[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]
সারমিন শিফা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সারমিন শিফা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১২

কবিতার উঠোণ...

কবিতার উঠোণ


কবিতা সর্ম্পকে বস্তুতঃ আমি কিছুই জানি না। কোন কোন সকাল আমার বিকেল বলে মনে হয়, আর কোন কোন বিকেল সকালের মতো। কিন্তু এই মনে হওয়া , কেন যে আমার মধ্যে ঘটে জানি না। যেভাবে জানি না, কি ভাবে প্রথম আমি লিখে ফেলেছিলাম কিছু শব্দ। সে শব্দের সমাহার কবিতা হয়েছিল কিনা তাও জানি না। সমস্ত যৌবন ধরে আমি শুধু একটা ‘না’ এর সাথে দ্বৈরথ করে চলেছি। একটা ‘না’। ক্রমেই আমার স্মৃতি লুপ্ত হয়ে আসছে। কয়েক বছর আগেও আমি বহু প্রয়োজনীয় কথা মনে রাখতে পারতাম। এখন প্রয়োজনের ভার হাল্কা হয়ে আসছে। কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারিনা। কঠোপনিষদের কথা মাঝে মাঝে মনে হয় – যখন নচিকেতা বিশ্বরহস্য নাকি ব্রক্ষ্মের স্বরুপ জানতে চাইছেন – তখন যম বলছেন আমার কথা শ্রবণ কর। হয়তো এর থেকেই কোনও উত্তর বেরিয়ে আসবে।

কবিতা সর্ম্পকে আমার ভাবনা আসলে ‘না’ ভাবনাই। যে নেতি আমাদের দিয়ে লিখিয়ে নেয় কথা। শব্দের পর শব্দ। এক একটি রুপের আভাস। শুধু এটুকু বলতে পারি প্লেটোর ‘গণরাজ্যে’র ‘না বাসিন্দা’ কবি কিন্তু আমাদের দর্শনে অন্যভাবে উত্থাপিত। সেখানে কবি সম্বন্ধে বলা হচ্ছে -- ‘কবিং পুরাণ মনুশাসিতরম্ অনোরনিয়া’ অর্থাৎ কবি একজন সত্যদ্রষ্টা। তবে এ তো গেল শাস্ত্রের বাদানুবাদ। আমি কবিতা সর্ম্পকে কিছুই জানি না। শুধু জানি যখন আমাদের পুরোনো বাড়িটার ছোট্ট ঘরে অন্ধকার বাক্স-প্যাঁটরার ওপর শীতের দুপুরের এক চিলতে আলো এসে পড়ে। দু-একটি আরশোলা ফরফর করে উড়ে যায় রান্নাঘরের দিকে কিংবা একটি টিকটিকি বিনীত চিৎকারে জানিয়ে দেয় দুপুরের বয়স – তখন আমার ভিতর কীরকম যেন হয়ে যায়। হয়তো বা ঠিক সেইদিন বহুকালের না পারাগুলি একত্র হয়ে আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নেয় কয়েকটি বাক্য। এর বেশী আমার আর কিছুই বলার নেই কবিতা বিষয়ে। মাঝে মাঝে মনে হয় কি লিখছি কেন লিখছি? লেখা গুলো কি আদৌ কবিতা? বুঝি না। এক এক সময় মনে হয় লিখতে বসে আজ আর লিখব না, নিশব্দ বসে থাকব, নিশব্দের কি কোন শব্দ হয়? রোজ আমি বসি খাতা কলম নিয়ে কোন দিন শব্দ এসে ধরা দেয় কোন কোন দিন বা সাদা পাতায় ঝরে পড়ে একরাশ নিশব্দ।

নিশব্দে থেকো।
আজন্ম বধিরতা নিয়ে।
নিশব্দই এক একটি শব্দ তৈরি করে।...

আবার কখনো কখনো লিখতে বসে শব্দেরা প্রশ্নের আকার নেয়। আমার যন্ত্রনারা ভীড় করে এসে প্রশ্ন তোলে। এই যে জীবন যন্ত্রনারা ভীড় করে আসে কলমে
এ যন্ত্রনার মুখ কি আমার আদৌ চেনা?

অন্তঃকরণে অভিমানে
রক্ত ঝর্না গুপ্ত প্রবাহিনী
এ যন্ত্রনার মুখ
আমি চিনি?

যখন মাঝ রাতে সমস্ত পাড়া ঘুমে আচ্ছন্ন ঠিক তখনই আমি এসে বসি আমার লেখার টেবিলটায়। কোন কোন দিন আমার নিজের জীবন কে লিখতে ইচ্ছে করে
কোন কোন দিনে ফেলে আসা জীবনের দিকে তাকাই। তখন মনের কার্নিশে ভীড় করে আসে নানা প্রশ্ন জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা বিতর্ক। কখনো উত্তর পাই কখনো বা পাই না। আবার কখনো উত্তর পেলেও মনে হয় বোধ হয় ঠিক উত্তর পেলাম না তখন আবার ভীড় জমায় সেই একই প্রশ্নরা আবার আমি নতুন করে শুরু করি উত্তর খোঁজা এভাবেই জমে ওঠে জীবনের পাওয়া না পাওয়া সব প্রশ্ন উত্তরের খেলা।


কয়েকটি বিতর্ক রইলো। মাঝরাতে সবুজ জড়ানো
লতা ও গুল্মের মতো অন্ধকার। জানি
প্রতিটি প্রশ্নের গ্রাসে আহরিত প্রতিটি অজস্র নিরুত্তর
ক্ষমা করে। ভালোবাসে। পুনর্বার ক্ষুধিতের মতো
প্রসারিত হয়।

এক এক সময় পাগলের প্রলাপের মতো লিখে চলি, লিখেই চলি। কখনো সেই লেখা শব্দের মধ্যে জন্ম নেয় কবিতা কিংম্বা গল্প বা অন্য কিছু। আবার কখনো কিছুই লেখা হয় না কিছু অর্থহীন শব্দ ছাড়া। এই যেমন এখন লিখে চলেছি। কি লিখছি কেনো লিখছি জানি না। কলমের ডগায় ভীড় করা শব্দদের একের পর এক বসিয়ে যাচ্ছি পর পর। কি এদের ভবিষ্যত কিংম্বা আদৌ কোন ভবিষ্যত আছে কিনা কে জানে। শুধু মনে হয় নিশুতি রাতে রোজ আমি সহবাস করি শব্দের শরীরে। আর এক সময় সেই সহবাস শেষে শব্দের সমস্ত শরীর জুড়ে আমার সমস্ত টেবিল জুড়ে আমার সমস্ত আত্মা জুড়ে উঠে আসে জন্মানোর গন্ধ।

সমস্ত শরীর থেকে জন্মানোর গন্ধ উঠে আসে
সহবাস
অগুরু মেখেছে কিংম্বা কাঁচা চন্দনের গন্ধ ঊরু ও জঙ্ঘায়
হঠাৎ শরীর থেকে গৈরিক শাড়ির টুকরো চুরি হয়ে যায়
লবঙ্গের কাত্থ মাখে ধমনীরা।

এক এক দিন ভাবি আজ একটা প্রেমের কবিতা লিখব, কিংম্বা একটা প্রেমের গল্প, কিন্তু লিখব বললেই তো আর লেখা হয়ে ওঠে না। হয়ত লিখতে বসলাম, কিন্তু মাঝ পথেই কলম অবাধ্য হয়ে ওঠে, বেঁকে বসে আর লিখবে না, তখন প্রেমের জায়গায় লিখে বসে বিদ্রোহের কবিতা। অথচ আমি তো বিদ্রোহের কবিতা লিখতে চাই নি। আমার মন মানে না কিন্তু কলম এগিয়ে চলে তর তর। আমি তাল রাখতে পারিনা, আমার অবশ মন কলমের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য হয়। সাদা পাতার উপর আমার কলম ওগরাতে থাকে অক্ষরের তেজ।

কলমে ঠিকরে পড়ে অক্ষরের তেজ
হীরের টুকরোর মত কঠিন কথার খাঁজে খাঁজে
আকাঁড়া সত্যের মুখ, জ্বালা ধরায়, টুটি চেপে ধরে বলে
কান ধরে ওঠবোস কর দশবার।

হাল ছেড়ে দি। অথচ কি যন্ত্রনা। মিনিট দশেক আগেই আমি লিখতে চেয়েছিলাম একটা আস্ত প্রেম।আমি বারবার পিছন দিকে তাকাতে চাই কিন্তু কলমের কাছে আমি নিরুপায়, যেনো ও আমাকে একটা নির্দিষ্ট লক্ষণরেখা টেনে দিয়েছে।এক চুল ও এদিক ওদিক হবার যো নেই। যেনো এর বাইরে পা দিলেই আমি হারিয়ে ফেলব আমার সব অস্তিত্ব।বাধ্য হয়েই তাই ফিরে আসি বারবার বারবার।

পিছনে তাকাই নি আর, ছায়া দেখে ভুল পথে চলে যেতে যেতে
ফের ফিরে আসি লক্ষণরেখার মধ্যে আত্মরক্ষার তাগিদে।

কখন মনে হয় আমি তো প্রেমের কবিতা লিখতে চেয়েছি, কিংম্বা অন্য কিছু কিন্তু যাই লিখিনা কেনো আমার কলম কেনো বারবার আমাকে টেনে ধরে অন্য কিছু লেখায়? কেনো কেনো কেনো, তবে কি ওই প্রেম ফুল পাখি ঈশ্বর এসব কিছু নয় আমার মন আসলে বিদ্রোহের খোঁজ করে। সব কিছুকে ভেঙ্গে তছনছ করতে চায়। কিন্তু আমি ভয় পাই আর তাই বোধ হয় আমার বাইরের মুখোশের মতো আমার মনের আয়নায় আমি পরাতে চাই প্রেমের মুখোশ। আর আমার কলম আমাকে টেনে হিছড়ে দাঁড় করায় সত্যের মুখোমুখি।

কথাগুলি অক্ষরের ঠিকানা ধরে খুঁজে পায়
টেনে নিয়ে আসে বাইরে
প্রখর রৌদ্রের তেজে মুখ দেখে
নিজেকে দেখায়
সে শুধু অক্ষর নয় ভাঁজে ভাঁজে আকাঁড়া সত্যের মুখ।

এক সময় আমার মনের আর কলমের সব যুদ্ধ থেমে যায়। ভয় পেতে পেতে এক সময় মরিয়া হয়ে উঠে আমি দাঁড়াই মুখোমুখি সত্যের। নিজেকে চিনতে পারি। বুঝতে পারি ভয় পেতে পেতে এক সময় সত্যকে আমি অস্বীকার করেছি, ভুলে থাকতে ছেয়েছি আমার আসল ভাবনা কে আর তাই আমার অবচেতন মন কলমের সাথে ষড়যন্ত্র করে আমার সমস্ত লেখার টেবিল জুড়ে বিদ্রোহ করে চলে।

এই অপরাহ্ন বেলায় তাকে দেখে চিন্তে পারি
সে বড় অবুঝ রাখাল
ছায়া পেলে সেও নিদ্রা যায়।

সে কখনো আসবেই ভাবতে ভাবতে বিদ্ধ হয়েছে আমার চরাচর। সে কি ভীষণ নিষাদ? নাকি তীরন্দাজ? কে সে? যার লক্ষে থেকেছি আমি অবিচল স্থির। মাছের সূক্ষ্ম চোখে অর্জুন যে প্রতিদিন তারই সম্মানে খুলে রাখো টুপি, নতজানু হও অরণ্য চূড়ায় – এসব কথা লিখতে গেলে মোহনা প্রেমিক নদী কে ঈর্ষা করি, সমুদ্রে এত জল তবু নদীকে খাবেই সে জেনে ও বুঝে মেঘে মেঘে বেলা বাড়ার দিকে তাকাই, সময়ের হিমবাহ ক্রমশ গলে, ভাবনার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে, পারাপারের একমাত্র লেভেল ক্রশিং বেশির ভাগ বন্ধ, ফিসফাস শুনি............

সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১২

একা নীলাঞ্জনা আর কিছু প্রলাপ..



একা নীলাঞ্জনা আর কিছু প্রলাপ
ঘুম ভাঙ্গতেই দু এক ফালি মেঘ ছুঁয়ে যায়
আরেকটা দিন অন্য রকম ইচ্ছে ডানা
বুকের ভিতর উথাল পাথাল বৈশাখী ঝড়
শরীর ভেজা চুমুর দাগে নীলাঞ্জনা।

এক একটা দিন এমন ভাবে শুরু হয়, কোন কিছুই ভাল লাগে না। কেনো ভাল লাগে না জানি না কারণ খুঁজে পাইনি কোনদিন। জাস্ট ভাল লাগে না। ঠিক এই রকম এক একটাদিনে ঘুম ভাঙ্গলেই তোর কথা মনে পড়ে নীলাঞ্জনা।এখোনো কি তুই আদুরে বিড়াল এর মত কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকিস?

নীলাঞ্জনার বুকের তিল এ চাঁদ নেমে আয়
পাহাড় চূড়োয় দাঁড়িয়ে থাকি বিপদ সীমায়
এদিক ওদিক জল চুঁইয়ে যায় ফল্গু ধারায়
গোপন গুহায় তোর শরীরেও জল ছুঁইয়ে যায়।

যেদিন প্রথম তোর শরীরের গন্ধ নিয়েছিলাম সেদিন তোর বুকের ওই কালো তিলটা আমাকে ঈশারা করেছিলো। সেদিন বুঝেছিলাম বিপদ আছে তোর শরীরের কোণায় কোণায়।সাঁতার জানা সত্ত্বেও যে কোন মূহুর্তেই ডুবে যেতে পারি অসীম অতলে।মাঝে মাঝে তুই বড্ডো দুঃসাহসী হয়ে যাস। তোর উত্তঙ্গু পাহাড় চূড়ায় তোর নাভীর হাল্কা ভাঁজে যখন ঘামের বিন্দু চিক চিক করে আমি অপলক তাকিয়ে থাকি।আর গোল্ড ফ্লেক এর ধোঁয়া উড়িয়ে তোর চোখে দুষ্টুমি ফুটে ওঠে, কি দেখছিস? ডুব দিবি, সাঁতার জানিস তো?
সমস্ত রাত জেগেই থাকি

ঘুম আসেনা, কফির কাপে র শব্দ চুমুক
তোর কি কিছুই মনে পড়েনা?

এখন কি তোর কিছুই মনে পড়ে না নীলাঞ্জনা? সেদিন গুলো? তোর সাথে প্রথম আলাপের দুপুর বেলা। প্রথম দেখেই চমকে উঠেছিলাম, নীল ফেডেড জিন্স হাল্কা গোলাপী টি-শার্ট এর বোতাম খোলা দুঃসাহসে।এখনো কি তোর জয়ের মেঘবালিকা সাজতে ইচ্ছে করে?কলকাতার রাস্তায় বৃষ্টির জল জমলে এখনো কি তুই বাচ্ছাদের মতো সেই জলে খালি পায়ে ঢেউ তুলিস?

কিছু কিছু সর্ম্পকের মধ্যে থাকে ঘাস
ফুলপাতা, আঁকিবুকি নখের আঁচড়
কিছু নীল রং এলোমেলো বিছানা বালিশ
চাদরের ফুল ছাপে লিখে রাখা
তবু মনে রেখো।

তোর আর আমার এই সর্ম্পকের কি নাম নীলাঞ্জনা? প্রেম বন্ধুত্ব নাকি আরো বেশি কিছু। নাকি হাজার মুখের ভীড়ে পরিচিত মুখ চেনা কেউ? আজ তুই নেই আমার সাথে আমার পাশে, কিন্তু সত্যিই কি নেই তুই?আমার আগোছালো ঘরের দেওয়ালে তুই, আমার আমার বিছানা বালিশ চাদরে তোর প্রিয় স্পর্শ, তোর শরীরের গন্ধ।আমার বই খাতা, লেখার টেবিল এমনকি জানলার বাইরের আকাশেও তোর উপস্থিতি।

জলের পোষাক খোলো!
হেঁটে হেঁটে ফিরে যাও একা
তোমার পায়ের ছাপ
কারা যেন দেখেছে দূরবীনে
কারা যেন অন্ধকারে
প্রশ্নচিহ্ন রেখেছে দরজায়
সকলে প্রমাণ চায় আবিস্কার করে।
শরীর আসার আগে
শরীর যাওয়ার পরে
যেটুকু ভূখন্ড পড়ে থাকে!
আমি কিন্তু দেখেছি তোমায়
জলের পোষাকে!

পাহাড়িয়া মেঘেদের ছৌনাচ এখন এই মহানাগরিক আশমানে।আর আবোল তাবোল বৃষ্টি ধারাপাত --- এই আবগারি আবহাওয়ার নিজস্ব নেশা-পাঠশালা।হাঁপর ঠ্যালা শহরিয়া কেজো বাতাসে মোহময় সোঁদাগন্ধ অফুরাণ।আর গোল্ডফ্লেকের ঝাঁঝালো নিকোটিন স্বাদ ঠোঁট থেকে ক্রমশ আলজিভে অনায়াস। স্নায়বিক তরল্যের সব অনিশ্চিত গতিপথ খুঁজে নেওয়া – এই টাপুর টুপুর বৃষ্টি বিকেলে।বৃষ্টিছাঁও মাটি থেকে একটা হা-ক্লান্ত গরম ভাপ উঠে আসছে। উঠে এসে ছড়িয়ে যাচ্ছে রাস্তায়, ফুটপাথে, ঘাসের ডগায় আর চলমান শরীরে শরীরে হলুদ সবুজ লাল নীল গোলাপী কমলা – সব রঙ্গীলা ছাতার আড়ালে মুখর হচ্ছে গল্প ও না-গল্পরা পারস্পারিক। বৃষ্টিভেজা জেব্রা পেরোচ্ছে নীল জিন্স আর সাদা শার্টের কলেজ পড়ুয়া দলছুট এক তরুণী। কাধেঁর ব্যাগে নিস্পৃহ ভিজে যাচ্ছে সব ভৌগলিক ল্যাটিচিউড-লঙ্গিচিউড, ঐতিহাসিক সব যুদ্ধক্ষেত্র, আঙ্কিক সব জটিল জ্যামিতি কিংম্বা পারমুটেশন্-কম্বিনেশন্। আর ভিজে যাচ্ছেন রবিঠাকুর ও বায়রন পৌনপুনিক সহাবস্থানে।

তোমার সুরক্ষা চাই আর কিছু নয়
আমার শরীর জুড়ে আদিগন্ত পাপ
প্রতিদিন মরি তাই দিনে আর রাতে
আমার ভুলের থেকে আরো দূরে যাও
আমার কাছেতে শুধু নামটুকু থাক
প্রিয় নাম গায়ে মেখে পাপক্ষয় করি
তোমার সুরক্ষাটুকু নিশ্চিত হলে
বিষন্ন শরীর জুড়ে বৃষ্টি নেমে আসে

ভিজে যাচ্ছি তুমি আমি আমরা সবাই। ভিজে যাচ্ছে আমাদের সব না-বলা কথা, না-লেখা কবিতা আর আমাদের সব গোপন ভালোবাসা মন্দবাসার ব্যক্তিগত গদ্য।আমাদের বুকের অন্ধকার অবচেতনে গান গেয়ে চলেছে এক বাউন্ডুলে বৃষ্টি-বাউল! বৃষ্টিস্নাতা সেই তরুণীটির সাদা জামার আপাত স্বচ্ছতা ফুঁড়ে, ফুটে উঠেছে  অন্তর্বাসের লাজুক বিপন্নতা।আর নেশা-পাঠশালায় তখন আদিম আপেলের সেই পুরনো গল্পটা।পরিত্যক্ত কে যেন একা একা মাউথ্অরগানের মরমীয়া সুরে বুনে চলেছে আযান্ত্রিক এক বৃষ্টি-বিষাদ। সমস্ত দিন আজ টুপ টুপ করে বৃষ্টি পড়ছে। সকাল থেকেই আকাশটা আজ কালো রঙের ছোঁয়ায় নিজেকে সাজিয়েছে। আর এমন বৃষ্টিদিনে একছুটে তোর কাছে পৌঁছতে মন চাইছে নীলাঞ্জনা। কিন্তু তা আর সম্ভব নয় এটা বোধহয় বৃষ্টিও জেনে গেছে।তাই তো আজ সারা দিন ধরে আমাকে নিয়ে খেলেছে বৃষ্টি। বারবার ফিরিয়ে নিয়ে গেছে বৃষ্টি ভেজা সেই দিন গুলোর কাছে। কখনো শুশুনিয়া পাহাড়ের দিন গুলোতে কখনো গড়িয়ার তোর ফ্ল্যাট এর দিন গুলোতে আবার কখনো বা বৃষ্টির গন্ধ মাখতে মাখতে তোতে আমাতে কলকাতার রাস্তায় পাগলা চক্কর মারার দিনগুলোতে।আর আমি নিরুপায় হয়ে দৌড়ে বেড়িয়েছি কখনো শুশুনিয়া থেকে গড়িয়া, কখনো নন্দন থেকে রাসবেহারীর সাট্‌ল ট্যাক্সিতে। তুইও কি আমার মতো স্মৃতি তড়িত আজ নীলাঞ্জনা? নাকি নাকি সেদিন গড়িয়ায় মোড়ে দাঁড়িয়ে আমার মতো স্মৃতি গুলোকেও ঝেড়ে ফেলেছিস মন থেকে একটা একটা করে। আজ সারাটা দিন বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে আমার PC তে বেজেছে রবি ঠাকুরের সেই পাগল করা গান, যা তোর ভীষণই প্রিয় ছিল, ‘এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়.........’।কিন্তু আজ কাকে বলব আর কী ই বা বলবো নীল? আমাদের সব কথা ফুরিয়েছে আজ।

এই তো রচিছ পথ যে পথে ছলনাও থাকে
আমি তার বুঝেছি কিছুবা, হয়তো অনেক
জানি
'ভালোবাসি' মানে ভালোবাসা নয় কখনো কখনো
দূরে যাওয়ার জন্যও আসতে হয় কাছে
অথবা
চিঠির জবাবে না লেখা কথার মতোই
লুকিয়ে থাকে কিছু রহস্য-গোপন
সব অভিসারে
মেঘের মতোই নেমে আসে
ঝড়ের মতোই উড়ে আসে
পলির মতোই ভেঙ্গে পড়ে
অভিসার শেষে, কপট সময়।

আজ বড়ো অবাধ্য বৃষ্টিটা। ঠিক যেনো চঞ্চল কিশোরীর মতো, তোর মতো, খুনসুটিতে অস্থির করে তুলেছে আমায়। কিছুতেই বাধ মানছে না। যতই রাগ করি চোখ পাকাই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে ঠিক তোর মতো। আর বারবার আমাকে তোর কথা মনে করিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।ভাবছিস আমি স্মৃতিমেদুরতায় ভুগছি।না, নীল আজ আমাকে বৃষ্টিতে পেয়েছে আজ আমাকে তো’তে পেয়েছে। বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে শুশুনিয়ায় এমনই বৃষ্টি ভেজা দিনে আমাদের সফরের কথা। সেদিনের বৃষ্টি টাও ঠিক আজকের মতো ছিল। আর তুইও হঠাৎ করে সেদিন বৃষ্টি হয়ে গেলি। তারপর তুই আর বৃষ্টি মিলিয়ে সেদিন শুশুনিয়া কে ভিজিয়েছিল। আমি দাঁড়িয়েছিলাম টেন্টে। তোদের ন্ডকারখানা দেখছিলাম। সেদিন আমি ভিজি নি। তুই আমাকে বলেছিলি ভীতু। নীল সেদিন আমি বৃষ্টি কে ভয় পাইনি, ভয় পেয়েছিলাম তোকে। যদি তোকে ছুঁয়ে দিলে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো ঝরে যায় তোর শরীর থেকে, সেদিন বৃষ্ট ভেজা তোকে পাহাড়ের কোলে রুপকথার মত লাগছিল যদি ছুঁয়ে দিলে তুই সাধারন হয়ে যাস।তারপর বৃষ্টি থামলে তুই আমাকে ভাসিয়েছিলি আরেক বৃষ্টিতে। সে আগুনে বৃষ্টিতে পুড়তে পুড়তে আমি ভয় পেয়েছি। তোর যে কোনো তল নেই নীল, তোর যে কোনো সীমানা নেই, সব সীমানাই তুই ভেঙেছিস অবলীলায়। আমি পারিনি, আমি সত্যিই পারিনি নীল।আর পারিনি বলেই সেই বৃষ্টির পর তোকে খুব সাধারন লেগেছিল আর পাঁচজনের মতোই, কেন তা জানি না এর কোন উত্তরই নেই আমার কাছে।

ভেবেছি তোমাকে ভোর
অমানিশা কেটে গেলে তোমাকেই
ধরেছি জড়িয়ে
ঠোঁট ছুঁয়ে হাত ছুঁয়ে চোখের কাজল ছুঁয়ে
জেনেছি এ আমার অমল বেঁচে থাকা
তোমাকে ভেবেছি ভোর
ভোরের শিউলি, জুঁই, রাতের গন্ধরাজ
তোমাকে ভেবেছি ভোর
ভোরের শিশির ধোয়া কোমল বকুল
তোমাকে ভেবেছি ভোর
ছুঁয়ে হাত বলেছি এ আমার গোলাপ গোলাপ
পঁচনের কাল আসে ফুলেরও একদিন!
এ আমি না, ভাবিনি কখনো।

আমার কি সেদিন সাহসী হওয়া উচিত ছিল নীলাঞ্জনা? তাহলে কি আজকের দিনটা অন্য রকম হতো। আজকের এই বৃষ্টি মুখর দুপুর বেলা আমার পাশেই থাকতিস তুই? কিন্তু তোর সেই অসাধারন্ত্ব থাক্তো কি? আমি তো তোকে আর পাঁচটা মেয়ের মতো চাই নি, আর পাঁচ জনের মতো আমিও তোকে ভালবাসি নি। তুই আমার কাছে রূপকথা, আমার ভালোবাসাও ছিল তেমনি এক জাদু কাঠির স্পর্শ। কিন্তু সত্যিই কি আমরা ভালো বেসেছিলাম?তা হলে আমাদের এই ভালবাসা কেনো সাধারন প্রেম কাহিনীর পরিনতি পেল? গড়িয়া হাটের মোড়ে সেদিন তুই আমাকে দাঁড়করিয়ে রেখে চলে গেছিলি। বলেছিলি, ‘আজ আসি, আমাদের দেখা হবে আর কোনদিনই। ভালো থাকিস’। তারপর চলে গিয়েছিল সোজা কোন দিকে না তাকিয়ে। জানিশ তারপরও বহুক্ষন আমি দাঁড়িয়েছিলাম ভীড়ের মধ্যে। বারবার মনে হচ্ছিল; এই বুঝি তুই ভীড়ের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে বলবি, ‘ কি বে শালা এখানে দাঁড়িয়ে কি মারাচ্ছিস? চ’ একটু মাল টেনে আসি’।কিন্তু তুই আসিস নি। সত্যি বলতো নীলাঞ্জনা ভালোবাসা আসলে কি? আমরা কি সত্যিই ভালোবাসা মানে বুঝি? আজ এই প্রশ্নটাই আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে নীল। অথচ দ্যাখ সাহস করে বলতেও পারছি না কেমন আছিস নীল, প্লিজ তুই ফিরে আয়।।কিন্তু আমি জানি তোর ভালোবাসা ছড়িয়ে আছে আমার সারা শরীরে, আমার ঘরে, আমার প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে আগোছালো ভাবে আজো আমি সব গুছিয়ে উঠতে পারিনি সেই সব ভালোবাসা। জানি গুছিয়ে রাখলে ভালো হতো, কিন্তু থাক, ওগুলো ছড়ানোই থাক। গুছিয়ে নিলে সে বড় সুখের হতো, কিন্তু তোর চলে যাওয়া সে বড়ো

............

ভালোবাসা লেখা হয় কবিতায় কবিতায়
পাখির ঠোঁটের সুর তুলে আনা
ফিদার ছবিতে
মাধুরীরর কোমর ও নাভিতে
ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া
চৌরাশিয়ার বাঁশি, আহা ভালোবাসি
ভালোবাসা ছড়ানো ছিটানো কত না
চিঠিতে, গল্পে পাতায় পাতায়
লেখা হয় রমনায় চন্দ্রিমা উদ্যানে
গাছের বাকল তুলে নখের আঁচরে
ভালোবাসা চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো
আকাশে বাতাসে দেহে চোখের পাতায়
একবার যদি কেউ কুড়িয়ে কুড়িয়ে
এ অমল ভালোবাসা হৃদয়ে করত জমা
আহা! কত সুখ হত।।

শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১২

কি আশ্চার্য এই মেয়ে গুলো !!!



কি আশ্চার্য এই মেয়ে গুলো !!!

 

একটু আগেই বাস থেকে নেমে পড়লাম । ঈশিতার পেছন পেছন । একটু অবশ্য হাটতে হবে । হোক !
ঈশিতা আমার সামনে সামনে হাটছিল । একবারও পিছন ফিরেও তাকাচ্ছে না । এমন একটা ভাব যেন আমাকে ও একদমই চেনে না । পিছন থেকে ওকে ডাক দিলাম ।
মনে ভয় ছিল ও হয়তো শুনেও না শোনার ভান করে চলে যাবে । দাড়াবে না । কিন্তু না । দাড়াল ও । আমি আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম । কারনটা আজ জিজ্ঞেস করতে হবে ।

ঈশিতা বোধহয় আমার উপর কোন কারনে রাগ করেছে । আমাকে কেমন জানি এড়িয়ে চলছে । অবশ্য ওর সাথে আমার খুব যে খুব অন্তরঙ্গ তা কিন্তু নয় । একই অফিসে চাকরি করার সুবাদে ওর সাথে আমার পরিচয় । টুকটাক কথাবার্তা একসাথে আসা যাওয়া করা এই । কিন্তু কদিন থেকে লক্ষ্য করছি সেই টুকুও ও বন্ধ করে দিয়েছে ।
এই জিনিসটা আমাকে খানিকটা কষ্ট দিচ্ছে । ঈশিতা কে আমি বেশ পছন্দ করি । দেখতে সুন্দর কথাবার্তাও সুন্দর । ওর সব কিছুই ভাল । পছন্দ হওয়ার মতই মেয়ে ও । কিন্তু সবসময় ও আমার সাথে খানিকটা দুরুত্ব রেখেই চলত । শুধু আমার সাথে না । সবার সাথেই । কারো সাথে খুব বেশি গভীর ভাবে মিশত না ও ।
আর কদিন থেকে যেন আরো চুপচাপ হয়ে গেছে । আমার সাথে কথা বলছে না একদমই ।
কারন টা কি ? আমার কোন আচরনে কি ও কষ্ট পেল ? বুঝতে পারছি না কিছুতেই । যাই হোক আজ জিজ্ঞেস করবো ।
আমরা মোটামুটি একই জায়গায় থাকি । এক স্টপেজ আগে পিছে । আগে আসার সময় আমরা প্রায়ইএকসাথে ফিরতাম অফিস থেকে । পাশাপাশি বাসেয় সিটে অথবা সিএনজিতে । ওর সাথে টুকটাক কথা বলা চলত ।
কি চমৎকার সময় কাটতো তখন !
একদিন অফিস থেকে আসার পথে বাস নষ্ট হয়ে গেল । সবাই বাস থেকে নেমে যখন অন্য বাসের জন্য ওয়েট করছে তখন ঈশিতা বলল
-আসুন রিক্সা নেই ।
আমি এই কথাটা শোনার জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলাম । জীবনের সব থেকে সুন্দর রিক্সা ভ্রমন ছিল সেটা ।
এভাবেই দিন গুলো কেটে যাচ্ছিল সুন্দর ভাবে । কিন্তু কি হল ঠিক বুঝলাম না !

ওর সামনে গিয়ে দাড়ালাম ।
-হাই ।
ঈশিতা কোন উত্তর দিল না । আমি আবার বললাম
-অফিস কেমন ছিল আজ ?
-আপনি কি এই কথা বলার জন্য আমাকে ডাকলেন ?
-না মানে !
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না কথাটা কিভাবে তুলবো ।
-অপু সাহেব সারাদিন অফিস করে আমি বেশ ক্লান্ত । আমি এখন বাসায় যাবো ।
ওর গলায় কেমন জানি একটা কাঠিন্য ছিল । আমার সাথে কথা বলতে সে রাজি না ।
-আচ্ছা আপনি কি কোন কারনে আমার উপর রাগ করেছেন ?
সরাসরি জিজ্ঞেস করেই ফেললাম ।
-আপনার কেন মনে হচ্ছে যে আমি আপনার উপর রাগ করেছি ?
-না মানে আপনি .....
কি যে বলবো বুঝতে পারলাম না ।
-দেখুন অপু সাহেব রাগ বা অভিমান কেবল কাছের মানুষ গুলোর উপর করা যায় । আপনি আমার এমন কোন কাছের মানুষ না যে আপনার উপর আমি রাগ করবো !
আমার মনটা একটু খারাপই হল । এতো কঠিন করে না বললেও তো চলত ।
-আশা করি আপনি আপনার জবাব পেয়েছেন ।
ঈশিতা আর দাড়াল না । আমি দাড়িয়ে রইলাম ।
ওর কথায় স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে আমার উপর ও রেগে আছে । কিন্তু আমি এমন কি করলাম ? কিছুই মনে পড়ছে না ।

মনটা খারাপ নিয়েই বাসায় ফিরলাম । রাতে বিছানায় শুয়েও কেন জানি ঘুম এল না । কেবলই ঈশিতার কথা মনে হতে লাগল । আর মনে হয় ওর সাথে রিক্সায় চড়া হবে না । মাঝে মাঝে যে বাসে ও আমার পাশে এসে বসত টুকটাক কথা বলত সেটা বোধহয় আর হবে না ।
আসলে মেয়েগুলো এতো জটিল কেন হয় ? এদের বোঝা বড় মুশকিল । কি করেছি সোজাসুজি বললেই হয় !
ঈশিতা আসলেই যেন কেমন ! অফিসের সবার সাথেই ও দুরুত্ব রেখে চলে । তবুও সবার থেকে আমার সাথে একটু আধটু কথা বলত । তাও বোধহয় বন্ধ ।
ওর আচরন বোঝা আসলেই আমার কর্ম নয় ।
তিনচার দিন আগে আমাদের একটা প্রোগ্রাম ছিল । অফিসের কাছেই । বস বলল সবাই রিক্সা নিয়ে রওনা হয়ে যান । দেখি সবাই শেয়ার করে যাচ্ছে । আমার মনে সেদিন কার কথা মনে পড়ল ।
আশা করলাম ও হয়তো আমার সাথেই যেতে চাইবে । অনেকক্ষন অপেক্ষা করলাম কিন্তু ঈশিতা এল না । এমন কি একবার নিজে গিয়ে জিজ্ঞেসও করলাম ।
-যাবেন না ?
-এই তো যাবো ।
একবার তো বলতে পারতো আমার জন্য একটু দাড়ান । একসাথে যাই । কিন্তু হায় !
তবুও দাড়িয়ে ছিলাম । কিন্তু বেশিক্ষন দাড়িয়ে থাকা গেল না ।
ইরিন এসে বলল
-কি ব্যাপার অপু ভাই এখনও যান নি ? যাক ভালই হল । চলুন আপনার সাথে যাওয়া যাক ।
ইরিন মেয়েটা কি স্বাভাবিক ভাবেই বলল !
ঈশিতাও তো বলতে পারতো । ইরিনের সাথেই গেলাম । ঈশিতার সাথে আর রিক্সায় ওঠা হল না । বোধহয় আর কোন দিন হবেও না ।
পরদিন অফিস গেলাম মন খারাপ নিয়েই । আগে কোন না কোন অজুহাতে ঈশিতার ডেস্কে যেতাম দুএক বার । আজ আর গেলাম না । যদিও কাজে মন বসছিল না তবুও মুখ বুজে কাজই করতে লাগলাম ।
আমি কাজ করছিলাম ঠিক এমন সময় ঈশিতা ফোন দিল ।
-ব্যস্ত ?
প্রথমে ভেবেছিলাম রাগ দেখাবো কিন্তু পারলাম না । বললাম
-এইতো কাজ করছি আর কি ? তেমন ব্যস্ত না ।
-একটু ছতলায় আসবেন ?
আমি খানিকটা অবাক হলাম । কালকের ঈশিতা আর আজকের ঈশিতা কেমন ভিন্ন মনে হল ।
-আচ্ছা আসছি ।
আমাদের এই বিল্ডিংটায় প্রায় ১0/১২ অফিস । আর ছতলায় হল ক্যান্টিন । সব অফিসের এই একটা কমন ক্যান্টিন । তাই মোটামুটি ভিড় থাকে সব সময় । তবে তুলনা মুলক ভাবে এই সময়টাতে কম থাকে লোকজন । অফিসের পিক আওয়ার তো !
ঈশিতাকে দেখলাম একদম কোনার একটা টেবিলে বসে আছে মাথা নিচু করে । আমি সামনে গিয়ে বসতেই মাথা তুলে তাকাল ।
ঈশিতার দিকে তাকিয়ে কেমন অবাক হলাম । ওর চোখ দুটো কেমন জানি ফোলাফোলা । বোধহয় কেঁদে কোন কারনে ।
-আমি বললাম কি হয়েছে ?
ও কোন কথা ধা বলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল ।
-আরে বলতে হবে তো কি হয়েছে । তা না হলে বুঝবো কিভাবে ?
অনেকক্ষন পর ঈশিতা বলল
-আই এম সরি !
-সরি ? কেন ?
-কালকে আমি আপনার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছি ।
এই বলে ঈশিতা আবারও মাথা নিচু করলো । খারাপ ব্যবহার তো করেছে । কিন্তু এই কথা তো আর মুখে ওর বলা যায় না । আমি বললাম
-না ঠিক আছে সমস্যা নাই ।
-না ঠিক নাই ।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম ঈশিতার চোখ দিয়ে পানি পরছে । আশ্চর্য পানি পরছে কেন ?
-আপনি কাঁদছেন কেন ? প্লিজ কাঁদবেন না । আমি কিছু মনে করি নি । সত্যি বলছি কিছু মনে করি নি ।
ঈশিতা বলল
-আসলে আমি খুব রেগে ছিলাম আপনার উপর । এই জন্য খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছি । কিন্তু বাসায় গিয়ে এতো খারাপ লাগছিল । সারা রাত আমি ঘুমাতে পারি নি ।
ঈশিতার বেশ সময় লাগল শান্ত হতে । আমি ওকে সামলে নেওয়ার সময় দিলাম । পুরোপুরি শান্ত হলে আমি ওকে বললাম
-একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ?
-করুন ।
-আপনি আমার উপর কেন রাগ করেছেন বলেন তো ?
ঈশিতা কোন কথা না বলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল । আমি আবার বললাম
-আপনি রাগ করেছেন বুঝতে পারছিলাম কিন্তু কারনটা কিছুতেই ধরতে পারছিলাম না ।
একটু চুপ করে থেকে ঈশিতা বলল
-আপনি সেদিন ইরিনের সাথে রিক্সায় কেন উঠলেন ?
-মানে ?
কি বলছে এই মেয়ে ! আমি ইরিনেয় সাথে রিক্সায় উঠলে ও কেন রাগ করবে ?
কেন রাগ করবে ? আমি ঈশিতার দিকে তাকিয়ে থাকলাম ।
আচ্ছা ! এইবার বুঝলাম । ইরিনের সাথে রিক্সায় উঠলে ঈশিতা কেন রাগ করবে আমি বুঝতে পারলাম ।
আসলেই এই মেয়েদের মন বোঝা কত কঠিন ! ঈশিতার আচরন এমন ছিল আমি কোন দিন ভাবতেই পারি নি ও এমনটা চাইবে । আমি বললাম
-আমি তো আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিল । তখন নিশ্চই আপনার বলা উচিৎ ছিল ।
ঈশিতা এবারও কোন কথা বলল না । কেবল আমার দিকে তাকিয়ে থাকল ।
-এই টুকু বললেই কিন্তু হয়ে যেত ! হটাৎ ঈশিতা বলল
-আপনাকে ইরিনের সাথে দেখে এতো রাগ হল । মনে হল .... মনে হল ...
-কি মনে হল ?
-জানি না কি মনে হল ! আপনি আর কখনও ইরিনের সাথে রিক্সায় উঠবেন না । কোন দিন না ।
আমি হেসে উঠলাম । বললাম
-তো কার সাথে উঠবো ? আপনার সাথে ?
আমি হাসতেই থাকি ।
-হাসছেন কেন ?
-তোমার ছেলেমানষী দেখে হাসছি ।
-কি ছেলেমানুষী করলাম ?
-কাল তুমি কি বলেছিলে মনে আছে ?
-কি ?
-বলেছিল কাছে মানুষের উপরই কেবল রাগ অভিমান করা যায় । আমি আজকে একটা কথা বলি ! তুমি যেমন করে আমাকে রিক্সায় উঠতে মানা করলে .... কেবল আপন মানুষ গুলোই ওভাবে বলতে পারে । এখন বল তুমি কি আমার কাছের মানুষ ?
ঈশিতা কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইল । আমি হাসি মুখে বললাম
-চুপ করে থেকো না । বল ।
ঈশিতা চুপ করে থাকল । কেবল এক ভাবে আমার দিকে তাকিয় থেকল ।
কি আশ্চার্য এই মেয়ে গুলো । মেয়েগুলো মুখে এক কথা আর চোখ বলছে আর এক কথা । একটু মুখ ফুটে বললে কি হয় ? এমন কি ক্ষতি হয় ?

মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১২

ভালবেসে থাকো যদি


ভালবেসে থাকো যদি

6869c094026db6715f4c8764cc631b06

ভালবেসে থেকে যদি আমাকে,তোমার
অন্তরের নিবিড় নিরজনতায়,পুস্পি কানন পাশে
,প্রতীক্ষা-সুন্দর হয়ে কাটিও সময়
অবিচল নিরদিধায়।

যখন আসবে ফুলের বসন্ত,গন্ধ শুঁকে
ভূলে যেওনা আমাকে ফসলী প্রান্তরে
মৌ-মৌ গন্ধে।

ভূলে যেওনা বিলাসী মেহগিনি কাঠের
চেয়ারে বা টেবিলে কখনো-
অথবা যেওনা ভুলে সৌখিন ঘড়িতে
কিংবা টরচের আলোর মতো দিবালোকে।

ভালবেসে থাক যদি মনে রেখো জীবনের
অন্যতীরে,
অনুরিক্ত বেদনার সুরে-সুরে।

শুক্রবার, ২ মার্চ, ২০১২

aandharer aalo

 

 

aandharer aalo


AANDHARER AALO....

Pothe aanche kanta- kanta aar sudhu kanta.
Pother du dhare aanche prokritir meela rongin swapno.
Gach- pala, nodi nala,nil aakashe megh bhasa ,
Dana mele pal tule pakhi hoye urre jaoa .


Dakhi cheye chinno dai oi tribhujer chura,Chinno theke aabar chinno shuru hoye sai tribhujer.
Kintu sai chinner aar sesh hoyena keno……?
Bar-bar mone hoye ei bujhi ei sesh chinno ,
Ebar aami pouchiyei jabo.
Aar aandher nai aar bujhi kanta nai ,
Aar bujhi pahar moru sagar nai,
Dur aar kato dur ,sai pother sesh kothay …..?
Dhurr!!! …er to aar sesh ei nei….

Aami jato bar bati jalai tato bar nibhe jaye sei bati,
Dekhi sudhu dhu-dhu maath kalo aandhar rati.
Mone pore jaye sudhu sei purano diner smriti.
Purano diner smritite keno sudhu bedona pai.
Tai to aami purano diner smritike
bhule jete chai , muche dite chai.


Pother kantaey-kantaey chobi aanki,sudhu phul
Aar phul dekhite pai.
Batase- batase mridu hasi hase snigdho gandho pai.
Ek songe thaki aar aaladai jai, mone hoy jeno
Aamari chobi jaey.
Sobai jeno bole oi je tinkhana karbon kora
chobi dhekho bhai.
Tai to sakol dukho-kosto bhule dhairjo dharai ,
Sashos aani anubhav kori ,shotti eraito aamar
Aasol kobi o chobi.
Je chobi aami eke dilam chobi,se chobite rangta tumi
bhore diyo aamar chobi ,….tumi.
Nirjon gabhire ekaki bose bhabi…..aandher phurabe ekdin,
sat range ramdhunu aakase, bahar charabe jagate tumi,
Aandher phurabe robir kirone chutbe –phutbe aalor rashi.
Runu-jhunu nupur baje oi aakashe
subasito gondho bhase batase- batase.
tai to mon aamar urre choleche alok gondhe mondo batase,
nishar aakase oi cader aaloye aami bhese jate cai.
Aandharer aalo – aandhare aalo – aandharer aalo
Tai to lage aamar ….darun –darun – darun bhalo……!


Dujanar duti poth ek holo aandhare,
Sai pothe aajo aami hete cholichi je nirobe.
Biram bihin ei cholar sesh janina kothey…
Tabuo cholechi rater aandhere kantar pothe,
Tai to buker sahosh o swapno niye cholchi.

DHAN TU HI DHANNA HAI

 

 

DHAN TU HI DHANNA HAI

 
Aapke pass dhan hai to kya gam hai ,
Dhan hai to sach aap dhanya hai.
Acche ko bure our bure ko accha bana sakte ho.
Din ko raat our raat ko din, sada ko kala our kale ko sada.
Suno, suno –suno mera bahena aur sab dada.

Aap ho katil phir bhi hoga aapka bara hi khatir.
Aap mango chanda ya karo koi galat dhanda,
Chal raha hai paise walo ki bajar bhao monda,
Tandur me bhun dalo ya phir nithari me
Paakeo butterr chicken,kya fark parta hai.
Bare hi swad hai sab kuch chalta hai.

Paise ki bori sab kuch nigal kar thanda kor deta hai.
Income tax ho ,sex-tax, ya rail-tax sab kuch manda chalta hai.
Bichar ho raha bimarsh ho raha hai ,
Kanoon to bas tarik badalta hai sabut mangta hai .

Kaun hai sadhu aur kaun hai chor,
Khicho agur dorr , to sab-ke sab nikelte hai chor.
vartaman samay me sabhi to hai nanga ,
Koun karega aaj samaj me bichar bhai changa.

Kathgare me khare hoker kasam khai jati kebal jhut ki,
Safed suit aur kale coat ki jeb me
bhare jate hai kebal note-hi note se.
Dhan ki is maya- jaal me kale samaj ne
Safed chadar odh liya hai, jise dekhna muskil
bhi our naa mumkin bhi .

Kanoon ki devi banakar pujte ho ,
Aankho me kali patti bhandh kar kalikh hi kalikh poth dete ho.
Dhan ki agar maya nagri na hoti to
Har roj hazaro dhananjay suli par charta,
Our fansi par latkaya jata.

Dhan tu hi dhanna hai, dhan ki is maya nagari dannya hai.
Dhan tune hi bachaya hai hazaro khuni,katil aur balatkari ka
Dam our gam. Es liya dhan tu hi dhannya hay,
Dhan tujhe hazaro salam our namaskar.
 
___________________________________hasanat ______

বৃহস্পতিবার, ১ মার্চ, ২০১২

projapoti .......

 

 

projapoti







 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
Emon sunder rongin pakha…
O bhai .....!!
projapati tumi, pele kotha…..?
Tomay dekhe
baro sadh hoy je mone,
Urbo aami tomari sone.
Rong-birongi tomar jama pore,
Phule-phule aar bone-bone dule.
Ekbar balo…
Eto sunder jhalo-malo, aaka-baka,
Lal-nil,holde tomar oi pakha...
Balo tumi balo …ke tomare dilo….?
O bhai projapati!,
Tumi aamar bandhu hao,
Aamar jama pore tumi
Boi-khata niye schoole jao.
Aar aami tomar
oi sonali parag makha,
lal nil holde jama pore ,
Bone-bone dule –dule
phule-phule madhu khai ghure-ghure.

বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আমাকে নিয়ে যায় সে



আমাকে নিয়ে যায় সে

আমাকে জাগিয়ে তোলে সে-
কোনো এক কালের প্রভাত ঘন
বসন্তের কোকিল হয়ে।

মাঝে মধ্যেই আমি প্রকৃতির রুপ মেখে
নয়নে বসন্ত সাজাই-
আমি উন্মক্ত হই, প্রতহ অপরাহে
কিম্বা বাকি সময়ে।

যেখানে কোনো অনুসূচনা থাকেনা,
থাকেনা সূচনাকে পুজি করে
অমাবর্ষার বিষ্ময়কর ডুমুর ফুল
আয়ত্ব করতে।

সেখানে আমি জাগিয়ে উঠি
অতীত কিম্বা ভবিষ্যতের সামনা সামনি।
আমাকে নিয়ে যায় সে-
মহাকালের কোনো এক সৃষ্টির নিগরে।

আমি সেখানেই আয়ত্ব করি
যুগ উপযোগি সভ্যতার বাসনা গুলো।
সেখানেই গচ্ছিত আছে মহাকালের সভ্যতা ।

সেখানে শানবাধা ঘাট আছে।
পাল তোলা নাও আছে।
প্রকৃতি আছে, আছে প্রাকৃতির নির্যাস ।

কোকিল আছে ,ভরা দিঘি আছে
উলঙ্গ মাঠ আছে -
আর একরাশ স্বপ্ন আছে।

আমাকে জাগিয়ে তোলে সে
আমাকে নিয়ে যায় সে
বসন্তে-র ভরা যৌবনের স্বাদ নিতে।

আমি প্রত্যহে কাটি তার অপেক্ষায়।
######################################################################

মেঘ-বৃষ্টি লুকোচুরি





মেঘ-বৃষ্টি লুকোচুরি
akashnill
এই কি মেঘের খেলা-
প্রতিদিন সে ঢাকে আকাশ,
ভু-পৃষ্টে থমকে দাড়ায় তপ্ত বাতাস।
প্রতিক্ষায় চেয়ে তনুমন,
ক’ফোটা বৃষ্টি ঝরো অনুক্ষন।
কদম তলে ‍সিক্ত বসনে
কথা হবে প্রিয়ার সাথে তৃষিত নয়নে,
রোদেলা দুপুরে ঘামসিক্ত মনে
তাই অপেক্ষায় কাটে বেলা।
অপেক্ষার দুপুর বিকেলে যায়
গোধূলীয়ার সঙ্গম হয় সুর্য ডোবায়
তবুও জলহীন মেঘ বৃষ্টি ঝরালো না,
প্রিয়া মোর আসিলনা শুষ্ক সাজ বেলায়,
ছোঁয়া গেল না তাকে বৃষ্টির অপেক্ষায়,
এ যেন মেঘ-বৃষ্টি লুকোচুরি খেলা।

শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১২

খেয়া....

খেয়া

আমার বুকের বা’পাঁজরে আছে একটা খেয়া
 সেই খেয়ার পালে দক্ষিণা পবনের লেগেছে ছোঁয়া
 প্রেম-ঘাটের যাত্রী যে জন
 পার করিব হলে সুজন
 প্রেমছাড়া আনা কড়ি কিছুই নেব না
 বুঝে নেব হৃদয় ষোল আনা ।

 হৃদয়-তটিনীতে এখন ভরা উচ্ছ্বাস
 অনুকূলে ধমকা বহিছে দক্ষিণা বাতাস
 উঠবে যদি উঠ তরী, বেলা দ্বিপ্রহর
 ভালবাসার পাল উড়িয়ে পাড়ি দেব তেপান্তর
 এ খেয়ঘাটে হয় শুধু হৃদয়ের লেনা-দেনা
 

ভালবাসার দামে ভালবাসা হয় কেনা
 প্রেমের খেয়ার মাঝি আমি পার করি সুজন
 মনে মনে হয় যদি গো মিলন
 প্রেমছাড়া আনা কড়ি কিছুই নেব না
 বুঝে নেব হৃদয় ষোল আনা ।

 আমার ভালবাসার হৃদয় দিলাম অগ্রিম ভাড়া স্বরূপ
 তোল আমায় তোমার খেয়ায়, পাড়ি দেব প্রেমের অন্তরীপ
 চালাও তরী বৈঠা হাতে রাখালী গানের সুরে
 সুরের আবেশে হারাব দু’জন অজানা তেপান্তরে
 প্রেমেরঘাটের যাত্রী আমি ওগো প্রণয়ভাজন
 ভরা জোয়ারে পাল তুলে দাও, বহিছে প্রভঞ্জন
 টাকা-কড়ি, সোনা-দানা কিছুই চাই না
 দিও শুধু ভালবাসা, হৃদয় ষোল আনা ।
 

আমার বুকের বা’পাঁজরে আছে একটা খেয়া
 সেই খেয়ার পালে দক্ষিণা পবনের লেগেছে ছোঁয়া
 প্রেম-ঘাটের যাত্রী যে জন
 পার করিব হলে সুজন
 প্রেমছাড়া আনা কড়ি কিছুই নেব না
 বুঝে নেব হৃদয় ষোল আনা ।


হৃদয়-তটিনীতে এখন ভরা উচ্ছ্বাস
 অনুকূলে ধমকা বহিছে দক্ষিণা বাতাস
 উঠবে যদি উঠ তরী, বেলা দ্বিপ্রহর
 ভালবাসার পাল উড়িয়ে পাড়ি দেব তেপান্তর
 এ খেয়ঘাটে হয় শুধু হৃদয়ের লেনা-দেনা
 ভালবাসার দামে ভালবাসা হয় কেনা
 প্রেমের খেয়ার মাঝি আমি পার করি সুজন
 মনে মনে হয় যদি গো মিলন
 প্রেমছাড়া আনা কড়ি কিছুই নেব না
 বুঝে নেব হৃদয় ষোল আনা ।


আমার ভালবাসার হৃদয় দিলাম অগ্রিম ভাড়া স্বরূপ
 তোল আমায় তোমার খেয়ায়, পাড়ি দেব প্রেমের অন্তরীপ
 চালাও তরী বৈঠা হাতে রাখালী গানের সুরে
 সুরের আবেশে হারাব দু’জন অজানা তেপান্তরে
 প্রেমেরঘাটের যাত্রী আমি ওগো প্রণয়ভাজন
 ভরা জোয়ারে পাল তুলে দাও, বহিছে প্রভঞ্জন
 টাকা-কড়ি, সোনা-দানা কিছুই চাই না
 দিও শুধু ভালবাসা, হৃদয় ষোল আনা ।

সোমবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১২

Tobe keno ai valobasha ??





Jodi nil akash hoye asho...
Jodi megh hoye chu te chao tmi...
Keno rekhe jao amai aka !!
Tobe keno ai valobasha ??

Nil joshna hoye dekha dao tmi...
Bela seshe himel batash hoye asho tmi...
Keno rekhe jao amai aka !!
Tobe keno ai valobasha ??

Akdin hoi to vorer sisir hoye asbe na tmi...
Akdin ai sundor dhoroni theke chole jabe tmi...
Sudhu e rekhe jabe amai aka !!
Tobe keno ai valobasha ??



শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১২

নিঃশব্দের স্মৃতি

নিঃশব্দের স্মৃতি


 হাঁটছো তুমি, লোকের চাহুনি
 বাদ পড়েনি আমার নয়ন
 দীর্ঘ কেশে বেশ সেজেছে
 পাশের নরে দিলেম চয়ন।

বেশ সেজেছে রৌদ্র বটে
 ছুটোছুটি যেন বাড়ছে শেষে
 ঘাম বেড়েছে তোমার ঘ্রাণে
 নীল পদ্ম বুকে ক্ষানিক বসে।

এমন তবে, তোমার বলার হীরক
 বকুল ধরেছে, হয়েছে বেশ সাজুনি,
 বেশ দিলেম এমনই কিছু অংশ
 এখনও স্মৃতি, রয়েছে আমার গাঁথুনি।

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১১

একটি সোনালী মুখ

একটি সোনালী মুখ
একটি সোনালী মুখ
পুকুরের বন্ধ্যা জলের মত স্তব্ধ সময়
কৌটায় ভরে ‍রাখা এক ফালি রোদ যেন,
কালের স্মৃতি চারণে; অমাবস্যার রাত অপেক্ষায় থাকে
চন্দ্রমুখী তুমি বিনে! গরল বিজন,
আমলকীর বন আজ সর্বনাশের উল্লাসে মাতে।

টলটলে স্বচ্ছ জলে তোমার জলছবি
এঁকেছিলে কবে?
তির তির করে কাঁপা বাতাসে
স্তব্ধ জলের ঢেউ! স্মৃতির আকর যেন,
বড্ড জালায় এই পড়ন্ত বেলায়।

এই পড়ন্ত বেলায় নেমে ‍এলো
কুয়াশার সাঁঝ, যেন আতুর ঘরে বাতি জ্বলল
ডুব সাঁতারে মত্ত হাসের ছানা! বাড়ী ফেরার তারা ভুলে যায়;
মাছ রাঙার মত জলে খুঁজে ফিরে
একটি সোনালী মুখ।


১৪১৮@১৪ পৌষ,শীতকাল

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১১

আরেকটি ডিসেম্বরের প্রথম প্রভাতে

আরেকটি ডিসেম্বরের প্রথম প্রভাতে
ডিসেম্বর ০১, ২০১১ 


একটি রক্তজবা হাতে নিয়ে মা বললেন, আজ বৃষ্টি হবে। ভিজে যাবে
সবটুকু সবুজ জমিন। ঘেরুয়া নদীর জল থেকে রক্তবাষ্প উড়ে দেবে
জানান, এই মাটিতে আততায়ী রাত নেমেছিল। হায়েনা পিশাচদের
উল্লাস কাঁপিয়েছিল এই আকাশ। সূর্যের পরিণত ঘর। মানুষের বিত্ত
বিবর। আর লুকিয়ে থাকার সাঁকো খুঁজে শরণার্থী তরুণ-তরুণী
গিয়েছিল উত্তরের বাঁকে। অগ্রজ পূর্বসূরীর হাতের লাঠি গর্জে উঠেছিল
‘থামো ঝড়, থামো বজ্র’ এমন আওয়াজে।

সেই প্রভাতে আমি ছিলাম মায়ের বাম হাত ধরা অবুঝ বালক। বালিকা
বোনটি কেঁদেছিল,’বাবা ,বাবা ‘-বলে।

বাবা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। একটি গ্রেনেড চার্জ করতে গিয়ে উড়ে গিয়েছিল
তার ডান হাত। তাই নিজ ডানহাতটিকে ভয়ে লুকিয়ে রাখতেন
আমার মা। আর বলতেন, দেখিস- আমার হাতটা যেন কেউ না দেখে।

তার ভয় ছিল খুব। বাবার হারানো ডানহাতটিকে তিনি মনে করতেন
নিজের হাত। বাবার চোখগুলোকে মনে করতেন নিজের চোখ।

সেই প্রভাতে আমার মায়ের নিজস্ব কোনো দৃষ্টি ছিল না। বৃষ্টি আসবে বলে
সকল মুক্তিযোদ্ধার দৃষ্টি দিয়ে তিনি তাকিয়েছিলেন আকাশের দিকে।

আর বলেছিলেন, বৃষ্টি আসুক। তবু মুছে যাবে না এই বাংলা থেকে
থোকা থোকা রক্তগোলাপের দাগ।

সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১১

অস্পষ্ট আবেগ

অস্পষ্ট আবেগ

 নভেম্বর ২৪, ২০১১

মনের আবেগ গুলো
কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে সব,
ঠিক যেন শীতের সকালে
ধোয়া ধোয়া কুয়াশা ভেজা স্মৃতির মতো ।
আগের মতো লিখতে পারিনা কবিতা,
না লিখতে পারি গান,
খাতাটি নিয়া বসলেই
এক দুর্বোধ্য চাপা যন্ত্রণায় হারিয়ে যাই।
অনুভূতিগুলো অবাধ্য হয়ে ছুটাছুটি করে চারিপাশ।
সংমিশ্রণের ব্যর্থতা আর এগিয়ে যাওয়ার জড়তা
এ দুটো মিলে আমাকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
বুঝিনা কেন এমন হয়।
বিবেক এর কাছে প্রশ্ন রাখি, উত্তর মেলে না।
মেলে চাপা গোঙানি,
গুমরে গুমরে কান্নার প্রচণ্ড শব্দ।
ও ফ !! এ যন্ত্রণার অবসান হবে কবে??
অতিষ্ঠ মন সব ভেঙ্গেচুরে একাকার করে দিতে চায়,
ধ্বংসের এক প্রবল নেশা চেপে বসে মাথার ভেতর
যেন ক্ষুধার্ত হাঙ্গর পেয়েছে রক্তের গন্ধ ।
কি লিখতে বসলাম আর কি লিখলাম
ঠিক যেন বৃষ্টি হব হব করে
বৃষ্টি না হওয়া এক রোদ্রউজ্জল আকাশ ।।
************************************
এই কবিতাটি সৃজন নামক ই-বুক এ দেয়া হয়েছিল।

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১১

ভালবাসি (খুঁজছি)


ভালবাসি (খুঁজছি )

পৃথিবীতে আসার আগে
অন্যন সুন্দর এক মূহূর্তে-
সাক্ষাত হয়েছিল;
আমার প্রিয়তমার সাথে।

অনেক ভালবাসা জরানো কন্ঠে বলেছিলাম-
আমার মমতা আর ভালবাসা
সাথে আমার শ্রেষ্ঠ সুখ; রেখ কিন্তু বুকে আগলে,
তোমার বুকের উষ্ণতার মাঝে।

ভূল করে হলেও দিওনা যেন কাউকে
এমনকি-
কেউ হাতও যেন না দেয় তাতে।

পৃথিবীতে আসলাম আজ অনেক দিন হল।
আমি রীতিমত যুবক হয়ে প্রিয়তমাকে খুঁজছি।
কিন্তু-
কি অদ্ভুত! কোথাও নেই সে।
চাপা অস্থিরতায়-
এই মেয়ে ওই মেয়ের দিকে চেয়ে থাকি।

একটা কষ্ট; হারিয়ে ফেলার বেদনা-
শুধু আহবান করে আমায়
তার সাগরে ঝাপ দিতে।
আমার সাহস হয়না।

ভালবাসাটা আমার আমিতে ছড়িয়ে থাকায়
একটা বিশ্বাস বাসা বেধে বড় হতে থাকে-
আমার বিশ্বাস; নিশ্চয় তাকে খুঁজে পাব আমি একদিন।

মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১১

মনের আয়নায় দেখা



মনের আয়নায় দেখা
হাসনাত রিদুয়ান |নভেম্বর ১৪, ২০১১

মনের মাঝে সদায় যে বসত করে
আমি মনে রাখিব কেমনে তারে ?
আশার বাণী যে শোনায় নিরাশার মাঝে
বাঁধিব অন্তর মম তার তরে-চিরতরে !

দু’চোখের অলখে যাক সে সুদূরে একা
চোখ বুজে মনের আয়নায় করব দেখা !
নীরবে দ্বৈত সত্ত্বার সনে হবো মুখোমুখি
বিরহী অন্তরে জ্বালিব বেদনার দীপ-শিখা।

মনের মাঝে সদায় যে বসত করে
আমি মনে রাখিব কেমনে তারে?
চোখের কোণেও না পারি রাখিতে
অশ্রু হয়ে সে যায় যে নীরবে ঝরে !

সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১১

বলে যাও-ভালবাসি...

লে যাও-ভালবাসি

 এসো,এসো আমার কাছে-একটু সময় নাও,
শান্ত হয়ে বোস , দম ফেলবার সময়টুকু নাও
এবার ভাল করে বলে যাও – ভালবাসি।
আদর করে বলে যাও – ভালবাসি।
বারবার ভাল করে বলে যাও – ভালবাসি।
দিন পুরোবার আগ পর্যন্ত বলে যাও – ভালবাসি।
বলতে থাক অজস্রবার -
যতক্ষণ না আমার,
এ দেহে কামনার আঘাত পড়ে-
বাসনার পাত্রগুলো যায় দুমড়ে মুচড়ে,
তোমার স্বপ্ন সপ্তমে চড়ে !
আমার আবেগ,সুখগুলো ওঠে আলোড়ন করে
ততক্ষণ বলতে থাক-ভালবাসি,ভালবাসি-ভালবাসি !!

বলে যাও – ভালবাসি,
যতক্ষণ না বলতে হয় – আজ আসি।
বল উদার মনে, তোমার বিহনে-
আমি নেই আমাতে। বল এই ক্ষণে
ঝড়-বন্যায়, কী তপ্ত খরায় -
সোনালী দিনে আর রাত্রির ছায়ায়,
সব কাজের ভীড়ে – একান্ত অবসরে
জ্ঞানে – অজ্ঞানে অনিদ্রার ঘোরে
বল বল চিৎকার করে, ভালবাসি-
তোমায় খু-উ-ব ভালবাসি।
সবাইকে বলে যাও,“ভালবাসি”-
এ শব্দটা আজ ও আগামীর।
যত বাঁশী বাজে-সব যে একই সুর সাঁধে।
বল – আমি চাই শুধু তোমাকে ,
সব কিছু বাদে। আর সবকিছু চরম ম্লান
মূঢ় অর্বাচীন একেবারেই মূল্যহীন।
সেই শব্দ বারবার উচ্চারণ করো।
আমার কানে মধু ঢালো,বেদনা দূর করো ;
আর শুধু বলে যাও- ভালবাসি।
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন রাশি রাশি!
আমায় মুগ্ধ করো আর বলে যাও- ভালবাসি!
আমায় ভরিয়ে দাও,কৃপা করো, বলে যাও- ভালবাসি!!

শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

মন ভাল নেই

মন ভাল নেই

আজ আমি কি লিখবো;আজ আমার মন ভাল নেই
আজ আমি কি আঁকবো,আজ আকাশ বড্ড মেঘলা
আজ আর কি গাইবো আজ যে বাতাসে দাবানলের ঘেই
কাজ কর্ম সবি মাটি মনের সাথে হৃদয়ের আঁটি;
মর্ম কথা ক’বোনা আজ পেটে বড় ক্ষুধা,লাজ শরম
খেয়েছে মাথা;কবিতার পায়ে শৃকল বাধা বিষন্ন কলম।
আজ আর হবেনা লিখা একটাও কবিতা।
আজ বেশ ভ্যপ্সা লাগছে
পৃথিবীও আজ হাঁকছে নিজের সমস্ত ভাষা দিয়ে
মানুষের লিপ্সা মিটছেনা কেন?
ভালবাসার তরীতো ভেসে গেছে নোঙ্গর ছিড়ে - -

শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১১

একজন মায়াবতীর জন্য

একজন মায়াবতীর জন্য

মায়াবতী তোকে দিলাম শূন্যের নৈশব্দ
নির্ঘুম চাঁদ, চন্দ্রসভার মেঘ
তোর সাথে হোক বন্ধন
হিমালয়ের কান্না-পবিত্র জল ছড়িয়ে পড়ুক
তুই ভিজে যা- ভিজুক তোর মন

আজন্ম শোকগুলো ধুয়ে যাক- উড়ুক গাংচিলের ডানায়
ঠাণ্ডা বাতাস লাগুক তোর চোখে
তুই শূন্য হ। জন্মান্তরের পাপ ধুয়ে যাক তোর
আবার জন্ম নে তুই এই জীবনেই
লালসাগুলো ঝলসে উঠুক তোর
তোকে তোর মতোই দেখুক সবাই
তোর মতোই তুই বেঁচে থাক
প্রতিটা অনুভবে মিশে থাক তুই।
এ যে তোরই জীবন।
তুই সুখী হ।

************