এ স্বাধীণতা হায়
“শালা, দিলো সকাল সকাল মেজাজটা খিঁচড়ে। ঢ্যামনা বুড়ো শালা, যত সব কেত্তন, কি না বালের স্বাধীনতা, সকাল বেলা উঠে পতাকা মারাও, প্রভাত ফেরি যাও, ওঠো গো ভারত লক্ষ্মী গাও।ইল্লি আরকি যতসব ঢ্যমনা বুড়োর কারবার”। সকাল বেলা পঞ্চুদার চায়ের দোকানে ঢুকতেই শ্যামের কথা গুলো কানে এসে বাজলো। জিঞ্জাসা করলাম কিরে শ্যাম সকাল সকাল কাকে খিস্তি করছিস। শ্যাম বলে উঠলো “আর বলো না শুভ দা, আমার বাপটা, সালা বুড়ো ঘাটের মরা সকাল বেলা ঘুম থেকে তুলে বলে আজকে তো ১৫ই আগাষ্ট স্কুলে যা পতাকা তোল পাড়ার প্রভাত ফেরিতে যা।তুমি বলো আজকে সালা ছুটির দিন একটু বেলা করে ঘুমাবো তা নয় দিলো সাত সকালে ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে কোন আক্কেল আছে সালার। নিজে তো বুড়ো হাবড়া সালা ঘুম হয় না রাতে সক্কাল সক্কাল উঠে পড়ে। তা বলে কাঁচা ঘুমটার একেবারে পেছন মেরে দেবে? আজকে শালা ছুটির দিন কোথায় ১১টায় ঘুম থেকে উঠবো, চা খাবো, তারপর একটু মেয়ে দেখতে বেরোবো, দুপুরে সালা মাংস দিয়ে ভাত মারবো, তারপর দুপুরে ক্লাবে গিয়ে তাস পেটাবো আর সন্ধ্যে বেলা হলে একটু মাইরি লাল জল হবে না, তা নয়, সালা ভোর বেলা উঠে প্রভাত ফেরি মারাতে হবে, পেছন ফাটিয়ে ৫ মাইল হেঁটে লোক দেখাতে হবে। মাইরি সালা কোন রসকষ নেই গুরু”।পঞ্চুর চা খেয়ে দাম মিটিয়ে শ্যাম কে একটা হাসি দিয়ে বেড়িয়ে এলাম। মাঠে যাবো একটু। রাস্ত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শ্যাম এর কথা গুলোই ভাবছিলাম। সত্যিই তো, আজ ১৫ই আগষ্ট, আরেকটা ছুটির দিন।একটু আয়েশ করে ঘুমানো তারপর নিয়ম ভাঙা রুটিন, দুপুরে মাংসভাত রাতে রঙ্গিন জল, তা নইলে আর স্বাধীনতা দিবস কেনো।শ্যামের বাবা গোপালবাবু পুরোন মানুষ, তিনি বুঝবেন কেনো এসব।তাঁর বাবা গান্ধীজির আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে জেল খেটেছেন। তিনি কি করে বুঝবেন ছেলের স্বাধীনতা আসলে কি।
আমরাই কি বুঝি স্বাধীনতা আসলে কি? আমরা মানে যারা বি.এ, এম.এ পাস করে নিজেদের শিক্ষিত বলি তারাই বা বুঝি কোথায় স্বাধীনতা দিবসের মানে। আমরা শুধু পাড়ায় পতাকা তুলি, বাচ্চাদের লজেন্স বিলি করি তারপর প্রভাত ফেরি করি, গালার শিরা ফাটিয়ে গাই স্বদেশী গান, তাও ঐ ২৬সে কি ২৩সে কিংম্বা ১৫ই অথবা নিদেন পক্ষে ওই ২সরা। বছরের আর বাকি কটা দিন কোথা থাকে আমাদের স্বাধীনতা বোধ, কোথায়ই বা যায় আমাদের আদর্শ।ওই শ্যামের ভাষায় বলা যাতে পারে ছিঁড়তে।১৫ই এলে কি বা ছিঁড়ে ফেলি আমরা? কি না অরকুট কিংম্বা ফেস বুকে ইউটিউব থেকে চাড্ডি দেশাত্ববোধক গানের লিঙ্ক, কি গোটা কয়েক এসএমএস পাড়ায় দুটো ফ্ল্যাগ ব্যাস আমাদের স্বাধীনতা বোধ ওখানেই শেষ। বছরের আর বাকি কটা দিন কি করি আমরা? না সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠি অফিসে যাই সন্ধ্যেবেলা হরির চায়ের দোকানে গুলতানি মারি, বাঞ্চত সচিনের ১০০য় ১০০ হবে কিনা, সৌরভটাকে মাইরি ডালমিয়া খেয়ে নিল, সিপিএম সালা ৩০ বছর বাংলার কল কেলিয়ে দিল,মমতা মাইরি পরিবর্তন আনতে পারবে, মনমোহন সনিয়ার আঁচল ধরে রাজনিতীর বৈতরণী পার হবে, নইলে পাশের বাড়ির বৌদির বুক দুটো পুরো চম্পা একঘর মাইরি। কালু দার শালীটাকে দেখেছিস উফফ দেখেলই মনে হয় খেয়ে ফেলি, মিনতি বৌদির পেছন খানাও মাইরি পুরো তানপুরা।ব্যাস আমাদের স্বাধীনতা তাই ওই মিনতি বৌদির পেছনেই ঢুকে যায় কিংম্বা পাশের বাড়ির বৌদির বুকে ঝুলে থাকে।আর আমাদের নেতারা! হাঃ হাঃ হাঃ সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ!! তাদের সময় কোথায়। একে ন্যাশানাল ছুটি সকালে এখানে পতাকা উত্তোলন ওখানে বক্তৃতা আর বিকেলে কোন শ্যামা তন্বীর বক্ষলগ্না। বাকি বছরের ৩৬৫ দিন প্রতিশ্রুতি, প্রতিশ্রুতি আর প্রতিশ্রুতি।মাঝে মাঝে মনে হয় সত্যি কি আমরা স্বাধীন, এর চেয়ে তো অনেক ভালো ছিলো পরাধীন ভারত।
বলতে পারি কি আজ জোর দিয়ে আর কবে আমরা সাবালক হবো, কবে পুরোপুরি স্বাধীন হবো। নাকি একশো বছরের পরাধীনতা আমাদের মেরুদন্ডটাকে তুবড়ে দিয়ে গেছে, গোলামী আমাদের মজ্জাগত। তা নইলে মাত্র 162,419,950 কোটির জনসংখ্যার একটা দেশ পাকিস্থান, যাদের চাল থেকে সূচ সমস্তই ধার করা তারা বারবার এসে আমাদের বুকে তান্ডব চালিয়ে যায় কি করে। আবার আমরাই গর্ব করি আমাদের রক্ষণ প্রহরীদের, তারা নয় তাদের কাজ করেছেন, কিন্তু সাধারন মানুষ 1,210,193,422 ভারতবাসী
কতটা করেছি? শুধু যে করিনি তা নয় বরং যে করতে গেছে তারপাশেও আমরা দারাবার মত সামান্য মূল্যবোধটুকুও দেখাতে পারিনি। এই যে আন্না হাজারে করাপশান এর বিরুদ্ধে লড়ছেন বুকে হাত দিয়ে কি আজ জোর গলায় বলতে পারছি ১২১ কোটির ১কোটিও তার পাশে দাঁড়িয়েছি। নাঃ পারছি না জোর গলায় বলতে। কারন আমাদের গলার জোর শুধু মাত্র পাড়ার চায়ের দোকানে মঞ্চে সভা সমিতিতে। এর বাইরে আমাদের গলার আওয়াজ বেরোয় না। তাইতো মাত্র ৫ জন লোক এসে আমাদের এই বিশাল দেশটার একটা রাজ্যে অনায়াসে মৃত্যু তান্ডব চালিয়ে যেতে পারে। কারণ আমাদের যে সর্ষের মধ্যেই ভূত। তা ওঝা ভুতা তাড়াবে কিসের জোরে।
আমরা শুধু নাটক দেখতেই ব্যাস্ত, একদিন কেউ এসে আমাদের উদ্ধার করবে কিংম্বা স্বর্গ হতে কোন অবতার অবতীর্ণ হবেন এই আশায় আমরা গীতা আউড়ে যাই “য়দা য়দা হি ধর্মস্য গ্লানীরভবতি ভারথ, অভ্যুত্থানম অধার্মস্য তদাৎমানম সৃজম আহম, পরিত্রানয় সাধুনাম, বিনাশায় চ দুস্কৃতম,
ধর্মসন্থাপনায়র্থ সম্ভামি য়ুগে য়ুগে। চমতকার। আমরা শুধুই নাটকের পট পরিবর্তনের আশায় বসে থাকি।
“রাজা আসে যায় রাজা বদলায়
লাল জামা গায়ে নীল জামা গায়ে
এই রাজা আসে ওই রাজা যায়
জামা কাপড়ের রঙ বদলায়
দিন বদলায় না।
গোটা পৃথিবীটাকে গিলে খেতে চায়
সেই যে ন্যাংটো ছেলেটা
কুকুরের সাথে ভাত নিয়ে তার লড়াই
চলছে চলবেই
পেটের ভিতর কবে যে আগুন
জ্বলছে এবং জ্বলবে।
রাজা আসে যায় আসে আর যায়
শুধু পোশাকের রঙ বদলায়
শুধু মুখোশের ঢঙ বদলায়
পাগলা মেহের আলি
দুই হাতে দিয়ে তালি
এই রাস্তায় ওই রাস্তায়
এই নাচে ওই গান গায়
সব ঝুট হ্যায়। সব ঝুট হ্যায়। সব ঝুট হ্যায়
জননী জন্মভূমি।
সব দেখে সব শুনেও অন্ধ তুমি
সব জেনে সব বুঝেও বধির তুমি”।।
সত্যি সব ঝুট হ্যায়। সব মিথ্যা। এই যে আজ আমরা গর্ব করে বলছি আমরা তৃতীয় বিশ্ব। বলতে পারো কিসের বিশ্ব, যে দেশে আজো জাতপাতের নামে আগুন জ্বলে, যে দেশে আজো কন্যা ভ্রুণহত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ঘটে যে দেশে নাকি আজো অনার কিলিং এর মতো তান্ডব হয় তারা আবার নিজেদের কে বিশ্ব বলে সম্বোধন করে। হায়রে আমার বিদ্যাসাগর হায়রে রামমোহন। এঁনারা থাকলে বোধহয় একটাই কথা বলতেন ‘হা হতস্মিঃ’।শ্যাম বলে বাল, আর আমি দাঁত কেলাই। আপনারাও কেলান কিম্বা বগলে চুল নিয়ে দুহাত তুলে উর্দ্ধবাহু নাচুন, আর মাইকে শাকিরা বাজুক শাকালাকা বেবি সাকালাকা বেবি।কোন অধিকার নেই আমাদের স্বাধীনতা পালন করার, কোন অধিকার নেই নিজেদের স্বাধীন বলার।সাধে কি আর মেহের আলির মতো মানুষ বলে ‘সব ঝুট হ্যায়’। সত্যিই তো সব মিথ্যে। ক্ষুদিরামের আত্মত্যাগ মিথ্যে, নেতাজির লড়াই মিথ্যে, রাসবিহারি, কানাইলাল, প্রফুল্লচাকি মিথ্যে, মিথ্যে তাদের বলিদান, মিথ্যে তাদের সমস্ত লড়াই। তারচেয়ে আমি বা আপনি আপনারা শালা আজ কোন ইংরেজের বাথরুম সাফ করতাম, কিম্বা তাদের পেছন চুলকাতাম সেটাই ছিলো অনেক ভালো। কি হবে এ মিথ্যে স্বাধীনতা দিয়ে স্বধীন হবার ভড়ং করে। কোন লাভ নেই। আজ ৬৪তম স্বাধীনতা কাল ৬৫ তম হবে তারপরের বছর ৮৫ তম তারপর ১০০তম স্বর্ণ রজত হিরক বালছাল জয়ন্তী। কিন্তু যতদিন না আমরা স্বাবালক হব যতদিন না আমরা সচেতন হব এ স্বধীনতার কোন দাম নেই। আমাদের স্বাধীনতা দিবস শুধু আর পাঁচটা ছুটির দিনের মতো আরেকটা ছুটির দিন হবে। আমরা দেরি করে ঘুম থেকে উঠবো, চা খাবো, লুঙ্গি পরে বাজারের থলি হাতে পোঁদ চুলকাতে চুলকাতে বাজার যাবো কচি পাঠা কিম্বা মুরগি নিয়ে বাড়ী ফিরবো। পাড়ায় পতাকা তুলবো, চায়ের দোকনে দেশোদ্ধার করবো, দুপুরে বাড়ী ফিরে মাংস দিয়ে ভাত সাঁটাবো, বউকে একটূ আদর করবো বিলেকে হুইস্কি সহযোগে মিনতি বৌদির পেছন দেখবো কিংম্বা পাশের বাড়ীর টুসির বুক, তারপর রাতে বাড়ী ফিরে বৌকে পাশে নিয়ে বীর্য ত্যাগ করে আরামসে ঘুমোবো পরের দিনের দিনগত পাপক্ষয় করতে। আর আমাদের স্বাধীনতা ওযে বললাম হয় মিনতি বৌদির তানপুরা পাছায় নয়তো টুসির বুকের জোড়া ফলের মতো দুলতে থাকবে আর আমরা দেখে যাবো আর দাঁত কেলাবো।।
সোকাল বেলায় উঠি উঠি করচি
আর আধপোড়া বিড়িট্যায় টান দিচ্চি
মনে হলো – কারা যেনো চিঁচাচ্চে
ধরফঁড়াই কোপাট টো খুলে বেড়ায় দেখি
জিঞের সারি পারা মানুষ গুলান
“লেতাজি জিন্দাবাদ” দিতে দিতে যেচ্চে।
শকুন পারা দৃষ্টি লিয়ে, পেরথম হতে শ্যেষত্ক
ড্যাবডেবাঁই চারিপানে চেয়ে দ্যেখল্ম
কিন্তুক কোন লেতারই টিকিটো প্যেলম নাই
হু- শ্যেষ পানে চেঁয়ে দেখি
আধ ডাগুরে মিয়্যা গুলান বিধবার পারা শাড়ি পিনে
ঘাড় দুল্যাই দুল্যাই গাইছে ---
“ওঠো গো ভারত নক্ষী”।
তা মা নক্ষীরা; ভারতনক্ষী কি আর উঠতে পারবেক
নক্ষীছাড়ার দলতো উহার পিন্ডি চটকাই দিইচে
মায়ের ভান্ডার ফাঁক করে
বৌ বিটারা সিন্দুক গুঁছাই লিইচে
এ লেতাজিরাই তো মা টো বেঁধে রোখে
বিদেশে দাদন খাইচে
ওই মাটো কি আর উঠতে পারবেক গো মা নক্ষীরা।
বউটোকে বুললেম, ‘ ও বুদির মা
বিটিটো কেনে পাঠালি উদের মিছিলে’?
গল করা ঝুড়িটো কেঁকাল হতে নামায়ে
ঝাঁটাটো মুখের গোড়ায় নেড়ে
বউটো বললেক, “ আ মরণ ডোকলা মিন্সে
বুড়াকালে ভেমরতি হইচে
বলি এ লেতা তোর রাও আদবানি সুখরাম লয়
এ হলো লেতাজি সুভাস
দ্যাশের তরে জিবন বিকাইছে,
তার নামে এসকল কইতে তোর নাজ লাগেনা?
‘ক’ আরেক বার ‘ক’
ঝেঁটিই দাঁত কটান ফেলিদি”।
ভুলটো বুঝতে পেরে হাতটো কোপালে ঠেঁকাই
মনে মনে বুললেম – “হা লেতাজি
দোষ লিওনা, ক্ষমা কইরো”।।
“শালা, দিলো সকাল সকাল মেজাজটা খিঁচড়ে। ঢ্যামনা বুড়ো শালা, যত সব কেত্তন, কি না বালের স্বাধীনতা, সকাল বেলা উঠে পতাকা মারাও, প্রভাত ফেরি যাও, ওঠো গো ভারত লক্ষ্মী গাও।ইল্লি আরকি যতসব ঢ্যমনা বুড়োর কারবার”। সকাল বেলা পঞ্চুদার চায়ের দোকানে ঢুকতেই শ্যামের কথা গুলো কানে এসে বাজলো। জিঞ্জাসা করলাম কিরে শ্যাম সকাল সকাল কাকে খিস্তি করছিস। শ্যাম বলে উঠলো “আর বলো না শুভ দা, আমার বাপটা, সালা বুড়ো ঘাটের মরা সকাল বেলা ঘুম থেকে তুলে বলে আজকে তো ১৫ই আগাষ্ট স্কুলে যা পতাকা তোল পাড়ার প্রভাত ফেরিতে যা।তুমি বলো আজকে সালা ছুটির দিন একটু বেলা করে ঘুমাবো তা নয় দিলো সাত সকালে ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে কোন আক্কেল আছে সালার। নিজে তো বুড়ো হাবড়া সালা ঘুম হয় না রাতে সক্কাল সক্কাল উঠে পড়ে। তা বলে কাঁচা ঘুমটার একেবারে পেছন মেরে দেবে? আজকে শালা ছুটির দিন কোথায় ১১টায় ঘুম থেকে উঠবো, চা খাবো, তারপর একটু মেয়ে দেখতে বেরোবো, দুপুরে সালা মাংস দিয়ে ভাত মারবো, তারপর দুপুরে ক্লাবে গিয়ে তাস পেটাবো আর সন্ধ্যে বেলা হলে একটু মাইরি লাল জল হবে না, তা নয়, সালা ভোর বেলা উঠে প্রভাত ফেরি মারাতে হবে, পেছন ফাটিয়ে ৫ মাইল হেঁটে লোক দেখাতে হবে। মাইরি সালা কোন রসকষ নেই গুরু”।পঞ্চুর চা খেয়ে দাম মিটিয়ে শ্যাম কে একটা হাসি দিয়ে বেড়িয়ে এলাম। মাঠে যাবো একটু। রাস্ত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শ্যাম এর কথা গুলোই ভাবছিলাম। সত্যিই তো, আজ ১৫ই আগষ্ট, আরেকটা ছুটির দিন।একটু আয়েশ করে ঘুমানো তারপর নিয়ম ভাঙা রুটিন, দুপুরে মাংসভাত রাতে রঙ্গিন জল, তা নইলে আর স্বাধীনতা দিবস কেনো।শ্যামের বাবা গোপালবাবু পুরোন মানুষ, তিনি বুঝবেন কেনো এসব।তাঁর বাবা গান্ধীজির আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে জেল খেটেছেন। তিনি কি করে বুঝবেন ছেলের স্বাধীনতা আসলে কি।
আমরাই কি বুঝি স্বাধীনতা আসলে কি? আমরা মানে যারা বি.এ, এম.এ পাস করে নিজেদের শিক্ষিত বলি তারাই বা বুঝি কোথায় স্বাধীনতা দিবসের মানে। আমরা শুধু পাড়ায় পতাকা তুলি, বাচ্চাদের লজেন্স বিলি করি তারপর প্রভাত ফেরি করি, গালার শিরা ফাটিয়ে গাই স্বদেশী গান, তাও ঐ ২৬সে কি ২৩সে কিংম্বা ১৫ই অথবা নিদেন পক্ষে ওই ২সরা। বছরের আর বাকি কটা দিন কোথা থাকে আমাদের স্বাধীনতা বোধ, কোথায়ই বা যায় আমাদের আদর্শ।ওই শ্যামের ভাষায় বলা যাতে পারে ছিঁড়তে।১৫ই এলে কি বা ছিঁড়ে ফেলি আমরা? কি না অরকুট কিংম্বা ফেস বুকে ইউটিউব থেকে চাড্ডি দেশাত্ববোধক গানের লিঙ্ক, কি গোটা কয়েক এসএমএস পাড়ায় দুটো ফ্ল্যাগ ব্যাস আমাদের স্বাধীনতা বোধ ওখানেই শেষ। বছরের আর বাকি কটা দিন কি করি আমরা? না সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠি অফিসে যাই সন্ধ্যেবেলা হরির চায়ের দোকানে গুলতানি মারি, বাঞ্চত সচিনের ১০০য় ১০০ হবে কিনা, সৌরভটাকে মাইরি ডালমিয়া খেয়ে নিল, সিপিএম সালা ৩০ বছর বাংলার কল কেলিয়ে দিল,মমতা মাইরি পরিবর্তন আনতে পারবে, মনমোহন সনিয়ার আঁচল ধরে রাজনিতীর বৈতরণী পার হবে, নইলে পাশের বাড়ির বৌদির বুক দুটো পুরো চম্পা একঘর মাইরি। কালু দার শালীটাকে দেখেছিস উফফ দেখেলই মনে হয় খেয়ে ফেলি, মিনতি বৌদির পেছন খানাও মাইরি পুরো তানপুরা।ব্যাস আমাদের স্বাধীনতা তাই ওই মিনতি বৌদির পেছনেই ঢুকে যায় কিংম্বা পাশের বাড়ির বৌদির বুকে ঝুলে থাকে।আর আমাদের নেতারা! হাঃ হাঃ হাঃ সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ!! তাদের সময় কোথায়। একে ন্যাশানাল ছুটি সকালে এখানে পতাকা উত্তোলন ওখানে বক্তৃতা আর বিকেলে কোন শ্যামা তন্বীর বক্ষলগ্না। বাকি বছরের ৩৬৫ দিন প্রতিশ্রুতি, প্রতিশ্রুতি আর প্রতিশ্রুতি।মাঝে মাঝে মনে হয় সত্যি কি আমরা স্বাধীন, এর চেয়ে তো অনেক ভালো ছিলো পরাধীন ভারত।
বলতে পারি কি আজ জোর দিয়ে আর কবে আমরা সাবালক হবো, কবে পুরোপুরি স্বাধীন হবো। নাকি একশো বছরের পরাধীনতা আমাদের মেরুদন্ডটাকে তুবড়ে দিয়ে গেছে, গোলামী আমাদের মজ্জাগত। তা নইলে মাত্র 162,419,950 কোটির জনসংখ্যার একটা দেশ পাকিস্থান, যাদের চাল থেকে সূচ সমস্তই ধার করা তারা বারবার এসে আমাদের বুকে তান্ডব চালিয়ে যায় কি করে। আবার আমরাই গর্ব করি আমাদের রক্ষণ প্রহরীদের, তারা নয় তাদের কাজ করেছেন, কিন্তু সাধারন মানুষ 1,210,193,422 ভারতবাসী
কতটা করেছি? শুধু যে করিনি তা নয় বরং যে করতে গেছে তারপাশেও আমরা দারাবার মত সামান্য মূল্যবোধটুকুও দেখাতে পারিনি। এই যে আন্না হাজারে করাপশান এর বিরুদ্ধে লড়ছেন বুকে হাত দিয়ে কি আজ জোর গলায় বলতে পারছি ১২১ কোটির ১কোটিও তার পাশে দাঁড়িয়েছি। নাঃ পারছি না জোর গলায় বলতে। কারন আমাদের গলার জোর শুধু মাত্র পাড়ার চায়ের দোকানে মঞ্চে সভা সমিতিতে। এর বাইরে আমাদের গলার আওয়াজ বেরোয় না। তাইতো মাত্র ৫ জন লোক এসে আমাদের এই বিশাল দেশটার একটা রাজ্যে অনায়াসে মৃত্যু তান্ডব চালিয়ে যেতে পারে। কারণ আমাদের যে সর্ষের মধ্যেই ভূত। তা ওঝা ভুতা তাড়াবে কিসের জোরে।
আমরা শুধু নাটক দেখতেই ব্যাস্ত, একদিন কেউ এসে আমাদের উদ্ধার করবে কিংম্বা স্বর্গ হতে কোন অবতার অবতীর্ণ হবেন এই আশায় আমরা গীতা আউড়ে যাই “য়দা য়দা হি ধর্মস্য গ্লানীরভবতি ভারথ, অভ্যুত্থানম অধার্মস্য তদাৎমানম সৃজম আহম, পরিত্রানয় সাধুনাম, বিনাশায় চ দুস্কৃতম,
ধর্মসন্থাপনায়র্থ সম্ভামি য়ুগে য়ুগে। চমতকার। আমরা শুধুই নাটকের পট পরিবর্তনের আশায় বসে থাকি।
“রাজা আসে যায় রাজা বদলায়
লাল জামা গায়ে নীল জামা গায়ে
এই রাজা আসে ওই রাজা যায়
জামা কাপড়ের রঙ বদলায়
দিন বদলায় না।
গোটা পৃথিবীটাকে গিলে খেতে চায়
সেই যে ন্যাংটো ছেলেটা
কুকুরের সাথে ভাত নিয়ে তার লড়াই
চলছে চলবেই
পেটের ভিতর কবে যে আগুন
জ্বলছে এবং জ্বলবে।
রাজা আসে যায় আসে আর যায়
শুধু পোশাকের রঙ বদলায়
শুধু মুখোশের ঢঙ বদলায়
পাগলা মেহের আলি
দুই হাতে দিয়ে তালি
এই রাস্তায় ওই রাস্তায়
এই নাচে ওই গান গায়
সব ঝুট হ্যায়। সব ঝুট হ্যায়। সব ঝুট হ্যায়
জননী জন্মভূমি।
সব দেখে সব শুনেও অন্ধ তুমি
সব জেনে সব বুঝেও বধির তুমি”।।
সত্যি সব ঝুট হ্যায়। সব মিথ্যা। এই যে আজ আমরা গর্ব করে বলছি আমরা তৃতীয় বিশ্ব। বলতে পারো কিসের বিশ্ব, যে দেশে আজো জাতপাতের নামে আগুন জ্বলে, যে দেশে আজো কন্যা ভ্রুণহত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ঘটে যে দেশে নাকি আজো অনার কিলিং এর মতো তান্ডব হয় তারা আবার নিজেদের কে বিশ্ব বলে সম্বোধন করে। হায়রে আমার বিদ্যাসাগর হায়রে রামমোহন। এঁনারা থাকলে বোধহয় একটাই কথা বলতেন ‘হা হতস্মিঃ’।শ্যাম বলে বাল, আর আমি দাঁত কেলাই। আপনারাও কেলান কিম্বা বগলে চুল নিয়ে দুহাত তুলে উর্দ্ধবাহু নাচুন, আর মাইকে শাকিরা বাজুক শাকালাকা বেবি সাকালাকা বেবি।কোন অধিকার নেই আমাদের স্বাধীনতা পালন করার, কোন অধিকার নেই নিজেদের স্বাধীন বলার।সাধে কি আর মেহের আলির মতো মানুষ বলে ‘সব ঝুট হ্যায়’। সত্যিই তো সব মিথ্যে। ক্ষুদিরামের আত্মত্যাগ মিথ্যে, নেতাজির লড়াই মিথ্যে, রাসবিহারি, কানাইলাল, প্রফুল্লচাকি মিথ্যে, মিথ্যে তাদের বলিদান, মিথ্যে তাদের সমস্ত লড়াই। তারচেয়ে আমি বা আপনি আপনারা শালা আজ কোন ইংরেজের বাথরুম সাফ করতাম, কিম্বা তাদের পেছন চুলকাতাম সেটাই ছিলো অনেক ভালো। কি হবে এ মিথ্যে স্বাধীনতা দিয়ে স্বধীন হবার ভড়ং করে। কোন লাভ নেই। আজ ৬৪তম স্বাধীনতা কাল ৬৫ তম হবে তারপরের বছর ৮৫ তম তারপর ১০০তম স্বর্ণ রজত হিরক বালছাল জয়ন্তী। কিন্তু যতদিন না আমরা স্বাবালক হব যতদিন না আমরা সচেতন হব এ স্বধীনতার কোন দাম নেই। আমাদের স্বাধীনতা দিবস শুধু আর পাঁচটা ছুটির দিনের মতো আরেকটা ছুটির দিন হবে। আমরা দেরি করে ঘুম থেকে উঠবো, চা খাবো, লুঙ্গি পরে বাজারের থলি হাতে পোঁদ চুলকাতে চুলকাতে বাজার যাবো কচি পাঠা কিম্বা মুরগি নিয়ে বাড়ী ফিরবো। পাড়ায় পতাকা তুলবো, চায়ের দোকনে দেশোদ্ধার করবো, দুপুরে বাড়ী ফিরে মাংস দিয়ে ভাত সাঁটাবো, বউকে একটূ আদর করবো বিলেকে হুইস্কি সহযোগে মিনতি বৌদির পেছন দেখবো কিংম্বা পাশের বাড়ীর টুসির বুক, তারপর রাতে বাড়ী ফিরে বৌকে পাশে নিয়ে বীর্য ত্যাগ করে আরামসে ঘুমোবো পরের দিনের দিনগত পাপক্ষয় করতে। আর আমাদের স্বাধীনতা ওযে বললাম হয় মিনতি বৌদির তানপুরা পাছায় নয়তো টুসির বুকের জোড়া ফলের মতো দুলতে থাকবে আর আমরা দেখে যাবো আর দাঁত কেলাবো।।
সোকাল বেলায় উঠি উঠি করচি
আর আধপোড়া বিড়িট্যায় টান দিচ্চি
মনে হলো – কারা যেনো চিঁচাচ্চে
ধরফঁড়াই কোপাট টো খুলে বেড়ায় দেখি
জিঞের সারি পারা মানুষ গুলান
“লেতাজি জিন্দাবাদ” দিতে দিতে যেচ্চে।
শকুন পারা দৃষ্টি লিয়ে, পেরথম হতে শ্যেষত্ক
ড্যাবডেবাঁই চারিপানে চেয়ে দ্যেখল্ম
কিন্তুক কোন লেতারই টিকিটো প্যেলম নাই
হু- শ্যেষ পানে চেঁয়ে দেখি
আধ ডাগুরে মিয়্যা গুলান বিধবার পারা শাড়ি পিনে
ঘাড় দুল্যাই দুল্যাই গাইছে ---
“ওঠো গো ভারত নক্ষী”।
তা মা নক্ষীরা; ভারতনক্ষী কি আর উঠতে পারবেক
নক্ষীছাড়ার দলতো উহার পিন্ডি চটকাই দিইচে
মায়ের ভান্ডার ফাঁক করে
বৌ বিটারা সিন্দুক গুঁছাই লিইচে
এ লেতাজিরাই তো মা টো বেঁধে রোখে
বিদেশে দাদন খাইচে
ওই মাটো কি আর উঠতে পারবেক গো মা নক্ষীরা।
বউটোকে বুললেম, ‘ ও বুদির মা
বিটিটো কেনে পাঠালি উদের মিছিলে’?
গল করা ঝুড়িটো কেঁকাল হতে নামায়ে
ঝাঁটাটো মুখের গোড়ায় নেড়ে
বউটো বললেক, “ আ মরণ ডোকলা মিন্সে
বুড়াকালে ভেমরতি হইচে
বলি এ লেতা তোর রাও আদবানি সুখরাম লয়
এ হলো লেতাজি সুভাস
দ্যাশের তরে জিবন বিকাইছে,
তার নামে এসকল কইতে তোর নাজ লাগেনা?
‘ক’ আরেক বার ‘ক’
ঝেঁটিই দাঁত কটান ফেলিদি”।
ভুলটো বুঝতে পেরে হাতটো কোপালে ঠেঁকাই
মনে মনে বুললেম – “হা লেতাজি
দোষ লিওনা, ক্ষমা কইরো”।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন