[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০১২

রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না



রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না

রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না

সারা দিনটা পুড়েছে দিন মুনির তাপদাহে। শরীরের রক্তমাংস,চর্বি,ফুসফুস,কিডনি,হৃদ্যন্ত্র,শব্দযন্ত্রসহ যাবতীয় সব কিছু পড়ে ছাই। শুধু হাড্ডি-মজ্জার কিছু অংশ পড়া দাগে এখনও টিকে আছে। বেলা শেষে ধুলায় অযত্নে। ভাবনার আঁকিবুকি খেড়োখাতায়, স্মৃতির স্তুপ যেন নিয়েছে আশ্রয়। সাঁঝে সপ্তা বর্ণা ধুপ শিখা জ্বলে, পুড়ে যাওয়া ছাইয়ে আঁধার ঢাকে। জোনাক বাতি রাতের বান্ধব। দূরে ডেকে উঠে ঐ, স্বপ্ন চেনা সুর। কাজল গাঁয়ে, বিরহী কুকুরের ডাক।

চেনা পথে দিগন্ত হাঁটে। গঞ্জের হাট দুপুর রাতে। এপথে ওপথে জোনাক পাহারায়, স্বপ্নেরা বাড়ি ফিরে।আইল পথে কৃষক জগলু, ঠান্ডা হাওয়া গায়ে মাখে। মাদার ফুলের লাল দল, রাতের ধুলায় গড়াগড়ি খায়। সবে জ্যৈষ্ঠের রাত। আঁধার কনকনে বানে ঘিরে ফেলে। জ্যোত্স্না সঁপিবে শরীর আর একটু পরে।

চেনা স্বপ্ন আজ ধর্ষিতা। লক্ষ নক্ষত্রের চোখ আঁধার ভূ-ভাগে। কাঞ্চনজঙ্ঘা আঁধার মগ্নতায়, ক্ষয়ে যাওয়া বিপন্ন সুখ মাগে। বাড়ন্ত রাতের গভীরতায় ডুবে ডুবে, ধীর লয়ে জ্যোত্স্না তার মুখ তুলে। আঁধার ঘোমটা সরে যায়। চাঁদের যৌবনে রাতের অভিসার। ঘুমের মায়া অন্তিম বিশ্বাস বিলায়, উন্মুখ স্বপ্ন আহ্লাদে। রাতের বিলাপ, জ্যৈষ্ঠ রাতের জ্যোত্স্না।

1419@29 জ্যৈষ্ঠ,গ্রীষ্মকাল

সুপ্ত আক্ষেপ



সুপ্ত আক্ষেপ
গতকাল দক্ষিনের ঘরটি আবার
খুলে দিলাম, যে ঘরটিতে আগে
থাকতে তুমি।এখন থাকবে আমার
মেয়ে রিমলীর কুকুর। রিমলীর
আবদার ফেলি কি করে বল, শত
হলেও একমাত্র মেয়ে তার উপর
কুকুরটি জার্মান শেফার্ড, প্রভাতে
ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় হাটাহাটি
করা আমার অনেক পুরনো অভ্যাস-
তাতো তুমি ভালো করেই জানো।
হটাৎ তোমার রুমের দিকে চোখ
পরায় এগিয়ে দেখি তোমার কাঠের
পালঙ্কে ঘুমাচ্ছে রিমলীর কুকুরটি।
আসলেই জগতে কোন কিছু শুন্য
থাকে না, কখনো ভাবি নি তোমার
খাটে অন্য কেউ ঘুমাবে, এখন
দেখি অন্য কেউ নয় ঘুমাচ্ছে কুকুর।
অতঃপর সে দখল করে নিলো তোমার
খুব প্রিয় আরাম কেদারাটা।এভাবেই
একে একে সে নিয়ে নিলো তোমার
ভাত খাবার বাসন কোশন যা যা
নিত্য প্রয়োজনীয় আছে সব কিছু।
এসব দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই
মাত্র দু দিনেই তাকে সবাই এভাবে
আপন করে নিল, সে যেন এ
পরিবারের ই একজন গুরুত্বপুর্ন সদস্য
তোমার চেয়েও একটি কুকুরের সম্মান
এতো বেশি, সত্যি অবাক হই আমি।
বারবার একটি কথা তোমার বউ মাকে
জিজ্ঞাস করতে গিয়ে ফিরে আসি সামাজিক
অশান্তির কথা ভেবে কিংবা মেয়েকে
জিজ্ঞাস করি নি ওর মনে আঘাত
হবে বলে, কথাটি হলো তোমার জন্যে
কেন বৃদ্ধাশ্রম নামের অদ্ভুত আয়োজন।

সোমবার, ১১ জুন, ২০১২

নষ্ট সময়




নষ্ট সময়

ভাবছি তোমাকে নিয়ে আর লিখব না
অনেক লিখেছি কাজের কাজ কিছুই হয় নি,
লিখতে লিখতে কলমের পানি শুকিয়ে গিয়ে
খাতার মাঝে বনভূমির সৃষ্টি করেছি, কিন্তু
ফলাফলের খাতায় যোগফল শুন্যই আছে।

ভেবেছিলাম আমার লেখা গুলো পড়ে তুমি
নিজেকে শুধরে নিবে আর মনের মরুভূমিকে
ভিজিয়ে নিবে অমৃত সুধা দিয়ে।তুমি তা
কখনোই করো নি।তোমার মরুভূমিতে
কখনো ফুটেনি মানবতা নামের ফুলটি,
কখোন সুবাস ছড়ায় নি আত্মসমালোচনা
নামক মৌমাছিটি।যতবারই তোমায় কাছে
ডেকেছি ততবারই তোমার স্বৈরাচারী
আচরনের স্বীকার হয়েছি।তুমি ঠিক পঁচে
যাওয়া সমাজ ব্যবস্থার এক করুণ প্রতিচ্ছবি,

যেখানে রাজনৈতিক দোলা চালে অতীষ্ট
মানবতার হৃদয়। তোমাকে নিয়ে আর
কখোনই লিখব না, তুমি হলে পঁচে যাওয়া
সমাজ ব্যবস্থার মতো আমার জীবন থেকে
হারিয়ে যাওয়া অদ্ভুত কিছু মূহুর্ত, যা আমি
কখনো মনে রাখব না,রাখতে চাইও না আর।

শুক্রবার, ৮ জুন, ২০১২

কথা রাখনি




কথা রাখনি


নির্ঘুম রাতের আলো আধাঁরীতে
না পাওয়ার নিদারুন কষ্টকে বুকে ধারন করে;
প্রতিটি মুহুর্ত তোমার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি।
শুনেছিললাম পবিত্র ভালোবাসায় কোনো পরাজয় নেই;
এখন দেখছি সব মিথ্যা!
আসলে প্রতিটি মানুষের হৃদয় বাস্তবতার কষাঘাতে চার দেয়ালে বন্দি।
কথা ছিল গ্রাম্য মেঠো পথে হাত ধরে বসে থাকব
সন্ধ্যা গোধুলীর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত।
পড়ন্ত বিকেলের অস্তমিত সূর্যের পানে চেয়ে;
কিন্তু তা হয়নি, কেন তা জানি না।
এ সত্যটা আগে বুঝতে পারিনি;
এখন বুঝতে পারছি ভুল করে।
হয়তো একদিন আমিও হারিয়ে যাব ওই মেঘের দেশে।
মেঘ আমাকে বৃষ্টি হয়ে ফিরিয়ে দিলে;
যাব সাগরের কাছে।
আমার সমস্ত বেদনা তাকে গিয়ে বলব;
আজ থেকে আমিও তোমাদের দলে।
আমি হারিয়ে গেলেও আমার ভালোবাসা রয়ে যাবে;
সেই অনুভূতিটুকু মনে রেখ।
আমি স্বপ্ন হয়ে এসে তোমাকে ছোঁয়ে যাব।
ভুলে যাব কি না তোমায় বলতে পারি না ?
মনের অজান্তে কোনোদিন খুঁজব কি না জানি না ?
স্মৃতি যদি কাঁদায় নিজেকে আড়াল করে রাখব;
তবুও ঝরা ফুলের মতো কোনো গন্ধ ছড়াব না,
কারন; তুমি তোমার কথা রাখনি!!!



********************
৭ জুন ২০১২ , ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯ , ১৭ রজব ১৪৩৩
সৌদি আরব, আল-বদর।

বুধবার, ৬ জুন, ২০১২

কিন্তু হায় তুমি কোথায়


।। কিন্তু হায় তুমি কোথায় ।।
                         হাসনাত
 তোমাকে দেখব বলে আমি দেখি আকাশ মহাকাশ
 আর তার বিচিত্র নক্ষত্র মন্ডল নীল অন্ধকার আলোয়
 আবৃত কৃষ্ঞ উপত্যকা হাজারো বিশ্ব ব্রহ্মান্ড
 হাজারো আলোকের বিচ্ছুরণ
 ফিরে দেখি আমার প্রাণ প্রিয়তম সবুজ পৃথিবী
 বৃক্ষ গুল্ম লতা বনভূমি সুগভীর
 মেঘ বৃষ্টি দিন ও রাত্রির শিশির
 প্রমত্তা মেঘনা ও আমাজনের ঘোলাজল
 সমুদ্রের বিশাল জলরাশি নোনাজল আর তার জল ভাঙ্গা
 বিশাল ঢেউ জলস্রোতে জনসমুদ্র সুবিস্তৃত
 পাহাড়ী বন পাহাড়ী ঝর্ণা উপত্যকা নদ নদী
 হিমালয় চাদ দিন ও রাত্রির সঙ্গম
 কালবৈশাখী সুনামি ও মহাপ্লাবন এলোনিনোর তান্ডব
 জন্ম ও মৃত্যুর দ্যোতনা আলোকিত দিগন্ত দিক চক্রবাল রেখা

 তোমার কণ্ঠস্বর শুনার জন্য আমি উদগ্রীব হয়ে শুনি এখনও
 বিগ ব্যাঙ্গ- এর গুম গুম শব্দ নিসর্গের হাজারো কোলাহল
 প্রকৃতির যানজট হুইশেল পাখ পাখালীর গান
 ধেয়ে আসা সুতীব্র ঝড়ের ঝাপটা
 সমুদ্র মহাসমুদ্রের শব্দ শাম্বত শো শো গর্জন ও তার ঘূর্ণিবায়ু

 তোমার ভালবাসা ও স্পর্শের জন্য সেই কবে থেকে আমি
 অপেক্ষায় আছি থিতু হয়ে
 আমাকে স্পর্শ করে রোদ বৃষ্টি জ্যোত্স্না আর তার
 জল ভরা ভারী বাতাস পরম মমতায় ভালবাসায়
 হিম শীতল তরঙ্গ আর তার উষ্ঞ উত্তাপ

 সময় হলেই আমি আমার সুযোগমত নিসর্গ ও প্রকৃতিকে
 ব্যবচ্ছেদ করি ছুটে যাই সমুদ্রে মহাসমুদ্রে আফ্রিকার তুষারাবৃত মালভূমে
 আকাশযানে ভর করে আকাশ মহাকাশে যাই কাল মহাকালে
 বর্তমান ভবিষ্যত্ ও অতীতের ঠিকানায় কথা বলি
 কিন্তু হায় তুমি কোথায় ??

সোমবার, ৪ জুন, ২০১২

সম্পর্ক (রঙ্গিন কাগজে মোড়া সাদাকালো ভালোবাসা)

সম্পর্ক(রঙ্গিন কাগজে মোড়া সাদাকালো ভালোবাসা)

ভালোবাসা কোনো সিদ্ধান্ত নয়,ভালোবাসা হলো বিশ্বাস আর মায়ার বন্ধনে জড়ানো এক পবিত্র দায়িত্ব। যুক্তির উপর যেখানে আবেগের আদিপত্য সেখানেই ভালোবাসা। যেখানে রঙ্গিন কাগজে মোড়া বাস্তবতা প্রায়ই ভেঙ্গে দিতে চায় সম্পর্কের ভিত্তি। সেখানেই বাস্তবতা কখনো কখনো হেরে যায় এক শরীরে গেঁথে থাকা দুটি আত্মারপবিত্র বন্ধনের কাছে। যখন কলুষিত পারিপার্শ্বিকতা তাদের এনে দাঁড় করায় হাজারটি ভাঙ্গনের কারনের সামনে, তখন তারা একটি কারন খুঁজে ফিরে সম্পর্ককে বাঁচাবার। হাজারো ভুলের মাঝে, কষ্টের মাঝে, সন্দেহের মাঝে কাউকে ভালবাসার জন্য একটি কারনই যথেষ্ট-সেই কারনটি হচ্ছে “ভালোবাসা”। সম্পর্কের শুরুটা ঠিক এমনই।


সময়ের আবর্তে এমন সম্পর্কেও ফাটল ধরে নিছক হেয়ালিপনায়। বেড়ে যায় চাওয়া পাওয়ার অসম ব্যাবধান।অগাধ বিশ্বাস নুয়ে পরে সামান্য সন্দেহের কাছে। সীমাহীন মায়া ম্লান হয়ে যায় মোহের কাছে। সম্পর্কের গুরুত্তের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় ব্যক্তিগত গুরুত্ব। চির ধরে অনুভুতিতে, বিশ্বাসে, ভালবাসায়।
সময়ের খেলায় ভাঁটা পরে আবেগে, বাস্তবতার মুখ বাকা হাঁসিতে বিবর্ণ হতে থাকে টিকে থাকা অনুভূতিরা। অধিকারেরা রূপান্তরিত হয় অনধিকার চর্চায়, আবেগ হয়ে যায় আদিক্ষেতা, বিশ্বাস হয়ে যায় সন্দেহ আর ভালোবাসা হয়ে যায় ডানা ভাঙা আহত পাখি, যে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে নিশ্বাস তো নেয় কিন্তু তার উড়ার ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়। ঠিক তখনি বিশ্বাস আর মায়ার বন্ধনে জড়ানো দায়িত্ব হার মানে ব্যাক্তিগত সিদ্ধান্তের কাছে। অতঃপর ভেঙ্গে যায় সম্পর্ক, দুজনের ভুলে কিংবা একজনের। থেকে যায় শুধু প্রশ্ন প্রশ্ন এবং প্রশ্ন।
প্রশ্নেরা যখন ভীষণ পোড়ায়, ভালোবাসা যখন ভীষণ কাদায় তখন শুরু হয় ভালোবাসা কে আঁকড়ে ধরার কিংবা একেবারে নিঃশেষ করে দেয়ার তুমুল যুদ্ধ। কিন্তু ফেলে আসা আবেগ, অনুভুতি, মায়া, বিশ্বাসের স্থানে জায়গা করে নেয় অসংখ্য যুক্তি, যার কাছে হেরে যায় ভালোবাসাকে আবার গড়ে তোলার জন্য দুজনের কিংবা একজনের সব প্রচেষ্টা। তবুও দুজনের মাঝে পৃথক ভাবে আবেগ অনুভুতি মায়া বিশ্বাস সব থাকে কম বেশি, কখনো কখনো ভালোবাসাও, শুধু মাঝখান থেকে শেষ হয়ে যায় সম্পর্ক।
কেউ সয়ে যায়, কেউ হেরে যায় আর কেউ বেঁচে থাকে অভ্যস্ততায়। কেও জলে ভাসে, কেও বা রক্তে, কেউ বেঁচে থাকে অনুশোচনায়। এভাবেই মরে যায় ভালোবাসা, নিঃশেষ হয়ে যায় সম্পর্ক। কেউ শুন্য হাতে শুন্যে মিলিয়ে যায়, কেউ শুন্যের মাঝে শুন্যই রয়ে যায়।