ভাবনা
তুমি সুন্দর
অপূর্ব সুন্দর তোমার বাঁকা চোখের চাহনি
মুক্তহাসি লাবণ্য মুখশ্রী
কোমল অন্তর--
তুমি সুন্দর
খররৌদ্রের মতো
ঝর্ণার তীক্ষ্ণফোঁটার মতো
বর্ষার ঘনঘটা মেঘের মতো
অপূর্ব সুন্দর তোমার বাঁকা চোখের চাহনি
মুক্তহাসি লাবণ্য মুখশ্রী
কোমল অন্তর--
তুমি সুন্দর
খররৌদ্রের মতো
ঝর্ণার তীক্ষ্ণফোঁটার মতো
বর্ষার ঘনঘটা মেঘের মতো
তুমি সুন্দর
সন্ধ্যালালিমার স্নিগ্ধ আলোর মতো
ফুটফুটে জোছনার মতো
জোনাকির মিটিমিটি আভার মতো
তুমি সুন্দর
শিল্পীর কল্পতুলির মতো
চাঁদিনীরাতের গল্পের মতো
দোলনায় ঘুমন্ত শিশুর মতো
তুমি সুন্দর
তোমার সদাহস্যোজ্জ্বল চেহারামাধুরী
আমি ভুলতে পারি
এমন কঠোর মমত্বহীন নই আমি
অপদার্থ অধম বটে--
অকৃতজ্ঞ নই।
যেই পবিত্র ভালবাসার অনলশিখা
জ্বলছে আমাদের দুজনার মনে
দোহাই,
দোহাই সেই ভালবাসার
দোহাই,
দোহাই সেই ভালবাসার পূততার
আমারে ভুলে যাবে
ভুলতে হবে--
পারবে না!
এমন কেমন কথা,
এমন কথা তোমারে শোভা পায়?
যার রাজ্যভার নিয়েছ মাথায়
তারই আরাধনা নিত্য করো
জপো নিরালায় তারই নাম
শান্তি পাবে তাতে--সফলতা অনেক
এ আমার আদেশ নয়, হুকুম নয়
অনুগ্রহ-করপুটবিনীত অনুরোধ।
আর কিছু আমার বলার নেই
আর কিছু আমার দিবারও নেই--
অলৌকিকশক্তি সর্বোত্তম সম্পত্তি
আমার অশ্রুসিক্ত একমুঠো প্রেম
তারে রেখে এলেম
তোমার রাজ-রাজগৃহ ভাণ্ডারে
সেই তোমারই প্রাপ্য।
আমারে আমি সংযম করতে পারি
এমন সংবিত্তি আমার মাঝে নেই আজ
আমি শূন্য করে ফিরি নে
ফিরেছি একেবারে নিঃসহায় নিরাশ্রয় হয়ে
শুধু--
শুধু ভাবনারে এনেছি সঙ্গে
এটুকু আমার পাথেয়--
পথের সম্বল।
ঊর্ধ্বে নীরব নিস্তব্ধাকাশ
নিম্নে পরিপাটি মাটি
আমি তার বুকে পদযুগল রাখি
বন্ধু তারা খাঁটি।
আর কোনো ঠিকানা নেই?
যেখানে ব্যথার বন্ধন
সেখানে আমার ক্রন্দন
যেখানে বেদনার সংবাদ
সেখানে আমি মেঘনাদ
যেখানে সূচনা দুঃখকষ্ট
সেখানে আমার পাণ্ডুলিপি স্পষ্ট
যেখানে বিষণ্নতাভরা
সেখানে আমি আত্মহারা
যেখানে অবৈধানন্দোল্লাস
সেখানে আমি নির্বাক--জীবন্তলাশ!
আজ কার কাছে যাই আমি
কার দিকে তাকাই আমি--
তোমার দিকে না মানবের দিকে
দেশের দিকে না দশের দিকে
জনতার দিকে না জননীর দিকে
সমাজের দিকে না পরিবেশের দিকে।
তোমার দিকে তাকালে মন আবেগ
মানুষের দিকে তাকালে কান্না আসে
দেশের দিকে তাকালে ভাবনায় পড়ি
দশের দিকে তাকালে আফসোস হয়
জনতার দিকে তাকালে দুঃখ লাগে
জননীর দিকে তাকালে বুক ফেটে যায়
সমাজের দিকে তাকালে ফেলতে হয় দীর্ঘশ্বাস
পরিবেশের দিকে তাকালে শুনি ধিক্কারবাণী!
কোথাও পাই না আমি শান্তির একবিন্দু স্বস্তি--
আকাশে শান্তি নেই মেঘের ঘনঘটায়
বাতাসে শান্তি নেই ধূম্রভেলায়
সাগরে শান্তি নেই তরঙ্গমালায়
নগরে শান্তি নেই আবর্জনায়।
স্তিমিত সমগ্র সৃষ্টির মন--
কোনো মালঞ্চে আজ পাই না সুবাস
কোনো পাখি আজ দেখি না করতে কোলাহল
কোনো ছেলেবেলে আজ করে না খেলা
কোনো তামাশাগীর আজ দেখায় না প্রমোদতামাশা
কোনো গায়ক আজ প্রাণখুলি গায় না গান
কোনো যাত্রিক আজ চায় না পিছন ফিরে
কোনো মানুষ আজ ভাবে না পরের তরে
সবে আপন আপন চিন্তায় বিভোর--
এ কেমন ধারা চলছে অবিরাম!
এমন কেন রে বিধি?
কোথাও দেখি না আজ অতুল সুন্দর
কোথাও খুঁজি পাই না আজ শান্তিস্থল
কোথাও জমে না আজ নিশাতের আড্ডা--
বসে না চন্দ্রিমারাতের গল্পের আসর
যে অসম্ভব ভাল আজ তারই দিন ফুরাল
শুধু রইল, হিংসাবিদ্বেষ-ঈর্ষাপ্রখর?
না না--
তুমি সুন্দর
তোমার চাহনি সুন্দর
শুধু আমার পৃথিবী অসুন্দর!
আমি ব্যথিত ক্রন্দসী
ব্যথা হ্রাসের মঞ্চে দোষী
আমার এখানে ওখানে--সবখানে ফাঁসি!
আমি যা কিছু ভাবি--ব্যর্থ, সব ব্যর্থ
এখানে তুমি সার্থক!
আমার চাহনি তোমার চাহনির মতো
আহা,
হতে পারে না কেন উন্নত!
তুমি সুন্দর
তোমার চাহনি সুন্দর
শুধু আমার পৃথিবী অসুন্দর!
আমি ব্যথিত ক্রন্দসী
ব্যথা হ্রাসের মঞ্চে দোষী
আমার এখানে ওখানে--সবখানে ফাঁসি!
আমি যা কিছু ভাবি--ব্যর্থ, সব ব্যর্থ
এখানে তুমি সার্থক!
আমার চাহনি তোমার চাহনির মতো
আহা,
হতে পারে না কেন উন্নত!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন