আন্না আর না“বহিনচোদ গাঁড় তোড় দেঙ্গে তুমহারে”।সত্যি কথা বলতে কি চমকানোর কথা নয় তবুও চমকালাম। কে রে বাবা। দিল্লীর রাস্তাঘাটে মা বোন তোলাটা জলভাত শুধু নয় প্রায় দুদুভাতও বলা চলে। তাহলেও আমি চমকালাম। কেনো, কারন যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি সেটা এই মুহুর্তে ভারতের তীর্থক্ষেত্রের রুপ নিয়েছে, এবং স্বয়ং কল্কী অবতারের জায়গা নিয়েছেন আন্না মানে আন্না হাজারে। ভুল বললাম কি? মাইরি বলছি আনন্দবাজার পড়া বাঙ্গালী পাঠককুল ক্ষমা করবেন, বুকে ঠুকে মা কালি মা দূর্গা, মা সরস্বতী মায় লক্ষীমায়ের পেঁচাটারও দিব্বি দিয়ে বলছি আমার বাঙালী (পড়ুন বরিশ্যাইল্যা বাঙাল) উচ্চারণে হাজার জিভের জড়তা কাটিয়েও কিছুতেই অন্না বলতে পারলাম না। দেখি এক ইউপি জাঠ গালি দিচ্ছে প্রবল বিক্রমে। কেসটা কি জানার জন্য পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম। দেখি একদল ওই কুড়ি বাইশ বছরের আমাগো ভাষায় পোলাপান সেই গালির লক্ষ। “শালো ঘনা মাস্তি চাড়ি গয়া ক্যা, থারো সমঝ মে না আবে ক্যে কেহ রাহা হু ডান্ডা দেকে সামঝাউ ক্যে, গাঁড় মে এইস্যা ডান্ডা দেঙ্গে না কি............ । আর থাকতে পারলাম না, জাঠ বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করার সুবাদে যেটুকু জাঠ অ্যাকসেন্ট জানতাম তার দ্বারাই জিঞ্জাসা করলাম “আরে চাচে কে হুয়া (ভাগ্যিস হুক্কা হুয়া বলে নি তাহলেই চিত্তির আর কি), কদি ডাঁট কাহে রাহে হো?বাচ্চা হ্যায়। “বাচ্চা নেহি সালা কুত্তাকে বাচ্চা কহো বেটা। সালা আন্না হুয়া পার অনশন পর হ্যায় আর ইয়ে লোগ হিয়া পর মস্তি করনেকো আয়া”। মুচকি হাসলাম, এর বেশি আর কিই বা করতে পারি। চারদিকে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যায় এই যে অনশন মেলা লেগেছে তার কতটুকুই বা বোঝে আজেকের আমাদের প্রজন্ম। কালা ধন ওয়াপাস লাও, লোকজনপাল বিল পাস করো এই লোকজনপাল বিলের কতটুকু জানি আমরা? সারাদিন মেট্রোতে বাসে ট্রামে রাস্তাঘাটে সর্বত্র গাঁন্ধী টুপি তে টি-শার্ট এ ম্যায় আন্না হুঁ লেখা মানুষের ভীড়। রামলীলা ময়দানে কাতারে কাতারে লোক সবাই ভাসছে জোয়ারে। কিন্তু এর মধ্যে হাতে গুনে কতজন বলতে পারবে যে আমি বুঝি কেনো আমি এখানে এসেছি।
অদুরেই পালিকা বাজার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ইন্ডিয়াগেট, লালকিলা চাঁদনি চক। কাতারে কাতারে মানুষ। বেশির ভাগই ফিচকে ছোঁড়া কিছু বাবা মায়ের পেছন পাকা আদরের সন্তান। মেট্রোতে কয়েকজন তরুনী কে দেখলাম, হাতে মেট্রো শপ থেকে কেনা বার্গার মাথায় আমি আন্না লেখা টুপি পরনে জামা কাপড় না থাকারই মত। সারা মেট্রোর কামারা জুড়ে তারা স্লোগান দিচ্ছে সাথে আবার বক্ষলগ্ন প্রেমিক। যব তক সুরজ চাঁন্দ রহেগা আন্না তুমহারা নাম রহেগা, মনমোহন জিসকা তাউ হ্যায় ও সরকার বিকাউ হ্যায়, সনিয়া জিসকা মাম্মি হ্যায় ও সরকার নিকাম্মি হ্যা্য়, ইনকিলাব জিন্দাবাদ। মাইরি বলছি আমার চোদ্দ পুরুষের দিব্বি দিয়েবলছি ওই মেয়েদের ঘিরে সারা মেট্রো কামরা জুড়ে যে কজন মানুষ স্লোগান দিচ্ছিল, তারা যতটা না আন্নার কথা মনে করে স্লোগান দিচ্চিল তারচেয়ে বেশি দিচ্ছিলো অমন ডাঁসা পরিপুষ্ট ৩২ আর ৩৪ এর ব্রায়ের (পাঠক মা শেতলার দিব্বি আমি কিন্তু মোটেই পার্ভাট নই, তবে হ্যাঁ আমিও যে দেখি না তা নয় সুযোগ পেলে কিন্তু আমিও ছাড়ি না) ফাঁকে রাখা আন্নার দিকে তাকিয়ে দিচ্ছিল। একবার ইচ্ছে হয়েছিল বলি মামনীরা এই যে আন্না আন্না করছো তা হাতে বার্গার আর ডান বুকে প্রেমিক কে লোটকে কেন মা? যাও না একদিন আন্নার পাশে বসে অনশন করে দেখো না কেমন লাগে তবে নাহয় বুঝবো মর্দ (নারীবাদীরা শুনে ফেললেন নাতো আজকাল বড্ড ভয় নারীবাদীরা হাব্বী কেলাচ্ছে শুনেছি)কা বাচ্চা থুরি ইন্সান কা বাচ্চা। কিন্তু পাঠক কুল সত্যি বলতে কি তাদের বুকে মনিহারি ব্যাচ এর মতো ঝুলতে থাকা মুসকো মার্কা বয়ফ্রেন্ডদের দেখে লোভ সামলাম, কারন আমার এই ২৭ কোমর ৩২ ছাতি চেহারায় যদি অই জিম সুশোভিত মাসলওয়ালা একটা হাত এসে পড়ে তাহলে চোদ্দ পুরুষ তো দূর অস্ত আমার আগামী বংশধর জন্মাবার আগে দুবার ভাববে। রামলীলা ময়দানের দিকে তাকিয়ে দেখুন যে হাজার হাজার মাথা দেখা যাচ্চে তাদের দিকে একবার তাকান তারা কারা? কলেজ পড়ুয়া অফিস ফেরতা বাবু বারমুডা পরিহিতা তরুণী। তাদের একজন কেও ডেকে জিঞ্জাসা করুন দাদা আপনি এখানে কি করছেন কলেজ পড়ুয়ারা বলবে আবে ইয়ার সব আ রাহা হ্যায় থোড়া হমভি আ গয়ে মস্তি মারনে। অফিস ফেরতা বাবু বলবেন সালে আ গয়ে ব্যস আন্ন টোপী (এখন আর গান্ধি টুপি নয়) লাগাকে মোবাইল মে ফোটে খিচেংগে আউর ঘর সে নিকালতে ওক্ত বেটা বোলা থা পাপা মুঝে আন্না ওয়ালা টোপী চাহিয়ে টোপি উসকো দে দেঙ্গে। আর তরুণী তারা আবার এককাঠি ওপরে। তাদের বক্তব্য শুনবেন? “আরে ইয়ার তুম গান্ডু হো ক্যা, ইয়ে তো মওকা হ্যায়, অফিসে মে বোলা আন্না কে পাস জা রাহা হুঁ, বস মানা নেহি কার সকতে সব কই যা রাহা হ্যায় রোকেঙ্গে তো অফিসমেহি আন্দোলন চালু হো জায়েগা। বস মে টিকট নেহি লাগেগি। হিয়া পর বয়ফ্রেন্ড কো বুলা লিয়া থোড়ি পিকচার উকচার খিঁচয়াঙ্গে খানা পিনা হোগা ফির ইন্ডিয়াগেট পর যায়েঙ্গে কিসি অন্ধেরে কোনে ব্যাঠকে হে হে হে হে সমঝ গায়ে না”। আমি কেনো মামনী হোল ইন্ডিয়া সমঝ গয়ে, দিলওালে সিনেমার গুলসন গ্রোভারের কথা মতো স্বপ্না কে আশিক স্বপ্না কে সাথ গানা গায়েগা জিস পর সুর হোগা তাল হোগা পর বোল নেহি হোগা। পাঠক ছবিটা এখানেই শেষ নয়। পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত।
ফিরে আসছি বাসে করে সেখানেও আন্না সমর্থকদের পরাক্রম অব্যাহত। “ সন্দিপ জিসকা পোতা হ্যায় ও সরকার খোটা হ্যায় (সন্দিপ দিক্ষিত), শীলা (শীলা কি জওানী র শীলা নয় দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী শীলা দিক্ষীত) জিসকি নানী হ্যায় ও সরকার কমীনি হ্যায়” কানে বেজে যাচ্ছে। এর মধ্যে বেচারা কন্ডাক্টর চেয়ে বসিলেন ভাড়া, “মাদারচোদ তুনে ভাড়া ক্যায়সে মাঙ লিয়া বে, সালে বেটি চোদ দিখতা নেহি কাহা সে আ রাহে হ্যায় হম লোগ, আঁখে কিয়া তেরি বিবি কি ভোসরা মে চলি গয়ি ক্যা”। লে হালুয়া তুমি গেছ বার্গার পিজা মারিয়ে আন্নার মজা দেখতে তার জন্য বেচারা কন্ডাক্টর না খেয়ে মরে কেনো। দিনের শেষে মালিককে পয়সা না দিলে সে বেচারার একদিন কা দেহারি মিলবে না। তাহলে? তোমরা তো অন্যায়ের প্রতিবাদে সামিল হতে গেছিলে মহামান্য পাবলিক তাহলে এখানে যে অন্যায় টা করছো তার কি হবে? কোন বোকাচোদা তোমাকে মাথার দিব্বি দিয়েছিল যে তুমি যাও আন্নার অনশনে তাও যদি বুঝতাম আন্নার ১৫ দিনের জায়গায় তুমি একদিনও অনশন করেছো। তাও যদি বুঝতাম তুমি পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে বন্দে মাতারম বলে লাঠি খেয়েছো। কিছুই না খালি পেঁয়াজি।
বলতে পারেন মহামান্য পাব্লিক এই যে ১৫ দিন ধরে আপনারা আন্না নামক মহাজাগরনের ছবিটি দেখলেন তাতে আপনার কন্ট্রিবউশান টা ঠিক কি? কিছুদিন আগেই আন্না ডাক দিয়েছিলেন একদিন কি খানা দে দো, অর্থাৎ কিনা একদিনের একবেলার খাবারের টাকাটা আপনারা দিন দেশের জন্য। কজন দিয়েছিলেন? আজকের ছিলিম ফিগারের তাড়নায় খাওয়া ছেড়ে দেওয়া মেয়েটিও দেয়নি একটা টাকাও। পাবলিক আপনারা কি শুধুই আমজনতা নাকি শুধু “পাব লিক্”।সালা হুজুগে বাদর নাচের বাদরের থেকেও তো অধম। সেই বাদর টা তবু নিস্ফল লাফান ঝাপান করে মালিকের পেটের ভাত জোগায় আর আপনারা? শুধুই দর্শক। “আমরা আর কি করতে পারি” সুলভ কথাবার্তা বলে দিন গুনবেন কবে আসবেন যিশু কিংবা কৃষ্ণ নেতাজি, আন্না। আর যখন তারা আসবেন আপনারা শুধুই দর্শক। বাঞ্চত আপনারা সোজা কথায় যাকে বলে চোখে প্রেমিকার মাই কানে বাপের বাড়া আর মুখে বউয়ের পোঁদ গুজে বসে থাকুন। দোহাই আন্না খামোকা নিজেকে কষ্ট দেবেন না। যাদের কথা ভেবে আপনি লড়ছেন তারা নিজেরাই তো দোষী কাকে ছাড়বেন কাকে বাদ দেবেন? লোকজনপাল বিল অনেক পরে আগে ঘুনের মতো বাসা বেঁধে থাকা মানুষের ভিতরের অন্যায় প্রবনতা কে মারুন, আগে মানুষ কে বলুন বাসে ট্রামে রাস্তা ঘাটে নিজেদের মানুষ প্রতিপন্ন করতে। হাওড়া স্টেশানে অসুস্থ বৃদ্ধ মারা যায় কেউ চোখ ফেরায় না, দিল্লীতে অসুস্থকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য লিফট চেয়ে অপদস্থ হয় এক তরুণী, মুম্বাইয়ে রেস্তোরার বাচ্চা বয় মালিকের লাথি খেয়ে মারা যায়, সারা ভারতের দিকে চেয়ে দেখুন একজনও মানুষ নেই। নিদেন পক্ষে মান কিংম্বা হুশ কোনটাই নেই। তাই আন্না প্লিজ আর না আর না।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন