ মেয়েটা
উকি মেরে দেখে গেলো আমি বেঁচে আছি কিনা?
খবরের শিরোনামে আমার লোমহর্ষক ছবি ছাপা
হয়েছে যদিও এখনো আমি জীবিত! আমার এই
বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত চেহারা দেখে মেয়ে ভয় পেয়েছিল।

কেঁপে উঠেছিল তার মুখ-বুক ও কেঁদেছিল দুচোখ
কৃষ্ণ মেয়ে এতটা ভালোবাসো আমায়! কই আগে
বলোনি তো?এ মুক্তঝরা সন্ধ্যায় তোমার কথা মনে
পড়ছে বেশ। আর একটিবার দেখা দাও একটিবার
দেখেই আমি বিদায় হবো খবরের শিরোনাম থেকে

বিয়ে করলাম!


বিয়ে করলাম!

মাতৃ গর্ভে থেকে অবশেষে
আজ বিয়ে করলাম কবিতাকে!
সতেজ যৌবনা কিশোরীর লোভে লাল লাজুক
নিজ হাতে বোনা স্বপ্নীল রুমাল

দর্প চূর্ণ করে মনোহারী কবিতাকে জেগে জেগে
কয়েকবার আলিঙ্গন করা হলো...
কিশোরী এখনো নিচ ক্লাসে পড়ে
তাই বোঝে না স্বামীর শরীর,
মন ও মানসিকতা!
জুত দেয় না বিবাহ পরবর্তী সুখের সাম্পানে
আমি আর পারলাম না...
একে বারে সোজাসুজি কাগজের বস্তায়
কলম খুঁচিয়ে লাল-নীল-কালো
মিহি রঙ্গের চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দিলাম
নব বধূর শরীর ও সত্তা!

বিশেষ করে চিহ্নিত অঙ্গগুলো নতুন করে গজাল
আমি হয়ে উঠলাম স্বামী
আমি হয়ে উঠলাম সুপুরুষ
তার দৃষ্টিতে আমি কেবল কবি!
অতঃপর জন্ম হলো কবিতার পেটে
নতুন একটি কবিতা!

ধর্ষিতার রক্তক্ষরণে ভিজে যায় কবিতার পাপড়ি

ধর্ষিতার রক্তক্ষরণে ভিজে যায় কবিতার পাপড়ি

কুচকুচে অন্ধকার
ছাদের হিম বায়ুতে মগ্ন এলোকেশী
সোনালী তরঙ্গে দগ্ধিভূত যৌবন
"কুচ" বিহারে কত শকুনের চোখ লেগে যায়
লালা পড়ে ঝরনাধারায়
এলোকেশী বোধহীন চিত্তে করে অপেক্ষা
লাল শকুনের জন্য অপেক্ষা
নিজের অজান্তেই অপেক্ষা

শকুনের খিঁচুনীতে ছিড়ে যায় কবিতার পাপড়ি
উলঙ্গ কবিতা ,
উলঙ্গ তার যৌবন
আকাশের কোলে ঢলে পড়ে চিতার আগুন
এক বিন্দু ,দুই বিন্দু করে করে স্রোতধারায় বইতে থাকে
"বিলুপ্ত সম্ভ্রোমের বিক্ষিপ্ত পাপড়ি "
অন্ধকারে কবিতার চিৎকার বোধ হয় বাইতুল মোকারম পৌঁছায়
অথচ শকুনের ঠোঁটের কশাঘাতে ক্ষতবিক্ষত কবিতার ভ্রম কাটেনা
"ধর্ষিতার রক্তক্ষরণে ভিজে যায় কবিতার পাপড়ি"

শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১২

আমারই দায়

 
 
তোমার অন্তিমে জন্মেছিলো যা শব্দ-কিছু,
আমার গহন অনুরাগের পথ সীমানার বাইরে;
আমি বিহঙ্গ-বিহীন কিছু জমা অভিমান বয়ে
আমারই লিখেছি আরেক যবনিকা কাব্য;
সেথায় আমার মান আমারই দায়, আমার পরাজয়,
আজি তোমার সুর বেঁধে যা কিছু গাইছি দেখ চেয়ে,
কিছু কুড়িয়ে রাখা টুকরো কান্না,
আমার দাবানলের ক্ষমার পানে চেয়ে......।।