জানি , তোমাকে পাব না কোনদিন , বেদনার দুরন্ত গাঙচিল নিশিদিন করে উড়াউড়ি আমার হৃদয়-গাঙের 'পর ; হয়তো তোমার কাছে হয়েছে ধূসর প্রথম দেখার সেই মধুময় স্মৃতি ! হৃদয় আমার যেন আজ বিবর্ণ প্রজাপতি, মুছে গেছে স্বপ্নের রঙ - ছিল যত ; জানি, তুমিও নেই আর আমার মতো- সুখের মশালে আজ করিছে ঝলমল - তোমার হৃদয়মহল, স্বপ্নেরা সেথায় করে পায়চারি - করে না তো ছল ! প্রাণপুট ভরে লয়েছ কুড়ায়ে জীবনের যত আস্বাদ ; জানি আমি জানি , মরণেই শুধু পাবে অবসাদ - শ্রান্ত এ প্রাণ আমার ! জীবনের সব রঙ নিয়াছে শুষে যাতনার কালো-অন্ধকার ।
ব্যথিত প্রাণে আজ হেঁটে হেঁটে যাই চেনাপথ ধরে - চলে যাই নদীর কিনারায় রাত্রির অন্ধকারে, যেখানে নুয়েছে ঘাস রাতের শিশিরে । বসে আছি একা - এই মরা-নদীর তীরে - ঢেউয়ের উন্মাদনা নেই , উচ্ছ্বাস নেই যেন কোন ; নদী যেন আজ বড় অসহায় আমারি মতন- হারায়ে ফেলেছে গতিপথ, ভুলিছে ঠিকানা ; কোনখানে রয়েছ আজ তুমি সেও জানি না - শুধু বুকে লয়ে টানি তোমার-আমার স্মৃতি যতখানি !
সারারাত ! সারারাত নদীর সাথে বসে কথা কই, জীবনের মাঝে কেন এত বিস্ময় ? কেন এত ভরাডুবি হয় বারে বার ? মরা নদী জানে ; আমার মৌনতার সব ভাষা পাই পাই করে বলে দিতে পারে ; নদী আর আমার মাঝে নেই তো অমিল ! কী জানি , হয়তো কোন একদিন দু:খের মিছিল আর যন্ত্রণার সব কোলাহল ছেড়ে মিশে যাবো একাকী নদীর গভীরে । আমারে তুমি আর পাবে না সেদিন , খুঁজিবে না জানি ! তবুও যদি কোনদিন একান্ত অবসরে , ছুটে যাও ঐ মরা নদীর তীরে আমি জাগিব আবার, তোমাকে ছুঁয়ে দেবার উন্মাদনায় জোয়ার বইয়ে দেব মরা নদীর গায় হাঁটিবে যখন তুমি তীর ঘেষেঁ ঘেষেঁ, আমিও তখন ঢেউ হয়ে এসে ছুঁয়ে দেব তোমায় - শিশিরের মগ্নতায় সন্ধ্যা হয়ে এলে তুমিও জানি যাবে চলে , চলে যাও ; হয়তো আর আসিবে না এইখানে আমার ভালবাসা কবেই হয়েছে দাহ তোমার হৃদয়-শ্মশানে ! ভস্মটুকুও নেই আর বাকী , একে একে সবি হলো শেষ ; তবুও তোমারেই বাসিয়াছি ভাল , মনেতে পুষি নি কোন বিদ্বেষ !
সূর্যটা তলিয়েগেছে!ডুবে গেছে ওই অস্তাচলে।এক রক্তিম আভাতে ভেসেহারিয়ে গেছে ঠিক পৃথিবীর সীমানা ঘেঁষে।তারপর রাত্রি এসেছে!সব কোলাহলসাঙ্গ করে।এক নিরবতায় ভাসাতে পৃথিবীকেনিস্তব্ধতার পুরু চাঁদরে ঢেকেদিতে। এই নিস্তব্ধতার পরতে পরতে যেনজীবনের সব রঙ থাকে।জীবনের সবগল্প থাকে।না দেখা কত ছবি থাকে!কত দুঃখ এখানে নিরবে কাঁদে!কত সুখতার ছন্দ হারে।এই নিস্তব্ধতার ভাষা ক'জন বলবুঝতে পারে? কত জনেরঅন্তর্দৃষ্টি একে দেখে!ক'জন এর গভীরতা অনুভব করে! যদি কখনো অনুভব করতবে বুঝতে!কি করে কষ্ট রক্ত বিন্দুর মত এক এক করে জমাট বাঁধে!শ্বাসরোধীহয়ে বুকে দুখগুলো জমে থাকে।হৃদপিণ্ড কখন পাথরের মত বুকে চেপে বসে!তিব্রযন্ত্রণায় দু'চোখ দিয়ে রক্ত ঝরে!অসহ্য কষ্টের আর্তনাদগুলো শুধুনীরবেশিরা উপশিরায় বয়ে চলে! এই সব কষ্ট গুলোকে কুড়িয়ে নেয় রাত্রি!তারবিশাল কালো চাদরে ঢেকে রাখে!রাখে লোক চক্ষুর অন্তরালে!কখনো কখনো চাঁদ আসেতার মায়াবি সুধা নিয়ে।বিষণ্ণ প্রান গুলোতে কিছু আলোক ছটা জ্বালে।তারপরআবার আসে আমাবস্যা!!গহীন কালো রাত্রি!!!!
টিপ মনে পড়ে সেই যে আমাদের গভীরতম সুখগুল বুকেনিয়ে রোদেলা দুপুরে হেঁটে যাওয়া। ... বৃষ্টি ধোয়া কোন মেঘলা বিকেলে টিএস সি কিম্বা কলা ভবনের মাঠে বসে গল্পে মেতে ওঠা। কথা না থাকা অনেক কথার ফুলঝুরি ছোটা অচৈতন্য সময় তোমার মুগ্ধ দৃষ্টির লূটোপুটি আমার দুরন্ত লাল টিপে।
অতিক্রান্ত এক যুগ পড় আজো যেন তেমনি সময় স্থির!! তোমার বিচলিত দৃষ্টি আর সব মুগ্ধত থমকে আছে সেই লাল টিপে ......।
কক্ষ পথে ঘুরতে গিয়ে বক্র পথে দূর…. তোমার আমার মিলন রেখা সাত সমুদ্দুর। হিসেব থেকে অংক গুলো তারার মত খসে…. তবু আমার সরল গনিত তিন ব্রাকেটে বসে। অগ্র বুজি পিছন তাকাই চলার পথে বাঁক…. আমার চোখে গভীর রাতে হাজার তারার ঝাঁক। চিকন চোখের গাঢ় কাজল তোর ঘরে বিন্যাস…. আমার শুধু ধুত্রা ফুলে জীবন হা হুতাস। রেলিং ধরে দারিয়ে থাকি মনের কোনে বিষ…. উদম চোখে ভাবনা ভাবায় ঠোটেঁর কোনে শিস।