[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]
অর্ক সারোয়ার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অর্ক সারোয়ার লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১২

একা নীলাঞ্জনা আর কিছু প্রলাপ..



একা নীলাঞ্জনা আর কিছু প্রলাপ
ঘুম ভাঙ্গতেই দু এক ফালি মেঘ ছুঁয়ে যায়
আরেকটা দিন অন্য রকম ইচ্ছে ডানা
বুকের ভিতর উথাল পাথাল বৈশাখী ঝড়
শরীর ভেজা চুমুর দাগে নীলাঞ্জনা।

এক একটা দিন এমন ভাবে শুরু হয়, কোন কিছুই ভাল লাগে না। কেনো ভাল লাগে না জানি না কারণ খুঁজে পাইনি কোনদিন। জাস্ট ভাল লাগে না। ঠিক এই রকম এক একটাদিনে ঘুম ভাঙ্গলেই তোর কথা মনে পড়ে নীলাঞ্জনা।এখোনো কি তুই আদুরে বিড়াল এর মত কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকিস?

নীলাঞ্জনার বুকের তিল এ চাঁদ নেমে আয়
পাহাড় চূড়োয় দাঁড়িয়ে থাকি বিপদ সীমায়
এদিক ওদিক জল চুঁইয়ে যায় ফল্গু ধারায়
গোপন গুহায় তোর শরীরেও জল ছুঁইয়ে যায়।

যেদিন প্রথম তোর শরীরের গন্ধ নিয়েছিলাম সেদিন তোর বুকের ওই কালো তিলটা আমাকে ঈশারা করেছিলো। সেদিন বুঝেছিলাম বিপদ আছে তোর শরীরের কোণায় কোণায়।সাঁতার জানা সত্ত্বেও যে কোন মূহুর্তেই ডুবে যেতে পারি অসীম অতলে।মাঝে মাঝে তুই বড্ডো দুঃসাহসী হয়ে যাস। তোর উত্তঙ্গু পাহাড় চূড়ায় তোর নাভীর হাল্কা ভাঁজে যখন ঘামের বিন্দু চিক চিক করে আমি অপলক তাকিয়ে থাকি।আর গোল্ড ফ্লেক এর ধোঁয়া উড়িয়ে তোর চোখে দুষ্টুমি ফুটে ওঠে, কি দেখছিস? ডুব দিবি, সাঁতার জানিস তো?
সমস্ত রাত জেগেই থাকি

ঘুম আসেনা, কফির কাপে র শব্দ চুমুক
তোর কি কিছুই মনে পড়েনা?

এখন কি তোর কিছুই মনে পড়ে না নীলাঞ্জনা? সেদিন গুলো? তোর সাথে প্রথম আলাপের দুপুর বেলা। প্রথম দেখেই চমকে উঠেছিলাম, নীল ফেডেড জিন্স হাল্কা গোলাপী টি-শার্ট এর বোতাম খোলা দুঃসাহসে।এখনো কি তোর জয়ের মেঘবালিকা সাজতে ইচ্ছে করে?কলকাতার রাস্তায় বৃষ্টির জল জমলে এখনো কি তুই বাচ্ছাদের মতো সেই জলে খালি পায়ে ঢেউ তুলিস?

কিছু কিছু সর্ম্পকের মধ্যে থাকে ঘাস
ফুলপাতা, আঁকিবুকি নখের আঁচড়
কিছু নীল রং এলোমেলো বিছানা বালিশ
চাদরের ফুল ছাপে লিখে রাখা
তবু মনে রেখো।

তোর আর আমার এই সর্ম্পকের কি নাম নীলাঞ্জনা? প্রেম বন্ধুত্ব নাকি আরো বেশি কিছু। নাকি হাজার মুখের ভীড়ে পরিচিত মুখ চেনা কেউ? আজ তুই নেই আমার সাথে আমার পাশে, কিন্তু সত্যিই কি নেই তুই?আমার আগোছালো ঘরের দেওয়ালে তুই, আমার আমার বিছানা বালিশ চাদরে তোর প্রিয় স্পর্শ, তোর শরীরের গন্ধ।আমার বই খাতা, লেখার টেবিল এমনকি জানলার বাইরের আকাশেও তোর উপস্থিতি।

জলের পোষাক খোলো!
হেঁটে হেঁটে ফিরে যাও একা
তোমার পায়ের ছাপ
কারা যেন দেখেছে দূরবীনে
কারা যেন অন্ধকারে
প্রশ্নচিহ্ন রেখেছে দরজায়
সকলে প্রমাণ চায় আবিস্কার করে।
শরীর আসার আগে
শরীর যাওয়ার পরে
যেটুকু ভূখন্ড পড়ে থাকে!
আমি কিন্তু দেখেছি তোমায়
জলের পোষাকে!

পাহাড়িয়া মেঘেদের ছৌনাচ এখন এই মহানাগরিক আশমানে।আর আবোল তাবোল বৃষ্টি ধারাপাত --- এই আবগারি আবহাওয়ার নিজস্ব নেশা-পাঠশালা।হাঁপর ঠ্যালা শহরিয়া কেজো বাতাসে মোহময় সোঁদাগন্ধ অফুরাণ।আর গোল্ডফ্লেকের ঝাঁঝালো নিকোটিন স্বাদ ঠোঁট থেকে ক্রমশ আলজিভে অনায়াস। স্নায়বিক তরল্যের সব অনিশ্চিত গতিপথ খুঁজে নেওয়া – এই টাপুর টুপুর বৃষ্টি বিকেলে।বৃষ্টিছাঁও মাটি থেকে একটা হা-ক্লান্ত গরম ভাপ উঠে আসছে। উঠে এসে ছড়িয়ে যাচ্ছে রাস্তায়, ফুটপাথে, ঘাসের ডগায় আর চলমান শরীরে শরীরে হলুদ সবুজ লাল নীল গোলাপী কমলা – সব রঙ্গীলা ছাতার আড়ালে মুখর হচ্ছে গল্প ও না-গল্পরা পারস্পারিক। বৃষ্টিভেজা জেব্রা পেরোচ্ছে নীল জিন্স আর সাদা শার্টের কলেজ পড়ুয়া দলছুট এক তরুণী। কাধেঁর ব্যাগে নিস্পৃহ ভিজে যাচ্ছে সব ভৌগলিক ল্যাটিচিউড-লঙ্গিচিউড, ঐতিহাসিক সব যুদ্ধক্ষেত্র, আঙ্কিক সব জটিল জ্যামিতি কিংম্বা পারমুটেশন্-কম্বিনেশন্। আর ভিজে যাচ্ছেন রবিঠাকুর ও বায়রন পৌনপুনিক সহাবস্থানে।

তোমার সুরক্ষা চাই আর কিছু নয়
আমার শরীর জুড়ে আদিগন্ত পাপ
প্রতিদিন মরি তাই দিনে আর রাতে
আমার ভুলের থেকে আরো দূরে যাও
আমার কাছেতে শুধু নামটুকু থাক
প্রিয় নাম গায়ে মেখে পাপক্ষয় করি
তোমার সুরক্ষাটুকু নিশ্চিত হলে
বিষন্ন শরীর জুড়ে বৃষ্টি নেমে আসে

ভিজে যাচ্ছি তুমি আমি আমরা সবাই। ভিজে যাচ্ছে আমাদের সব না-বলা কথা, না-লেখা কবিতা আর আমাদের সব গোপন ভালোবাসা মন্দবাসার ব্যক্তিগত গদ্য।আমাদের বুকের অন্ধকার অবচেতনে গান গেয়ে চলেছে এক বাউন্ডুলে বৃষ্টি-বাউল! বৃষ্টিস্নাতা সেই তরুণীটির সাদা জামার আপাত স্বচ্ছতা ফুঁড়ে, ফুটে উঠেছে  অন্তর্বাসের লাজুক বিপন্নতা।আর নেশা-পাঠশালায় তখন আদিম আপেলের সেই পুরনো গল্পটা।পরিত্যক্ত কে যেন একা একা মাউথ্অরগানের মরমীয়া সুরে বুনে চলেছে আযান্ত্রিক এক বৃষ্টি-বিষাদ। সমস্ত দিন আজ টুপ টুপ করে বৃষ্টি পড়ছে। সকাল থেকেই আকাশটা আজ কালো রঙের ছোঁয়ায় নিজেকে সাজিয়েছে। আর এমন বৃষ্টিদিনে একছুটে তোর কাছে পৌঁছতে মন চাইছে নীলাঞ্জনা। কিন্তু তা আর সম্ভব নয় এটা বোধহয় বৃষ্টিও জেনে গেছে।তাই তো আজ সারা দিন ধরে আমাকে নিয়ে খেলেছে বৃষ্টি। বারবার ফিরিয়ে নিয়ে গেছে বৃষ্টি ভেজা সেই দিন গুলোর কাছে। কখনো শুশুনিয়া পাহাড়ের দিন গুলোতে কখনো গড়িয়ার তোর ফ্ল্যাট এর দিন গুলোতে আবার কখনো বা বৃষ্টির গন্ধ মাখতে মাখতে তোতে আমাতে কলকাতার রাস্তায় পাগলা চক্কর মারার দিনগুলোতে।আর আমি নিরুপায় হয়ে দৌড়ে বেড়িয়েছি কখনো শুশুনিয়া থেকে গড়িয়া, কখনো নন্দন থেকে রাসবেহারীর সাট্‌ল ট্যাক্সিতে। তুইও কি আমার মতো স্মৃতি তড়িত আজ নীলাঞ্জনা? নাকি নাকি সেদিন গড়িয়ায় মোড়ে দাঁড়িয়ে আমার মতো স্মৃতি গুলোকেও ঝেড়ে ফেলেছিস মন থেকে একটা একটা করে। আজ সারাটা দিন বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে আমার PC তে বেজেছে রবি ঠাকুরের সেই পাগল করা গান, যা তোর ভীষণই প্রিয় ছিল, ‘এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়.........’।কিন্তু আজ কাকে বলব আর কী ই বা বলবো নীল? আমাদের সব কথা ফুরিয়েছে আজ।

এই তো রচিছ পথ যে পথে ছলনাও থাকে
আমি তার বুঝেছি কিছুবা, হয়তো অনেক
জানি
'ভালোবাসি' মানে ভালোবাসা নয় কখনো কখনো
দূরে যাওয়ার জন্যও আসতে হয় কাছে
অথবা
চিঠির জবাবে না লেখা কথার মতোই
লুকিয়ে থাকে কিছু রহস্য-গোপন
সব অভিসারে
মেঘের মতোই নেমে আসে
ঝড়ের মতোই উড়ে আসে
পলির মতোই ভেঙ্গে পড়ে
অভিসার শেষে, কপট সময়।

আজ বড়ো অবাধ্য বৃষ্টিটা। ঠিক যেনো চঞ্চল কিশোরীর মতো, তোর মতো, খুনসুটিতে অস্থির করে তুলেছে আমায়। কিছুতেই বাধ মানছে না। যতই রাগ করি চোখ পাকাই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে ঠিক তোর মতো। আর বারবার আমাকে তোর কথা মনে করিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।ভাবছিস আমি স্মৃতিমেদুরতায় ভুগছি।না, নীল আজ আমাকে বৃষ্টিতে পেয়েছে আজ আমাকে তো’তে পেয়েছে। বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে শুশুনিয়ায় এমনই বৃষ্টি ভেজা দিনে আমাদের সফরের কথা। সেদিনের বৃষ্টি টাও ঠিক আজকের মতো ছিল। আর তুইও হঠাৎ করে সেদিন বৃষ্টি হয়ে গেলি। তারপর তুই আর বৃষ্টি মিলিয়ে সেদিন শুশুনিয়া কে ভিজিয়েছিল। আমি দাঁড়িয়েছিলাম টেন্টে। তোদের ন্ডকারখানা দেখছিলাম। সেদিন আমি ভিজি নি। তুই আমাকে বলেছিলি ভীতু। নীল সেদিন আমি বৃষ্টি কে ভয় পাইনি, ভয় পেয়েছিলাম তোকে। যদি তোকে ছুঁয়ে দিলে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো ঝরে যায় তোর শরীর থেকে, সেদিন বৃষ্ট ভেজা তোকে পাহাড়ের কোলে রুপকথার মত লাগছিল যদি ছুঁয়ে দিলে তুই সাধারন হয়ে যাস।তারপর বৃষ্টি থামলে তুই আমাকে ভাসিয়েছিলি আরেক বৃষ্টিতে। সে আগুনে বৃষ্টিতে পুড়তে পুড়তে আমি ভয় পেয়েছি। তোর যে কোনো তল নেই নীল, তোর যে কোনো সীমানা নেই, সব সীমানাই তুই ভেঙেছিস অবলীলায়। আমি পারিনি, আমি সত্যিই পারিনি নীল।আর পারিনি বলেই সেই বৃষ্টির পর তোকে খুব সাধারন লেগেছিল আর পাঁচজনের মতোই, কেন তা জানি না এর কোন উত্তরই নেই আমার কাছে।

ভেবেছি তোমাকে ভোর
অমানিশা কেটে গেলে তোমাকেই
ধরেছি জড়িয়ে
ঠোঁট ছুঁয়ে হাত ছুঁয়ে চোখের কাজল ছুঁয়ে
জেনেছি এ আমার অমল বেঁচে থাকা
তোমাকে ভেবেছি ভোর
ভোরের শিউলি, জুঁই, রাতের গন্ধরাজ
তোমাকে ভেবেছি ভোর
ভোরের শিশির ধোয়া কোমল বকুল
তোমাকে ভেবেছি ভোর
ছুঁয়ে হাত বলেছি এ আমার গোলাপ গোলাপ
পঁচনের কাল আসে ফুলেরও একদিন!
এ আমি না, ভাবিনি কখনো।

আমার কি সেদিন সাহসী হওয়া উচিত ছিল নীলাঞ্জনা? তাহলে কি আজকের দিনটা অন্য রকম হতো। আজকের এই বৃষ্টি মুখর দুপুর বেলা আমার পাশেই থাকতিস তুই? কিন্তু তোর সেই অসাধারন্ত্ব থাক্তো কি? আমি তো তোকে আর পাঁচটা মেয়ের মতো চাই নি, আর পাঁচ জনের মতো আমিও তোকে ভালবাসি নি। তুই আমার কাছে রূপকথা, আমার ভালোবাসাও ছিল তেমনি এক জাদু কাঠির স্পর্শ। কিন্তু সত্যিই কি আমরা ভালো বেসেছিলাম?তা হলে আমাদের এই ভালবাসা কেনো সাধারন প্রেম কাহিনীর পরিনতি পেল? গড়িয়া হাটের মোড়ে সেদিন তুই আমাকে দাঁড়করিয়ে রেখে চলে গেছিলি। বলেছিলি, ‘আজ আসি, আমাদের দেখা হবে আর কোনদিনই। ভালো থাকিস’। তারপর চলে গিয়েছিল সোজা কোন দিকে না তাকিয়ে। জানিশ তারপরও বহুক্ষন আমি দাঁড়িয়েছিলাম ভীড়ের মধ্যে। বারবার মনে হচ্ছিল; এই বুঝি তুই ভীড়ের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে বলবি, ‘ কি বে শালা এখানে দাঁড়িয়ে কি মারাচ্ছিস? চ’ একটু মাল টেনে আসি’।কিন্তু তুই আসিস নি। সত্যি বলতো নীলাঞ্জনা ভালোবাসা আসলে কি? আমরা কি সত্যিই ভালোবাসা মানে বুঝি? আজ এই প্রশ্নটাই আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে নীল। অথচ দ্যাখ সাহস করে বলতেও পারছি না কেমন আছিস নীল, প্লিজ তুই ফিরে আয়।।কিন্তু আমি জানি তোর ভালোবাসা ছড়িয়ে আছে আমার সারা শরীরে, আমার ঘরে, আমার প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে আগোছালো ভাবে আজো আমি সব গুছিয়ে উঠতে পারিনি সেই সব ভালোবাসা। জানি গুছিয়ে রাখলে ভালো হতো, কিন্তু থাক, ওগুলো ছড়ানোই থাক। গুছিয়ে নিলে সে বড় সুখের হতো, কিন্তু তোর চলে যাওয়া সে বড়ো

............

ভালোবাসা লেখা হয় কবিতায় কবিতায়
পাখির ঠোঁটের সুর তুলে আনা
ফিদার ছবিতে
মাধুরীরর কোমর ও নাভিতে
ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া
চৌরাশিয়ার বাঁশি, আহা ভালোবাসি
ভালোবাসা ছড়ানো ছিটানো কত না
চিঠিতে, গল্পে পাতায় পাতায়
লেখা হয় রমনায় চন্দ্রিমা উদ্যানে
গাছের বাকল তুলে নখের আঁচরে
ভালোবাসা চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো
আকাশে বাতাসে দেহে চোখের পাতায়
একবার যদি কেউ কুড়িয়ে কুড়িয়ে
এ অমল ভালোবাসা হৃদয়ে করত জমা
আহা! কত সুখ হত।।

বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ, ২০১২

কাব্যগল্প: এই যে একটু শুনুন

কাব্যগল্প: এই যে একটু শুনুন
তখনো ভাঙেনি শিশিরগুলো ভোরের সবুজ ঘাসের পাতা থেকে,
শুভ্রতায় ঝলঝলে ভোরের রক্তিম উদিত সূর্যের কিরনে পরশ ছোঁয়ে নিচ্ছে,
গমের শিষে এই শিশিরের খেলায় দেখেছিলাম এক ত্রিশোর্ধ বয়সী সুবর্ণা নারীকে।
শুভ্র মুখায়বে লাবণ্য সোনালী বর্ণের মুগ্ধকর চেহেরার ভিতর খেলছিল-
সৌন্দর্যের বিলাস;
হাতে ক্যামেরা,হালকা লাল-সাদা ফুটি ফুটি বৃত্তের হাতাওয়ালা গেঞ্জিটা পরায়,
উদ্দাম বুক,মাথায় সুন্দর মানানসই এক টুপি,
মনে হচ্ছিল বারবার রাত্রির আকাশে থেকে এই দিনের শুরুতেই,
খসে পড়েছে একটি অদ্ভুত নক্ষত্ররুপী এক মায়াবি নারী,
এই দিবালোকে হেলমেট টুপিতে তাকে মানিয়েছে এতটা মাধুর্য্যবতী,
যে রুপের বর্ণনা করতে ভাষাহীনতায় কিছুটা সময়ের জন্য হয়ে যাচ্ছি বাকরুদ্ধ!

ফাল্গুনের উতলা বসন্তের প্রারম্ভ দিনের মিষ্টি সকাল,
বাড়ীর উঠোনের গাছগুলোতে দেখেছিলাম কিছু ফুটন্ত রক্তিম শিশির ঝরা গোলাপ,
ইচ্ছে ছিল দু’তিনটি গোলাপ ছিঁড়ে বের হই ভোরে ভোরেই,
এখন প্রতিটি ভোর হলেই হিমালিয়াকে জানাতে হয় মুঠোফোনে শুভ সকাল,
এরপর একগুচ্ছ লাল গোলাপের শুভেচ্ছার সাথে আমার সজীব ভালবাসা নাও,
তারপর…..?
থাক বলব না;আমি এখন স্যুটিং স্পটে,দাড়িয়ে আছি এশিয়া হাইওয়ে রোডে,
রোডের পাশে বিস্তৃত ক্ষেতে দেখতে পাচ্ছি গমের শিষে ঝলক ঝলক শিশির বিন্দু,
আস্তে আস্তে জড়ো হতে শুরু করেছে নানা বয়েসী মানুষের ঢল,
চলচ্চিত্র স্যূটিং,
চলচ্চিত্র স্যূটিং! হিমালিয়া রাতেই অবাক প্রশ্নে উচ্ছাস ঝেরে বলে ছিল,
হ্যা তেঁতুলিয়ায় চলচ্চিত্র স্যূীটং!
সে স্যূটিংয়ে আমিও একজন বাস যাত্রী হিসেবে শট দিতে যাচ্ছি,
এমনি একটা দৃশ্য দেখার জন্য শ্রাবণের বিরামহীন বৃষ্টির মত,
জড়ো হতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই তেতুলিয়ার আপামর মানুষ।

কিসের স্যুটিং ভাই,নাটকের? কেউ একজন প্রশ্ন করে উঠে,
কোন নায়ক-নায়িকা এসেছে বলতে পারেন ভাই,বলে উঠে আরেকজন!
ওহ্ ফাটাফাটি ব্যাপার তো;তেতুলিয়া কি স্যুটিং স্পট হয়ে গেল নাকি,
এশিয়া হাইওয়ে রোড! পরিচালকের চয়্যেস এর তুলনা করা যায় না;
অদ্ভুত চলতো আরেকটু সামনে বলে এগিয়ে যায় কলেজ ছাত্র সিমন,
বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকি হাজারও দর্শকের কৌতুহলী চোখের পাতার দিকে,
সূর্যের কিরণে আনন্দের ঝিলিকে মাতিয়ে তুলছে এই অবুঝ গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষগুলো।
রাস্তার দু’ধার। উপচে পড়া লোকারণ্যের কৌতুহলী দর্শকের ভিতর,
রাস্তার মাঝ বরাবর ক্যামেরা বসিয়ে ব্যস্ত কয়েক ক্যামেরা ম্যান,
গ্লুকোজ বিস্কুতের একটা বিজ্ঞাপনের সর্ট নিতে দু’দুটি মিনিবাস ভাড়া করা,
শটের পর শট,নায়কের ডান হাতে ব্যাগ,ব্যস্ত হয়ে পড়ে মধুখালি বাস ধরতে,
ক্লান্তির অবসাদে ব্যাগ থেকে গ্লুকোজ বের করে খেয়ে ফের মধুখালির বাস ধরা-
ঘড়ির দিকে নায়কের দৃষ্টিতে ধরা পরে ফেল পরার তীব্র যাতনার,
মধুখালির বাসটা কি সে একটি গাড়ি ওভারট্যাক করে ধরতে পারবে??

আমি হাটছি,গায়ে আমার কোর্ট-প্যান্ট,কালো স্যু,যাত্রি হই মাঝে সাঝে,
কবিত্ব মন,লেখার জগতে হারিয়ে যাই কখনো কখনো,
জীবনটাই তো এক নাট্য মঞ্চ,হতে পারে বিশাল গল্পের খন্ড খন্ড চলচ্চিত্রের,
এক একটি শট নেওয়া ঘটনার পর ঘটনা;
আমার সামনে সেই শুভ্রময়ী নক্ষত্রের মত উজ্জল তারকা,
হাতে ক্যামেরা,ক্ষণে ক্ষনে চোখে নিয়ে ক্যাপচার করেন হয়তো পরিকল্পনা দৃশ্যগুলো,
আমি অবাক হইনা;তবে লজ্জিত হই,কারণ উনার বুকের পোষাক নেহায়তই বেমানান,
তবু মেনে নিতে হয়,এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জগতে একটু খোলা-মেলা না থাকলে,
নারীর সৌন্দর্য্যে পরিস্ফুটন হয়না;
তাছাড়া একজন প্রডিউসর বলে কথা;আমি অপারগ হলেও মেনে নেই,
এই নষ্ট সভ্যতার অশালীন সংস্কৃতির অর্ধেক নষ্টচারিতা;
আমার কথা বলতে মন চায়,উনার কন্ঠ শুনতে মন উতলা হয়,
এই একুশ শতাব্দির প্রযুক্তি সভ্যতায় চলমান জীবনের ঘটনাগুলোই তো,
জীবন নাটকের মাত্রায় হতে পারে এক একটি দীর্ঘ সিনেমা।

দু’পায়ের মৃদু শব্দ,পড়ন্ত দুপুরের উষ্ণানুভবে গলা শুকিয়ে আসে,
ক্রমশ; বিদায় নিতে শুরু করেছে পাগল দর্শকগুলো,ওরা কি তাহলে বুঝেছে?
আবার পিছনে পড়ে যাই ওই শুভ্রময়ী নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বলা তারকার,
মন থেকে কেউ একজন বলে উঠে-এই যে শুনুন,
জ্বি কাকে ডাকছেন? আমাকে-
জ্বি আপনাকে,
আপনার পরিচয়?
আমি কবিতার কৃষক,বুনন রোপার মত কবিতার চারা লাগাই,
ভাষার জৈব সারে বাম্পার ফলনে আমার এক একটি কবিতা হয়ে উঠে,
বলিষ্ঠ,সুঠাম গোচের চারাগাছগুলোর মত,
কি কীটনাশক স্যার ব্যবহার করেন উত্তর আসে?
রাসায়নিক স্যার ব্যবহার করিনা,যার কারণে আমার কবিতা নগ্নতার পরশ পায় না,
ভাষায় ব্যবহার করি জৈব সার,উৎকৃষ্ট ভাষার চলমান ঘটনাগুলোই,
আচ্ছা আপনার পরিচয়?
ওই যে বললাম কবিতার কৃষক,যদি পরিচয় দেই,
জ্বি বলুন-
না থাক,আমি সামান্য নিভৃত চারী কবি,
আমাকে একটি কবিতা শুনাবেন?
না-
মানে?
আপনাকে আমার ভাল লাগছে না;
কেন?
বলব না; ওই যে স্যুটিং শুরু হয়ে গেছে,আমাকেও যদুখালির বাস ধরতে হবে,
সমস্যা নেই,বাস আবার আসবে?
স্যরি ম্যাডাম বলে আমি আজকের স্যুটিংয়ের নায়কের মত বাস ধরার জন্য দৌড়াতে থাকি
এই যে শুনুন বলে পিছন থেকে ডাকতে থাকে ওই শুভ্রময়ী উজ্জল তারকা।

05.03.12

রবিবার, ২৬ জুন, ২০১১

রাতের তাঁরার সাথে কথা ও আমার বাবা


রাতের তাঁরার সাথে কথা ও আমার বাবা

এ.এইচ.বিদুয়ান
গতকাল গভির রাতে আকাশের তারার সাথে কথা
বলেছি।তারাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমার বাবা
কেমন আছে তোমরা কি জান? ওরা বলেছিলো
ভালো আছে। জিজ্ঞাসা করেছিলাম তোমাদের সাথে
কি বাবার দেখা হয়? কথা হয়?
আমি আবার বলেছিলাম আচছা বাবা কি আগের মত অসুস্থ থাকে?
বাবা কে কি এখনো রক্ত দিতে হয়?বাবা কি ব্যাথ্যা পায়?
“ওরা হেসে বলেছিল ধুর তুমি একটা গাধা”
আমি বললাম কেন? তারারা বলল তোমার বাবা
যেখানে আছে সেখানে কোন মানুষ
অসুস্থ হয়না। আমি আনন্দে পাগলের মত হাসি।
আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসি।
মনে মনে বলি বাবা আর অসুস্থ থাকেনা?
রাত অনেক হয়ে যায়,তারারা বলে
“তুমি তোমার বাবা কে অনেক মিস কর তাইনা?
আমি বলি হাঁ।ওদের বলি আমার বাবা কে একটা সংবাদ দিতে পারবে?
ওরা বলে পারব।
বল কি বলতে হবে?বাবা কে বল “আমি বেশ কয়দিন ধরে অসুস্থ”।
আমার জন্য বাবা কে একটু দোয়া করতে বলো।
ওরা বলে ঠিক আছে। আমরা এখন যাব।
ভাল থেকো————————-।
তারারা হারিয়ে যায় আকাশের ওপারে।

মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০১০

স্বপ্ন ও ভালবাসা



স্বপ্ন ও ভালবাসা
44376_741295
সন্ধা নামতে অনেক বাকি
তুমি বসে আছো আনমনে অপেক্ষায়——–
স্বপ্ন দেখছো তোমার আত্নার সাথে যার পরিচয়
এত স্বপ দেখো কেন তুমি?
মাঝে মাঝে চিন্তা করি তোমার স্বপ্ন
যদি পুরন না হয় তবে কি করবে?
আবার নতূন করে স্বপ্ন দেখবে?
আমার জায়গায় কাউকে স্থান দিবে?
আমি প্রায়ই স্বপ্ন দেখি তোমাকে
রেখে অনেকদুরে চলে যাচছি।
আচছা আমি যেদিন মরে যাব
সেদিন কি খুব শীত পড়বে?
শীত পড়লেতো আমার ভীষন কষ্ট হয়
কি বোকা আমি দেখেছো?
মৃতের আবার শীত?
সন্ধা নামতে অনেক বাকি
তুমি বসে আছো আনমনে অপেক্ষায়——–
স্বপ্ন দেখছো তোমার আত্নার সাথে যার পরিচয়।


43904259_ca13f0fb89

বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০০৯

putul khela

 

putul khela




Putul khela putul khela,sudhu kebol khela.
Mayer chera aanchol diye matir pora putul diye.
Thala bati mati diye putul gharti sajiye niye

Ghorer kone , Khater niche bose- bose,jibon ta to geloi kete.
Paye badha shekol chilo,babar onek aadesh chilo.
Gharer baire jabena, autto- hashi hasbe na,
Dorkari sabi pabe gharer bhitor bose thakbe.

Bolto hese ei meyati boroi paji,kajer balay sudhui faki.
Chinta boro ekei niye, ki je hobe porer bari giye.
Bhat bara dure thak jol dhele khay na,
Ranna –banna ke kore parle-g kheyei se bache.

Lekha pora anek holo, chithi lekha-ta tumi shikhechoi
bhalo,
Tai to ebar tumi jao baba tomar nijer bari ,sekhene thakbe bhaloi tumi.
Porasuna putul khela meyer anchal chere diye,
Alem jokhon nijer bari,kichui to dekhi na,
dekhi cheye bare-bare Sudhu dekhi aar dekhi baro ekta bhater hari.
Othate pari na namate janina,tabu o kori sei hari niye thela-theli.
Hari aar bari niye chutte challo amar sai gari.
Kato station elo-gelo,tabuo aami to bosei aachi.

Megh,batash,bari,ghar,gach pala sabi to chutte cheleche
Aami to bosei aachi ,sudhui bose aachi.
Aakaser thikanay kato swapno dekhi,kato chabi aaki.
Bheshe jay mishe jay bilin hoye jhore pore chokher kone , .
Jole bhore jaye aamer ei dui aakhi,

Sudhu kheli aar kheli putul diye kheli,
Matir putul aar to nai ,
kotha koy nache gay ,bayna kore joriye dhore,
sotti manus putul diye kheli.
Manush putul janmo nilo, ki bhabe je samoy ta kete galo, ki jani.
Kuri aar kuri jog kore hoyechi ki sotti aami buri….?
Bhabna ekhon hoy je keno … putul bidayer samoy to
Bujhi ei ghaniye alo.