[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১১

মাধবীলতার পতিতা জীবন

মাধবীলতার পতিতা জীবন
অক্টোবর ১৯, ২০১০

মাধবী লতার এখন ব্যস্ত সময়,
 সস্তা মেকাপ আর আটোঁ পোশাকে রুপান্তরের পালা।
 সন্ধ্যাক্ষনটা যে কেনো এতো ছোট হয়…
 ঈশ্বরের প্রতি মাধবীর বিড়বিড়ে অসন্তোষ।

সূর্যাস্ত মুহুর্তের আজান বা উলুঁ ধ্বনি,
 কোনোটাই তার মাঝে আবেদন আনতে পারেনা।
 একটু পরই পথে নামবে মাধবী লতা।
 আরো অনেকেই নামবে,নামে বা বেনামে।
 আপাত ভদ্র নগরীর একটি অভিজাত কোন,
 তখন থেকে সারারাত তার আভিজাত্য হারাতে থাকবে।

ঈশ্বর সৃষ্ট আদিম জৈব তাড়না,
 তাঁরই বিরুদ্ধ পাপের ভাগাড় পূর্ণ করবে।
 মাধবী লতারা শুধূ পাথেয় হবে তাতে।

প্রশাসক,প্রকাশক আর প্রশিক্ষক থেকে শুরু করে,
 ছাত্র হুজুর বা নেহায়েত দিন মজুর,
 কেউ বাদ যাবেনা এই রিপু নাস্তি যাত্রা হতে।
 পাপের অভিযাত্রায় ধর্ম-বর্ণের অভূত সাম্য,
 আগামীর মহাত্মাদের পাপী হতে উৎসাহ জোগাবে।

মাধবী লতার অকাল পতিত যৌবন কিংবা,
 সস্তা সাজে সিনড্রেলা হবার ব্যর্থ প্রয়াস,
 কোনোটাই লোলুপ দৃষ্টিগুলোকে কাছে টানার যোগ্য নয়।
 তবু তারা আসে,তাদের আসতেই হয়।
 ঘরে সুন্দরী বউ রেখে,
 মাধবী লতার বয়সী কন্যা বোন বা,
 কেউ কেউ নাতনীর সাথে দু’দন্ড কথা বলে আসে।

শুরু হয় দর কষাকষি।
 মাছ বাজারের মতই ভীড় জমতে শুরু করে।
 শুধূ থাকে না হল্লা আর মাছির ভন ভন।
 অঙ্গ সৌষ্ঠব,কন্ঠের তারল্য ও-
 দালালের ধূর্ততা আর অপ্রাসঙ্গিক তাড়ায়,
 অপাত্রে উত্তাপ দমনে পাগল হয়ে উঠে পঙ্গপালের দল।

মাধবী লতারা যেনো এক একটি অগ্নি গোলক।
 নির্বিকার চিত্তে মোহিত কীট গুলোকে পুড়িয়ে মারে।
 নৃত্য ক্লান্ত নর্তকের অবসাদ শুরু হবার আগেই,
 নর্তকী তার প্রসাদ আদায় করে নেয়।
 খুলে ফেলা মুখোশটা ঠিক ঠাক করে নিয়ে,
 ঠিকানা মুখী হয় বানচোঁত বীর্যহারার দল।

মাধবী লতারা শুধূ দু’ দন্ড জিরিয়ে নেয়।
 এক খন্ড নেকড়া আর দু’ মিনিট সময়,
 সদ্য সিক্ত স্মৃতি মুছে ফেলতে তার এই যথেষ্ট।

কারন,তাকে আরো খদ্দের ধরতে হবে।
 রাত পোহাবার আগেই আগামীকালের স্বপ্ন বাচাঁতে হবে।
 রুটি রুজি আর মাথা গোজার ঠাঁইয়ের জন্য,
 আরো বেশ ক’বার পতিত হবে তার দেহের ভারটুকু।
 বহুগামীদের গমনে গমনে ক্রমে,
 আগামীকাল নিশ্চিত হবে মাধবী লতার।

কে আছে জেগে


 কে আছে জেগে
নভেম্বর ১৮, ২০১১

কে আছে জেগে নিশুতি রাতে,
 দেখছে আকাশ উদাস মনে।
 মেঘের ফাকে চাঁদের আলো,
 রূপ ছড়ায় দূর কাশবনে।


দখিন দুয়ারে জ্বলছে পিদিম,
 নিভু নিভু করে হাওয়ার তোড়ে।
 ঘুমন্ত নগরীর স্বপ্নগুলো,
 মেঘের ভেলায় যাচ্ছে উড়ে।


কে আছে জেগে মধ্য রাতে,
 খোলা জানালায় নিঃস্ব হয়ে।
 বৃক্ষলতায় নীরবতা ছাওয়া,
 কলকল স্রোত যাচ্ছে বয়ে।

মিটিমিটি হাসে তারকারাজি,
 জোনাক জ্বলে স্নিগ্ধ প্রভায়।
 

থেমে থেম বাঁশীঁর আর্তনাদে,
 কে হানে আঘাত নীরবতায়।

কে আছে জেগে নিঝুম রাতে,
 স্মৃতির পাতা হাতড়ে বেড়ায়।
 স্বপ্নহারা অশ্রু নিয়ে,
 কে আছে জেগে আলো বা ছায়ায়।


কে আছে জেগে শূন্য শিয়রে,
 প্রতীক্ষারই নীল লগনে।
 আশার ঘরে প্রতিমা গড়ে,
 কে আছে জেগে নিজ ভূবনে।


এই কবিতার প্রতিউত্তর ”আমি জেগে ছিলাম” পোষ্ট দিব।

আমি জেগে ছিলাম ...


আমি জেগে ছিলাম নভেম্বর ১৯, ২০১০

রাত্রি যখন তৃতীয় প্রহর,
 হারিয়ে আলো আঁধার মেঘে।
 আলোর পিছু ছুটছে আঁধার,
 তখনো আমি ছিলাম জেগে।

তেতুঁল বনের আঁধার ছায়ায়,
 মিলিয়ে যখন শেষ নিশাচর।
 তখনো আমি জেগেই ছিলাম,
 চাঁদের যখন মুক্ত প্রহর।

জোনাক জ্বলা সন্ধ্যা যখন,
 গড়িয়ে নিঝুম রাত্রি গভীর।
 ঠিক তখনো জেগেই আমি,
 চাঁদ বিলাসীর জন্য অধীর।

চাঁদের ছায়ায় বিলের জলে,
 লাল পদ্মের রুপ রুপান্তর।
 জেগে ছিলাম বিলের ই পাড়ে,
 যুগ হতে যেনো যুগ যুগান্তর।

লালিমা ছোয়া শেষ রজনীর,
 বিষাদে যখন দিগন্ত লাল।
 তখনো আমি জেগে ই ছিলাম,
 উড়িয়ে হাওয়ায় স্বপ্ন পাল।

তোমারি মত আমিও রাতে,
 জেগে ই ছিলাম একলা ঘরে।
 যোজন দূরের জীবন পথে ও,
 রাত্রি মোদের মিলিত করে।

প্রয়োজন্ -৩

প্রয়োজন্ -৩
      ডিসেম্বর ০১, ২০১১
সময় থমকে গেছে,কিংবা যাচ্ছে বা যাবে।
 আমরাও ইতিমধ্যে নিজেদের বিকলাঙ্গ ভাবতে শুরু করেছি,
 অথবা অচিরেই ভাবতে পছন্দ করব।
 আমাদের বৃদ্ধরা আটকে গেছে,
 নিদারুন হতাশার নীল জালে।
 বৃদ্ধারা অতীত রোমন্থন আর অন্ধ আনুগত্যে।
 পুরুষেরা বন্দি হয়ে আছে,
 লোভ্,লিপ্সা,রিপু,আর তাড়নার নোংরা খাঁচায়্।
 নারীরা শয্যাদান্,গৃহ সজ্জা আর কুৎসায়্।
 যুবকেরা বিদ্যা,প্রেম্,নেশা আর উত্তর আধুনিকতার বেড়াজালে।
 যুবতীরা ভ্রমর বিলাস আর মুঠোফোন বৃত্তে।
 কিশোরেরা গাছাড়া মিথ্যে অহমিকায়্ ডুবে।
 কিশোরীরা ছান্দসিক নিতম্ব আর উন্নত বক্ষ ভাবনায়্।
 বালকেরা কল্পনার স্পাইডার ম্যান বন্দনায়্।
 বালিকারা বিদেশী সুর আর নৃত্য ধারায়্।
 শিশুরা পড়ে আছে অবাক বিড়ম্বনায়্।
 
 শুধু বেঁচে ও জেগে আছে,
 কবি নামীয় কিছু অশুদ্ধ প্রাণ্।
 যারা কিনা বিকলাঙ্গ সত্বাটাকে,
 খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ত্যাক্ত করে।
 অযথাই জাগিয়ে তোলার ব্যার্থ চেষ্টা করে।
 কাগজ্,কলম আর বেকার সময় ক্ষেপনের সমন্বয়ে,
 নিজেদের অশুদ্ধ সত্বাটা তুলে ধরে।
 
 তাই বলি সময় থমকে গেছে এখন এখানে।
 যেমন থমকে আছে নষ্ট ঘড়ির কাটা।
 তারো আগে থমকে গেছি আমি-আমরা বা তুমি-তোমরা।
 অথবা থমকে গেছে ষোলো কোটি বিবেক্।
 একাত্তর থেকে এগারো,চল্লিশ বছরে,
 বেড়েছে কেবল আমাদের হাত্,পা বয়স আর প্রজনন ক্ষমতা।
 বাদ বাকী থমকে আছে আত্বা বা বিবেক্।
 
 অশুদ্ধজন কবিদের মতে তাই,
 আরো একটি যুদ্ধ বা সংগ্রাম প্রয়োজন্।
 প্রয়োজন আরো একটি সাতচল্লিশ্,বায়ান্ন বা একাত্তর্।
 প্রয়োজন একটি একুশ্,ছাব্বিশ বা ষোলো।
 
 সেই সাথে প্রয়োজন আরো একটি বিপ্লব বা জাগরন্।
 কিংবা সহজ ভাষায় একটি বিস্ফোরন।
 
 থমকে থাকা সময় বা বিকলাঙ্গ সত্বা।
 বাধার দ্বি-মুখী বিন্ধ্যাচল ভাঙতে,
 আরো কিছু বাধ ভাঙা কবিতার প্রয়োজন্।
 
 লিখনকাল রাত ১২:১২, ০৪/০৭/২০১১

আরেকটি ডিসেম্বরের প্রথম প্রভাতে

আরেকটি ডিসেম্বরের প্রথম প্রভাতে
ডিসেম্বর ০১, ২০১১ 


একটি রক্তজবা হাতে নিয়ে মা বললেন, আজ বৃষ্টি হবে। ভিজে যাবে
সবটুকু সবুজ জমিন। ঘেরুয়া নদীর জল থেকে রক্তবাষ্প উড়ে দেবে
জানান, এই মাটিতে আততায়ী রাত নেমেছিল। হায়েনা পিশাচদের
উল্লাস কাঁপিয়েছিল এই আকাশ। সূর্যের পরিণত ঘর। মানুষের বিত্ত
বিবর। আর লুকিয়ে থাকার সাঁকো খুঁজে শরণার্থী তরুণ-তরুণী
গিয়েছিল উত্তরের বাঁকে। অগ্রজ পূর্বসূরীর হাতের লাঠি গর্জে উঠেছিল
‘থামো ঝড়, থামো বজ্র’ এমন আওয়াজে।

সেই প্রভাতে আমি ছিলাম মায়ের বাম হাত ধরা অবুঝ বালক। বালিকা
বোনটি কেঁদেছিল,’বাবা ,বাবা ‘-বলে।

বাবা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। একটি গ্রেনেড চার্জ করতে গিয়ে উড়ে গিয়েছিল
তার ডান হাত। তাই নিজ ডানহাতটিকে ভয়ে লুকিয়ে রাখতেন
আমার মা। আর বলতেন, দেখিস- আমার হাতটা যেন কেউ না দেখে।

তার ভয় ছিল খুব। বাবার হারানো ডানহাতটিকে তিনি মনে করতেন
নিজের হাত। বাবার চোখগুলোকে মনে করতেন নিজের চোখ।

সেই প্রভাতে আমার মায়ের নিজস্ব কোনো দৃষ্টি ছিল না। বৃষ্টি আসবে বলে
সকল মুক্তিযোদ্ধার দৃষ্টি দিয়ে তিনি তাকিয়েছিলেন আকাশের দিকে।

আর বলেছিলেন, বৃষ্টি আসুক। তবু মুছে যাবে না এই বাংলা থেকে
থোকা থোকা রক্তগোলাপের দাগ।