আজ তবে পৃথিবী আঁধার করে বৃষ্টি হোক ...
= ওই ... কি করিস?
- ঘাস কাটি ... তুই?
= খাই ...
- গুড ... ঘাস খাওয়া ভাল ...
= আমি তোর মত ঘাস খাই না কি?
- তুই নিজেই তো বললি ...
= তরে আমি ...
- কি?
= ভাগ ...
বিছানা ছেড়ে উঠি, এস-ট্রে টেনে নিয়ে খালি পেটে ধরাই দিনের প্রথম সিগারেট। কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে পৃথিবী। মুখে পানির ঝাপটা দিতেই আপাদমস্তক কেঁপে উঠি, এত গরম পানি, অথচ হাতে তেমনটা লাগছে না। সকাল বেলার কফিটা সাধারণত ভাল হয়না, তবুও এক মগ কফি না খেয়ে বাইরে বের হলে শীতে জমে যাবার সম্ভাবনা প্রবল। কফির পানি বসিয়ে দিয়ে টোস্টারে পাউরুটি দেই দু'পিস।
= এমন করে কফি বানানো কই শিখছিস?
- আমি তো এমন করেই বানাই
= জীবনে কোন কাজ ঠিক মত করতে পারছিলি?
- না তো
= তুই একটা কি?
- উদ বিড়াল ...
= তোরে না বলছি - আহ্লাদ করবিনা সব সময় ...
- হি হি হি
= আবার হাসে ...
- হাসি না, আমার মুখের সেপ'টাই ওই রকম ... হাসি হাসি
কফিতে চুবিয়ে টোষ্ট খাই, আমার ফেভারিট, বিশেষ করে সকাল বেলাতে। জুতোর ফিতা বাঁধা একটা যন্ত্রণাময় ব্যাপার, আর শেভ করা ... তবুও ওই কাজ গুলো করতে হয় প্রতিদিনই।
= হি হি হি ...
- হাসিস কেন?
= তোরে দাড়ি পাইকা যাওয়া বুড়ার মত দেখাইতেছে ...
- তর যন্ত্রণায় ...
= কি?
- ভাগ তুই, শেভ করতে দে।
= যাবনা ...
- না গেলে তোর গালে সেভিং ফোম লাগায় দিব= তুই আমারে ধরতে পারলে তো
গালের একচিলতে কাটা দিয়ে গোলাপি রক্ত বেরিয়ে আসে, এক সময় রক্তটা লাল ছিল। কিন্তু এখন সময় নেই দাঁড়িয়ে থাকার, গালে টিস্যু পেপার চেপে ধরে বেরিয়ে যাই ঘর থেকে।
ট্রেনে বসলেই এমনিতেই ঘুম পায় আমার, তারপরে শীতের সকাল। তবে সৌভাগ্য যে, যাত্রা মাত্র ১৫/২০ মিনিটের, ঘুমিয়ে পরে কোনদিন ষ্টেশন মিস করিনি।
= ঘুমাস না কি?
- না, ডিম পাড়ি ...
= তরে দিয়া যদি সেই কাজটাও হইতো
- আজিব, আমি কি কিছুই পারিনা?
= আমি কি বলছি যে তুই কিছুই পারিস না?
- তাইলে?
= তুই আমার সাথে দুনিয়ার আহ্লাদ করতে পারিস ...... অসহ্য ...
- আচ্ছা ...... তোর সাথে আহ্লাদ না করলে আমি কার সাথে আহ্লাদ করবো
= কেন? তোর ইল্লি বিল্লিদের সাথে করবি ...
- ওদের সাথেও তো আহ্লাদ করি, কিন্তু তোর সাথে যেমন করি ... তেমন তো না ...
= তুই ...
ষ্টেশনে নেমে হাটতে থাকি, ঠাণ্ডায় জমে যেতে থাকে শরীরের অণু পরমাণু। অসার হয়ে আসে হাত। কাঁচের চুড়ির রিনরিনে শব্দে জেগে ওঠে জমে যাওয়া মগজের প্রতিটি নিউরন।
= তুই কাজে যাস কেন?
- কাজ না করলে বিড়ি খাব কেমনে?
= সিগারেট খাওয়া কমাইছিস?
- কমাইছি তো ...
= ছাড়বি কবে?
- মইরা গেলে আর খাব না ...= তুই তাইলে মইরাই যা ...
ইউনিফর্ম পড়ে চেয়ারে বসি, লগইন করি আমার ডেক্সটপে। ৮টা নতুন ইমেইল, সব জাঙ্ক, সুপারভাইজার আর হিউম্যান রিসোর্স থেকে পাঠিয়েছে। ওগুলো পড়ার কোন মানেই হয়না, তবুও খুলে পড়তে হয়। যদি বেতন বাড়ানোর কোন খবর থাকে ...
- হাআআ কর ...
= খাবোনা ... যা ভাগ ...
- আমি তাইলে একা একা খাবো?
= মর তুই ...
- খিদা পাইছে, খাইয়া তারপর মরি?
= তুই এত পিৎলামো করিস কেন?
- পিৎলামো কি?
= তুই যেইগুলা করিস...
- আমি কি করি?
= পিৎলামো
লাঞ্চের পরে ঘুম ধরে খুব। কফি খাই সেজন্য আবারও। কিচেন থেকে হাতে করে কফির মগ আনতে গিয়ে কয়েক ফোটা এসে পড়ে ইউনিফর্মে, দ্রুত ছড়িয়ে যায় সে দাগ, বাসি হয়ে যাওয়া রক্তের দাগের মত দেখায়।
= আমি তোর সুপারভাইজার হইলে তোরে এক্ষুনি স্যাক করতাম ...
- আমি কি করছি?
= কাজ ফেলে ফেইসবুকে কি করিস?
- ছবি দেখি ...
= এই জন্য তোকে বেতন দেয়? আর তোদের না ফেইসবুকে ঢোকা নিষেধ?
- আমারে জীবনে কোন নিষেধ মানতে দেখছিস?
= আ ...হা, কি বীরপুরুষ ...
- অবশ্যই তাই
= মরিস না কেন তুই?
- মইরা গেলে তকে জ্বালাবে কে? B-)= উফফফ ...
কখন যেন Kirryn এসে দাঁড়িয়েছে পাশে ... ছোট্ট খাটো কিউট এই মেয়েটা বড় জ্বালায় আমাকে ...
~ Hay, do you know – today is Friday, and the day is almost over ...
- Yah … I know
~ Then ... what you are doing tonight?
- Nothing …
~ Why don’t you join in the party tonight?
- Wish I could, I have to wash my dirty uniform, look … I messed it up with a cup of coffee
~ You can do it later on ...
- No I can’t, because I have to go to …
~ Your friends house, is it? You told me the same thing last month ...
- Yah .. but it’s true
~ Why you’re avoiding me?
- No .. I’m not
~Yes you are
বাতাসের তীব্রতা এমনই যেন উড়িয়ে নিয়ে যাবে, সাথে ছিপছিপে বৃষ্টি, বাসায় পৌছাতে পৌছাতে জামা কাপড় ভেজা শেষ। কাপড় ছেড়ে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছি।
= তোরে না বলছিলাম ছাতা কিনতে?
- বাজারে ছাতা নাই, চায়না থিকা ছাতা আসা বন্ধ হইয়া গেছে
= উফফফ ...
- আচ্ছা, কালকে কিনবো ...
= তোর কালকে জীবনেও আসবেনা ...
এক মুঠো ভাত আর গরুর মাংসের ঝাল তরকারি নেই প্লেটে, মাইক্রোওয়েভে দিতে যাব ...
= আরও ভাত নে ...
- আমার ওতেই হবে ...
= না হবে না
- খিদা নাই তো বেশী ...
= আমার খিদা আছে ...
- মানে কি?
= আমি খাবো না?
"ভাইয়া আছো? ও ভাইয়া ..." এমি'র অফ লাইন ম্যাসেজ পাই ইয়াহুতে। উত্তর দিতে ইচ্ছে হয়না। ইমেইল এসেছে গোটা পঞ্চাশ। বেশীরভাগ গ্রুপ মেইল, সিলেক্ট এন্ড ডিলিট করি।
- তুই কই রে?
= আছি, কি হইছে?
- কিছুইনা ...
= ভাগ ...
- আজিব, তুই ভাগায় দিলেও আমার যাওয়ার জায়গা নাই
= জানি
- তাইলে ভাগতে বলিস কেন?
= চুপ কর, কাজ করতে দে ...
- আচ্ছা ...
খুব ইচ্ছে করে বারান্দায় চেয়ার পেতে বসি। ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে বারান্দায় পানি জমে গেছে, ঠাণ্ডা হিমাঙ্কের প্রায় কাছাকাছি, এ অবস্থায় চেয়ার পেতে বসা অসম্ভব। ঘরের বাতি নিভিয়ে বিশাল কাঁচের দেয়ালের পাশে গিয়ে বসি। ইলেকট্রিক হিটার আরামদায়ক একটা উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে থাকে সারা ঘরে, আর খুব প্রিয় গানটা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত করে বুকের ভেতরটায়।
- আমি কেউ না, আমি কিছু না ...
= আচ্ছা, তুই এমন করে মন খারাপ করিস কেন?
- জানিস, আমি এক সময় ভালবাসার কারণে কাউকে মরতে দেখলে খুব অবাক হতাম, হাসতাম ও। ভাবতাম -- কি বোকা ওরা, এই কারণে কেউ মরে?
= আর এখন?
- আমাকে মরতে দিসনা কেন তুই?
= তুই মরে গেলে আমিও মরে যাব যে। তুই কোনদিন আমাকে সামনে থেকেও দেখিসনি, ছুঁয়ে দেখা তো দুরের কথা। ভালবেসেছিস দূর থেকেই। কিন্তু তারপর থেকে একটা মুহূর্ত কি আমাকে ছেড়ে বেঁচেছিস তুই? যাকে এমন করে ভালবেসেছিলি, সে কি ছেড়ে গেছে তোকে? তোর বুকের মধ্যে, অনেক গভীরে, যেখান পর্যন্ত পৃথিবীর অন্য কোন অনুভূতি পৌছাতে পারেনা, আমাকে সেখানেই রেখেছিস তুই। তোর সাথে সাথে আমিও বেঁচে থাকবো তোর বুকের মধ্যে, তোর রক্তের সাথে মিশে থাকবো।
- পরী ...
= উমম ...
- কিছু না
= না ... বল
- কিছু না রে
= বল ...
- এমনি ডাকলাম তো ...
= ঘুমাবিনা?
- না, আজকে শুক্রবার, আমার ফ্রাইডে নাইট ...
= তাইলে ক্লাবে যা, নাচানাচি কর ...
- হ্যাঁ ... সেইটা করা যায় ...
= ঠিক আছে, তাইলে যা তুই
- নাহ ... থাক ...
কাঁচ ভাঙ্গা হাসি ছড়িয়ে পরে আমার সমস্ত অস্তিত্বে। আলোড়িত করে আমার সমস্ত সত্তা। কাঁপন তোলে সারা দেহে। মনে হয় - বেঁচে থাকাটা খুব কঠিন কিছু না।
প্রচণ্ড শব্দে বাজ পড়ে কাছেই কোথাও। বিদ্যুতের সুতীব্র আলোর রেখা ভেদ করতে পারেনা কালো মেঘের চাদর। বৃষ্টি আসছে, বৃষ্টি আসছে। আজ তবে পৃথিবী আঁধার করে বৃষ্টি হোক ... ...
~সমাপ্ত~
= এমন করে কফি বানানো কই শিখছিস?
- আমি তো এমন করেই বানাই
= জীবনে কোন কাজ ঠিক মত করতে পারছিলি?
- না তো
= তুই একটা কি?
- উদ বিড়াল ...
= তোরে না বলছি - আহ্লাদ করবিনা সব সময় ...
- হি হি হি
= আবার হাসে ...
- হাসি না, আমার মুখের সেপ'টাই ওই রকম ... হাসি হাসি
কফিতে চুবিয়ে টোষ্ট খাই, আমার ফেভারিট, বিশেষ করে সকাল বেলাতে। জুতোর ফিতা বাঁধা একটা যন্ত্রণাময় ব্যাপার, আর শেভ করা ... তবুও ওই কাজ গুলো করতে হয় প্রতিদিনই।
= হি হি হি ...
- হাসিস কেন?
= তোরে দাড়ি পাইকা যাওয়া বুড়ার মত দেখাইতেছে ...
- তর যন্ত্রণায় ...
= কি?
- ভাগ তুই, শেভ করতে দে।
= যাবনা ...
- না গেলে তোর গালে সেভিং ফোম লাগায় দিব= তুই আমারে ধরতে পারলে তো
গালের একচিলতে কাটা দিয়ে গোলাপি রক্ত বেরিয়ে আসে, এক সময় রক্তটা লাল ছিল। কিন্তু এখন সময় নেই দাঁড়িয়ে থাকার, গালে টিস্যু পেপার চেপে ধরে বেরিয়ে যাই ঘর থেকে।
ট্রেনে বসলেই এমনিতেই ঘুম পায় আমার, তারপরে শীতের সকাল। তবে সৌভাগ্য যে, যাত্রা মাত্র ১৫/২০ মিনিটের, ঘুমিয়ে পরে কোনদিন ষ্টেশন মিস করিনি।
= ঘুমাস না কি?
- না, ডিম পাড়ি ...
= তরে দিয়া যদি সেই কাজটাও হইতো
- আজিব, আমি কি কিছুই পারিনা?
= আমি কি বলছি যে তুই কিছুই পারিস না?
- তাইলে?
= তুই আমার সাথে দুনিয়ার আহ্লাদ করতে পারিস ...... অসহ্য ...
- আচ্ছা ...... তোর সাথে আহ্লাদ না করলে আমি কার সাথে আহ্লাদ করবো
= কেন? তোর ইল্লি বিল্লিদের সাথে করবি ...
- ওদের সাথেও তো আহ্লাদ করি, কিন্তু তোর সাথে যেমন করি ... তেমন তো না ...
= তুই ...
ষ্টেশনে নেমে হাটতে থাকি, ঠাণ্ডায় জমে যেতে থাকে শরীরের অণু পরমাণু। অসার হয়ে আসে হাত। কাঁচের চুড়ির রিনরিনে শব্দে জেগে ওঠে জমে যাওয়া মগজের প্রতিটি নিউরন।
= তুই কাজে যাস কেন?
- কাজ না করলে বিড়ি খাব কেমনে?
= সিগারেট খাওয়া কমাইছিস?
- কমাইছি তো ...
= ছাড়বি কবে?
- মইরা গেলে আর খাব না ...= তুই তাইলে মইরাই যা ...
ইউনিফর্ম পড়ে চেয়ারে বসি, লগইন করি আমার ডেক্সটপে। ৮টা নতুন ইমেইল, সব জাঙ্ক, সুপারভাইজার আর হিউম্যান রিসোর্স থেকে পাঠিয়েছে। ওগুলো পড়ার কোন মানেই হয়না, তবুও খুলে পড়তে হয়। যদি বেতন বাড়ানোর কোন খবর থাকে ...
- হাআআ কর ...
= খাবোনা ... যা ভাগ ...
- আমি তাইলে একা একা খাবো?
= মর তুই ...
- খিদা পাইছে, খাইয়া তারপর মরি?
= তুই এত পিৎলামো করিস কেন?
- পিৎলামো কি?
= তুই যেইগুলা করিস...
- আমি কি করি?
= পিৎলামো
লাঞ্চের পরে ঘুম ধরে খুব। কফি খাই সেজন্য আবারও। কিচেন থেকে হাতে করে কফির মগ আনতে গিয়ে কয়েক ফোটা এসে পড়ে ইউনিফর্মে, দ্রুত ছড়িয়ে যায় সে দাগ, বাসি হয়ে যাওয়া রক্তের দাগের মত দেখায়।
= আমি তোর সুপারভাইজার হইলে তোরে এক্ষুনি স্যাক করতাম ...
- আমি কি করছি?
= কাজ ফেলে ফেইসবুকে কি করিস?
- ছবি দেখি ...
= এই জন্য তোকে বেতন দেয়? আর তোদের না ফেইসবুকে ঢোকা নিষেধ?
- আমারে জীবনে কোন নিষেধ মানতে দেখছিস?
= আ ...হা, কি বীরপুরুষ ...
- অবশ্যই তাই
= মরিস না কেন তুই?
- মইরা গেলে তকে জ্বালাবে কে? B-)= উফফফ ...
কখন যেন Kirryn এসে দাঁড়িয়েছে পাশে ... ছোট্ট খাটো কিউট এই মেয়েটা বড় জ্বালায় আমাকে ...
~ Hay, do you know – today is Friday, and the day is almost over ...
- Yah … I know
~ Then ... what you are doing tonight?
- Nothing …
~ Why don’t you join in the party tonight?
- Wish I could, I have to wash my dirty uniform, look … I messed it up with a cup of coffee
~ You can do it later on ...
- No I can’t, because I have to go to …
~ Your friends house, is it? You told me the same thing last month ...
- Yah .. but it’s true
~ Why you’re avoiding me?
- No .. I’m not
~Yes you are
বাতাসের তীব্রতা এমনই যেন উড়িয়ে নিয়ে যাবে, সাথে ছিপছিপে বৃষ্টি, বাসায় পৌছাতে পৌছাতে জামা কাপড় ভেজা শেষ। কাপড় ছেড়ে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছি।
= তোরে না বলছিলাম ছাতা কিনতে?
- বাজারে ছাতা নাই, চায়না থিকা ছাতা আসা বন্ধ হইয়া গেছে
= উফফফ ...
- আচ্ছা, কালকে কিনবো ...
= তোর কালকে জীবনেও আসবেনা ...
এক মুঠো ভাত আর গরুর মাংসের ঝাল তরকারি নেই প্লেটে, মাইক্রোওয়েভে দিতে যাব ...
= আরও ভাত নে ...
- আমার ওতেই হবে ...
= না হবে না
- খিদা নাই তো বেশী ...
= আমার খিদা আছে ...
- মানে কি?
= আমি খাবো না?
"ভাইয়া আছো? ও ভাইয়া ..." এমি'র অফ লাইন ম্যাসেজ পাই ইয়াহুতে। উত্তর দিতে ইচ্ছে হয়না। ইমেইল এসেছে গোটা পঞ্চাশ। বেশীরভাগ গ্রুপ মেইল, সিলেক্ট এন্ড ডিলিট করি।
- তুই কই রে?
= আছি, কি হইছে?
- কিছুইনা ...
= ভাগ ...
- আজিব, তুই ভাগায় দিলেও আমার যাওয়ার জায়গা নাই
= জানি
- তাইলে ভাগতে বলিস কেন?
= চুপ কর, কাজ করতে দে ...
- আচ্ছা ...
খুব ইচ্ছে করে বারান্দায় চেয়ার পেতে বসি। ঝিরঝিরে বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে বারান্দায় পানি জমে গেছে, ঠাণ্ডা হিমাঙ্কের প্রায় কাছাকাছি, এ অবস্থায় চেয়ার পেতে বসা অসম্ভব। ঘরের বাতি নিভিয়ে বিশাল কাঁচের দেয়ালের পাশে গিয়ে বসি। ইলেকট্রিক হিটার আরামদায়ক একটা উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে থাকে সারা ঘরে, আর খুব প্রিয় গানটা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত করে বুকের ভেতরটায়।
এমন দিনে তারে বলা যায়= পানি মোছ, ছেলে মানুষ এমন করে কাঁদে?
এমন ঘনঘোর বরিষায়।
এমন দিনে মন খোলা যায়-
এমন মেঘস্বরে বাদল ঝরঝরে
তপনহীন ঘন তমসায় ...
সে কথা শুনিবে না কেহ আর,
নিভৃত নির্জন চারি ধার।
দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী,
আকাশে জল ঝরে অনিবার-
জগতে কেহ যেন নাহি আর ...
- আমি কেউ না, আমি কিছু না ...
= আচ্ছা, তুই এমন করে মন খারাপ করিস কেন?
- জানিস, আমি এক সময় ভালবাসার কারণে কাউকে মরতে দেখলে খুব অবাক হতাম, হাসতাম ও। ভাবতাম -- কি বোকা ওরা, এই কারণে কেউ মরে?
= আর এখন?
- আমাকে মরতে দিসনা কেন তুই?
= তুই মরে গেলে আমিও মরে যাব যে। তুই কোনদিন আমাকে সামনে থেকেও দেখিসনি, ছুঁয়ে দেখা তো দুরের কথা। ভালবেসেছিস দূর থেকেই। কিন্তু তারপর থেকে একটা মুহূর্ত কি আমাকে ছেড়ে বেঁচেছিস তুই? যাকে এমন করে ভালবেসেছিলি, সে কি ছেড়ে গেছে তোকে? তোর বুকের মধ্যে, অনেক গভীরে, যেখান পর্যন্ত পৃথিবীর অন্য কোন অনুভূতি পৌছাতে পারেনা, আমাকে সেখানেই রেখেছিস তুই। তোর সাথে সাথে আমিও বেঁচে থাকবো তোর বুকের মধ্যে, তোর রক্তের সাথে মিশে থাকবো।
- পরী ...
= উমম ...
- কিছু না
= না ... বল
- কিছু না রে
= বল ...
- এমনি ডাকলাম তো ...
= ঘুমাবিনা?
- না, আজকে শুক্রবার, আমার ফ্রাইডে নাইট ...
= তাইলে ক্লাবে যা, নাচানাচি কর ...
- হ্যাঁ ... সেইটা করা যায় ...
= ঠিক আছে, তাইলে যা তুই
- নাহ ... থাক ...
কাঁচ ভাঙ্গা হাসি ছড়িয়ে পরে আমার সমস্ত অস্তিত্বে। আলোড়িত করে আমার সমস্ত সত্তা। কাঁপন তোলে সারা দেহে। মনে হয় - বেঁচে থাকাটা খুব কঠিন কিছু না।
প্রচণ্ড শব্দে বাজ পড়ে কাছেই কোথাও। বিদ্যুতের সুতীব্র আলোর রেখা ভেদ করতে পারেনা কালো মেঘের চাদর। বৃষ্টি আসছে, বৃষ্টি আসছে। আজ তবে পৃথিবী আঁধার করে বৃষ্টি হোক ... ...
~সমাপ্ত~
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন