বর্ষা বাদল শরত ফুড়ালো সবুজ ধানশীষে আঁশ বুনে; তামাটে রং ধরছে এই হেমন্তে। তবু ফিরলো না সে জয়ন্ত টিলার সবুজ বুননে; আসছে ধেয়ে হিমেল হাওয়া। কবিতা মাখা আলো হয়তো ছুঁয়ে ছিল সে দূর্বাঘাস ছুঁয়ে লুকিয়ে থাকে লজ্জাবতী; তাকে নাইবা ছুঁইলাম হেমন্তের এই অবেলায়।
এসেছো সূর্যের দেশ হতে কঠিন বহ্নিতাপ পেড়িয়ে, আমাকে দেখেছো চাঁদের দেশে হাজার জঞ্জাল মাড়িয়ে নব কুসমিত প্রস্ফুটিত পুষ্পের ভিড়ে , যার কুসুমে লাগেনি কীটের কোন ছোঁয়া । আমি ছিলাম নব বর্ষার সজল ধারায় ধোয়া। ছিলাম কাঠ গোলাপের মত পবিত্র, ভেবেছিলে আমার উপর করবে একছত্র আধিপত্য । কখনো ভাবোনি আমিও হতে পারি ফড়িং, যে থাকে শরতের অপেক্ষায় ডানা মেলে উড়বে অজানায় । ভাবোনি আমি যে হতে চাই, আলোর পানে ছোটা রঙ্গিন প্রজাপতি। ধরণীর সব ধূসর বস্তুকে রাঙিয়ে দিতে চাই এই যে আমার মতি। আমি যে হতে চাই, বৃষ্টির পরে মেঘলা আকাশে সাত রঙ রঙধনু । যে রয়ে যায় খুশির খেয়ালের মতই অধরা এরপরেও রাঙিয়ে যায় পৃথিবীর পরে বাস্তবতার কঠিন আঘাতে পরিবর্তিত মানব মনের কোন এক ক্ষুদ্র কনা অণু। কখনো ভাবোনি আমি যে অতি ক্ষুদ্র পতঙ্গ জোনাকির ন্যায় বুকে ধারন করি আলো, টিমটিমে,তবু উজ্জ্বল আলোকছটা তাই অবিরাম জ্বলে থাকি না। প্রয়োজনে অন্ধকারে জ্বেলে যাই আলোর সবটা আমি থাকি অন্ধকারে আলো হয়ে, তাই আলোতে চিনতে পারোনি। ফিরে চলে গেলে তীব্র আলোর দেশে যেথায় উৎপত্তি ও গন্তব্য একত্রে এসে মেশে, অবশেষে আমি রয়ে গেলাম সেই চেনা চাঁদের দেশে, স্নিগ্ধ কোমল আলোক বেশে ।
এসো,এসো আমার কাছে-একটু সময় নাও, শান্ত হয়ে বোস , দম ফেলবার সময়টুকু নাও এবার ভাল করে বলে যাও – ভালবাসি। আদর করে বলে যাও – ভালবাসি। বারবার ভাল করে বলে যাও – ভালবাসি। দিন পুরোবার আগ পর্যন্ত বলে যাও – ভালবাসি। বলতে থাক অজস্রবার - যতক্ষণ না আমার, এ দেহে কামনার আঘাত পড়ে- বাসনার পাত্রগুলো যায় দুমড়ে মুচড়ে, তোমার স্বপ্ন সপ্তমে চড়ে ! আমার আবেগ,সুখগুলো ওঠে আলোড়ন করে ততক্ষণ বলতে থাক-ভালবাসি,ভালবাসি-ভালবাসি !!
বলে যাও – ভালবাসি, যতক্ষণ না বলতে হয় – আজ আসি। বল উদার মনে, তোমার বিহনে- আমি নেই আমাতে। বল এই ক্ষণে ঝড়-বন্যায়, কী তপ্ত খরায় - সোনালী দিনে আর রাত্রির ছায়ায়, সব কাজের ভীড়ে – একান্ত অবসরে জ্ঞানে – অজ্ঞানে অনিদ্রার ঘোরে বল বল চিৎকার করে, ভালবাসি- তোমায় খু-উ-ব ভালবাসি।
সবাইকে বলে যাও,“ভালবাসি”- এ শব্দটা আজ ও আগামীর। যত বাঁশী বাজে-সব যে একই সুর সাঁধে। বল – আমি চাই শুধু তোমাকে , সব কিছু বাদে। আর সবকিছু চরম ম্লান মূঢ় অর্বাচীন একেবারেই মূল্যহীন।
সেই শব্দ বারবার উচ্চারণ করো। আমার কানে মধু ঢালো,বেদনা দূর করো ; আর শুধু বলে যাও- ভালবাসি। তোমায় নিয়ে স্বপ্ন রাশি রাশি! আমায় মুগ্ধ করো আর বলে যাও- ভালবাসি! আমায় ভরিয়ে দাও,কৃপা করো, বলে যাও- ভালবাসি!!
কত রাত পার হয়েছে বিনিদ্র ! কিছু লিখব বলে, কবিতার খাতায় বারেবারে কলমের আচড়, কাগজে অর্থহীন আকিবুকি ; নির্মম উত্তেজনার খেলা, অতঃপর একরাশ গ্লানি, ব্যর্থতায় চুল ছেড়ার দশা ; টেনে হিচড়ে বের করার চেষ্টা নিজের ঠুনকো আবেগের থলি শুধু একটি কবিতা লিখবো বলে । হয়নি কিছুই পাওয়া । আশা কফিনে বারেবারে হয়েছে পেরেক ঠোকা । জানে শুধু অর্ন্তযামী ; বিফল বিরহে দু:সহ বেদনা দহনে, পুড়ে পুড়ে খাক অন্তর আত্মা আমার । তবু কবিতার পাই নি কো দেখা । কি দেইনি তোমায় কবিতা ?? বলতে পারো ?? আমার সত্যিকারের প্রেম, নিভৃত ভালবাসা, উজাড় করে দিয়েছি শুধু তোমায় দেখবো বলে । আমার জীবন যৌবন, সব টুকু তোমাতে করেছি সমর্পন তবু নিষ্ঠুর তুমি দাওনি সাড়া ! দিয়েছ শুধু একবুক কষ্ট, নিরাশার আধার গ্রাস করেছে আমায় নিস্তব্ধ সন্ধ্যার মত । ভালবাসি তোমায় এখনো আগেরি মতন, তবে এখন আমি মৃতদের দলে । তোমায় আর চাই না দেখতে তাই, নিজের মতন করে । কবিতার সুবাস আর জাগায় না আমার হারানো কামনা দীপ্তি । গানের সুর এখন অর্থহীন কথার বন্যা । তুমি আর অনন্যা নও হে কবিতা ।
আজো আমি তাকিয়ে থাকি অধরা সেই চাঁদের পানে, আজো খুঁজি তোমায় আমি দীঘির পাড়ে সিঁড়ির ধাপে। পূর্নিমাও যে আঁধার ছিলো সেদিন তোমার মুখের কাছে, সেই তো আমি পাগল হলাম আজও পাগল তোমার তরে। দীঘি আছে, সিঁড়ি আছে চাঁদের আলো যায় ছড়িয়ে, তুমিই শুধু নাই হেথা আজ হারিয়ে গেছো কোন সুদূরে। কষ্টে বোনা কথার মালা ঢেউ তুলে যায় শান্ত জলে, আসবে কি আর এই কুটীরে আসবে কি মোর মনের ঘরে………….!!!