[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১২

* * * ..শাড়ীর আঁচলে রক্তে লেখা একদিন.. * * *

* * * ..শাড়ীর আঁচলে রক্তে লেখা একদিন.. * * *

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ ভোর ৪:৩১








একটু ভুলের কারনে হাতের ধাক্কা লেগে কাঁচের গ্লাস পড়ে যেতেই ভেঙ্গে খানখান হয়ে গেল .... কিভাবে কি হলো ভাবতে ভাবতে আনমনে তুলতে গিয়ে কাঁচের খোঁচা লেগে হাত কেটে রক্তের ধারা টপ টপ করে পড়তে শুরু করলো .... ব্যান্ডেজ বাধলেও কেন যেন রক্ত এই বাধ মানতে চাইছিলো না ... চুইয়ে চুইয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছিল রক্তের ধারা ... সাদা ব্যান্ডেজ লাল হচ্ছিল আর সেই রক্তের মাঝেই যেন ফুটে উঠলো এক পুরানো স্মৃতির টাটকা অনুভব ....

বাঙ্গালী মেয়েদেরকে শাড়ি পরা দেখলে কেন জানি আগে থেকেই ভালো লাগতো, মনে হতো এটাতেই ওদের আসল সৌন্দর্য প্রকাশ পায় ... মনের এ গোপন কথাটি আমার বান্দরনী দোস্তটা কোন এক ভাবে জেনে গিয়েছিল .... তাকে আমি কখনোই বলিনি এ কথা ... তার পরেও সে জানলো কিভাবে ? ..... যাই হোক একদিন সে করলো কি , রাতে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো -- কাল একটু সময় হবে ?

আমি বললাম -- কতক্ষন সময়? কি কাজ ?
সে বললো -- খুব জরুরী না, তোর সাথে একটু ঘুরতে ইচ্ছা করছে ... আসতে পারবি ?

আমি বললাম -- আচ্ছা ঠিকাছে, কিন্তু সন্ধ্যার পরে ছাড়া যে পারবো না ?
সে বললো -- অসুবিধা নাই, তুই এসে আমাকে নিয়ে যাস বাসা থেকে তাহলে আম্মু যেতে দিবে ...

আমি বললাম -- আচ্ছা তুই রেডী থাকিস, আমি কিন্তু বসবো না, তোকে নিয়েই আমি বের হয়ে যাবো ... ঠিকাছে ?
সে বললো -- ঠিকাছে আমি রেডী হয়েই থাকবো।

পরদিন সন্ধ্যায় ওদের বাসার সামনে এসে নিচে রিক্সা থেকে নামিনি, এমন সময় শুনি ৬ তলার উপর থেকে চিৎকার করে বান্দরনীটা বলছে -- তুই রিক্সা ছাড়িস না, আমি আসছি ...

একটু পরে দেখি বাসন্তী রং এর শাড়ী পড়ে রাজকন্যা নীচে হাজির .... সেদিন ওকে আসলেই খুব সুন্দর লাগছিল ... মুখ ফুটে কিছু বলার আগেই সে আমাকে বকা দিয়ে বলে -- জানি তোর শাড়ী অনেক পছন্দের তাই বলে এমন হা করে তাকায়ে থাকবি নাকি ? চলেন রিক্সাওয়ালা ভাই ... আপনি আপনার মতো চলতে থাকেন আমরা কোথাও থামবো না ....

আমি জিজ্ঞেস করলাম -- কি হয়েছে, আজকে এত সাজুগুজু করে শাড়ী পরে রিক্সায় ঘোরার ম্যুড হলো যে ?
সে বললো -- এই শাড়ীটা নতুন কিনেছি, তোর শাড়ী অনেক পছন্দ না ? তাই ভাবলাম নতুন শাড়ী পরে তোর সাথে একটু ঘুরি ... কেমন হয়েছে শাড়ীটা ?

আমার আসলে শাড়ীটা এত ভালো লেগেছিল যে বলার মতো না ... কিন্তু ওর সামনে প্রকাশ না করার জন্যই বললাম -- কি একটা ঘোড়ার ডিমের কালারের শাড়ী কিনেছিস, এ তো বুড়ীরা পরে ... তুই কি বুড়ী নাকি ?
এ কথা শোনার পরেও সে একেবারেই রাগ না করে বললো -- তুই না আমাকে মাঝে মাঝে বুড়ি ডাকিস ? তাহলে তো ঠিকই আছে ... এটা আমার জন্যই বানানো হয়েছে ... তাই না?

আমি মনে মনে ভাবছি কিরে বাবা, কাহিনী কি ... আজকে এর ম্যুড এত্তো ভালো ক্যান রে বাবা ... আর সাথে সাথে ওকে বিভিন্ন কথার মাধ্যমে খোচা দিচ্ছিলাম ... কিন্তু কোন ক্রমেরই সে ঐ দিন রাগছিলো না বরং আমার কথা কানেই তুলছিলো না ... অথচ অন্যদিন এমন কোন কথা বলা তো দুরের কথা খোচা মারার কথা মনে আসার সাথে সাথে ওর ধমক খাওয়া লাগে ... আবার রিক্সাওয়ালাও আমাদের কথা শুনে মজা পাচ্ছিলো আর বারবার ঘুরে পিছন ফিরে তাকাচ্ছিল ... উনাকে বললাম -- ভাই পিছনে না তাকিয়ে একটু সাবধানে চালান ...

একসময় বলা নেই কওয়া নেই আকাশ ফেটে বৃষ্টি শুরু হলো ... আমি রিক্সার হুড তুলে দিতে চাইলাম কিন্তু তা সে তুলতে দিবে না ... আরে ! কি মুসকিল ... বলে নাকি তার বৃষ্টিতে ভেজার ম্যুড হয়েছে তার ...
আমি মনে মনে বলি -- আজকে এর মাথাটা পুরা গেছে !!!!

ঝম ঝম বৃষ্টিতে ৫০ মিটার সামনের কিছুই ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিলো না , রাস্তায় কোথাও কোথাও হাটু পানি জমে গেছে .... হঠাৎ কোনো এক ঢাকনা খোলা ম্যানহোল পানি কারনে দেখা না যাওয়ায় আমাদের রিক্সার একটি চাকা এর মধ্যে পড়তেই কাত হয়ে পড়লো ... ওদিকে বান্দরনীর ম্যুড এতই ভালো ছিল যে সে ঠিকমতো ধরে বসতেই নাকি ভুলে গিয়েছিলো .... ফলাফল হিসেবে রিক্সা কাত হতেই সে ছিটকে পড়ে যাচ্ছিলো ... কোনক্রমে ওর নিচে পড়াটা বাচাতে গিয়ে শেষমেষ নিজেই পড়ে গিয়ে একটা রাম-ধাক্কা আর কিছুটা ঘষা খেলাম রাস্তার পাশের লোহার রেলিং এ ... তবে হাত দুটো সামনে দিয়ে ব্যালান্সটা ঠিক করে চুড়ান্ত পতনটা ঠেকালাম...

অন্ধকারে ঠিক বুঝিনি ব্যাথা পেয়েছি কিনা ...তবে, ওখান থেকে হেটে একটু সামনে আসতেই বাম হাতটা কেমন জানি চটচটে অনুভূত হচ্ছিলো, ভাবছিলাম বৃষ্টির পানি এমন আঠালো তো হয় না, এরপরে হাতটা উপরে তুলে তাকিয়ে দেখি টাটকা রক্তে লাল হয়ে যাচ্ছে আমার হাত ...

তাড়াতাড়ি পাশের একটি টং এর দোকান থেকে পানি নিয়ে হাত ধুয়ে ফেলছি আর দেখার চেষ্টা করছি কতটুকু কেটেছে .... এর মাঝেই হঠাৎ পাগলিটা এক টুকরা কাপড় এগিয়ে দিয়ে বললো -- আয় তো, তোর হাতটা বেধে দেই, রক্ত পড়া কমে যাবে ... এর পরে সামনে গিয়ে ফার্মেসী থেকে ব্যান্ডেজ করে নিস ...

কাপড়টা হাতে নিতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল ... আমি বেখেয়ালে রক্ত ধুচ্ছিলাম আর সেই ফাকে পাগলীটা নিজের নতুন শাড়ীর আচল ছিড়ে ফেলেছে ... সেটা দিয়েই আমার হাত বাধতে বলছে ...

মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো, বললাম -- তোর নতুন শাড়ী ....
সে বললো -- তোর হাতের রক্ত বন্ধ করাটা আমার কাছে এই শাড়ীর চেয়ে বেশী জরুরী ... যা করতে বলছি কর তো ... এটা তো তোর জন্যই কিনেছিলাম...

আমি অবাক হয়ে বললাম -- মানে ?
সে আমার হাত বাধতে বাধতে বললো -- মনে আছে কয়েকদিন আগে আমার সাথে তুই শপিং এ গিয়ে এই শাড়ীটা দেখে বলেছিলি খুব "সুন্দর শাড়ী" ... এ জন্যই কালকে গিয়ে শাড়িটা কিনে আজকে তোর সাথে বেড়াতে বের হলাম ...

বান্দরনী দোস্তটা আমার হাতে শাড়ীর আচলের ব্যান্ডেজ বাধা শেষ করে মধুমাখা হাসি দিয়ে বললো -- দেখ ! ... শাড়ীটা আমি তোর জন্য কিনেছিলাম ... আর এখন শাড়ীটা আমাদের দু-জনকেই কেমন সুন্দর করে পেচিয়ে রেখেছে ...

এর পরেও দেখি আমার হাতে রক্তের প্রবাহ ওর নতুন শাড়ীর আঁচলকে লাল করে দিচ্ছে ... এটা দেখতেই সে নিঃশব্দে হাত বাড়িয়ে দিয়ে ঐ রক্ত মাখা হাত ধরেই হাটতে শুরু করলো একসাথে .... পাশাপাশি

একরত্তি চিঠি



একরত্তি চিঠি

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৬। রাত ৯:৩৫





জানো, আমার মাঝে মাঝে খুব চিঠি পেতে ইচ্ছে হয়!যে চিঠি পাবার পর---অনেকক্ষন হাতে নিয়ে একমনে বসে থাকা হবে!
তারপর খুব যত্নে ব্যাগের ভেতর রেখে দেবো।সারাদিন ক্লাস আর টং-এর চায়ের কাপে আড্ডার ঝড় তোলার সময়ও মাঝে মাঝে ছুঁয়ে দেবো – সেই চিঠি!!!
একটা ঘরে ফেরার তাড়াও থাকবে…কখন পড়বো সেই চিঠি!!!!
আহহহহহহ…অপেক্ষা এত আকাংক্ষার-ও বুঝি হয়!!!!
কি থাকতে পারে সেই একরত্তি চিঠিতে???

মেঘ করলো,যা দেখে ঠিক চোখের কাজলের কথা মনে পড়ে যায় -'
কিংবা'কখন এক টুকরো
‘ছোট্ট এক ঢেউ কিভাবে কাগজের নৌকোটা ডুবিয়ে দিলো’…
আরে…সেদিন বৃষ্টিতে কি হলো সেতো বলাই হয়নি…পাড়ার ছেলেরা সেদিন ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ফুটবল খেলতে গিয়ে নিজেরাই পা পিছলে গোলপোস্টে ঢুকে বসে আছে…হাহ হা হা হা!!!!


নাহয় লিখলে দু’লাইনের একটা কবিতা---হোকনা সেটা অন্যকারো-কিন্তু তোমার মনে কথা ঠিক ঠিক বলে ফেললোঃ
‘পাহাড় ভালো বেসেছিলো মেঘকে’
বিশ্বাস করো মেঘটাও পাহাড়কে প্রচন্ড ভালোবাসে…

আমার ছুঁইয়ে দেখা চিঠি…না জানি কি আছে লেখা ওতে!!!

উত্তর:-

***
  তুমি ফোন করোনা
          চিঠি লিখ।
       কারন কাগজে তোমার গন্ধ পাই।
একরত্তি লেখাটা ভালো লাগলো।


*****
একটা চিঠি পাঠালাম, দূর আকাশের ঠিকানায়...
ডাকপিওন মেঘে মেঘে-চিঠি পৌঁছে যে যায়।"

আমার কিছু চিঠি লিখার বাকি।
কিছু শব্দেরা তাই ছন্নছাড়া।

কত্তদিন চিঠি লিখিনা! কাগজের উপর মুখ গুঁজে একমনে লিখে যাওয়া...ও কি! জল কিসের? চোখের সমুদ্র উলটে পড়া জলে কিছু শব্দ লেপ্টে যায়। সেই জলে স্নান করে চিঠি আরো শুদ্ধ হয়।
চিঠিরা ভিজতে জানে...ভেজাতে জানে।

চিঠি -পত্র - ইতিকথা....

 

চিঠি - পত্র - ইতিকথা

 
 
আমার কাছে আজকাল আর চিঠি আসেনা। চিঠি মানে কাগজে লেখা চিঠি। যে চিঠি নিয়ে আসার কথা ডাকপিওনের। ডাকে আসে শুধু ইলেকট্রিক বিল, টেলিফোন বিল, ক্রেডিট কার্ড বিল, ফর্ম, অ্যাপ্লিকেশন এইসব। কালে-কস্মিনে এক দুটো বিয়ে বাড়ির নিমন্ত্রনের চিঠি। শুধু আমার কাছে কেন, কারোর কাছেই মনে হয় আসেনা। জীবন থেকে ক্রিম রঙা পোস্টকার্ড আর নীল রঙা ইনল্যান্ড কাগজ হারিয়ে গেছে। রঙিন ফুল ছাপ রাইটিং প্যাড আর লাল হৃদয়-চিহ্ন আঁকা রংচঙে খাম কিনিনি বহুদিন। আমিও কাউকে চিঠি লিখিনা। আমাকেও কেউ চিঠি লেখে না।

কিন্তু বেশ অনেকদিন আগে, যখন এস টিডি ছিল না, মোবাইল ফোন ছিল না, ই-মেল ছিল না, তখন তো এই পোস্টকার্ড আর ইনল্যান্ড-ই ছিল ভরসা। কোলিয়ারিতে চাকরি করা আমার অবিবাহিত বড়মামা নিয়ম করে একটা পোস্টকার্ডে চিঠি লিখতেন প্রতি সপ্তাহে। নিয়মিত সবার খোঁজখবর রাখার জন্য এটাই ছিল তাঁর প্রধাণ যোগাযোগের মাধ্যম। মাঝে মাঝে সেই পোস্টকার্ডের পেছন দিকে কালো কালিতে আঁকা থাকত কোন স্কেচ- চিঠির সাথে উপরি পাওনা। বছরে দু'বার- নববর্ষে আর পুজোর পরে, আমি বসতাম ঠাকুমার সাথে, একতাড়া পোস্টকার্ড আর ইনল্যান্ড নিয়ে। ঠাকুমা চিঠির বয়ান বলে যেতেন, আমি গোটা গোটা অক্ষরে লিখে যেতাম। চিঠি যেত কাছে-দূরে - হিলি, মালদা, শ্যামনগর, কল্যাণী, ভদ্রেশ্বর... সব চিঠির বয়ান প্রায় একই , শুধু সম্বোধনের নামগুলি পালটে যেত। "স্নেহের ভানু ও রেবা...", "স্নেহের পল্টু ও রিনা...", "স্নেহের রুবি ও সুরেন..." - যাঁদেরকে লেখা হত এইসব চিঠি, তাঁদের বেশিরভাগকেই আমি কোন দিন চোখে দেখিনি, বাবার পিসতুতো ভাই, বা মাসতুতো দিদি, এইরকম সব সম্পর্ক। কিন্তু আমি তাঁদের সবার নাম, ঠিকানা, ছেলেমেয়েদের নাম- সব জানতাম। চিঠি লিখে লিখে আর মাঝে মধ্যে পুরোনো অ্যালবামের ঝাপসা হয়ে যাওয়া সাদা-কালো ছবির মধ্যে দিয়েই তাঁরা হয়ে উঠেছিলেন আত্মার আত্মীয়।  শুভকাজে শুভেচ্ছা জানিয়েছি, শোকে শোকজ্ঞাপন করেছি। ঠাকুমার বকলমে সেই অদেখা মানুষগুলির সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে ছিলাম বহু বছর।

তাই বলে কি শুধুই বকলমে লিখতাম? কখনই না। নববর্ষ আর বিজয়ার চিঠি নিজের নামে লিখে গুরুজনদের পাঠিয়েছি। অসুখ হয়ে স্কুলে না যেতে পারলে ক্লাসের প্রিয় বন্ধুদের পাঠিয়েছি লম্বা চিঠি। সে চিঠির উত্তরে এসেছে আরো লম্বা চিঠি। এই চিঠিগুলি দেওয়া নেওয়া করত আমার প্রতিবেশী স্কুলের বন্ধুটি। হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরে রুমমেটদের চিঠি লিখেছি। প্রেমে পড়ে চিঠি লিখেছি পাতার পর পাতা, কাগজ রঙিন হোক বা সাদা।

এখন লিখি ই-মেল। বড্ড কেজো, বেশিরভাগ সময়েই তথ্য আদান প্রদান করার কাজে ব্যবহার করা এক যোগাযোগ ব্যবস্থা। মাউসের এক ক্লিকে ই-মেল পৌঁছে যাচ্ছে পৃথিবীর যেকোন কোণে। উত্তর এসে যাচ্ছে হয়তবা কয়েক মূহুর্তের মধ্যেই।  বক্তব্যের আয়তন অনুযায়ী ইনল্যান্ড না পোস্টকার্ড বাছাই করতে হয়না, ফাউন্টেন পেন এ সুলেখা কালি ভরতে হয়না, ভুল হয়ে গেলে ঘিচিমিচি করে কাটতে হয় না। লিখতে হয়না অজানা শহরের চেনা ঠিকানা।  বেশিরভাগ সময়েই চিঠির শুরুতে কোন সম্বোধন থাকে না। শেষে লেখা থাকেনা -'ইতি...'।

হারিয়ে গেছে অপেক্ষা । চিঠি লেখার, চিঠি পাওয়ার, চিঠি পড়ার, চিঠিকে অনুভব করার...বালিশের নিচে ই-মেল নিয়ে ঘুমানো যায় না।

এলোমেলো চিঠি



এলোমেলো চিঠি


মে ২৭, ২০১২ |

প্রিয় জয়ীতা,

আজ খুব ভোরে ঘুম ভেঙে গেল। বিছানায় উঠে বসতেই প্রচন্ড ঘামছিলাম। স্বপ্নে এলোমেলো কিছু একটা দেখেছি বেশ বুঝতে পারলেও, কি দেখেছি তা ঠিক মনে করতে পারছি না। তবে তাতে তোমার উপস্থিতিটা ঠিক টের পাচ্ছি।
এলোমেলো কেন বললাম?
আমার সব কিছুইতো এমনই। জোরকরে মেলানো যায়ন।

পশ্চিমের জানালা দিয়ে আলো এসে মসৃন মেঝেকে আরো উজ্বল করেছে। আর তার উপর কৃষ্ণচুড়ার দূর্বল ডাল গুলোর ছায়ার দুলুনীটা অদ্ভূত দেখাচ্ছে। প্রতিটা সকাল সত্যিই অনেক সুন্দর হয়ে আসে আমাদের জীবনে। যদিু অনেকে তা মানতে পারেনা। হয়তোবা মানতে চায়না। কিংবা এই না মানার বিপরীতে কোন অভিমান বা ভালোলাগা কাজ করতে পারে।
ধুর…… কি সব বক্ছি বলতো !! আমার মাথাটা না, একদম গেছে।
গতকাল রবিনদের বাড়ির পাশদিয়ে যাবার পথে তাদেও বাতাবিলেবু গাছে জোড়া-শালিক চোখে পড়ল। থমকে দাড়িয়ে মনোযোগ দিতেই, জোড়া উধাও।
ভাবলাম ঠিকইতো আছে। অন্যের বেলায় যাইহোক, অন্তত আমার জীবনে জোড়াশালিক দেখিয়ে সুখ আনাটা আম্ভবই বটে।
ছেলেমানুষি..?
হে…..মাঝেমাঝে করি। তবে লোকচক্ষুর আড়ালে। বিশেষ করে তোমার সেখানো গুলি। এইযে জোড়াশালিকের সুখ….!!!

আমার জানালায়…..দুটো কোউটোয় রাখা খাবার আর পানি, দিনের শেষে এখন একি রকম থেকে যায়। চড়ূই পাখি গুলো এখন আর আসেনা….!!! তবু প্রতিটি দিনের শুরুতে আমি নুতন করে কোউটো গুলো সাজিয়ে দেই। তাদের ফেরার আশাটাকে বাঁচিয়ে রাখি।
যাইহোক, এবার তোমার কথা বল।
পমি কি এখনো অপরিচিত কাউকে দেখলে তেড়ে আসে…?
কটা জমলো, নইল-পলিশের কোউটো…?
নিশঃপ্রাণ গন্ধরাজ ফুলের গাছটার কি হাল, প্রাণ সঞ্চার করতে পেরেছ…?
আর….টেবিল-ল্যাম্প এর সেই অলো-আধারীর খেলাটা…….কি, এখনো চলে…?

লিখবেনা জানি। তাই উত্তর গুলো বলছি, মিলিয়ে নিয়ো।
হ্যা, পমি এখনো অপরিচিত কাউকে দেখলে তেড়ে আসে।
নিয়মের খুবএকটা হেরফের না হলে, এখন পর্যন্ত নেইল-পলিশের কোউটোর সংখ্যা ১৩৩।
না, গন্ধরাজ ফুলের গাছটাতে এখনো প্রাণ ফেরেনি।
আর……টেবিল-ল্যাম্প এর সেই অলো-আধারীর খেলাটা, তুমি কখনোই ছাড়তে পারবেনা।

আজ এইটুকুই। এর চেয়ে বেশী তোমাকে আর বিরক্ত করতে ইচ্ছে করছে না।
ভালো থেকো, অনেক অনেক ভালো।


ইতি………..

পুনশ্চ : পাশের বাড়ির আংকেল এখনো অনেক রাত করে ঘরে ফিরে আন্টির সাথে ঝগড়া করে। দিপা নিয়ম করে এখেনো তার প্রিয় গোলাপের গাছটাকে দিনে দুবার চায়ের লিকার খাওয়ায়। সোহেল ভাই আর সায়মা আপুর সম্পর্কটা এখনো টিকে আছে। পদ্মপুকুর পারের বৃদ্ধ আমগাছটার গায়ে লিখা তোমার আর আমার নামটা মুছে যায়নি জানি। শুধু…আমাদের মাঝখানটার দূরত্ব আর কতখানি বাড়লো তা ঠিক বলতে পারছিনা।

নীলিমা তোমার চোখে জল



নীলিমা তোমার চোখে জল

মে ২৭, ২০১২ |

             নীলিমা তোমার চোখে জল!
       আমার শিরায় শিরায়
মিশে আছো তুমি চিরন্তন।

                  নীলিমা তোমার চোখে জল!
            রাতের আকাশ মেঘে ভরে যায়
      ওঠে না কোন জোছনা
   তোমার জন্য করতে পারি
নতুন দিনের সূচনা।

       আধাঁর রাতে চলতে পারি
         ঝড়ের বেগে উরতে পারি
           হতে পারি একমুঠো জোছনা।


      নীলিমা তোমার চোখে জল!
       কে আগুন ধরিয়ে দিলো
         শীতল কোমল মনে?
            অগ্নিগিরি ঝলসে ওঠে
                 তোমার চোখের জলে।

পাহাড় সরিয়ে করবো সমুদ্র
    সমুদ্র সরিয়ে ঘন বন-জঙ্গল
       কে করবে তোমার অমঙ্গল!
         নীলিমা তোমার চোখে জল!
           অগ্নিগিরি হয়ে ওঠেছে
             তোমার কিছু ব্যথা
               অ্যান্টাক`টিকা হতে পারি
            বলছো না কেন কথা?
        নীলিমা তোমার চোখে জল!
     অন্ধকারের গভীরতা হবে আর কত
   তোমার জন্য ছিনিয়ে আনতে পারি
রক্তিম লাল সূয`।

                 নীলিমা তোমার চোখে জল!
            আলোর বেগে চলতে পারি
         আমার গতি পথ
     কি এমন ঝড়ে তোমার
 পড়ছে চোখের জল?
     

       নীলিমা তোমার চোখে জল!
    নীলিমা তোমার চোখে জল!
 নীলিমা তোমার চোখে জল!



______________________________________________________________________________________

রিমঝিম ( RIMZHEM )



রিমঝিম
রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি এলো,
আকাশ জুড়ে মেঘের মাতন,
পাতায় পাতায় জলের নাচন,
চমকে হাসে চমক আলো।


আহা মজা, কি যে মজা
স্কুল নেই,নেই যে বাড়ীর কাজ,
আনন্দেরই ধুম লেগেছে,
সারা পাড়া গায়ঁ,
আজকে দিনে,কেবল মনে মনে,
মেঘে মেঘে ভেসে ভেসে চলা।


বৃষ্টি এলো,ঘাসে ঘাসে, ঘাসের ডগায়,
পুকুর জলে বৃষ্টি পড়ে
টুপুর,টাপুর,গানের সুরে
জলের নুপুর বাজায় পায়েল পায়।


ব্যাঙ গুলো ঐ ডাকছে জলে,
ঘ্যাগর, ঘ্যাগর , ঘ্যাগর ঘ্যাংঙ
হাসের ছানা উঠুন জুড়ে,
কাদাঁজলে করছে খেলা,
ডাকছে কেবল প্যাক প্যাক,
পিছলে পড়ে ভাঙলো বুঝি তার ঠ্যাংঙ,
বিড়াল ছানা ঘুমায় দেখ আরাম করে,
উনুন তাপে মুখটি গুজে।


জল জঙ্গলে জল,
থৈ থৈ একাকার,
সাধ্য কার আজ যায় যে ঘরের বার,
ছেলেমেয়ে দাওয়ায় এসে
খেলছে মিলে এক্কা দোক্কা চার।।