[url=http://www.gulfup.com/?AomQ4i][img]http://www.gulfup.com/G.png[/img][/url]

রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১২

মাধুকরী-২

মাধুকরী-২


নিত্যদিন কাজের অকাজের নানা কথায় যে কথামালা আমরা গেঁথে চলেছি অবরত সেই কথায় কথায় কথার পাহার জমে ওঠে। প্রবহমান কথার স্রোতে কত পুরানো কথাই হারিয়ে যায় নতুন কথার ভিড়ে। যে পুরানো কথাটা এক সময় মহার্ঘ মনে হত আজ তা স্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে মূল্যহীন হয়ে। যে কথা শোনার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম একদিন আজ হয়ত তা গুরুত্বহীন। প্রবহমান সময়ের স্রোতে অনেক ডন্ড-পল অতিক্রম করে এসেছি, পেছন ফিরে চাইবার অবকাশ হয়নি, কিন্তু তারা আমায় একেবারে পরিত্যাগ করে নি, সমস্তটাই আমার বয়েসের অংকে যোগ হয়েছে। আজ মেঘলা আকাশের গুমোট আবহাওয়ায় আর ততধিক গুমোট সামাজিক আবহে কখনো সেই পুরোনো দিনের কোন বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে স্মৃতি পেছনটানে। একে একে জলছবি গুলো চলচ্ছবি হয়ে ওঠে। এই যেমন গত রবিবার গেছিলাম কলকাতার উপকন্ঠের মফস্বলে আমদের পুরোনো বাড়ীতে। আমার জন্ম ও বাল্যকাল কলকাতায় কাটলেও স্কুল জীবনের একটা বড় অংশই কেটেছে সেখানে। সেদিন স্টেশন থেকে নেমেই দেখি পরিমল, ক্লাস এইটেই ও স্কুলকে ছুটি দিয়ে দিয়েছিল, একটা টেবিলে অনেক পেন, ও পেন বিক্রি করছে। আমায় খেয়াল করে নি বা করলেও কথা বলতে হয়ত ইতস্ততঃ করছিল, আমিই এগিয়ে গিয়ে সামনে দাড়ালাম। এক গাল হেসে হাতটা চেপে ধরল। মাটির ভাঁড়ে চা এনে খাওয়াল, তারপর এ কথা সে কথা। কিন্তু কথা সে রকম জমছিল না, খেই হারিয়ে যাচ্ছিল। আসলে মাঝখানের সময়ে আমাদের দুজনের জগৎ এতটাই আলাদা হয়ে গেছে যে ফ্রিকোয়েন্সি মিলছিল না। আমরা দূ’জনেই কথা শেষ করতে চাইছিলাম বোধহয়। বললাম, “আসি তাহলে, আজই আবার ফিরে যেতে হবে”। ও বলল, “আসলে আবার দেখা করিস, তুই তো চিনতে পারলি, অনেকে চিনতেই পারে না”। আবার আসব বলে ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি বাড়ীর পথে চললাম। আর চলতে চলতে ছবি গুলো যেন স্পষ্ট হচ্ছিল চোখের সামনে। এই পরিমল আমাদের থেকে বয়সে খানিকটা বড়ই ছিল, আর আমরা ছিলাম ওর গুনমুগ্ধ বন্ধু। ওর থেকেই প্রথম নারী রহস্যের আবছা আভাস পাওয়া। একদিন নিয়ে এল নগ্ন নারীর ছবি। সে কি উন্মাদনা। কত কথা কত প্রশ্ন, পরিমল তখন আমাদের পরম আদরের শিক্ষক, গুরু, তাকে ভুলি কি করে।

কোন মন্তব্য নেই: